Skip to main content

আল কুরআনের বার্তা / The Qurannic masses

 -ঃআল কুরআনের মূল বার্তা বা ম্যাসেজঃ-

সুরা বাকারা আয়াত-186

وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيبُواْ لِي وَلْيُؤْمِنُواْ بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ

আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে।

**********************************************************************************************

(বিশেষ দ্রষ্টব্য: আর আল কুরআনে ক্রমিক নং অনুযায়ী ১১৪টি সূরা বা অধ্যায় আছে। তাই (১৫:৯) এর মানে আল কুরআনের ১৫ নং সূরা এর ৯ নং আয়াত। যাতে করে, সকল পাঠক পাঠিকা বৃন্দ সহ‌জেই আরবি কুরআনের সাথে মিলিয়ে অর্থ চেক করতে পারেন।)


আল কুরআনের মূল বার্তাঃ  কোরান পড়ার সাথে অজু বা গোসলের কোন সম্পর্ক নাই।

এ বিষ‌য়ে আল্লাহ তায়ালা প‌বিত্র কোরা‌নে পা‌কে ব‌লেন,

 "আর যখন তুমি কুরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে।" (১৬:৯৮)  

“তুমি যে অবস্থাতেই থাক না কেন, যে অবস্থাতেই তুমি কুরআন হতে যা কিছু পাঠ কর না কেন এবং তোমরা যে কাজই কর না কেন, আমি তোমাদের উপর রয়েছি প্রত্যক্ষদর্শী, যখন তোমরা তাতে পূর্ণরূপে মনোনিবেশ কর।” (১০:৬১)  

”আর তোমার কাছে ওয়াহীকৃত তোমার রবের কিতাব থেকে তুমি পাঠ করে শুনাও। (১৮:২৭)  

তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে, তা থেকে পাঠ করে শুনাও।” (২৯:৪৫) 

”সুতরাং তাদের কি হল যে, তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না? আর যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করে শোননো হয়, তখন তারা সিজদা (মান্য) করে না? বরং যারা অবিশ্বাস করে, তারাই মিথ্যা মনে করে।” (৮৪:২০-২২) 

আর যদি শয়তানের পক্ষ থেকে কোন কুমন্ত্রণা কখনো তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে তুমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা। (৪১:৩৬) 

আর যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর, নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। নিশ্চয় যারা তাকওয়া অবলম্বন করছে, তাদেরকে শয়তান যখন কুমন্ত্রনা দেয়, তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এবং সাথে সাথেই তাদের চোখ খুলে যায়। (৭:২০১,২০২)

আর যখন কুরআন পাঠ করা হয়, তখন তোমরা মনোযোগ সহকারে তা শ্রবণ কর এবং নিশ্চুপ হয়ে থাক, যাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়। (৭:২০৪) (৪৬:২৯) 

অতএব কুরআনের যতটুকু পাঠ করা তোমাদের জন্য সহজ ততটুকু পাঠ কর। আল্লাহ জানেন যে, তোমাদের মধ্যে কেহ কেহ অসুস্থ হয়ে পড়বে, কেহ কেহ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশ ভ্রমণ করবে এবং কেহ কেহ আল্লাহর পথে সংগ্রামে লিপ্ত হবে। অতএব তোমরা কুরআন থেকে যতটুকু সহজ ততটুকু পড়। (৭৩:২০)

এবার আসুন আমরা জান‌তে চেষ্টা ক‌রি আল কোরান আমারদেরকে কি কি বার্তা বা ম‌্যা‌সেজ দি‌য়ে‌ছে।

০১ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল কুরআন সমগ্র মানব জাতির জন্য।  অতএব প্রত্যেক জাতি তার নিজের মাতৃভাষায় কুরআন পড়ে তা বুঝবে ও তা মানবে, কেননা কোন ভাষাই, কোন ভাষর চে‌য়ে উচু বা নিচু নয়। আল্লাহর দৃ‌ষ্টি‌তে সকল ভাষাই সমান। এটাই আল কুরআনের  মুল কনসেপ্ট।                       

আল কুরআন অবতীর্ণ হয়েছিলো একজন আরবের কাছে, নৃতাত্ত্বিক ও ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে যার মাতৃভাষা ছিলো আরবী, যেভাবে যুগে যুগে নবী-রাসুলেরা নিজ নিজ জাতি গোষ্ঠীর কাছে একত্ববাদের বাণী নিয়ে এসেছিলেন নিজেদের মাতৃভাষায়। সে অর্থে মানুষের সকল ভাষাই ঐশ্বরিক, এক ভাষার চেয়ে অন্য ভাষার মর্যাদাগত কোনো উচু-নীচু বা পার্থক্য নেই। আল কুরআনে এমন একটি আয়াতও নেই যেখানে আরবীকে অন্য একটি ভাষার উপর মর্যাদা দেয়া হয়েছে। 

আল্লাহ বলেন, "হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত।" (৪৯:১৩) 

আল্লাহ আরও বলেন, "আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আসমান ও যমীনের সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও তোমাদের বর্ণের ভিন্নতা। নিশ্চয় জ্ঞানীদের জন্য এর মধ্যে রয়েছে বহু নিদর্শন।" (৩০:২২) 

কুরআনের আয়াতে সুস্পষ্ট হয়েছে যে, "আমি কোনো জাতির কাছেই তাদের মাতৃভাষা ব্যাতীত কোনো বার্তাবাহক (রাসুল) পাঠাইনি। এটি এজন্য যে তারা যেনো তাদের কাছে সব কিছু পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিতে পারে।" (১৪:৪)

আরবী ভাষায় কুর'আন অবতীর্ণ হলেও সেটি আমাদের কাছে বিদেশী ভাষা। কুরআনকে আয়াত যতোই শুদ্ধ উচ্চারণে পড়ি না কেনো, তার অর্থ মাতৃভাষায় অনুবাদ করেই বুঝতে হয়। মাতৃভাষা ছাড়া আর কোন ভাষায় মানুষ সবচেয়ে ভালোভাবে জানতে পারে ও মনোযোগী হতে পারে? মানুষ সত্যকে জানে নিজ ভাষায়, মনোযোগের সাথে, পরিষ্কারভাবে, সঠিক উপলব্ধিতে ও সহজে। 

এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন, 

"আর নিশ্চয় এ কুরআন জগতসমূহের  রবেরই  নিকট হতে অবতীর্ণ। বিশ্বস্ত আত্মা একে নিয়ে অবতরণ করেছে। তোমার অন্তরে যাতে তুমি সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত হও। সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়। আর পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে অবশ্যই এর উল্লেখ আছে। বনী ইসরাঈলের আলেমগণ এ সম্পর্কে জানে, এটা কি তাদের জন্য নিদর্শন নয়? আর আমি যদি এটাকে কোন অনারবের প্রতি অবতীর্ণ করতাম। এবং এটা সে তাদের কাছে পাঠ করত তবে তারা তাতে বিশ্বাস করত না।" (২৬:১৯২-১৯৯) 

"আমি যদি অনারবী ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ করতাম, তাহলে তারা অবশ্যই বলত, ‘এর আয়াতগুলি বোধগম্য ভাষায় বিবৃত হয়নি কেন? কি আশ্চর্য যে, এর ভাষা অনারবী অথচ রাসূল (বার্তাবাহক) আরবীয়। বল, বিশ্বাসীদের জন্য এ পথনির্দেশক ও ব্যাধির প্রতিকার। কিন্তু যারা অবিশ্বাসী তাদের কর্ণে রয়েছে বধিরতা এবং কুরআন হবে তাদের জন্য অন্ধকারস্বরূপ। এরা এমন যে, যেন এদেরকে বহু দূর হতে আহবান করা হয়।" (৪১:৪৪) 

"আর এর পূর্বে মূসার কিতাব এসেছিল পথপ্রদর্শক ও রহমত স্বরূপ। আর এখন অবতীর্ণ এ কিতাব তার সমর্থক, আরবী ভাষায়, সীমালংঘনকারীদেরকে সতর্ক করার জন্য আর সৎকর্মশীলদেরকে সুসংবাদ দেয়ার জন্য।" (৪৬:১২) 

"হা-মীম। ইহা দয়াময়, পরম দয়ালুর নিকট হতে অবতীর্ণ। এক কিতাব, বিশদভাবে বিবৃত হয়েছে এর আয়াতসমূহ, কুরআনরূপে আরবী ভাষায়, জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী। অতঃপর তাদের অধিকাংশই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে । অতএব, তারা শুনবে না।" (৪১:১-৪) 

"তুমি বল, তোমার রবের নিকট হতে রূহুল-কুদুস সত্যসহ কুরআন অবতীর্ণ করেছে, যারা বিশ্বাসী তাদেরকে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এবং তা আত্মসমর্পণকারীদের জন্য পথনির্দেশ ও সুসংবাদ স্বরূপ। আর আমি অবশ্যই জানি যে, তারা বলে, তাকে তো শিক্ষা দেয় একজন মানুষ, যার দিকে তারা ঈঙ্গিত করছে, তার ভাষা হচ্ছে অনারবী। অথচ এটা হচ্ছে সুস্পষ্ট আরবী ভাষা।" (১৬:১০২,১০৩) 

"হা-মীম। সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ। আমি এটা অবতীর্ণ করেছি আরাবী ভাষায় কুরআন রূপে, যাতে তোমরা বুঝতে পার।" (৪৩:১-৩) 

"আর এভাবেই আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেছি আরাবী ভাষায় যাতে তুমি সতর্ক করতে পার মূল জনপদ ও তার আশপাশের জনগণকে এবং সতর্ক করতে পার কিয়ামাতের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। সেদিন একদল জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।" (৪২:৭)  

"আর অবশ্যই আমি এ কুরআনে মানুষের জন্য সর্বপ্রকার দৃষ্টান্ত উপস্থিত করেছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে, আরবী ভাষায় এ কুরআন বক্রতামুক্ত, যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে।" (৩৯:২৭,২৮)

"আর এভাবেই আমি আরবী ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং তাতে বিভিন্ন সতর্কবাণী বিস্তারিতভাবে বিবৃত করেছি যাতে তারা আল্লাহকে ভয় করে অথবা তা হয় তাদের জন্য উপদেশ।" (২০:১১৩) 

"আর আমি তো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তুমি এর দ্বারা সাবধানীদেরকে সুসংবাদ দিতে পার এবং কলহপ্রিয়  সম্প্রদায়কে এর দ্বারা সতর্ক করতে পার।" (১৯:৯৭) 

"অতঃপর আমি তো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।" (৪৪:৫৮)

"আলিফ লা-ম রা। এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত। নিশ্চয় আমি এটি অবতীর্ণ করেছি আরবী ভাষায় কুরআনরূপে, যাতে তোমরা বুঝতে পার।" (১২:১,২) 

"আর এভাবে আমি এ কুরআন অবতীর্ণ করেছি আরবী ভাষায় জীবন-বিধান স্বরূপ, জ্ঞান প্রাপ্তির পর তুমি যদি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহর বিরুদ্ধে তোমার কোন অভিভাবক ও রক্ষাকর্তা থাকবে না।" (১৩:৩৮) 

তারা যা বলে তা আমি জানি, তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও। সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে তাকে উপদেশ দান কর কুরআনের সাহায্যে। (৫০:৪৫)(৬:১৯,৫১,৭০,৯২) 

"সুতরাং তুমি অবিশ্বাসীদের আনুগত্য করো না এবং তুমি কুরআনের সাহায্যে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সংগ্রাম চালিয়ে যাও।"(২৫:৫২) 

"আর যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল, তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করে দেবে। তারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে এবং তারা কেবল অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তাই বলে থাকে।" (৬:১১৬) 

"বল, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ পেশ কর”।"(২:১১১) (২৭:৬৪) (২৮:৭৫) (২১:২৪) 

"বরং সত্য সেটাই যেটা তোমার রবের পক্ষ থেকে প্রেরিত হয়েছ,  অতএব তুমি সন্দিহানদের অন্তর্ভুক্ত  হইও  না।" (২:১৪৭)(৩:৬০)(১৮:২৯)

০২ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল কুরআন নিয়ে গবেষণা করতে হবে।  

আল কুরআনুল কারীম পুরো মানবজাতির জন্য ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনের মুক্তি ও কল্যাণের বার্তাবাহক, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী। আল কুরআনুল কারীম হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ, পরিপূর্ণ, যথেষ্ট পূর্ণবিবৃত, বিস্তারিত, বিস্তা‌রিত ব্যাখ্যাকৃত, সন্দেহমুক্ত, কন্টকমুক্ত, বক্রতামুক্ত,  সবর্দা ন্যায়নিষ্ঠ, সর্বস্বচ্ছ, সর্ব সুন্দর, বলিষ্ঠ, সকল কিছুর বর্ণনা সম্বলিত এবং সামগ্রীক ব্যাখ্যাসহ অবতীর্ণ তথা মানব জীবনের সকল যুগের, সকল সময়ের,সকল স্তরের সয়ংক্রিয়, কার্যকরী, প্রাণবন্ত, চিরস্থায়ী, সার্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক সমাধান গ্রন্থ ও একক,  একমাত্র, অবিকল্প সংবিধান। তাই আল কুরআন হচ্ছে মানুষের জীবন ব্যবস্থা ও গাইডলাইন।

 এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

"আল কুরআন হচ্ছে মানুষের জন্য পথ প্রদর্শক এবং সুস্পষ্ট নির্দশন এবং ন্যায় ও অন্যায়ের পার্থক্যকারী" (২:১৮৫)। 

এ কুরআন সৎপথের দিশারী। এই কুরআন মানব জাতির জন্য সুস্পষ্ট দলীল এবং নিশ্চিত বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথনির্দেশ ও রহমত। (৪৫:১১,২০) 

"নিশ্চয় আল কুরআন সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী বাণী। এবং এটা নিরর্থক নয়।" (৮৬:১৩,১৪) 

আল্লাহর নিকট হতে এক রাসূল (বার্তা বাহক), যে আবৃত্তি করে পবিত্র গ্রন্থ, যাতে আছে সঠিক বিধান।(৯৮:২,৩) 

আল কুরআন প্রত্যেকটি বিষয়ের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা, সত্য পথের নির্দেশ, রহমত আর আত্মসমর্পণকারীদের জন্য সুসংবাদ স্বরূপ। (১৬:৮৯) 

"নিশ্চয়ই এ কুরআন এমন একটি পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল, সোজা ও সুপ্রতিষ্ঠিত। আর যারা সৎকাজ করে, সেই বিশ্বাসীদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার।" (১৭:৯) 

এ জন্য কুরআনকে আমরা ঘরে ঘরে শেলফে সাজিয়ে রেখে দিতে পারি না। কুরআনের জন্য কখনই কোন গিলাফের প্রয়োজনীয়তা নেই, কুরআন আবৃত, আচ্ছাদিত হয়ে থাকবার গ্রন্থ নয়, সকলের কাছে সর্বদা প্রকাশিত, উন্মুক্ত ও বিকশিত হবার স্মারক ও উপদেশ গ্রন্থ। এই কুরআন থাকবে আমাদের বাসস্থল, কর্মস্থল, ধর্মস্থলে সদা-সর্বদা উন্মুক্ত যেন চলতে ফিরতে আমরা চাইলেই কোন সময় ক্ষেপন ব্যতিরেকে এর চিরন্তন শাশ্বত আয়াতসমূহে নিজের মাতৃভাষায় অর্থ সহকারে বুঝে বুঝে  চোখ বুলাতে পারি, কুরআনের প্রতি মনোনিবেশ করতে পারি, উঠতে বসতে এর বাণী নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করতে পারি। এই সম্পর্কে আল্লাহ বলেন;

"হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তাহলে তিনি তোমাদেরক ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার শক্তি দিবেন, তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।" (৮:২৯)  

"তবে কি তারা কুরআন নিয়ে গভীর গভীর ভাবে গবেষনা করে না? নাকি তাদের অন্তরসমূহ তালাবদ্ধ  রয়েছে?" (৪৭:২৪) 

"তবে কি তারা কুরআন নিয়ে গভীর ভাবে গবেষনা করে না? যদি তা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নিকট হতে আসত, তবে তারা এতে অনেক অসঙ্গতি পেত।"(৪:৮২) 

"তবে তারা কি এ বাণী সম্পর্কে গভীর ভাবে গবেষনা করে না? নাকি তাদের কাছে এমন কিছু এসেছে যা তাদের পূর্ববর্তী  পিতৃপুরুষদের কাছে আসেনি?" (২৩:৬৮) 

"এটি একটি কল্যাণময় কিতাব তোমার কাছে অবতীর্ণ করেছি যাতে তারা এর আয়াতগুলোর নিয়ে গভীর ভাবে গবেষনা করে, আর জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা উপদেশ গ্রহণ করে থাকে।" (৩৮:২৯)  

"আর আমি তো কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য। অতএব কোন উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি উহা হইতে উপদেশ গ্রহণ করিবে?" (৫৪:১৭,২২,৩২৪০) 

"অতঃপর আমি তো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।" (৪৪:৫৮) 

"সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ। আমি এটা অবতীর্ণ করেছি আরাবী ভাষায় কুরআন রূপে, যাতে তোমরা বুঝতে পার।" (৪৩:২-৩) 

"এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত। নিশ্চয় আমি এটি অবতীর্ণ করেছি আরবী ভাষায় কুরআনরূপে, যাতে তোমরা বুঝতে পার।" (১২:১,২) 

"আর অবশ্যই আমি এ কুরআনে মানুষের জন্য সর্বপ্রকার দৃষ্টান্ত উপস্থিত করেছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে,  আরবী ভাষায় এ কুরআন বক্রতামুক্ত, যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে।" (৩৯:২৭,২৮)  

"আর আমি তো মানুষের জন্য এই কুরআনে সব ধরনের দৃষ্টান্ত পেশ করেছি।" (৩০:৫৮

"আর আমি এই কুরআনে মানুষের জন্য সকল প্রকার দৃষ্টান্ত বিশদভাবে বর্ণনা করেছি। আর মানুষ সবচেয়ে বেশি কলহপ্রিয়।" (১৮:৫৪) 

"আর অবশ্যই আমি এ কুরআনে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে, কিন্তু তা কেবল তাদের বিমুখতাই বৃদ্ধি করে।" (১৭:৪১) 

"আর এভাবেই আমি আরবী ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং তাতে বিভিন্ন সতর্কবাণী বিস্তারিতভাবে বিবৃত করেছি যাতে তারা আল্লাহকে ভয় করে অথবা তা হয় তাদের জন্য উপদেশ।" (২০:১১৩) 

"আর আমি তো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তুমি এর দ্বারা সাবধানীদেরকে সুসংবাদ দিতে পার এবং কলহপ্রিয়  সম্প্রদায়কে এর দ্বারা সতর্ক করতে পার।" (১৯:৯৭) 

"হে মানুষ! তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের নিকট হইতে আসিয়াছে উপদেশ ও তোমাদের অন্তরে যে রোগ-ব্যধি আছে তাহার প্রতিকার এবং বিশ্বাসীদের জন্য পথ-নির্দেশ ও করুণা।" (১০:৫৭) 

"নিশ্চয় এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য, যার রয়েছে অন্তর অথবা যে মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করে।" (৫০:৩৭)

"নিশ্চয় যারা কুরআন আসার পর তা অস্বীকার করে, তাদের মধ্যে গবেষনা বা চিন্তা-ভাবনার অভাব রয়েছে। এটা অবশ্যই এক সম্মানিত গ্রন্থ। এতে মিথ্যার কোন প্রভাব নেই, সামনের দিক থেকে ও নেই এবং পেছন দিক থেকেও নেই। এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।" (৪১:৪১,৪২) 

"এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য পথ-নির্দেশক।" (২:২) 

"এই কিতাব জগতসমূহের রবের নিকট হতে অবতীর্ণ, এতে কোন সন্দেহ নেই।" (৩২:২) 

আমিই যিকির বা উপদেশ বাণী বা কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই উহার সংরক্ষক।" (১৫:৯) 

"নিশ্চয় এটার সংরক্ষণ ও পাঠ করাবার দায়িত্ব আমারই।" (৭৫:১৭) 

"আর সত্য ও ন্যায়ের দিক দিয়ে তোমার   রবের বাণী পরিপূর্ণ । তাঁর বাণীসমূহের কোন পরিবর্তনকারী নেই। আর তিনিই সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।" (৬:১১৫) (১৮:২৭) (১০:৬৪)

প্রিয় ভাই ও বো‌নেরা, আপনারা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কিয়ামতের দিন আপনাদের প্রত্যেকের নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। সুতরাং শাসক জনগণের দায়িত্বশীল। ক্বিয়ামতের দিন তাদের‌কে তা‌দের প্রাপ্ত দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। প্রত্যেক পুরুষ বা নারী তারা তাদের পরিবারের দায়িত্বশীল, তাকে পরিবারের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। স্বামী তার স্ত্রীর এবং স্ত্রী তার স্বামীর সংসার এবং সন্তানের উপর দায়িত্বশীল, তাকে এ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। সন্তানের দায়িত্ব বৃদ্ধা অবস্থায় পিতামাতার দেখাশুনা করা, তাকে এ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। এমন কি  কর্মচারীগণও তার মালিকের সম্পদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল । সেই দিন তাদরেকেও  তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। অতএব প্রত্যেকেই মনে রাখবেন, আমরা প্রত্যেকেই কোন না কোন ভাবে দায়িত্বশীল, আর আমাদেরকে এই দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। 

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

"তোমরা যা কর সে বিষয়ে অবশ্যই প্রত্যেকেই  জিজ্ঞাসিত করা  হবে।" (১৬:৯৩)  

"অতএব শপথ তোমার রবের, আমি উহাদের সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করব। সেই বিষয়ে উহারা যাহা করে।" (১৫:৯২,৯৩) 

"নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।" (১৭:৩৪) 

"যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।" (১৭:৩৬) 

"অতপর সেই দিন তোমাদেরকে নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।" (১০২:৮) 

"হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন  হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়,  কঠোর স্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ  যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়,তাই করে।" (৬৬:৬) 

"আর কিয়ামতের দিন বিশ্বাসীগণ বলবে, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত যারা নিজদের ও পরিবার-পরিজনের ক্ষতি সাধন করেছে। জেনে রেখ, এটাই স্পষ্ট ক্ষতি’। আর তুমি তোমার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দাও। এবং যারা তোমার অনুসরণ করে, সেই সব বিশ্বাসীদের  প্রতি বিনয়ী হও। তারপর যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বল, নিশ্চয় তোমরা যা কর তার জন্য আমি দায়ী নই। তুমি নির্ভর কর পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু আল্লাহর উপর।" (২৬:২১৪-২১৭) 

"তারা যা বলে, তা আমি খুব জানি, তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও, সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে, তাকে কুরআনের সাহায্যে উপদেশ দান কর।” (৫০:৪৫) (৬:১৯.৫১,৭০,৯২)  

আজকাল অধিকাংশই মুসলিম পরিবারের ঘরে অর্থ সহকারে  বুঝে বুঝে  আল কুরআন পাঠ করা হয় না। আল কুরআনের প্রকৃত শিক্ষা অধিকাংশই মুসলিম পরিবারে নেই বললেই চলে। বৈষয়িক উন্নতির জন্য জাগতিক পড়া-শোনায় আমরা এতটাই ব্যস্ত যে, মহান আল্লাহর কিতাব আল কুরআন অর্থ সহকারে  বুঝে বুঝে পড়ে অর্থ বোঝার চেষ্টা করার সময়ও আমাদের নেই। আমাদের ছেলে মেয়েদেরকে স্কুল কলেজে ভাল রেজাল্ট করানোর জন্য আমরা মরিয়া হয়ে উঠি। অথচ মহান আল্লাহর কিতাব আল কুরআন শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে এবং নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে আমরা চরমভাবে উদাসিন। যার পরিণতিতে আমাদের ছেলে মেয়েরা আজ বড় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী হয়েও পিতা-মাতার অবাধ্য হয়, নেশাগ্রস্ত ও যেনা-ব্যভিচার বা পরকীয়ার মত অনৈতিক অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয়, ঘুষ দিয়ে সরকারী চাকরি নেয় এবং বড় অফিসার হয়ে আবার নি‌জেই ঘুষের কারবারে লিপ্ত হয়, চোরা কারবারীতে লিপ্ত হয়, সুদের কারবারের সাথে লিপ্ত হয়, আমানত খেয়ানতকারী হয়, অঙ্গীকার ভঙ্গকারী হয়, পণ্যে ভেজাল দেয় ও পণ্য মজুদ করে রেখে কালো বাজারকারী হয়, ওজনে কম দেয় এবং মেপে নেওয়ার সময় বেশি নেয়, মানুষকে ঠকিয়ে প্রতারনায় লিপ্ত হয়, এতিমের হক মেরে খায়, বৈধ দায়িত্ব পালনে অস্বীকার করে, যৌতুক আদায়কারী হয়, ভাই হয়ে বোনের সম্পত্তি আত্মসাৎকারী হয়, অবৈধ সম্পদের লোভে মানুষকে ঠকাতে ও দ্বিধাবোধ করে না এবং প্রয়োজনে ফিতনা ফাসাদ ও খুনখারাবীতে লিপ্ত হয়। তাই পিতা-মাতার পক্ষ থেকে সন্তান-সন্ততির প্রতি সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হচ্ছে, তাদেরকে আল কুরআনের সুশিক্ষা ও সদুপদেশ দিয়ে, আল্লাহর কথা স্বরণ করিয়ে; ভাল কাজ-কর্মে অভ্যস্ত করা এবং এর মাধ্যমে পরকালে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা। 

এ প্রসঙ্গে আল কুরআনে উল্লিখিত লোকমান কর্তৃক স্বীয়পুত্রকে প্রদত্ত উপদেশবাণী বিশেষ ভাবে লক্ষ্যণীয়। উপদেশ গুলো (৩১:১২-১৯)  তা নাহলে সেই দিন এই সন্তান-সন্ততি আপনাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াবে এবং আল্লাহর কাছে নালিশ করে বলবে,

"হে আমাদের রব! যেসব জিন ও মানুষ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল, তাদেরকে দেখিয়ে দাও, আমরা তাদেরকে পা দিয়ে পদদলিত করব, যাতে তারা যথেষ্ট অপমানিত হয়।" (৪১:২৯) 

যারা আল্লাহর শাস্তিকে ভয় করেন, তারা আজই নিজের মাতৃভাষায় অনুবাদকৃত আল কুরআন অর্থসহ বুঝে বুঝে পড়ুন। পরকালের জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাচার এক মাত্র উপায় হচ্ছে আল্লাহর দেওয়া এবং রাসূলের রেখে যাওয়া একমাত্র আল কুরআন (২৫:৩০) 

যা অপরিবর্তনীয় এবং যার সামনে ও পিছন থেকে কোন মিথ্যা প্রবেশ করতে পারবে না (৪২:৪২) এবং আল্লাহ নিজেই তার সংরক্ষণকারী। (১৫:৯) (৭৫:১৭) 

আর এভাবেই আল কুরআনের বিধান দ্বারাই জীবন পরিচালনা করলেই, কেবল জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা পেয়ে জান্নাতে যাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়, ইনশা-আল্লাহ!

০৩ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ  আল কুরআন পড়ার সময় নিজেদের আকল, জ্ঞান, বুদ্ধি বিবেক বা বোধশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে! 

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, "নিশ্চয় আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, আমি তাকে পরীক্ষা করব, ফলে আমি তাকে বানিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন। নিশ্চয় আমি তাকে পথের নির্দেশ দিয়েছি, হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, না হয় সে অকৃতজ্ঞ হবে।" (৭৬:২,৩) 

"শপথ নফসের এবং তার, যিনি তাকে সুবিন্যস্ত করেছেন। অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। সেই সফলকাম হয়েছে যে নিজ আত্মাকে পরিশুদ্ধ  করেছে এবং সেই ব্যর্থ হয়েছে যে নিজ আত্মাকে কলূষিত করেছে।" (৯১:৭-১০) 

"হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তাহলে তিনি তোমাদেরকে ন্যায়-অন্যায় পার্থক্যকারীর শক্তি দিবেন, তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ অতিশয় অনুগ্রহশীল।" (৮:২৯) 

"আর যে বিষয় তোমার কোন জ্ঞান নাই তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তকরণ- এদের প্রতিটির ব্যাপারে সে জিজ্ঞাসিত হবে।" (১৭:৩৬) 

"নিশ্চয় আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম বিচরণশীল জীব হচ্ছে বধির, বোবা, যারা তাদের বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগায় না।" (৮:২২) 

"নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকাজ করেছে তারাই সৃষ্টির সেরা । (৯৮:৭) 

"আর অবশ্যই আমি সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য বহু জিন ও মানুষকে। তাদের হৃদয় আছে কিন্তু তা দিয়ে উপলব্ধি করে না, তাদের চোখ আছে কিন্তু তা দিয়ে দেখে না, তাদের কান আছে কিন্তু তা দিয়ে শোনে না, বরং তারা জন্তু- জানোয়ারের মত, বরং তার চেয়েও পথভ্রষ্ট, তারাই হল উদাসীন।" (৭:১৭৯) 

"অতঃপর কত জনপদ আমি ধ্বংস করেছি যেগুলির বাসিন্দারা ছিল যালিম, তাই এইসব জনপদ তাদের ঘরের ছাদসহ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল, কত কূপ পরিত্যক্ত হয়েছে এবং কত সুদৃঢ় প্রাসাদ ধ্বংস হয়েছে। তারা কি যমীনে ভ্রমণ করেনি? তাহলে তারা জ্ঞান বুদ্ধি বিবেক সম্পন্ন হৃদয় ও শ্রুতিশক্তি সম্পন্ন কর্ণের অধিকারী হতে পারত। প্রকৃতপক্ষে চোখ অন্ধ নয়, বরং বুকের ভিতর যে হৃদয় আছে তাই অন্ধ।" (২২:৪৫,৪৬) 

"আর আমি অবশ্যই তাদেরকে যাতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, তোমাদেরকে তাতে প্রতিষ্ঠিত করিনি। আর আমি তাদেরকে কান, চোখ ও হৃদয় দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা যখন আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত, তখন তাদের কান, তাদের চোখ ও তাদের হৃদয়সমূহ তাদের কোন উপকারে আসেনি। আর তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত তা-ই তাদেরকে পরিবেষ্টন করল।" (৪৬:২৬) 

"আর যদি তোমার রব ইচ্ছা করতেন, তাহলে বিশ্বের সকল লোকই বিশ্বাস করত, তাহলে তুমি কি বিশ্বাসী হওয়ার জন্য মানুষের উপর জবরদস্তি করবে? অথচ আল্লাহর অনুগ্রহ ছাড়া কারো বিশ্বাস স্থাপন করার সাধ্য নেই, আর যারা তাদের বিবেক বুদ্ধি খাটায় না, আল্লাহ তাদের উপর অপবিত্রতা চাপিয়ে দেন।" (১০:৯৯,১০০) 

"আর যারা বিশ্বাস করে না, আল্লাহ তাদের উপর অপবিত্রতা চাপিয়ে দেন।" (৬:১২৫)

"আর তারা যদি তোমাকে মিথ্যাবাদী বলে, তবে তুমি বল,‘আমার কাজের জন্য আমি দায়ী, আর তোমাদের কাজের জন্য তোমরা দায়ী, আমি যা করি তার দায়-দায়িত্ব থেকে তোমরা মুক্ত, আর তোমরা যা কর তার দায়-দায়িত্ব থেকে আমি মুক্ত। আর তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে, যারা তোমার প্রতি মনোযোগ দিয়ে শুনে। তবে কি তুমি বধিরকে শোনাবে, যদি না তারা তাদের বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগায় ? আর তাদের মধ্যে কিছু লোক আছে, যারা তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে। তবে কি তুমি অন্ধকে পথ দেখাবে, যদিও তাদের দৃষ্টিশক্তি না থাকে? নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি কোন যুলুম করেন না,পরন্তু মানুষ নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করে থাকে।" (১০:৪১-৪৪) 

"আর যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা অনুসরণ কর, তারা বলে, বরং আমরা অনুসরণ করব আমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে যার উপর পেয়েছি। যদি তাদের পিতৃ-পুরুষরা কিছুই বুঝত না এবং সঠিক পথে চলত না তবুও। আর যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের দৃষ্টান্ত তার মত, যে এমন কিছুর জন্য চিৎকার করছে, হাঁক-ডাক ছাড়া যে কিছু শোনে না। তারা বধির, বোবা, অন্ধ। আর তাই তারা তাদের বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগায় না।" (২:১৭০,১৭১) 

"তুমি কি তাকে দেখনি, যে তার প্রবৃত্তিকে নিজের ইলাহরূপে গ্রহণ করেছে? তবুও কি তুমি তার যিম্মাদার হবে? তুমি কি মনে কর যে, তাদের অধিকাংশ লোক বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগাায়? তারা কেবল পশুদের মতো, বরং তারা আরো অধিক পথভ্রষ্ট।" (২৫:৪৩,৪৪) 

"রোষে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে, যখনই তাতে কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তাদেরকে রক্ষীরা জিজ্ঞেস করবে, তোমাদের কাছে কি কোন সতর্ককারী আসেনি? তারা বলবে, হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদের কাছে সতর্ককারী এসেছিল, তখন আমরা মিথ্যারোপ করেছিলাম এবং বলেছিলাম, আল্লাহ কিছুই অবতীর্ণ করেননি, তোমরা তো মহাবিভ্রান্তিতে রয়েছ। আর তারা বলবে, যদি আমরা শুনতাম অথবা বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসী হতাম না। অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। সুতরাং ধ্বংস জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের জন্য!" (৬৭:৮-১১)

০৪ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল কুরআন পড়ার সাথে অজু বা গোসলের কোন সম্পর্ক নাই।    

 এ সম্পর্কে  আল্লাহপাক বলেন,

"পাঠ কর তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষকে  জমাট-বাঁধা রক্তপিন্ড থেকে। পাঠ কর, আর তোমার রব বড়ই অনুগ্রহশীল। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। তিনিই মানুষকে তা শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে জানত না।" (৯৬:১-৫) 

"পরম করুণাময়, তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন। তিনিই মানুষ সৃষ্টি করেছেন। তিনিই তাকে শিখিয়েছেন (ভাষা) ভাব প্রকাশ করতে।" (৫৫:১-৪) 

"আর যখন তুমি কুরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে।" (১৬:৯৮) 

"তুমি যে অবস্থাতেই থাক না কেন, যে অবস্থাতেই তুমি কুরআন হতে যা কিছু পাঠ কর না কেন এবং তোমরা যে কাজই কর না কেন, আমি তোমাদের উপর রয়েছি প্রত্যক্ষদর্শী, যখন তোমরা তাতে পূর্ণরূপে মনোনিবেশ কর।" (১০:৬১)  

"আর তোমার কাছে ওয়াহীকৃত তোমার রবের কিতাব থেকে তুমি পাঠ করে শুনাও। (১৮:২৭)  তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে, তা থেকে পাঠ করে শুনাও।" (২৯:৪৫)

"সুতরাং তাদের কি হল যে, তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না? আর যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করে শোননো হয়, তখন তারা সিজদা (মান্য) করে না? বরং যারা অবিশ্বাস করে, তারাই মিথ্যা মনে করে।" (৮৪:২০-২২) 

"আর যদি শয়তানের পক্ষ থেকে কোন কুমন্ত্রণা কখনো তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে তুমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।" (৪১:৩৬)

"আর যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর, নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। নিশ্চয় যারা তাকওয়া অবলম্বন করছে, তাদেরকে শয়তান যখন কুমন্ত্রনা দেয়, তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এবং সাথে সাথেই তাদের চোখ খুলে যায়।" (৭:২০১,২০২)

"আর যখন কুরআন পাঠ করা হয়, তখন তোমরা মনোযোগ সহকারে তা শ্রবণ কর এবং নিশ্চুপ হয়ে থাক, যাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়।" (৭:২০৪) (৪৬:২৯) 

\অতএব কুরআনের যতটুকু পাঠ করা তোমাদের জন্য সহজ ততটুকু পাঠ কর। আল্লাহ জানেন যে, তোমাদের মধ্যে কেহ কেহ অসুস্থ হয়ে পড়বে, কেহ কেহ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশ ভ্রমণ করবে এবং কেহ কেহ আল্লাহর পথে সংগ্রামে লিপ্ত হবে। অতএব তোমরা কুরআন থেকে যতটুকু সহজ ততটুকু পড়।" (৭৩:২০)  

আল কুরআন পড়ার আগে যে দোআগুলো আমাদেরকে পড়তে হবে তা হল: 

"পরম করুণাময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে।" (২৭:৩০) 

"হে আমার রব! আমি শয়ত্বানের কুমন্ত্রণা হতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, হে আমার রব! যাতে তারা আমার কাছে আসতে না পারে।" (২৩:৯৭,৯৮)

"হে আমার রব, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন। হে আমার রব, আমার জন্য আমার বক্ষকে প্রশস্ত করে দিন, আর আমার জন্য আমার কাজকে সহজ করে দিন, আর আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন, যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে। (২০:১১৪,২৫-২৮) 

"হে আমার রব, আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন" (২৬:৮৩) 

"‘আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের কাছে, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, আর রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা গভীর হয়, আর ঐসব আত্মার অনিষ্ট হতে, যারা যাদু করার উদ্দেশ্যে গ্রন্থিতে ফুৎকার দেয়, আর অনিষ্ট হতে হিংসুকের, যখন সে হিংসা করে।" (১১৩:১-৫) 

"আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের রবের নিকট, যিনি মানুষের মালিক, যিনি, মানুষের ইলাহ, আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট হতে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জ্বিন ও মানুষের মধ্য হতে।" (১১৪:১-৬) 

"আমি অজ্ঞদের অন্তভূুক্ত হওয়া থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।" (২:৬৭

আল কুরআনের আয়াত নিয়ে কেউ উপহাস করলে আমাদের করনীয়: 

এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন, "আর যখন তুমি তাদেরকে দেখ, যারা আমার আয়াতসমূহের ব্যাপারে উপহাসমূলক সমালোচনায় রত আছে, তুমি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও, যতক্ষণ না তারা অন্য কথাবার্তায় লিপ্ত হয়। আর যদি শয়তান তোমাকে ভুলিয়ে দেয়, তবে স্মরণের পর যালিম সম্প্রদায়ের সাথে বসো না। আর তাদের কাজের জবাবদিহির দায়িত্ব তাদের নয়, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে। তবে উপদেশ দেওয়া তাদের কর্তব্য, যাতে তারাও তাকওয়া অবলম্বন করে।" (৬:৬৮,৬৯) 

"আর তিনি তো কিতাবে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছেন যে, যখন তোমরা শুনবে আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করা হচ্ছে এবং সেগুলো নিয়ে উপহাস করা হচ্ছে, তাহলে তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা অন্য কথায় নিবিষ্ট হয়, তা না হলে তোমরাও তাদের মত হয়ে যাবে। নিশ্চয় আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদের সকলকে জাহান্নামে একত্রকারী।" (৪:১৪০) 

"সুতরাং তাদের কি হল যে, তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না? আর যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করে শোননো হয়, তখন তারা সিজদা করে না (অর্থাৎ আল্লাহর বিধি-বিধান সমূহ পাঠ করে শোননো হলে, তা মান্য করে না বা মেনে নেয়না)? বরং যারা অবিশ্বাস করে, তারাই মিথ্যা মনে করে।" (৮৪:২০-২২)


অবিশ্বাসীদের নিকট কুরআনের কথা বলতে গেলে তারা যা বলে,  এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন, 

"তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা হলে তুমি অবিশ্বাসীদের মুখমন্ডলে অসন্তোষের লক্ষণ দেখবে, যারা তাদের নিকট আমার আয়াত আবৃত্তি করে, তাদেরকে তারা আক্রমণ করতে উদ্যত হয়।  তুমি বল, ‘তবে কি আমি তোমাদেরকে এটা অপেক্ষা মন্দ কিছুর সংবাদ দেব? তা হল জাহান্নাম। যার প্রতিশ্রুতি আল্লাহ অবিশ্বাসীদেরকে দিয়েছেন এবং তা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।"’ (২২:৭২) 

"অবশ্যই তোমাদেরকে তোমাদের ধন-সম্পদ ও তোমাদের নিজ জীবন সম্পর্কে পরীক্ষা করা হবে। আর অবশ্যই তোমরা শুনবে তোমাদের পূর্বে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে এবং মুশরিকদের পক্ষ থেকে অনেক কষ্টদায়ক কথা। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর তবে নিশ্চয় তা হবে দৃঢ় সংকল্পের কাজ।" (৩:১৮৬) 

"অবিশ্বাসীরা যখন কুরআন শ্রবণ করে, তখন তারা যেন তাদের দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দেয়, এবং বলে, ‘এ তো এক পাগল।"’(৬৮:৫১) 

"আর অবিশ্বাসীরা বলে, তোমরা এ কুরআনের নির্দেশ শোন না এবং তা আবৃত্তির সময় শোারগোল সৃষ্টি কর, যাতে তোমরা জয়ী হতে পার।" (৪১:২৬) 

"আর যখন তার কাছে আমাদের আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন সে অহংকারে মুখ ফিরিয়ে নেয় যেন সে এটা শুনতে পায়নি, যেন তার কান দুটো বধির। অতএব তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ দিন।" (৩১:৭) 

"দুর্ভোগ প্রত্যেক ঘোর মিথ্যাবাদী পাপীর, যে আল্লাহর আয়াতসমূহের তিলাওয়াত শোনে অথচ ঔদ্ধত্যের সাথে অটল থাকে যেন সে তা শোনেনি। তাকে সংবাদ দিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির, যখন আমার কোন আয়াত সে অবগত হয় তখন তা নিয়ে পরিহাস করে। তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।" (৪৫:৭-৯) 

"আর যখন তাদের কাছে আমাদের সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয়, তখন যারা অস্বীকার করেছে তাদের কাছে সত্য আসার পর তারা বলে, এ তো সুস্পষ্ট জাদু।" (৪৬:৭)

"আর তাদের কাছে যখন আমার আয়াত পাঠ করা হয় তখন তারা বলে, ‘শুনলাম তো, ইচ্ছে করলে এ রকম কথা আমরাও বলতে পারি, এগুলো তো আগে কালের কেচ্ছা কাহিনী ছাড়া আর কিছুই না।" (৮:৩১) 

"সুতরাং তাদের কি হল যে, তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না? আর যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করে শোননো হয়, তখন তারা সিজদা(মান্য) করে না? বরং যারা অবিশ্বাস করে,তারাই মিথ্যা মনে করে।" (৮৪:২০-২২) 

"নিশ্চয় তুমি মৃতকে শুনাতে পারবে না, না পারবে বধিরকে আহবান শুনাতে, যখন তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে ফিরে যায়। আর তুমি অন্ধদেরকেও তাদের ভ্রষ্টতা থেকে হিদায়াতে আনতে পারবে না, তুমি শুধু তাদেরই শুনাতে পারবে যারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি বিশ্বাস করে, কারণ তারা আত্মসমর্পনকারী।"  (৩০:৫২,৫৩)(২৭:৮০,৮১) 

"তুমি কি শোনাতে পারবে বধিরকে? অথবা যে অন্ধ এবং যে ব্যক্তি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছে তাকে কি পারবে সৎ পথে পরিচালিত করতে?" (৪৩:৪০) 

"আর তাদেরকে ঐ ব্যক্তির বৃত্তান্ত পড়েশোানাও, যাকে আমি আমার আয়াতসমূহ দিয়েছিলাম, তারপর সে তা হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, অতঃপর শয়তান তার পিছনে লাগে, আর সে বিপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়। আমি ইচ্ছা করলে ঐ আয়াতসমূহ দ্বারা তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করতাম, কিন্তু সে দুনিয়ার প্রতি আসক্ত হয় এবং নিজ কামনা-বাসনার অনুসরণ করে। তার উদাহরণ কুকুরের মত, ওকে তুমি তাড়া করলে সে জিভ বের করে হাঁপায় এবং তুমি ওকে এমনি ছেড়ে দিলেও সে জিভ বের করে হাঁপাতে থাকে। যে সম্প্রদায় আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা মনে করে, তাদের উদাহরণ এটা। সুতরাং তুমি কাহিনী বিবৃত কর, যাতে তারা চিন্তা করে। যে সম্প্রদায় আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে ও নিজেদের প্রতি অনাচার করে, তাদের উদাহরণ কত নিকৃষ্ট!" (৭:১৭৫-১৭৭) 

"যাদেরকে তাওরাতের দায়িত্ব ভার অর্পণ করা হয়েছিল, কিন্তু তারা তা বহন করেনি, তারা গাধার মত! যে বহু পুস্তক বহন করে। কত নিকৃষ্ট সে সম্প্রদায়ের দৃষ্টান্ত যারা আল্লাহর আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করে ! আর আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হেদায়াত করেন না।"(৬২:৫)

০৫ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ  আল কুরআনেই মাবব জাতির জন্য একমাত্র সুস্পষ্ট দলীল ও বিশ্ববাসীদের জন্য একমাত্র উপদেশ গ্রন্থ !

এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন, "বল, সাক্ষ্য হিসেবে সবচেয়ে বড় বস্তু কী? বল, আল্লাহ আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী। আর এ কুরআন আমার প্রতি ওহী করা হয়েছে যাতে আমি এর সাহায্যে তোমাদেরকে আর যাদের কাছে তা পৌঁছাবে তাদেরকে সতর্ক করি। তোমরা কি এমন সাক্ষ্য দিতে পার যে, আল্লাহর সঙ্গে অন্য ইলাহও আছে? বল, আমি এমন সাক্ষ্য দেই না, বল তিনি তো এক ইলাহ আর তোমরা যে তাঁর অংশীদার স্থাপন কর, তা থেকে আমি সম্পূর্ণ মুক্ত।" (৬:১৯) 

"হে মানুষ,  তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের নিকট হইতে আসিয়াছে উপদেশ ও তোমাদের অন্তরে যে রোগ-ব্যধি আছে তাহার প্রতিকার এবং বিশ্বাসীদের জন্য পথ-নির্দেশ ও রহমত।" (১০:৫৭)

"নিশ্চয়ই এ কুরআন এমন একটি পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল, সোজা ও সুপ্রতিষ্ঠিত। আর যারা সৎকাজ করে, সেই বিশ্বাসীদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার।\ (১৭:৯) 

"এ কুরআন মানবজাতির জন্য সুস্পষ্ট দলীল এবং নিশ্চিত বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথনির্দেশ ও রহমত। (৪৫:২০) 

"এ কুরআন তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ব্যতীত কিছু নয়।" (১২:১০৩,১০৪)

এ কুরআন তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ। (৩৮:৮৭) (৬৮:৫২) (৮১:২৭)। 

"এ কুরআন তো বিশ্বাসীদের জন্য এটি উপদেশ।" (৭:২) 

"এ তো কুরআন মুত্তাকীদের জন্য অবশ্যই এক উপদেশ।" (৬৯:৪৮) 

"আর বল,সত্য তোমাদের রবের পক্ষ থেকে। অতএব যার ইচ্ছা বিশ্বাস করুক ও যার ইচ্ছা প্রত্যাখ্যান করুক। আমি সীমালংঘনকারীদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি অগ্নি, যার বেষ্টনী তাদেরকে পরিবেষ্টন করে থাকবে।" (১৮:২৯) 

"প্রকৃত সত্য তোমার রবের পক্ষ থেকে। সুতরাং তুমি কখনো সন্দেহ পোষণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।" (২:১৪৭)(৩:৬০) 

"এটা উপদেশ। অতএব, যার ইচ্ছা, সে তার রবের দিকে পথ অবলম্বন করুক।" (৭৩:১৯) 

”কখনও না, এটা তো উপদেশ মাত্র। অতএব, যার ইচ্ছা, সে একে স্মরণ করুক।" (৭৪:৫৪-৫৫) (৮০:১১-১২) 

"এটা উপদেশ, অতএব যার ইচ্ছা হয় সে তার রবের পথ অবলম্বন করুক।" (৭৬:২৯) 

"এটা (কুরআন) বিতাড়িত শয়তানের উক্তি নয়। অতএব, তোমরা কোথায় যাচ্ছ? এটা তো কেবল বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ। তোমাদের মধ্যে যে সরল পথে চলতে চায় তার জন্য।" (৮১:২৫-২৮) 

"নিশ্চয় আল-কুরআন সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী বাণী। এবং এটা নিরর্থক নয়।" (৮৬:১৩,১৪) 

"আল্লাহর নিকট হতে এক রাসূল (বার্তা বাহক), যে আবৃত্তি করে পবিত্র গ্রন্থ, যাতে আছে সঠিক বিধান।" (৯৮:২,৩) 

"আমি তাকে কাব্য রচনা করতে শিখাইনি এবং এটা তার পক্ষে শোভনীয় নয়। ইহাতো শুধু উপদেশ এবং সুস্পষ্ট কুরআন। যাতে সে জীবিত ব্যক্তিদেরকে সতর্ক করতে পারে এবং অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে শাস্তির কথা সত্য হতে পারে।" (৩৬:৬৯,৭০) 

"তোমাদের সঙ্গী বিভ্রান্ত নয়, বিপথগামীও নয়। আর সে মনগড়া কথাও বলে না। তা তো অহী,যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ হয়।" (৫৩:২-৪) 

"অতএব, তোমরা মানুষকে ভয় করো না এবং আমাকে ভয় কর এবং আমার আয়াত সমূহের বিনিময়ে স্বল্পমূল্যে গ্রহণ করো না,আল্লাহ যাহা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী যাহারা বিচার ফয়সালা করে না তারাই, তারাই কাফের।" (৫:৪৪) 

"আল্লাহ যাহা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী যাহারা বিচার ফয়সালা করে না তারাই জালেম।" (৫:৪৫) 

"আল্লাহ যাহা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী যাহারা বিচার ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী।" (৫:৪৭) 

"তিনিই  অল্লাহ  তিনি ব্যতীত  কোন ইলাহ  নাই, দুনিয়া ও আখিরাতে  সমস্ত  প্রশংসা  তাঁহারই,বিধান তাঁহারই, তোমরা  তাঁহারই   দিকে  প্রত্যাবর্তিত  হবেই।" (২৮:৭০) 

"যিনি তোমাদের  জন্য কুরআনকে  করিয়াছেন  বিধান।"(২৮:৮৫)

০৬ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে, একমাত্র আল্লাহর কিতাব আল কুরআন দিয়েই সবাইকে উপদেশ দিতে হবে। 

এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন, 

"বল, সাক্ষ্য হিসেবে সবচেয়ে বড় বস্তু কী? বল আল্লাহ সাক্ষী আমার ও তোমাদের মধ্যে। আর এ কুরআন আমার কাছে ওহী করে পাঠানো হয়েছে যেন তোমাদেরকে ও যার কাছে এটা পৌঁছবে তাদেরকে এর মাধ্যমে আমি সতর্ক করি।" (৬:১৯,৫১,৭০,৯২) 

"তারা যা বলে, তা আমি সম্যক অবগত আছি, তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও, সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে, তাকে কুরআনের সাহায্যে উপদেশ দান কর।" (৫০:৪৫) 

"সেদিন দুর্ভোগ অস্বীকারকারীদের জন্য। সুতারাং উহারা কুরআনের পরিবর্তে আর কোন হাদীসে বা কথায় বিশ্বাস স্থাপন করবে?" (৭৭:৪৯-৫০)  

"বরং তাদের প্রত্যেকেই চায় তাদের প্রত্যেককে একটি উম্মুক্ত গ্রন্থ দেয়া হোক। না, ইহা হইবার নয় বরং তারা আখিরাতকে ভয় করে না। না, এটা হইবার নয়, কুরআন সকলের জন্য উপদেশবানী। অতএব যার ইচ্ছা, সে এটা হতে উপদেশ গ্রহণ করুক।" (৭৪:৫২-৫৫) 

"নিশ্চয় যিনি তোমার প্রতি কুরআনকে বিধান স্বরূপ দিয়েছেন, আর তোমার প্রতি আল্লাহর আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর কেহ যেন তোমাকে কিছুতেই সেগুলি হতে বিরত না রাখে। তুমি তোমার রবের দিকে আহবান করতে থাক এবং কিছুতেই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা।" (২৮:২৬-৮৭) 

"এটা কি তাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, আমি তোমার প্রতি কিতাব অবর্তীণ করেছি যা তাদের সম্মুখে পাঠ করা হয়, বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য অবশ্যই এতে অনুগ্রহ ও উপদেশ রয়েছে।" (২৯:৫১)  

"আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি, তারা যথাযথভাবে সত্য বুঝে পাঠ করে, আর তারাই এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী, আর যারা এর প্রতি অবিশ্বাস করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।" (২:১২১) 

"সুতরাং তাদের কি হল যে, তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না? আর যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করে শোননো হয়, তখন তারা সিজদা করে না (অর্থাৎ আল্লাহর বিধি-বিধান সমূহ পাঠ করে শোননো হলে, তা মান্য করে না বা মেনে নেয়না)? বরং যারা অবিশ্বাস করে, তারাই মিথ্যা মনে করে।" (৮৪:২০-২২)

"তোমাদের কী হয়েছে, তোমরা এ কেমন সিদ্ধান্ত দিচ্ছ?  তোমাদের কাছে কি কোন কিতাব আছে যাতে তোমরা অধ্যায়ন কর যে, নিশ্চয় তোমাদের জন্য তাতে রয়েছে যা তোমরা পছন্দ কর? অথবা তোমাদের কি আমাদের সাথে কিযামত পর্যন্ত বলবৎ এমন কোন অঙ্গীকার রয়েছে যে, তোমরা নিজেদের জন্য যা স্থির করবে তাই পাবে? তুমি তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর, কে এ ব্যাপারে যিম্মাদার?" (৬৮:৩৬-৪০) 

"বরং তাদের মধ্যকার প্রত্যেকেই কামনা করে যে, তাকে একটি উন্মুক্ত গ্রন্থ দেওয়া হোক। কখনও নয়! বরং তারা আখিরাতকে ভয় করে না। না এটা হবার নয়। নিশ্চয়এ কুরআন তো সকলের জন্য উপদেশবাণী। অতএব যার ইচ্ছে সে তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করুক।" (৭৪:৫২-৫৫) 

"সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যারোপকারীদের জন্য। সুতরাং তারা এ কুরআনের পরিবর্তে আর কোন কথায় বিশ্বাস স্থাপন করবে?" (৭৭:৪৯-৫০) 

"এটা কি তাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যা তাদের নিকট পাঠ করা হয়? নিশ্চয় এর মধ্যে রহমত ও উপদেশ রয়েছে বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য।" (২৯:৫১) 

"তারা যা বলে তা আমি জানি, তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও। সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে তাকে উপদেশ দান কর কুরআনের সাহায্যে।" (৫০:৪৫) (৬:১৯,৫১,৭০,৯২) 

"সুতরাং তুমি অবিশ্বাসীদের আনুগত্য করো না এবং তুমি কুরআনের সাহায্যে তাদের  বিরুদ্ধে কঠোর সংগ্রাম চালিয়ে যাও।" (২৫:৫২) 

"আর সত্য তো তোমার রবের নিকট থেকে আগত, অতএব তুমি সন্দিহানদের অন্তর্ভুক্ত হইও না" (২:১৪৭) (৩:৬০) (১৮:২৯) 

"আর যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল, তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করে দিবে। তারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে এবং তারা কেবল অনুমানভিত্তিক কথাবার্তাই বলে থাকে।" (৬:১১৬) 

"বল, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ পেশ কর।" (২:১১১) (২৭:৬৪) (২৮:৭৫) (২১:২৪) 

"বল, তোমরা সত্যবাদী হলে এখন আল্লাহর কাছ থেকে কোন কিতাব আন, যা (কুরআন ও তাওরাত) এতদুভয় থেকে উত্তম পথপ্রদর্শক হয়। আমি সেই কিতাব অনুসরণ করব। অতঃপর তারা যদি তোমার কথায় সাড়া না দেয়, তবে জানবে তারা শুধু নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আল্লাহর হেদায়েতের পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? নিশ্চয় আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে পথ দেখান না।" (২৮:৪৯,৫০)  

"আর যে বিষয় তোমার কোন জ্ঞান নাই তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তকরণ-এদের প্রতিটির ব্যাপারে সে জিজ্ঞাসিত হবে।" (১৭:৩৬)

০৭ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে, যারা উলুল আলবাব (মানে বোধশক্তি সমপন্ন ব্যক্তি বা বিবেকবোধ সমপন্ন ব্যক্তি অর্থাৎ যারা ন্যায় অন্যায় পার্থক্য করতে পারে) তারাই একমাত্র আল্লাহর কিতাব আল কুরআন থেকে উপদেশ গ্রহণ করবে!

এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন, 

"বল, অপবিত্র আর পবিত্র সমান নয়। যদিও অপবিত্র বস্তুর প্রাচুর্য তোমাকে আকৃষ্ট করে। অতএব হে বোধ শক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিরা তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফল হতে পারে।" (৫:১০০) 

"অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, হে বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিরা, যারা বিশ্বাস করেছো। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাছে অবতীর্ণ করেছেন এক উপদেশ।" (৬৫:১০) 

"যে ব্যক্তি জানে যে, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা সত্য, সে কি তার মত! যে অন্ধ? কেবল বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরাই উপদেশ গ্রহণ করে।" (১৩:১৯) 

"তিনি যাকে ইচ্ছা বিশেষ জ্ঞান দান করেন এবং যাকে বিশেষ জ্ঞান দান করা হয়, সে প্রভুত কল্যাণকর বস্তু প্রাপ্ত হয়। উপদেশ তারাই গ্রহণ করে, যারা বিবেকবোধ সম্পন্ন বা জ্ঞান বান ব্যক্তি।" (২:২৬৯) 

"এটা মানুষদের জন্য একটা বার্তা। আর যার দ্বারা তাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে, আর যাতে তারা জানতে পারে যে, তিনি এক ইলাহ আর যাতে বোধশক্তি সম্পন্নরা মানুষেরাই উপদেশ গ্রহণ করে।" (১৪:৫২) 

"এটি এক কল্যাণময় কিতাব। ইহা আমি তোমার উপর অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরা উপদেশ গ্রহণ করে।" (৩৮:২৯) 

"বল, যারা জানে এবং যারা জানে না তারা কি সমান? বোধশক্তি সম্পন্ন লোকেরাই শুধু উপদেশ গ্রহণ করে। (৩৯:৯) অতএব আমার বান্দাদেরকে সুসংবাদ দাও।  যারা মনোযোগের সাথে কথা শোনে এবং তার মধ্যে যা উত্তম তা অনুসরণ করে। আর তাদেরকেই আল্লাহ্ হিদায়াত দিয়েছেন এবং তারাই হচ্ছে বোধ শক্তি সম্পন ব্যক্তি।"(৩৯:১৭,১৮)

"আর বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরাই উপদেশ গ্রহণ করে।" (৩:৭) 

"আর আমার আয়াতসমূহ কেবল তারাই বিশ্বাস করে, যারা এর দ্বারা তাদেরকে উপদেশ দেয়া হলে এর আদেশ নির্দেশ গুলো মেনে নেয় এবং তাদের রবের প্রশংসাসহ তাসবীহ করে। আর তারা অহঙ্কার করে না। তারা শয্যা ত্যাগ করে তাদের রবকে ডাকে আশায় ও আশংকায় এবং তাদেরকে যে রিযিক দান করেছি তা হতে তারা ব্যয় করে।" (৩২:১৫) 

"যে ভয় করে, সে উপদেশ গ্রহণ করবে। আর যে, হত ভাগা, সে তা উপেক্ষা করবে। সে মহা-অগ্নিতে প্রবেশ করবে। অতঃপর সেখানে সে মরবে ও না, জীবিত ও থাকবে না। অবশ্যই সাফল্য লাভ করবে সে, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে,আর তার রবের নাম স্মরণ করে, অতঃপর দ্বায়িত্ব কর্তব্য বাস্তবায়ন করে।" (৮৭:১০-১৫)  

"নিশ্চয় তুমি মৃতকে শুনাতে পারবে না, না পারবে বধিরকে আহবান শুনাতে, যখন তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে ফিরে যায়। আর তুমি অন্ধদেরকেও তাদের ভ্রষ্টতা থেকে পথে আনতে পারবে না, তুমি শুধু তাদেরই শুনাতে পারবে যারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি বিশ্বাস করে, কারণ তারা আত্মসমর্পনকারী।" (৩০:৫২,৫৩) (২৭:৮০,৮১) (৪৩:৪০) 

"আর তার চেয়ে বড় যালেম আর কে, যাকে স্বীয় রবের আয়াতসমূহের মাধ্যমে উপদেশ দেয়ার পর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। নিশ্চয় আমি অপরাধীদের কাছ থেকে প্রতিশোধ  গ্রহণকারী।" (৩২:২২) 

"আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি, তারা যথাযথভাবে সত্য বুঝে পাঠ করে, আর তারাই এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী, আর যারা এর প্রতি অবিশ্বাস করে,তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।" (২:১২১) 

"সুতরাং তাদের কি হল যে,তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না? আর যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করে শোননো হয়, তখন তারা সিজদা করে না (অর্থাৎ আল্লাহর বিধি-বিধান সমূহ পাঠ করে শোননো হলে, তা মান্য করে না বা মেনে নেয়না)? বরং যারা অবিশ্বাস করে, তারাই মিথ্যা মনে করে।" (৮৪:২০-২২)

০৮ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ  আল-কুরআনের কথা বলতে গেলে, অবিশ্বাসীদের কাছ থেকে যে সকল কথা শুনতে হবে এবং আমাদের করণীয়!!!

এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন, "অবিশ্বাসীরা যখন কুরআন শ্রবণ করে, তখন তারা যেন তাদের দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দেয় এবং বলে, এ তো এক পাগল।" (৬৮:৫১) 

"আর যখন তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা হয়, তখন তুমি অবিশ্বাসীদের মুখমন্ডলে অসন্তোষের লক্ষণ দেখবে, যারা তাদের নিকট আমার আয়াত আবৃত্তি করে, তাদেরকে তারা আক্রমণ করতে উদ্যত হয়।" (২২:৭২) 

"আর অবশ্যই তোমরা শুনবে তোমাদের পূর্বে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে এবং মুশরিকদের পক্ষ থেকে অনেক কষ্টদায়ক কথা। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর তবে নিশ্চয় তা হবে দৃঢ় সংকল্পের কাজ।" (৩:১৮৬) 

"আর যখন তাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টরূপে পাঠ করা হয়, তখন অবিশ্বাসীরা বিশ্বাসীদেরকে বলে, দুই দলের মধ্যে কোনটি মর্যাদায় শ্রেষ্ঠতর এবং মজলিস হিসেবে উত্তম?" (১৯:৭৩) 

"আর অবিশ্বাসীরা বলে, তোমরা এ কুরআনের নির্দেশ শোন না এবং তা আবৃত্তির সময় শোরগোল সৃষ্টি কর, যাতে তোমরা জয়ীহতে পার।" (৪১:২৬) 

"আর যখন তার কাছে আমাদের আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন সে অহংকারে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন সে এটা শুনতে পায়নি, যেন তার কান দুটো বধির। অতএব তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ দিন।" (৩১:৭) 

"যখন তাদের কাছে যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াত আবৃত্তি করা হয় আর সত্য যখন তাদের কাছে উপস্থিত হয়, তখন কাফিররা বলে- এটাতো প্রকাশ্য যাদু।" (৪৬:৭) (৪৩:৩০) 

"যখন তার কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয়, তখন সে বলে, এটাতো পূর্ববর্তীদের রূপকথা।" (৮৩:১৩) (৬৮:১৫) 

"আমার আয়াতসমূহ তোমাদের সামনে অবশ্যই তিলাওয়াত করা হত, তারপর তোমরা তোমাদের পেছন ফিরে চলে যেতে, দম্ভ ভরে, এ বিষয়ে অর্থহীন গল্প গুজব করতে।" (২৩:৬৬,৬৭) 

"আর তাদের কাছে যখন আমার আয়াত পাঠ করা হয় তখন তারা বলে, ‘শুনলাম তো, ইচ্ছে করলে এ রকম কথা আমরাও বলতে পারি, এগুলো তো আগে কালের কেচ্ছা কাহিনী ছাড়া আর কিছুই না।" (৮:৩১) 

"আর যখন আমার আয়াত, যা সুস্পষ্ট, তাদের কাছে পাঠ করা হয়, তখন যারা আমার সাক্ষাতের আশা পোষণ করে না তারা বলে, অন্য এক কুরআন আন এটা ছাড়া বা এটাকে বদলাও।" (১০:১৫) 

"আর যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হত তখন তারা বলত, এতো এমন এক ব্যক্তি যে তোমাদের বাধা দিতে চায় তা থেকে যার ইবাদাত তোমাদের পিতৃপুরুষগণ করত। তারা আরও বলে, এটি বানোয়াট মিথ্যা বৈ কিছু নয়। আর কাফিরদের নিকট যখনই সত্য আসে তখন তারা বলে, ‘এতো কেবল এক সুস্পষ্ট যাদু।" (৩৪:৪৩) 

"আর তাদের কাছে যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের এ কথা বলা ছাড়া আর কোন যুক্তি থাকে না যে, তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকলে আমাদের পিতৃপুরুষদের জীবিত করে নিয়ে এসো।" (৪৫:২৫) 

"দুর্ভোগ প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপীর। যে আল্লাহর আয়াতের আবৃত্তি শোনে, অথচ ঔদ্ধত্যের সাথে অটল থাকে, যেন সে তা শোনেনি, তাকে সংবাদ দাও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির। যখন আমার কোন আয়াত সে অবগত হয় তখন সে তা নিয়ে পরিহাস করে। তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।" (৪৫:৭-৯) 

"আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি, তারা যথাযথভাবে সত্য বুঝে পাঠ করে, আর তারাই এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী, আর যারা এর প্রতি অবিশ্বাস করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।" (২:১২১) 

"সুতরাং তাদের কি হল যে, তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না? আর যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করে শোননো হয়, তখন তারা সিজদা করে না (অর্থাৎ আল্লাহর বিধি-বিধান সমূহ পাঠ করে শোননো হলে, তা মান্য করে না বা মেনে নেয়না)? বরং যারা অবিশ্বাস করে, তারাই মিথ্যা মনে করে।" (৮৪:২০-২২)

"আর যখন তুমি তাদেরকে দেখ, যারা আমার আয়াতসমূহের ব্যাপারে উপহাসমূলক সমালোচনায় রত আছে, তুমি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও, যতক্ষণ না তারা অন্য কথাবার্তায় লিপ্ত হয়। আর যদি শয়তান তোমাকে ভুলিয়ে দেয়, তবে স্মরণের পর যালিম সম্প্রদায়ের সাথে বসো না। আর তাদের কাজের জবাবদিহির দায়িত্ব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের নয়। তবে উপদেশ দেওয়া তাদের কর্তব্য, যাতে তারাও তাকওয়া অবলম্বন করে।" (৬:৬৮,৬৯) 

"আর তিনি তো কিতাবে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছেন যে, যখন তোমরা শুনবে আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করা হচ্ছে এবং সেগুলো নিয়ে উপহাস করা হচ্ছে, তাহলে তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা অন্য কথায় নিবিষ্ট হয়, তা না হলে তোমরাও তাদের মত হয়ে যাবে। নিশ্চয় আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদের সকলকে জাহান্নামে একত্রকারী।" (৪:১৪০) 

"আর তারা যা বলে, তা আমি সম্যক অবগত আছি, তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও, সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে, তাকে কুরআনের সাহায্যে উপদেশ দান কর।" (৫০:৪৫) 

"অতএব তুমি যেভাবে আদিষ্ট হয়েছ, সেইভাবে সুদৃঢ় থাক এবং সেই লোকেরাও যারা অনুশোচনা করে তোমার সাথে রয়েছে। আর সীমালংঘন করো না। নিশ্চয় তিনি তোমাদের কার্যকলাপ সম্যকভাবে প্রত্যক্ষ করেন। আর যারা যুলম করেছে তোমরা তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো না, অন্যথায় আগুন তোমাদেরকে স্পর্শ করবে এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক থাকবে না। অতঃপর তোমরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না।" (১১:১১২,১১৩)

নবী-রাসুলদের নিয়ে সমালোচনা ও কুটোক্তি সম্পর্কে কুর'আনের অনেক আয়াত আছে। কিন্তু সমালোচনা ও কুটক্তির জন্য শাস্তির কোনো বিধান দেয়া হয়নি, অন্তত তেমন একটি আয়াতও নেই। সমালোচনা ও কুটোক্তির জবাবে নবী ও বিশ্বাসীদের প্রতি উপদেশ ছিলো যুক্তি ও ন্যায়বিচারের সাথে কথা বলার, অনর্থক বিতর্ক এড়িয়ে চলার, অজ্ঞ শত্রুর প্রতিও শান্তিসূচক সম্বোধনের, ধৈর্যধারণের ও সর্বোপরি আললাহ'র উপর নির্ভর করার। সত্য অস্বীকারীদের প্রতি আললাহ'র শাস্তি আসবে যথাসময়ে এমন প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। নবী/ রাসুলদের নিয়ে সমালোচনা ও কুটোক্তি সম্পর্কে কতিপয় কুর’আন লক্ষ করা যাক। নবীদের সম্পর্কে নানা অপবাদ দেয়া হয়েছিলো, সে সম্পর্কে কুর'আনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে:

'গনক', 'পাগল', ৫২:২৯) 'জাদুকর', 'মিথ্যুক', (৪০:২৪) 'মিথ্যাবাদী', 'রূপকথা বর্ণনাকারী ও প্রতারক', (২৫:৪-৬) 'উম্মাদ' (কুর'আন,১৫:৬) 'জালিয়াত' (১৬:১০১) 'নির্বোধ' (৭:৬৬) । কিন্তু আমরা কি পেয়েছি একটি আয়াত ও যেখানে বলা হয়েছে নবীকে কুটক্তির জন্য প্রতিশোধ নেয়া হোক? কুটোক্তিকারীকে হত্যা করা হোক? না নেই, কোথাও এজন্য হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়নি। অপমানের বিপরীতে আললাহ তাঁর নবী/রাসুল ও বিশ্বাসীদের আশ্বস্ত করেছেন। 'তাদের কথায় দুঃখ পেও না।' (১০:৬৫)'নিশ্চয় বিদ্রূপকারীদের বিরুদ্ধে তোমার জন্য আমিই যথেষ্ট।' (কুর'আন, ১৫:৯৫) 'নিশ্চয় তোমার পূর্বেও রাসুলদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা হয়েছিলো, তারপর তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতো তাই তাদেরকে পরিবেষ্টন করলো।' (২১:৪১) পক্ষান্তরে বিদ্রূপকারীদের বিরুদ্ধে কুর'আন যে উপদেশ দিয়েছেঃ 

"‘আর যখন তাদেরকে দেখো, যারা আমার আয়াতসমূহ নিয়ে অসার কথাবার্তায় লিপ্ত থাকে, তখন তাদের কাছ থেকে সরে যাও যতোক্ষণ না তারা অন্য আলোচনায় প্রবৃত্ত হয়; আর যদি শয়তান তোমাকে ভুলিয়ে দেয় তবে স্মরণে আসার পর অন্যায়কারীদের সাথে বসবে না।’" (৬:৬৮)

"‘আর ইতোমধ্যে তিনি তোমাদের কাছে কিতাবে নাযিল করেছেন এই যে, যখন তোমরা শুনবে আললাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করা হচ্ছে ও এর প্রতি বিদ্রূপ করা হচ্ছে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতোক্ষণ না তারা অন্য বিষয়ে আলাপ করে; তা না হলে নিশ্চয় তোমরা তাদেরই মতো হয়ে যাবে। নিশ্চয়, আললাহ মুনাফিক (যারা ভন্ড) ও কাফেরদের (সত্য অস্বীকারকারী অকৃতজ্ঞ যারা) একত্রে জাহান্নামে সমবেত করবেন।’" ( ৪:১৪০)

‘মানুষকে তুমি বিচারবোধ ও সদুপদেশের মাধ্যমে (বিল হিকমাতি ওয়া আল মাও’ইযাতি) তোমার প্রতিপালকের পথে আহবান করো, তাদের সাথে সবচেয়ে উত্তম উপায়ে আলাপ করো, নিশ্চয় তোমার প্রতিপালকই জানেন কারা তাঁর পথ থেকে বিচ্যূত হয়েছে এবং তিনিই জানেন সঠিক পথপ্রাপ্তদের ব্যাপারে।’ (১৬:১২৫)

অর্থাৎ প্রতিশোধ নয়, সহ্য ও ধৈর্যধারণের উপদেশ দেয়া হয়েছে, মহানুভবতা ও বুদ্ধিমত্তার সাথে এড়িয়ে চলার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এই কুর'আনের শিক্ষা।

ইসলাম রক্ষার নামে ঘৃণা-সহিংসতা অন্ধ মোল্লাতন্ত্রের পরিচর্যায় গড়ে ওঠা বীজতলা ছাড়া কিছু নয়। এই বীজতলায় জন্ম নিয়ে একদিকে বেড়ে উঠছে ইসলামিক চরমপন্থীরা, অন্যদিকে সৃষ্টি হচ্ছে বিশ্বব্যাপী উগ্র মুসলিম বিদ্বেষ। আবার, উগ্র মুসলিম বিদ্বেষীরা নতুন মাত্রায় জন্ম দিচ্ছে অমুসলিমদের প্রতি মোল্লাতান্ত্রিক সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ।

০৯ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ   আল কুরআনের কথা বলতে গেলে, কাউকে অবজ্ঞা করা যাবে না!

এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন, 

"সে ভ্রূকুঞ্চিত করলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন। কারণ তার কাছে এক অন্ধলোক আগমন করল। তুমি কি জান, সে হয়তো পরিশুদ্ধহত অথবা উপদেশ গ্রহণ করতো এবং উপদেশ তার উপকারে আসতো। অপরপক্ষে যে বেপরোয়া তুমি তার পিছনে মশগুল। সে পরিশুদ্ধহত না হলে তোমার কোন দোষ নেই। যে তোমার কাছে দৌড়ে আসলো এমতাবস্থায় যে, সে ভয় করে। তুমি তাকে অবজ্ঞা করলে। কখন ও এরূপ করবে না, এটা উপদেশবানী। অতএব, যে ইচ্ছা করবে, সে একে গ্রহণ করবে।" (৮০:১-১২) 

"আর তুমি তাড়িয়ে দিয়ো না তাদেরকে, যারা নিজ রবকে সকাল সন্ধ্যায় ডাকে, তারা তার সন্তুষ্টি চায়। তাদের কোন হিসাব তোমার উপর নেই এবং তোমার কোন হিসাব তাদের উপর নেই, ফলে তুমি যদি তাদেরকে তাড়িয়ে দাও তবে তুমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে।"(৬:৫২) 

"আর তুমি নিজকে ধৈর্যশীল রাখ তাদের সাথে, যারা সকাল-সন্ধ্যায় তাদের রবকে ডাকে, তার সন্তুষ্টির উদ্দেশে এবং দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য কামনা করে তাদের দিক হতে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ো না। আর ঐ ব্যক্তির আনুগত্য করো না, যার অন্তরকে আমি আমার যিকির (উপদেশ বানী) থেকে গাফেল করে দিয়েছি এবং যে তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে এবং যার কর্ম বিনষ্ট হয়েছে।"(১৮:২৮) 

"আর অংশীবাদীদের মধ্যে কেউ তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করলে, তুমি তাকে আশ্রয় দাও যাতে সে আল্লাহর বাণী শুনতে পায়,তারপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌছিয়ে দাও, কারণ তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা জানে না।"(৯:৬) 

"অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের কারণে তুমি তাদের জন্য নম্র হয়েছিলে। আর যদি তুমি কঠোর স্বভাবের, কঠিন হৃদয়সম্পন্ন হতে, তবে তারা তোমার আশপাশ থেকে সরে পড়ত। সুতরাং তাদেরকে ক্ষমা কর এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। আর কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরার্মশ কর। অতঃপর যখন সংকল্প করবে তখন আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করবে। নিশ্চয় আল্লাহ তাওয়াক্কুলকারীদেরকে ভালবাসেন।" (৩:১৫৯) 

"আর তুমি তোমার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দাও। এবং যারা তোমার অনুসরণ করে, সেই সব বিশ্বাসীদের  প্রতি বিনয়ী হও। তারপর যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বল, নিশ্চয় তোমরা যা কর তার জন্য আমি দায়ী নই। তুমি নির্ভর কর পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু আল্লাহর উপর।" (২৬:২১৪-২১৭)

"আর অবশ্যই আমি নূহকে প্রেরণ করেছিলাম তার সম্প্রদায়ের কাছে এই বার্তা দিয়ে যে, ‘আমি তোমাদের জন্য স্পষ্ট সতর্ককারী। যেন তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত না কর। নিশ্চয় আমি তোমাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক দিবসের আযাবের ভয় করছি। অতঃপর তার সম্প্রদায়ের মধ্যে যেসব নেতৃস্থানীয় লোক অবিশ্বাসী ছিল,তারা বলল, আমরা তো তোমাকে আমাদেরই মত মানুষ দেখতে পাচ্ছি। আর আমরা দেখছি যে, শুধু ঐ লোকেরাই না বুঝে তোমার অনুসরণ করছে, যারা আমাদের মধ্যে নিতান্তই হীন ও ইতর শ্রেণীর লোক। আর আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব আমরা দেখছি না বরং আমরা তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী বলে মনে করছি। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা চিন্তা-ভাবনা করে দেখ, আমি যদি আমার রবের পক্ষ  হতে প্রাপ্ত সুস্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকি আর তিনি তার পক্ষ থেকে আমাকে অনুগ্রহ প্রদান করে থাকেন যা তোমাদের দৃষ্টি থেকে গোপনে রাখা হয়েছে, এমতাবস্থায় তা গ্রহণ করার ব্যাপারে আমি কি তোমাদেরকে বাধ্য করতে পারি যখন তোমরা তা অপছন্দ কর?  আর হে আমার সম্প্রদায়, এর বিনিময়ে আমি তোমাদের কাছে কোন সম্পদ চাই না। আমার প্রতিদান শুধু আল্লাহর কাছে। আর আমি তো বিশ্বাসীদেরকে তাড়িয়ে দিতে পারি না। নিশ্চয় তারা তাদের রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে। কিন্তু আমি তো দেখছি তোমরা এক নির্বোধ সম্প্রদায়। আর হে আমার সম্প্রদায়! আমি যদি তাদেরকে তাড়িয়েই দিই, তবে আল্লাহর শাস্তি হতে কে আমাকে রক্ষা করবে? তোমরা কি উপদেশ গ্রহণ করবে না? আর আমি তোমাদেরকে বলছি না যে, আমার নিকট আল্লাহর ধন-ভান্ডার আছে। আমি অদৃশ্যের কথাও জানি না। আর আমি এটাও বলি না যে, আমি ফিরিশতা। আর যারা তোমাদের চোখে হীন ও ইতর শ্রেণরি লোক আমি তাদের সম্বন্ধে এটা বলি না যে, আল্লাহ কখনো তাদেরকে কোন মঙ্গল দান করবেন না,তাদের অন্তরে যা কিছু আছে, তা আল্লাহ উত্তমরূপে জানেন। এরূপ বললে আমি অবশ্যই যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।" (১১:২৫-৩১) 

"সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। তারা বলল, ‘আমরা কি তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব, অথচ নিম্নশ্রেণীর লোকেরা তোমাকে অনুসরণ করছে? নূহ বলল, ‘তারা কি করে তা জানা আমার কী প্রয়োজন? তাদের হিসাব গ্রহণ তো কেবল আমার রবের দায়িত্বে, যদি তোমরা বুঝতে।  আর  বিশ্বাসীদের তাড়িয়ে দেওয়া আমার কাজ নয়। আমি তো কেবল একজন স্পষ্ট সতর্ককারী। তারা বলল, হে নূহ তুমি যদি বিরত না হও তবে অবশ্যই তুমি পাথরের আঘাতে  নিহতদের অন্তর্ভুক্ত হবে।" (২৬:১১০-১১৬)

"ত্ব-সীন-মীম। এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত। তারা বিশ্বাসী হচ্ছেনা বলে তুমি হয়ত মনকষ্টে আত্মবিনাশী হয়ে পড়বে। আমি ইচ্ছা করলে আসমান থেকে তাদের উপর এমন নিদর্শন অবতীর্ণ করতাম ফলে তার প্রতি তাদের ঘাড়গুলো নত হয়ে যেত অর্থাৎ তারা বিশ্বাসী হতে বাধ্য হত। আর যখনই তাদের কাছে পরম করুণাময়ের পক্ষ থেকে কোন নতুন উপদেশ আসে তখনই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। অতএব অবশ্যই তারা অস্বীকার করেছে। সুতরাং তারা যা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করত তার প্রকৃত বার্তা তাদের নিকট শীঘ্রই এসে পড়বে।" (২৬:১-৬) 

"তারা এ বাণীতে (কুরআনে) বিশ্বাস না করার কারণে মনে হচ্ছে  তুমি তার দুঃখে  আত্মবিনাশী হয়ে পড়বে। নিশ্চয় যমীনের উপর যা রয়েছে, তা আমি শোভা করেছি তার জন্য, যাতে আমি মানুষকে পরীক্ষা করতে পারি যে, তাদের মধ্যে কর্মে কে শ্রেষ্ঠ?"(১৮:৬,৭) 

"কাজেই তাদের কথাবার্তা তোমাকে যেন কষ্ট না দেয়, আমি জানি তারা যা গোপন করে ও প্রকাশ করে। (৩৬:৭৬) বল, পৃথিবীতে ভ্রমণ কর, অতঃপর দেখ অপরাধীদের পরিণাম কেমন হয়েছিল। আর তাদের জন্য দুঃখ করো না এবং তারা যে ষড়যন্ত্র করে তাতে মনক্ষুন্ন হয়ো না।" (২৭:৬৯,৭০)

"আর যদি তোমার রব ইচ্ছা করতেন, তাহলে বিশ্বের সকল লোকই বিশ্বাস করত। তবে তুমি কি বিশ্বাসী হওয়ার জন্য মানুষের উপর জবরদস্তি করবে?" (১০:৯৯) 

"দীন গ্রহণের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই। নিশ্চয় হিদায়াত বা সৎপথ স্পষ্ট হয়েছে ভ্রষ্টতা থেকে। অতএব, যে ব্যক্তি তাগূতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, অবশ্যই সে মজবুত রশি আঁকড়ে ধরে, যা ছিন্ন হবার নয়। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। আল্লাহই হচ্ছেন বিশ্বসীদের অভিভাবক। তিনি তাদেরকে অন্ধকার হতে আলোর দিকে নিয়ে যান, আর যারা অবিশ্বাস করেছে তাগুত তাদেও অভিভাবক, সে তাদেরকে আলো হতে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে।" (২:২৫৬,২৫৭) 

"কাউকে যদি  তার মন্দ কর্ম শোভনীয় করে দেখানো হয়, অতঃপর সে সেটাকে উত্তম মনে করে সে কি তার সমান, যে সৎকাজ করে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছে বিপথগামী করেন, আর যাকে ইচ্ছে সঠিক পথে পরিচালিত করেন। কাজেই তাদের জন্য আক্ষেপ করে নিজে ধ্বংস হয়ো না। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা জানেন।" (৩৫:৮) 

"আর যারা তাগুতের পূজা হতে দূরে থাকে এবং আল্লাহর অভিমুখী হয় তাদের জন্য আছে সুসংবাদ। অতএব সুসংবাদ দাও আমার বান্দাদেরকে। যারা মনোযোগ সহকারে কথা শুনে এবং তার মধ্যে যা উত্তম তা গ্রহণ করে তাদেরকে আল্লাহ সৎ পথে পরিচালিত করেন এবং তারাই বোধশক্তি সম্পন্ন।" (৩৯:১৭,১৮) 

"নিশ্চয় আমি তোমাকে প্রেরণ করেছি সত্যদ্বীনসহ, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে এবং তোমাকে আগুনের অধিবাসীদের সম্পর্কে  কোন প্রশ্ন করা হবে না।" (২:১১৯) 

"সেটা ছিল একটি উম্মত, যারা বিগত হয়েছে। তারা যা অর্জন করেছে, তা তাদের জন্য আর তোমরা যা অর্জন করেছ তা তোমাদের জন্য। আর তারা যা করত, সে সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে না।" (২:১৪১) 

"শাস্তির ফয়সালা যার উপর অবধারিত হয়ে গেছে, যে আছে জাহান্নামের আগুনে তুমি কি তাকে রক্ষা করতে পার?" (৩৯:১৯)

১০ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে, সালামুন আলা মুহাম্মদ দ্বীনের ক্ষেত্রে কুরআনের বাইরে কোনো কথা বলেন নাই এবং দ্বীনের ক্ষেত্রে নিজে কোন বিধান দেন নাই!  

এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন, 

"যেভাবে আমি তোমাদের মধ্যে একজন রাসূল (বার্তা বাহক) প্রেরণ করেছি তোমাদের মধ্য থেকে,যে তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে শোনায়, তোমাদেরকে পরিশুদ্ধ করে এবং কিতাব ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেয়। আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয় এমন কিছু যা তোমরা জানতে না।" (২:২৫১) 

"অবশ্যই আল্লাহ বিশ্বাসীদের উপর অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য থেকে তাদের প্রতি একজন রাসূল (বার্তা বাহক) পাঠিয়েছেন, যে তাদের কাছে তার আয়াতসমূহ পাঠ করে শোনায় এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে আর তাদেরকে কিতাব ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেয়। যদিও তারা ইতঃপূর্বে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে ছিল।" (৩:১৬৪) 

"তিনিই উম্মীদের (কিতাবের জ্ঞান না জানা) মধ্যে তাদের একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূল (বার্তা বাহক) রূপে যে তাদের নিকট পাঠ করে শোনায় তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও প্রজ্ঞা। ইতোপূর্বেতো তারা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।" (৬২:২) 

একজন রাসূল (বার্তা বাহক), যে "তোমাদের কাছে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করে শোনায় যাতে, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তাদেরকে তিনি অন্ধকার হতে আলোতে বের করে আনতে পারেন।" (৬৫:১১) 

"আল্লাহর নিকট হতে এক রাসূল (বার্তা বাহক), যে পাঠ করে শোনায় পবিত্র গ্রন্থ, যাতে আছে সঠিক বিধানসমূহ।" (৯৮:২,৩) 

"আমি রাসূল (বার্তা বাহক)  এই উদ্দেশেই প্রেরণ করেছি, যেন আল্লাহর নির্দেশে তার আনুগত্য করা হয়।" (৪:৬৪) 

"কোন মানুষের জন্য সংগত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, প্রজ্ঞা ও নবুওয়াত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও। বরং সে বলবে, ‘তোমরা রব্বানী হও। যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দিতে এবং তা অধ্যয়ন করতে’।" (৩:৭৯)

 

"তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে, তা থেকে পাঠ করে শুনাও।" (২৯:৪৫) 

"আর তোমার রবের কিতাব থেকে তোমার নিকট যে ওহী করা হয়, তুমি তা পাঠ করে শুনাও। তার বাণীসমূহের কোন পরিবর্তনকারী নেই।" (১৮:২৭) 

"এভাবে আমি তোমাকে পাঠিয়েছি এক জাতির প্রতি, যার পূর্বে বহু জাতি গত হয়েছে, তাদের নিকট পাঠ করার জন্য, যা আমি তোমার প্রতি ওহী করেছি।" (১৩:৩০) 

"আমি আরও আদিষ্ট হয়েছি কুরআন পাঠ করে শোনাইতে। অতঃপর যে ব্যক্তি সৎ পথ অনুসরণ করে, সে তা অনুসরণ করে নিজেরই কল্যাণের জন্য এবং কেহ ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করলে তুমি বলও, আমিতো শুধু সর্তককারীদের মধ্যে একজন।" (২৭:৯২) 

"আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি, তারা যথাযথভাবে সত্য বুঝে পাঠ করে, আর তারাই এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী, আর যারা এর প্রতি অবিশ্বাস করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।" (২:১২১) 

"সুতরাং তাদের কি হল যে, তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না? আর যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করে শোননো হয়, তখন তারা সিজদা করে না (অর্থাৎ আল্লাহর বিধি-বিধান সমূহ পাঠ করে শোননো হলে, তা মান্য করে না বা মেনে নেয়না)? বরং যারা অবিশ্বাস করে, তারাই মিথ্যা মনে করে।" (৮৪:২০-২২) 

"আর যখন তাদের সামনে আমার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টরূপে পাঠ করা হয়, তখন, যারা আমার সাক্ষাতের আশা রাখে না, তারা বলে, এটি ছাড়া অন্য কুরআন নিয়ে এসো অথবা একে বদলাও। বল, ‘আমার নিজের পক্ষ থেকে এতে কোন পরিবর্তনের অধিকার নেই। আমিতো শুধু আমার প্রতি অবতীর্ণ ওহীর অনুসরণ করি। নিশ্চয় আমি যদি রবের অবাধ্য হই তবে ভয় করি কঠিন দিনের আযাবের। আর তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ প্রত্যাখান করেছে। তাহলে তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।" (১০:১৫,৯৫) 

"আমি তোমার প্রতি যে ওয়াহী করেছি তা থেকে তোমাকে পদস্খলিত করার জন্য তারা চেষ্টার কোন ত্রুটি করেনি যাতে তুমি আমার সম্বন্ধে  অবতীর্ণ ওয়াহীর বিপরীতে মিথ্যা রচনা কর, তাহলে তারা তোমাকে অবশ্যই বন্ধু বানিয়ে নিত। আর আমি যদি তোমাকে অবিচলিত না রাখতাম, তবে অবশ্যই তুমি তাদের দিকে কিছুটা ঝুঁকে পড়তে, তুমি ঝুঁকে পড়লে অবশ্যই তোমাকে ইহজীবনে ও পরজীবনে দ্বিগুণ শাস্তি আস্বাদন করাইতাম। তখন আমার বিরুদ্ধে তোমার জন্য কোন সাহায্যকারী পেতেনা। তারা তোমাকে দেশ হতে উৎখাত করার চূড়ান্ত চেষ্টা করেছিল তোমাকে সেখান হতে বহিস্কার করার জন্য। তাহলে তোমার পর তারাও সেখানে অল্পকালই টিকে থাকত। আমার রাসূলদের মধ্যে তোমার পূর্বে যাদেরকে আমি পাঠিয়েছিলাম তাদের ক্ষেত্রেও ছিল এরূপ নিয়ম এবং তুমি আমার নিয়মের কোন পরিবর্তন দেখতে পাবেনা।" (১৭:৭৩-৭৭) 

"তুমি কি তোমার প্রতি যা ওয়াহী করা হয়েছে তার কিছু অংশ পরিত্যাগ করতে চাও আর তোমার মন সংকুচিত করতে চাও তাদের এ কথা বলার কারণে যে, তার কাছে ধনভান্ডার অবতীর্ণ হয় না কেন, কিংবা তার কাছে ফেরেশতা আসে না কেন? তুমি তো শুধু সতর্ককারী আর আল্লাহ সব কিছুর তত্ত্বাবধায়ক।" (১১:১২) 

"তোমাদের সঙ্গী বিভ্রান্ত নয়, বিপথগামীও নয়। আর সে মনগড়া কথাও বলে না। তা তো অহী, যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ হয়।" (৫৩:২-৪)

"বল, আমি আদিষ্ট হয়েছি আল্লাহর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর ইবাদাত করতে। আমাকে আরো নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন আমি প্রথম মুসলিম( আত্মসর্মপণকারী) হই। বল, আমি যদি আমার রবের অবাধ্য হই তবে আমি এক মহাদিবসের শাস্তির ভয় করি। বল,আমি আল্লাহর-ই ইবাদাত করি, তারই জন্য আমার আনুগত্য একনিষ্ঠ করে।" (৩৯:১১-১৪) (৬:১৪,১৫) (৬:৫২)

"আমি তাকে কাব্য রচনা করতে শিখাইনি এবং এটা তার পক্ষে শোভনীয় নয়। ইহাতো শুধু উপদেশ এবং সুস্পষ্ট কুরআন।" (৩৬:৬৯) 

"নিশ্চয়ই এই কুরআন এক সম্মানিত রাসূলের আনিত বার্তা, ইহা কোন কবির রচনা নয়, তোমরা অল্পই বিশ্বাস কর। আর কোন গণকের কথাও নয়। তোমরা কমই উপদেশ গ্রহণ কর। ইহা জগতসমূহের রবের নিকট হতে অবতীর্ণ। সে যদি আমার নামে কিছু রচনা করে চালাতে চেষ্টা করত, তবে  আমি অবশ্যই তার ডান হাত ধরে তাকে পাকড়াও করতাম, এবং কেটে দিতাম তার জীবন-ধমনী। অতঃপর তোমাদের মধ্যে এমন কেহ নেই যে, তাকে রক্ষা করতে পারবে। এই কুরআন মুত্তাকীদের জন্য অবশ্যই এক উপদেশ।" (৬৯:৪০-৪৮) 

"তারা কি বলে যে, সে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে? যদি তাই হত তাহলে আল্লাহ ইচ্ছা করলে তোমার হৃদয় মোহর করে দিতেন। আল্লাহ মিথ্যাকে মুছে দেন এবং নিজ বাণী দ্বারা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন। অন্তরে যা আছে সেই বিষয়ে তিনি সবিশেষ অবহিত।" (৪২:২৪) 

"নিশ্চয় যিনি তোমার প্রতি কুরআনকে বিধানস্বরূপ দিয়েছেন, অবশ্যই তিনি তোমাকে প্রত্যাবর্তন স্থলে ফিরিয়ে আনবেন। বল, আমার রব ভাল করেই জানেন কে সৎপথের নির্দেশ নিয়ে এসেছে আর কে আছে সুস্পষ্ট গুমরাহীতে। তুমিতো আশা করনি যে, তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হইবে। এটাতো শুধু তোমার রবের অনুগ্রহ। সুতরাং তুমি কখনও আবিশ্বাসীদের সাহায্যকারী হয়ো না। আর তোমার প্রতি আল্লাহর আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর কেহ যেন তোমাকে কিছুতেই সেগুলি হতে বিরত না রাখে। তুমি তোমার রবের দিকে আহবান করতে থাক এবং কিছুতেই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা।" (২৮:২৬-৮৭) 

"এটা কি তাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, আমি তোমার প্রতি কিতাব অবর্তীণ করেছি যা তাদের সম্মুখে পাঠ করা হয়, বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য অবশ্যই এতে অনুগ্রহ ও উপদেশ রয়েছে।"(২৯:৫১) 


"আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি খন্ড-খন্ড ভাবে, যাতে তুমি তা মানুষের কাছে পাঠ করতে পার ক্রমে ক্রমে এবং আমি তা যথাযথভাবে অবতীর্ণ করেছি।" (১৭:১০৬) 

"আর স্পষ্টভাবে ধীরে ধীরে কুরআন পাঠ কর।" (৭৩:৪) 

"তোমার রবতো জানেন যে, তুমি জাগরণ কর কখনও রাতের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ, অর্ধাংশ ও এক-তৃতীয়াংশ এবং জাগে তোমার সংগে যারা আছে তাদের একটি দলও এবং আল্লাহই নির্ধারণ করেন দিন ও রাতের পরিমাণ। তিনি জানেন যে, তোমরা এর সঠিক হিসাব রাখতে পারনা। অতএব আল্লাহ তোমাদের প্রতি ক্ষমা পরবশ হয়েছেন। অতএব কুরআনের যতটুকু পাঠ করা তোমাদের জন্য সহজ ততটুকু পাঠ কর। আল্লাহ জানেন যে, তোমাদের মধ্যে কেহ কেহ অসুস্থ হয়ে পড়বে, কেহ কেহ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশ ভ্রমণ করবে এবং কেহ কেহ আল্লাহর পথে সংগ্রামে লিপ্ত হবে। অতএব তোমরা কুরআন থেকে যতটুকু সহজ ততটুকু পড়।" (৭৩:২০) 

"আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি, তারা যথাযথভাবে সত্য বুঝে পাঠ করে, আর তারাই এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী, আর যারা এর প্রতি অবিশ্বাস করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।" (২:১২১) 

 "সুতরাং তাদের কি হল যে, তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না? আর যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করে শোননো হয়, তখন তারা সিজদা করে না (অর্থাৎ আল্লাহর বিধি-বিধান সমূহ পাঠ করে শোননো হলে, তা মান্য করে না বা মেনে নেয়না)? বরং যারা অবিশ্বাস করে, তারাই মিথ্যা মনে করে।" (৮৪:২০-২২) 

১১ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে, মহান আল্লাহর কিতাব আল কুরআন ছাড়া আর কোন মানব রচিত কিতাব ধর্মের নামে মানা যাবে না !

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

"আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন উত্তম বাণী (আহসানাল হাদিস) সম্বলিত এমন এক গ্রন্থ, যাতে পারস্পরিক সাদৃশ্যপূর্ণ একই কথা নানাভাবে বার বার বলা হয়েছে। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে, তাদের শরীর শিউরে ওঠে, তারপর তাদের দেহ, মন বিনম্র হয়ে আল্লাহর স্মরণে ঝুঁকে পড়ে। এটিই আল্লাহর পথনির্দেশ, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দিয়ে পথপ্রদর্শন করেন। আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন, তার কোন পথপ্রদর্শক নেই।" (৩৯:২৩)

"আর আল্লাহর কথায় চেয়ে আর কার কথা (হাদিস) অধিক সত্য হতে পারে?" (৪:৮৭,১১২) 


"তোমাদের কী হয়েছে? তোমরা এ কেমন সিদ্ধান্ত দিচ্ছ?  তোমাদের কাছে কি কোন কিতাব আছে যাতে তোমরা অধ্যয়ন কর যে, নিশ্চয় তোমাদের জন্য তাতে রয়েছে যা তোমরা পছন্দ কর? অথবা তোমাদের কি আমার সাথে কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ এমন কোন অঙ্গীকার রয়েছে যে, তোমরা নিজেদের জন্য যা স্থির করবে তাই পাবে? তুমি তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর, কে এ ব্যাপারে যিম্মাদার?" (৬৮:৩৬-৪০)

"বরং তাদের প্রত্যেকেই চায় তাদের প্রত্যেককে একটি উম্মুক্ত গ্রন্থ দেয়া হোক। না, ইহা হইবার নয় বরং তারা আখিরাতকে ভয় করে না। না, এটা হইবার নয়, কুরআন সকলের জন্য উপদেশবানী। অতএব যার ইচ্ছা, সে এটা হতে উপদেশ গ্রহণ করুক।" (৭৪:৫২-৫৫) 

"তারা যা বলে, তা আমি সম্যক অবগত আছি,তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও, সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে,তাকে কুরআনের সাহায্যে উপদেশ দান কর।" (৫০:৪৫) 

"সুতরাং তুমি অবিশ্বাসীদের আনুগত্য করো না এবং তুমি কুরআনের সাহায্যে তাদের  বিরুদ্ধে কঠোর সংগ্রাম চালিয়ে যাও।" (২৫:৫২) 

"সেদিন দুর্ভোগ অস্বীকারকারীদের জন্য। সুতারাং উহারা কুরআনের পরিবর্তে আর কোন হাদীসে বা কথায় বিশ্বাস স্থাপন করবে?" (৭৭:৪৯-৫০) 

"আর যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল, তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করে দিবে। তারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে এবং তারা কেবল অনুমানভিত্তিক কথা বার্তাই বলে থাকে।"(৬:১১৬)

"বল, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ পেশ কর।" (২:১১১) (২৭:৬৪) (২৮:৭৫)(২১:২৪)

"আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা (লাহুয়াল হাদিস) খরিদ করে, আর তারা ঐগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে, তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব। আর তার কাছে যখন আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন সে দম্ভভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন সে শুনতে পায়নি, তার দু’কানে যেন বধিরতা। সুতরাং তাকে যন্ত্রণাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও।" (৩১:৬,৭) 


"আর এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর শত্রু করেছি মানুষ ও জিনের মধ্য থেকে শয়তানদেরকে, তারা প্রতারণার উদ্দেশ্যে একে অপরকে চাকচিক্যপূর্ণ কথাবার্তা বলে। এবং তোমার রব যদি চাইতেন, তবে তারা তা করত না। সুতরাং তুমি তাদেরকে এবং তাদের মিথ্যা রচনাগুলিকে বর্জন করে চলবে। আর তারা এ উদ্দেশ্যে কুমন্ত্রণা দেয় যে, যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তাদের মন যেন সে চমকপ্রদ কথার প্রতি অনুরাগী হয় এবং তাতে যেন তারা পরিতুষ্ট হয়। আর তারা যে অপকর্ম করে তাই যেন তারা করতে থাকে।" (৬:১১২,১১৩) 

"আর আমি তোমার পূর্বে যে রাসূল কিংবা নবী পাঠিয়েছি, সে যখনই ওহীকৃত বাণী পাঠ করেছে, শয়তান তার পাঠে কিছু নিক্ষেপ করেছে। কিন্তু শয়তান যা নিক্ষেপ করে আল্লাহ তা মুছে দেন। অতঃপর আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে সুদৃঢ় করে দেন। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, অতি প্রজ্ঞাময়। এটা এজন্য যে, শয়তান যা নিক্ষেপ করে, তা যাতে তিনি তাদের জন্য পরীক্ষার বস্তু বানিয়ে দেন, যাদের অন্তরসমূহে ব্যাধি রয়েছে এবং যাদের হৃদয়সমূহ পাষাণ। আর নিশ্চয় অন্যায়কারীরা চরম মতভেদে লিপ্ত আছে।" (২২:৫২,৫৩)

"সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব লিখে। তারপর বলে, এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে, যাতে তা তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা লিখেছে তার পরিণামে তাদের জন্য ধ্বংস, আর তারা যা উপার্জন করেছে তার কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস।"(২:৭৯) 

"তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা নিজদের জিহবা দ্বারা বিকৃত করে কিতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা সেটা কিতাবের অংশ মনে কর, অথচ সেটি কিতাবের অংশ নয়। তারা বলে, এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে,অথচ তা আল্লাহর পক্ষ থেকে নয়। আর তারা আল্লাহর উপর মিথ্যা বলে, অথচ তারা জানে।" (৩:৭৮) 

"তোমাদের কাছে যা আছে তার সত্যায়নকারীরূপে আমি যা অবতীর্ণ করেছি তা বিশ্বাস কর। আর তোমরাই তার প্রথম অবিশ্বাসকারী হয়ো না এবং আমার আয়াতের বিনিময়ে স্বল্প মূল্য গ্রহণ করো না। তোমরা শুধু আমাকেই ভয় কর। তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না।"(২:৪১,৪২) 

"নিশ্চয়ই যারা গোপন করে আল্লাহর কিতাব হতে যা অবর্তীণ করেছেন তা এবং এর বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, তারা তাদের নিজেদের পেটে আগুন ছাড়া আর কিছুই খায় না। আর কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তারাই হিদায়তের বিনিময়ে ভ্রষ্টতা এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করেছে। সুতরাং আগুন সহ্য করতে তারা কতই না ধৈর্যশীল।" (২:১৭৪,১৭৫) 


"আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ কিতাব প্রাপ্তদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, ‘অবশ্যই তোমরা তা মানুষের নিকট স্পষ্টভাবে বর্ণনা করবে এবং তা গোপন করবে না। কিন্তু তারা তা তাদের পেছনে ফেলে দেয় এবং তা বিক্রি করে তুচ্ছ মূল্যে। অতএব তারা যা ক্রয় করে, তা কতইনা মন্দ!" (৩:১৮৭)

"আর তুমি তাদের মধ্য থেকে অনেককে দেখতে পাবে যে, তারা পাপে, সীমালঙ্ঘনে এবং হারাম ভক্ষণে ছুটোছুটি করছে। তারা যা করছে, নিশ্চয় তা কতইনা মন্দ। রব্বানীগণ ও ধর্মের পন্ডিতগণ কেন তাদেরকে পাপ-কথা বলতে ও অবৈধ ভক্ষণ করতে নিষেধ করে না? এরা যা করে নিশ্চয় তা নিকৃষ্ট।" (৫:৬২,৬৩) 

"তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদের ধর্মের পন্ডিত ও সংসার-বিরাগীদের রব হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং মারইয়ামপুত্র মাসীহকেও।" (৯:৩১) 

"হে বিশ্বাসীগণ, নিশ্চয় ধর্মের পন্ডিত ও সংসার বিরাগীদের অনেকেই মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে, আর তারা আল্লাহর পথে বাধা দেয় এবং যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেয়া হবে। আর বলা হবে ‘এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে, সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর’।" (৯:৩৪,৩৫) 

"আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি, তারা যথাযথভাবে সত্য বুঝে পাঠ করে, আর তারাই এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী, আর যারা এর প্রতি অবিশ্বাস করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।" (২:১২১) 

বাপ-দাদাকে যে এবাদাতের উপর পেয়েছি আলোচনাঃ একটি ছোটো শিশু ছোটো থেকেই বাবা-মাকে যে ধর্ম-কর্ম করতে দেখে, ঐ শিশু বড় হয়ে বাবা-মার দেখা ও শিখানো সেই ধর্মই পালন করে থাকে। এমনও হতে পারে যে, তাদের বাব-দাদারা ভুল পথে প্রতিষ্ঠিত ছিলো, কিন্তু বড় হওয়ার পর তারা এ ব্যাপারে কোনো যাচাই-বাছাই করতে রাজি না এবং ধর্মগ্রন্থ থেকে কোনো দলীল-প্রমাণও গ্রহণ করতে চায় না। আল্লাহ বলেন, 

“আর যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা অবতীর্ণ ক‌রে‌ছেন, তা মে‌নে নাও!  "সুতরাং তাদের কি হল যে, তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না? আর যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করে শোননো হয়, তখন তারা সিজদা করে না (অর্থাৎ আল্লাহর বিধি-বিধান সমূহ পাঠ করে শোননো হলে, তা মান্য করে না বা মেনে নেয়না)? বরং যারা অবিশ্বাস করে, তারাই মিথ্যা মনে করে।" (৮৪:২০-২২) 


"তার দিকে ও রাসূলের (বার্তাবাহকের) দিকে আস, তারা বলে, ‘আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের যার উপর পেয়েছি তাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। যদিও তাদের পিতৃপুরুষরা কিছুই জানত না এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত ছিল না তবুও। হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের দায়িত্ব তোমাদের উপর। যখন তোমরা সত্যপথ প্রাপ্ত হয়েছ তখন যারা পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে তারা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন আল্লাহর দিকে, অতঃপর তোমরা যা করছিলে সে সম্পর্কে তোমাদেরকে জানিয়ে দেয়া হবে।" (৫:১০৪,১০৫) 

"আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তোমরা তার অনুসরণ কর’ তখন তারা বলে, ‘বরং আমরা তার অনুসরণ করব যার ওপর আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি। শয়তান যদি তাদেরকে জ্বলন্ত আগুনের শাস্তির দিকে ডাকে, তবুও কি তারই অনুসরণ করবে? আর যে ব্যক্তি একনিষ্ঠ ও বিশুদ্ধচিত্তে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে আর সে সৎকর্মশীল, সে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে এক মজবুত হাতল। যাবতীয় কর্ম পরিণাম ফলের জন্য আল্লাহর দিকে ফিরে যায়।" (৩১:২১,২২) 

"আর যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমরা অনুসরণ কর, যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন, তারা বলে, বরং আমরা অনুসরণ করব আমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে যার উপর পেয়েছি। যদি তাদের পিতৃ-পুরুষরা কিছু না বুঝে এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত না হয়, তাহলেও কি?" (২:১৭০) 

"আর তাদের কাছে যখন আমাদের সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন তারা বলে, তোমাদের পূর্বপুরুষ যার ইবাদাত করত এ ব্যক্তিই তো তার ইবাদাতে বাধা দিতে চায়। তারা আরও বলে, এটা তো মিথ্যা উদ্ভাবন ছাড়া আর কিছুই নয়। আর কাফিরদের কাছে যখন সত্য আসে তখন তারা বলে, এ তো এক সুস্পষ্ট জাদু।" (৩৪:৪৩)

"আর তারা যখন কোন অশ্লীল কাজ করে তখন তারা বলে ‘আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এ কাজই করতে দেখেছি, আর আল্লাহ আমাদেরকে এসব কাজ করার আদেশ দিয়েছেন। বল, ‘আল্লাহ অশ্লীলতার নির্দেশ দেন না, আল্লাহর সম্বন্ধে তোমরা কি এমন কথা বলছ যা তোমরা জান না? বল, ‘আমার রব ন্যায়বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন আর তোমরা তোমাদের প্রত্যেক লক্ষ্যকে স্থির বা ঠিক রাখবে এবং তাঁরই ইবাদাতের জন্য একনিষ্ঠ হয়ে তাঁকে ডাক। যেভাবে তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, সেভাবে তোমরা প্রথমে ফিরে আসবে। আল্লাহ এক দলকে সৎ পথে পরিচালিত করেছেন এবং অপর দলের জন্য সংগত কারণেই ভ্রান্তি নির্ধারিত হয়েছে। নিশ্চয় তারা শয়তানদেরকে আল্লাহ ছাড়া অভিভাবকরূপে গ্রহণ করেছে। আর তারা মনে করে যে, নিশ্চয় তারা সঠিক পথে আছে। হে আদম সন্তান! প্রত্যেক লক্ষ্য  বাস্তবায়নের সময় তাকওয়ার পোশাক  গ্রহণ কর, আর খাও এবং পান কর। তবে অপব্যয় ও অপচয় করবেনা। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপব্যয়কারীদের ভালবাসেননা। বল, কে হারাম করেছে আল্লাহর সৌন্দর্যোপকরণ, যা তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র জীবিকা? বল, পার্থিব জীবনে বিশেষ করে কিয়ামতের দিনে এ সমস্ত তাদের জন্য, যারা বিশ্বাস করে। এভাবে আমি আয়াতসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি এমন সম্প্রদায়ের জন্য যারা জানে। বল, আমার রব তো হারাম করেছেন অশ্লীল ও আনৈতিক কাজ যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে, আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর সাথে তোমাদের শরীক করা, যে ব্যাপারে আল্লাহ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর উপরে এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না।" (৭:২৮-৩৩) 

"তারা আরও বলে, পরম করুণাময় আল্লাহ ইচ্ছা করলে আমরা এদের ইবাদাত করতাম না। এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞানই নেই। তারা শুধু আন্দাজ অনুমানে কথা বলে। আমি কি তাদেরকে কুরআনের পূর্বে কোন কিতাব দিয়েছি, অতঃপর তারা তা দৃঢ়ভাবে ধারণ করে আছে? বরং তারা বলে, ‘আমরা নিশ্চয় আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এক মতাদর্শের উপর পেয়েছি, আর নিশ্চয় আমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণে হিদায়াতপ্রাপ্ত হব। আর এভাবেই তোমাদের পূর্বে যখনই আমি কোন জনপদে সতর্ককারী পাঠিয়েছি, তখনই সেখানকার বিলাস প্রিয়রা বলেছে, নিশ্চয় আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে এক মতাদর্শের উপর পেয়েছি এবং নিশ্চয় আমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করব। তখন সেই সতর্ককারী বলত, তোমরা তোমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যে মতাদর্শে পেয়েছ, আমি যদি তোমাদের কাছে তার চেয়ে উৎকৃষ্ট পথে নিয়ে আসি তবুও কি’? তোমরা তাদের অনুসরণ করবে? তারা বলত, নিশ্চয় তোমাদেরকে যা দিয়ে পাঠানো হয়েছে আমরা তার অস্বীকার করি। ফলে আমি তাদেরকে তাদের কর্মের প্রতিফল দিলাম। দেখ মিথ্যাচারীদের পরিণাম কি হয়েছে।" (৪৩:২০-২৫) 

উপরোক্ত আয়াতগুলোতে প্রমাণ হয় যে, তখনকার মানুষগুলো শিরক, বিভিন্ন অপকর্ম, অশ্লীল বা অনৈতিক কাজ করে আল্লাহর কথাই বলেছিলো। অর্থাৎ তারাও বাপ- দাদার দেখাদেখি ইচ্ছা মত বিভিন্ন অপকর্ম , অশ্লীল বা অনৈতিক কাজে ও আল্লাহর ইবাদাতে শরিক করতো। তবে তারা কোনো পরিবর্তন চাইতনা, হউক তা সঠিক বা হউক তা বে-ঠিক। বর্তমানেও মানুষ কোনো পরিবর্তনের কথা শুনতে চায় না। মানুষকে আল্লাহর কিতাব আল কুরআনের মাধ্যমে সংশোধন হতে বললে তারা বলে আমরা যা করি তা আল্লাহর নির্দেশেই করি, ইহা মানব রচিত কিতাব হাদীছে আছে। আমাদের আল্লাহর কিতাব আল কুরআন অর্থসহকারে বুঝে বুঝে পড়ার দরকার নাই, আমরা আমাদের বাপ-দাদার মতই এবাদাত করবো। এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ বলেন, 

"আর তুমি পরিত্যাগ কর তাদেরকে, যারা নিজদের দীনকে গ্রহণ করেছে খেল-তামাশা রূপে এবং প্রতারিত করেছে যাদেরকে দুনিয়ার জীবন। আর তুমি কুরআন দ্বারা উপদেশ দাও, যাতে কোন ব্যক্তি তার কৃতকর্মের দরুন ধ্বংসের শিকার না হয়, তার জন্য আল্লাহ ছাড়া নেই কোন অভিভাবক এবং নেই কোন সুপারিশকারী। আর যদি সে সব ধরণের মুক্তিপণও দেয়, তার থেকে তা গ্রহণ করা হবে না। এরাই তারা, যারা ধ্বংসের শিকার হয়েছে তাদের কৃতকর্মের দরুন। তাদের জন্য রয়েছে ফুটন্ত পানীয় এবং বেদনাদায়ক আযাব, যেহেতু তারা অস্বীকার করত।" (৬:৭০)

১২ নং- মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে, আল কুরআন থেকে আমরা জানতে পারি যে, মুহাম্মাদ সঃ শুধুমাত্র সুসংবাদদাতা, সতর্ককারী ও আল্লাহর বাণী প্রচারকারী এবং তিনি কারো তত্ত্বাবধায়ক নয় !

এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন,

"কোন নবী বা রাসুল  অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে তাদের রক্ষা করতে পারে নাই।" (৯:১১৩) 

নুহু আঃ তার স্ত্রী ও ছেলে কে রক্ষা করতে পারে নাই। (১১:৪৫,৪৬)(৬৬:১০) 

লুত আঃ তার স্ত্রীকে রক্ষা করতে পারে নাই।(২৭:১০)(২৯:৩২,৩৩)(১১:৮১) (৬৬:১০) 

ইব্রাহিম আঃ তার পিতাকে তাকে রক্ষা করতে পারে নাই। (৯:১১৩,১১৪)(১৯:৪৬,৪৭) 

হযরত ঈসা আঃ তার সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে পারবে না। (৫:১১৬-১১৮) (৯:১১৩) 

মুহাম্মদ সঃ তার প্রিয় মানুষদের জন্য কিছু করতে পারে নাই। (৯:৮০,১১৩) (২৮:৫৬) 

আর আমি রাসূলদেরকে কেবল সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করি। (৬:৪৮,৪৯) 

আর আমি তো রাসূলদেরকে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপেই পাঠিয়েছি (১৮:৫৬) 

আর আমি তো তোমাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি। (২১:১০৭-১০৯) 

“হে নাবী, আমিতো তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী হিসাবে এবং সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপে আর আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহবানকারী ও আলোকদীপ্ত  প্রদীপ হিসেবে।” (৩৩:৪৫-৪৮)

আমিতো তোমাকে শুধু সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি। (১৭:১০৫) 

আর আমি তো কেবল তোমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। (৩৪:২৮) 

আর আমি তো তোমাকে শুধুমাত্র সুংসবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপেই প্রেরণ করেছি। (২৫:৫৬) 

আমি তোমাকে সত্যসহ পাঠিয়েছি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাতে সতর্ককারী আসেনি। (৩৫:২৪) 

আমিতো একজন সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা এমন সম্প্রদায়েরর জন্য, যারা বিশ্বাস করে।(৭:১৮৮) তুমি তো শুধু সতর্ককারী আর আল্লাহ সব কিছুর তত্ত্বাবধায়ক। (১১:১২) 

বল, হে মানুষ, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সত্য এসেছে। সুতরাং যে হিদায়াত গ্রহণ করবে, সে নিজের জন্যই হিদায়াত গ্রহণ করবে। আর যে পথভ্রষ্ট হবে, সে নিজের ক্ষতির জন্য পথভ্রষ্ট হবে। আর আমি তোমাদের অভিভাবক নই। (১০:১০৮)

নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি যথাযথভাবে কিতাব অবর্তীণ করেছি মানুষের জন্য। তাই যে সৎপথ অবলম্বন করে, সে তা নিজের জন্যই করে এবং যে পথভ্রষ্ট হয় সে নিজের ক্ষতির জন্যই পথভ্রষ্ট হয়। আর তুমি তাদের তত্ত্বাবধায়ক নও। (৩৯:৪১) 

যে কেহ রাসূলের অনুগত হয় নিশ্চয়ই সে আল্লাহরই অনুগত হয়ে থাকে, এবং যে ফিরে যায় আমি তার জন্য তোমাকে রক্ষক রূপে প্রেরণ করিনি।(৪:,৮০) 

আর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে আমি তো তোমাকে তাদের রক্ষক হিসেবে পাঠাইনি। বাণী পৌঁছে দেয়াই তোমার দায়িত্ব। (৪২:৪৮) 

বল,আমি তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নই। আর আমি তোমাদের উপর সংরক্ষক নই। আর আমি তোমাকে তাদের রক্ষক নিযুক্ত করিনি এবং আর তুমি তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নও। (৬:৬৬,১০৪,১০৭) 

অতএব তুমি উপদেশ দাও, তুমি তো একজন উপদেশদাতা মাত্র। তুমি তাদের কর্মনিয়ন্ত্রক নও। তবে যে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং অস্বীকার করে,ফলে আল্লাহ তাকে কঠোর আযাব দিবেন। নিশ্চয় আমারই নিকট তাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তাদের হিসাব-নিকাশ নেয়া তো আমারই কাজ।(৮৮:২১-২৬)  

আমি তাদেরকে যে শাস্তির কথা বলি, তার কিছু যদি তোমাকে দেখিয়েই দিই অথবা যদি এর পূর্বে তোমার মৃত্যু ঘটিয়েই দিই তোমার কর্তব্যতো শুধু প্রচার করা আর হিসাব গ্রহণের দায়িত্ব আমার।(১৩:৪০) 

তুমি তো শুধু সতর্ককারী আর আল্লাহ সব কিছুর তত্ত্বাবধায়ক।(১১:১২) 

তোমাদের রব তোমাদেরকে ভালভাবে জানেন, ইচ্ছা করলে তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করেন এবং ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে শাস্তি দেন। আমি তোমাকে তাদের অভিভাবক করে পাঠাইনি। (১৭:৫৪) 

আল্লাহর আনুগত্য কর এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর, যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে আমার রাসূলের দায়িত্ব শুধু স্পষ্টভাবে প্রচার করা। (৬৪:১২) 

তারা বলল, আমাদের রব জানেন, অবশ্যই আমরা তোমাদের কাছে প্রেরিত রাসূল। স্পষ্টভাবে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেয়াই আমাদের একমাত্র দায়িত্ব।(৩৬:১৬,১৭) 

তোমরা যদি আমাকে মিথ্যাবাদী বল তাহলে জেনে রেখ যে, তোমাদের পূর্ববর্তীরাও নবীদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা ছাড়া রাসূলের আর কোন দায়িত্ব নেই।(২৯:১৮) 

বল, ‘তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর।’ তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে সে শুধু তার উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী। আর যদি তোমরা তার আনুগত্য কর তবে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হবে। আর রাসূলের দায়িত্ব শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া।(২৪:৫৪) 

আর তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং আনুগত্য কর রাসূলের আর সাবধান হও। তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে জেনে রাখ যে, আমার রাসূলের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্ট প্রচার।(৫:৯২) 

আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেয়া ছাড়া রাসূলের উপর দায়িত্ব নেই। তোমরা যা প্রকাশ কর আর গোপন কর আল্লাহ তা জানেন। (৫:৯৯) 

অতঃপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তোমার কর্তব্যতো শুধু স্পষ্টভাবে বাণী পৌঁছে দেয়া।(১৬:৮২) (৩:২০) 

বল, আমি তোমাদের মঙ্গল-অমঙ্গলের মালিক নই। বল,নিশ্চয় আল্লাহর কাছ থেকে কেউ আমাকে রক্ষা করতে পারবে না এবং তিনি ছাড়া কখনো আমি কোন আশ্রয়ও পাব না। কেবল আল্লাহর বাণী ও তাঁর রিসালাত পৌঁছানোই দায়িত্ব। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাতে তারা চিরস্থায়ী হবে।(৭২:২১-২৩) 

সুতরাং স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া ছাড়া রাসূলদের কি কোন কর্তব্য আছে? (১৬:৩৫) 

হে রাসূল, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা অবর্তীণ করা হয়েছে, তা পৌঁছে দাও আর যদি তুমি না কর তবে তুমি তার রিসালাত পৌঁছালে না। আর আল্লাহ তোমাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না। (৫:৬৭) 

তুমি তো শুধু সতর্ককারী, আর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে একজন সঠিক পথ প্রদর্শনকারী।(১৩:৭) 

বল, হে মানুষ আমি তো কেবল তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট সতর্ককারী’। (২২:৪৯) 

আমার নিকটতো এই অহী এসেছে যে, আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।(৩৮:৬৫,৭০) 

আর বল, ‘নিশ্চয় আমিই সুস্পষ্ট সতর্ককারী’। (১৫:৮৯) 

আর তারা যদি তোমাকে মিথ্যাবাদী বলে, তবে তুমি বল,আমার কাজের জন্য আমি দায়ী, আর তোমাদের কাজের জন্য তোমরা দায়ী, আমি যা করি তার দায়-দায়িত্ব থেকে তোমরা মুক্ত, আর তোমরা যা কর তার দায়-দায়িত্ব থেকে আমি মুক্ত। (১০:৪১)   

তাদেরকে সুপথে আনার দায়িত্ব তোমার নয়, বরং যাকে ইচ্ছা আল্লাহ তাকে সৎ পথে পরিচালিত করেন (২:২৭২) 

তারা যা বলে তা আমি জানি, তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও। সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে তাকে উপদেশ দান কর কুরআনের সাহায্যে।(৫০:৪৫) 

মুহাম্মাদ সঃ অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে কিছু বলতে পারবে না। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় আমি তোমাকে প্রেরণ করেছি সত্যদ্বীনসহ, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে এবং তোমাকে আগুনের অধিবাসীদের সম্পর্কে  কোন প্রশ্ন করা হবে না। (২:১১৯) 

সেটা ছিল একটি উম্মত, যারা বিগত হয়েছে। তারা যা অর্জন করেছে, তা তাদের জন্য আর তোমরা যা অর্জন করেছ তা তোমাদের জন্য। আর তারা যা করত, সে সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে না। (২:১৪১) 

শাস্তির ফয়সালা যার উপর অবধারিত হয়ে গেছে, যে আছে জাহান্নামের আগুনে তুমি কি তাকে রক্ষা করতে পার? (৩৯:১৯) 

তোমাকে শুধু তোমার নিজের জন্য দায়ী করা হবে। (৪:৮৪) 

এই জন্য যে, তিনি অবিশ্বাসীদের এক অংশকে নিশ্চিহ্ন অথবা লাঞ্ছিত করেন, ফলে তারা অকৃতকার্য হয়ে ফিরে যায়। আল্লাহ তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন এ ব্যাপারে তোমার কিছু করার নেই। কেননা তারা হচ্ছে সীমালংঘণকারী। আকাশসমূহে ও যমীনে যা কিছুই আছে সেসব আল্লাহরই, তিনি যাকে ইচ্ছে ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছে শাস্তি প্রদান করেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৩:১২৭-১২৯) 

যদি তারা তোমাকে মিথ্যা জেনে অমান্য করে তাহলে বল, ‘আমার কাজের জন্য আমি দায়ী,আর তোমাদের কাজের জন্য তোমরা দায়ী, আমি যা করি তার দায়-দায়িত্ব থেকে তোমরা মুক্ত, আর তোমরা যা কর তার দায়-দায়িত্ব থেকে আমি মুক্ত। (১০:৪১)

বল,আমরা যে অপরাধ করছি সে ব্যাপারে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে না, আর তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আমাদেরকেও জিজ্ঞাসা করা হবে না। (৩৪:২৫) 

সেটা এমন এক উম্মত যা বিগত হয়েছে। তারা যা অর্জন করেছে, তা তাদের জন্য আর তোমরা যা অর্জন করেছ তা তোমাদের জন্য। আর তারা যা করত, সে সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে না। (২:১৩৪,১৪১)

বল, পৃথিবীতে ভ্রমণ কর, অতঃপর দেখ অপরাধীদের পরিণাম কেমন হয়েছিল। আর তাদের জন্য দুঃখ করো না এবং তারা যে ষড়যন্ত্র করে তাতে মনক্ষুন্ন হয়ো না। (২৭:৬৯,৭০) 

“নিশ্চয় আমি সত্য সহকারে তোমার প্রতি যথাযথভাবে কিতাব অবর্তীণ করেছি, যাতে তুমি মানুষের মধ্যে ফয়সালা কর সে অনুযায়ী যা আল্লাহ তোমাকে দেখিয়েছেন। আর তুমি খিয়ানতকারীদের পক্ষে বিতর্ককারী হয়ো না। আর তুমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যারা নিজদের খিয়ানত করে তুমি তাদের পক্ষে বিতর্ক করো না। নিশ্চয় আল্লাহ ভালবাসেন না তাকে, যে খিয়ানতকারী, পাপী। তারা মানুষের কাছ থেকে লুকাতে চায়, আর আল্লাহর কাছ থেকে লুকাতে চায় না। অথচ তিনি তাদের সাথেই থাকেন যখন তারা রাতে এমন কথার পরিকল্পনা করে যা তিনি পছন্দ করেন না। আর আল্লাহ তারা যা করে তা পরিবেষ্টন করে আছেন। দেখ, তোমরাই তো তারা, যারা দুনিয়ার জীবনে তাদের পক্ষে বিতর্ক করেছ। সুতরাং কিয়ামতের দিন তাদের পক্ষে আল্লাহর সাথে কে বিতর্ক করবে? কিংবা কে হবে তাদের তত্ত্বাবধায়ক?” (৪:১০৫-১০৯) 

সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব লিখে। তারপর বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, যাতে তা তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা লিখেছে তার পরিণামে তাদের জন্য ধ্বংস, আর তারা যা উপার্জন করেছে তার কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস। আর তারা বলে, ‘গোনা-কয়েকদিন ছাড়া আগুন আমাদেরকে কখনো স্পর্শ করবে না। বল, তোমরা কি আল্লাহর নিকট ওয়াদা নিয়েছ, ফলে আল্লাহ তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করবেন না? নাকি আল্লাহর উপর এমন কিছু বলছ, যা তোমরা জান না’? তবে হাঁ, যারা পাপ কাজ করে এবং যাদের পাপরাশি তাদেরকে ঘিরে ফেলে তারাই জাহান্নামী, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। পক্ষান্তরে যারা বিশ্বাস করেছে এবং সৎকাজ করেছে, তারাই হবে জান্নাতের অধিবাসী; তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। (২:৭৯-৮২) 

“তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যাদেরকে কিতাবের অংশবিশেষ দেয়া হয়েছে, তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের দিকে আহবান করা হচ্ছে, যাতে তা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে। অতঃপর তাদের একদল ফিরে যাচ্ছে বিমুখ হয়ে। এটা এজন্য যে, তারা বলে, দিন কতক ছাড়া জাহান্নামের আগুন কক্ষনো আমাদেরকে স্পর্শ করবে না এবং তাদের কল্পিত ধারণাসমূহ দ্বীনের ব্যাপারে তাদেরকে ধোঁকায় ফেলে রেখেছে। সুতরাং কী অবস্থা হবে? যখন আমি তাদেরকে এমন দিনে সমবেত করব, যাতে কোন সন্দেহ নেই। আর প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের প্রতিদান পূর্ণভাবে দেওয়া হবে এবং তাদের প্রতি যুলম করা হবে না।” (৩:২৩-২৫)

“নিশ্চয় যারা অবিশ্বাস করেছে, কিয়ামতের দিন শাস্তি থেকে মুক্তির জন্য পণস্বরূপ যমীনে যা কিছু আছে যদি সেগুলোর সবটাই তাদের থাকে এবং তার সাথে সমপরিমাণ আরও থাকে, তবুও তাদের কাছ থেকে সেসব গৃহীত হবে না এবং তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি। তারা আগুন থেকে বের হতে চাইবে কিন্তু তারা সেখান থেকে বের হইতে পারবে না এবং তাদের জন্য  রয়েছে স্থায়ী শাস্তি।” (৫:৩৬-৩৭) 

“অতঃপর অযোগ্য উত্তরপুরুষরা একের পর এক তাদের স্থলাভিক্তিকরূপে কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়, তারা এ তুচ্ছ দুনিয়ার সামগ্রী গ্রহণ করে এবং বলে, আমাদের ক্ষমা করা হবে। কিন্তু ওগুলোর অনুরূপ সামগ্রী তাদের কাছে আসলে তাও তারা গ্রহণ করে। কিতাবের অঙ্গীকার কি তাদের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি যে, তারা আল্লাহ সম্বন্ধে সত্য ছাড়া বলবে না? অথচ তারা এতে যা আছে তা অধ্যয়নও করে। আর যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্য আখিরাতের আবাসই উত্তম, তোমরা কি এটা অনুধাবন কর না?” (৭:১৬৯) 

এটা এজন্য যে, তোমরা আল্লাহর আয়াতগুলোকে ঠাট্টা বিদ্রূপের বিষয় বানিয়ে নিয়েছিলে, আর দুনিয়ার জীবন তোমাদেরকে ধোঁকায় ফেলে রেখেছিল। কাজেই আজ তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে না আর তাওবাহ করার সুযোগ দেয়া হবে না। (৪৫:৩৫) 

নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং তার ব্যাপারে অহঙ্কার করেছে, তাদের জন্য আসমানের দরজাসমূহ খোলা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ না উট সূঁচের ছিদ্রতে প্রবেশ করে। আর এভাবেই আমি অপরাধীদেরকে প্রতিদান দেই। তাদের শয্যা হবে জাহান্নামের এবং তাদের উপরের আচ্ছাদনও, আর এভাবেই আমি যালিমদেরকে প্রতিফল দিব। (৭:৪০,৪১) 

হাঁ, যে ব্যক্তি পাপ অর্জন করেছে এবং সে পাপ তাকে পরিবেষ্টিত করে নিয়েছে, তারাই দোযখের অধিবাসী। তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে। (২:২১৭) তোমাদের মধ্যে যারা নিজের দ্বীন থেকে ফিরে দাঁড়াবে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের যাবতীয় আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে। আর তারাই হলো দোযখবাসী। তাতে তারা চিরকাল থাকবে। নিশ্চয় অপরাধীরা জাহান্নামের আযাবে স্থায়ী হবে। (৪৩:৭৪,৭৫)

১। চিরস্থায়ী জান্নাতঃ-

(বাকারা- ২:২৫, ৮২) যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তুমি তাদেরকে সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হবে নদীসমূহ। যখনই তাদেরকে জান্নাত থেকে কোন ফল খেতে দেয়া হবে, তারা বলবে, ‘এটাই তো পূর্বে আমাদেরকে খেতে দেয়া হয়েছিল’। আর তাদেরকে তা দেয়া হবে সাদৃশ্যপূর্ণ করে এবং তাদের জন্য তাতে থাকবে পবিত্র স্ত্রীগণ এবং তারা সেখানে হবে স্থায়ী। আল-বায়ান ২:২৫

আর যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তারা জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানে হবে স্থায়ী। আল-বায়ান  ২:৮২

(ইমরান- ৩:১৫,১০৭, ১৩৬, ১৯৮) 

বল, ‘আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়েও উত্তম বস্তুর সংবাদ দেব? যারা তাকওয়া অর্জন করে, তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের নিকট জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয় নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর পবিত্র স্ত্রীগণ ও আল্লাহর পক্ষ থেকে সন্তুষ্টি’। আর আল্লাহ বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা। আল-বায়ান 3:15

আর যাদের চেহারা সাদা হবে, তারা তো আল্লাহর রহমতে থাকবে। তারা সেখানে স্থায়ী হবে। আল-বায়ান  3:107 

এরাই তারা, যাদের প্রতিদান তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতসমূহ যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর আমলকারীদের প্রতিদান কতই না উত্তম! আল-বায়ান 3:136

কিন্তু যারা তাদের রবকে ভয় করে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে মেহমানদারী। আর আল্লাহর নিকট যা রয়েছে তা নেককার লোকদের জন্য উত্তম। আল-বায়ান 3:198

(নিসা- ৪:১৩, ৫৭, ১২২) 

এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর এটা মহা সফলতা । আল-বায়ান  ৪:১৩ 

আর যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, অচিরেই তাদেরকে আমি প্রবেশ করাব জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত হচ্ছে নহরসমূহ। সেখানে তারা হবে স্থায়ী। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। আর কথায় আল্লাহ অপেক্ষা অধিক সত্যবাদী কে? আল-বায়ান ৪:১২২

(মায়েদা- ৫:৮৫,১১৯) 

সুতরাং তারা যা বলেছে এর কারণে আল্লাহ তাদেরকে পুরস্কার দেবেন জান্নাতসমূহ, যার নীচে নদীসমূহ প্রবাহিত হয়, তারা সেখানে স্থায়ী হবে। আর এটা হল সৎকর্মপরায়ণদের প্রতিদান। আল-বায়ান ৫:৮৫

আল্লাহ বলবেন, ‘এটা হল সেই দিন যেদিন সত্যবাদীগণকে তাদের সততা উপকার করবে। তাদের জন্য আছে জান্নাতসমূহ যার নীচে প্রবাহিত হবে নদীসমূহ। সেখানে তারা হবে চিরস্থায়ী। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন, তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। এটা মহাসাফল্য। আল-বায়ান  5:119

(আরাফ- ৭:৪২) অতঃপর আমি তাকে ও তার সাথে যারা ছিল, তাদেরকে আমার পক্ষ থেকে রহমত দ্বারা রক্ষা করেছি এবং তাদের মূল কেটে দিয়েছি, যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছিল। আর তারা মুমিন ছিল না। আল-বায়ান ৭:৪২

(তওবা- ৯:২১, ২২, ৭২, ৮২, ৮৯, ১০০) 

তাদের প্রতিপালক তাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে সুসংবাদ দিচ্ছেন রহমত ও সন্তুষ্টির এবং এমন জান্নাতসমূহের যাতে রয়েছে তাদের জন্য স্থায়ী নিআমত। তথায় তারা থাকবে চিরকাল। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে রয়েছে মহাপুরস্কার। আল-বায়ান ৯:২১, ২২

আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে জান্নাতের ওয়াদা দিয়েছেন, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, তাতে তারা চিরদিন থাকবে এবং (ওয়াদা দিচ্ছেন) স্থায়ী জান্নাতসমূহে পবিত্র বাসস্থানসমূহের। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড়। এটাই মহাসফলতা। আল-বায়ান ৯:৭২

অতএব তারা অল্প হাসুক, আর বেশি কাঁদুক, তারা যা অর্জন করেছে তার বিনিময়ে। আল-বায়ান  ৯:৮২

আল্লাহ তাদের জন্য তৈরি করেছেন জান্নাতসমূহ, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, তাতে তারা চিরদিন থাকবে, এটিই মহাসফলতা। আল-বায়ান ৯:৮৯

আর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা তাদেরকে অনুসরণ করেছে সুন্দরভাবে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন আর তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাতসমূহ, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে। এটাই মহাসাফল্য। আল-বায়ান ৯:১০০

(ইউনুস- ১০:২৬) যারা ভালো কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে শুভ পরিণাম (জান্নাত) এবং আরও বেশি। আর ধূলোমলিনতা ও লাঞ্ছনা তাদের চেহারাগুলোকে আচ্ছন্ন করবে না। তারাই জান্নাতবাসী। তারা তাতে স্থায়ী হবে। আল-বায়ান ১০:২৬

(হুদ -১১:২৩) নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং বিনীত হয়েছে তাদের রবের প্রতি, তারাই জান্নাতবাসী, তারা সেখানে স্থায়ী হবে। আল-বায়ান

(রাদ- ১৩:২৩) স্থায়ী জান্নাতসমূহ, যাতে তারা এবং তাদের পিতৃপুরুষগণ, তাদের স্ত্রীগণ ও তাদের সন্তানদের মধ্যে যারা সৎ ছিল তারা প্রবেশ করবে। আর ফেরেশতারা প্রতিটি দরজা দিয়ে তাদের নিকট প্রবেশ করবে। আল-বায়ান

(ইব্রাহীম - ১৪:২৩) আর যারা ঈমান আনে এবং নেক আমল করে তাদের জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা তাতে তাদের রবের অনুমতিক্রমে স্থায়ী হবে। তথায় তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম’। আল-বায়ান

(নাহল - ১৬:৩১) স্থায়ী জান্নাতসমূহ যাতে তারা প্রবেশ করবে, যার তলদেশে প্রবাহিত হচ্ছে নহরসমূহ। তারা চাইবে, তাদের জন্য তার মধ্যে তাই থাকবে। এভাবেই আল্লাহ মুত্তাকীদের প্রতিদান দেন। আল-বায়ান

(কাহাফ -১৮:৩১) এরাই তারা, যাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী জান্নাতসমূহ, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় নদীসমূহ। সেখানে তাদেরকে অলংকৃত করা হবে স্বর্ণের চুড়ি দিয়ে এবং তারা পরিধান করবে মিহি ও পুরু সিল্কের সবুজ পোশাক। তারা সেখানে (থাকবে) আসনে হেলান দিয়ে। কী উত্তম প্রতিদান এবং কী সুন্দর বিশ্রামস্থল ! আল-বায়ান

(মারইয়ম -১৯:৬১) তা চিরস্থায়ী জান্নাত, যার ওয়াদা পরম করুণাময় তাঁর বান্দাদের দিয়েছেন গায়েবের সাথে। নিশ্চয় তাঁর ওয়াদাকৃত বিষয় অবশ্যম্ভাবী। আল-বায়ান

(ত্বোহা -২০:৭৬) স্থায়ী জান্নাত, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, তারা সেখানে স্থায়ী হবে। আর এটা হল যারা পরিশুদ্ধ হয় তাদের পুরষ্কার। আল-বায়ান

(ফুরকান - ২৫:১৬,৭৬)

সেখানে তারা যা চাইবে তা-ই তাদের জন্য থাকবে স্থায়ীভাবে; এটি তোমার রবের ওয়াদা, আল-বায়ান ২৫:১৬

সেখানে তারা স্থায়ী হবে। অবস্থানস্থল ও আবাসস্থল হিসেবে তা কতইনা উৎকৃষ্ট! আল-বায়ান ২৫:৭৬

(আনকাবুত- ২৯:৫৮) আর যারা ঈমান আনে ও সৎ কর্ম করে, তাদেরকে অবশ্যই আমি জান্নাতে কক্ষ বানিয়ে দেব, যার তলদেশ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত হবে, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। কতইনা উত্তম আমলকারীদের প্রতিদান! আল-বায়ান

(লোকমান- ৩১:৮,৯)  নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের জন্য রয়েছে নিআমতপূর্ণ জান্নাত; সেখানে তারা স্থায়ী হবে, আল্লাহর ওয়াদা যথার্থ। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আল-বায়ান


(যুমার- ৩৯:৭৩) আর যারা তাদের রবকে ভয় করেছে তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। অবশেষে তারা যখন সেখানে এসে পৌঁছবে এবং এর দরজাসমূহ খুলে দেয়া হবে তখন জান্নাতের রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, ‘তোমাদের প্রতি সালাম, তোমরা ভাল ছিলে। অতএব স্থায়ীভাবে থাকার জন্য এখানে প্রবেশ কর’। আল-বায়ান

(মুমিন- ৪০:৮) ‘হে আমাদের রব, আর আপনি তাদেরকে স্থায়ী জান্নাতে প্রবেশ করান, যার ওয়াদা আপনি তাদেরকে দিয়েছেন। আর তাদের পিতা-মাতা, পতি-পত্নি ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা সৎকর্ম সম্পাদন করেছে তাদেরকেও। নিশ্চয় আপনি মহাপরাক্রমশালী, মহাপ্রজ্ঞাময়।’ আল-বায়ান

(আহকাফ- ৪৬:১৪) তারাই জান্নাতের অধিবাসী, তাতে তারা স্থায়ীভাবে থাকবে, তারা যা আমল করত তার পুরস্কারস্বরূপ। আল-বায়ান

(ফাত্হ- ৪৮:৫) যেন তিনি মুমিন নারী ও পুরুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার নিচ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত; সেখানে তারা স্থায়ী হবে; আর তিনি তাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন; আর এটি ছিল আল্লাহর নিকট এক মহাসাফল্য। আল-বায়ান

(তাগাবুন ৬৪:৯) স্মরণ কর, যেদিন সমাবেশ দিবসের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তোমাদের সমবেত করবেন, ঐ দিনই হচ্ছে লাভ-ক্ষতির দিন। আর যে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তিনি তার পাপসমূহ মোচন করে দিবেন এবং তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হয়, তথায় তারা স্থায়ী হবে। এটাই মহাসাফল্য। আল-বায়ান

(তালাক- ৬৫:১১) একজন রাসূল, যে তোমাদের কাছে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করে; যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে যাতে তিনি তাদেরকে অন্ধকার হতে আলোতে বের করে আনতে পারেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে তিনি তাকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত; সেখানে তারা স্থায়ী হবে; আল্লাহ তো তাকে অতি উত্তম রিয্ক দেবেন। আল-বায়ান

(বাইয়িনাহ- ৯৮:৮) তাদের রবের কাছে তাদের পুরস্কার হবে স্থায়ী জান্নাত, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত, সেখানে তারা থাকবে স্থায়ীভাবে। আল্লাহ তাদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন তারাও আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট হয়েছে। এটি তার জন্য, যে স্বীয় রবকে ভয় করে। আল-বায়ান

সুতরাং উপরোক্ত বর্ণনা হতে বোঝা যায় যে, জান্নাতে যদি এক বার কেহ প্রবেশ করে তবে সেখানে তারা চিরস্থায়ী ভাবে বসবাস করবে এটাই বাস্তব।

২। চিরস্থায়ী জাহান্নামঃ-  

(সুরা বাকারা- ২:৩৯- ৮১- ১৬২- ১৬৭- ২১৭- ২৫৭- ২৭৫) 

আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে। 2:39

হাঁ, যে মন্দ উপার্জন করবে এবং তার পাপ তাকে বেষ্টন করে নেবে, তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে হবে স্থায়ী। 2:81 

তারা সেখানে স্থায়ী হবে। তাদের থেকে আযাব হালকা করা হবে না এবং তাদেরকে অবকাশও দেয়া হবে না। 2:162

আর যারা অনুসরণ করেছে, তারা বলবে, ‘যদি আমাদের ফিরে যাওয়ার সুযোগ হত, তাহলে আমরা তাদের থেকে আলাদা হয়ে যেতাম, যেভাবে তারা আলাদা হয়ে গিয়েছে’। এভাবে আল্লাহ তাদেরকে তাদের আমলসমূহ দেখাবেন, তাদের জন্য আক্ষেপস্বরূপ। আর তারা আগুন থেকে বের হতে পারবে না। 2:167

“তারা তোমাকে হারাম মাস সম্পর্কে, তাতে লড়াই করা বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। বল, ‘তাতে লড়াই করা বড় পাপ; কিন্তু আল্লাহর পথে বাধা প্রদান, তাঁর সাথে কুফরী করা, মাসজিদুল হারাম থেকে বাধা দেয়া এবং তার অধিবাসীদেরকে তা থেকে বের করে দেয়া আল্লাহর নিকট অধিক বড় পাপ। আর ফিতনা হত্যার চেয়েও বড়’। আর তারা তোমাদের সাথে লড়াই করতে থাকবে, যতক্ষণ না তোমাদেরকে তোমাদের দীন থেকে ফিরিয়ে দেয়, তারা যদি পারে। আর যে তোমাদের মধ্য থেকে তাঁর দীন থেকে ফিরে যাবে, অতঃপর কাফির অবস্থায় মৃত্যু বরণ করবে, বস্তুত এদের আমলসমূহ দুনিয়া ও আখিরাতে বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে।” 2:217

“যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদের অভিভাবক, তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন। আর যারা কুফরী করে, তাদের অভিভাবক হল তাগূত। তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারে নিয়ে যায়। তারা আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে।” 2:257

“যারা সুদ খায়, তারা তার ন্যায় (কবর থেকে) উঠবে, যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল বানিয়ে দেয়। এটা এ জন্য যে, তারা বলে, বেচা-কেনা সুদের মতই। অথচ আল্লাহ বেচা-কেনা হালাল করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতএব, যার কাছে তার রবের পক্ষ থেকে উপদেশ আসার পর সে বিরত হল, যা গত হয়েছে তা তার জন্যই ইচ্ছাধীন। আর তার ব্যাপারটি আল্লাহর হাওলায়। আর যারা ফিরে গেল, তারা আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে।” 2:275

(নিসা-৪:১৪- ৯৩- ১২১- ১৬৯) 

“আর যে ইচ্ছাকৃত কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লা‘নত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন।” 4:93

“এদেরই আশ্রয়স্থল জাহান্নাম। আর তারা সেআর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক আযাব।” 4:14

খান থেকে পালাবার জায়গা পাবে না। 4:121

“জাহান্নামের পথ ছাড়া। তারা তাতে স্থায়ী হবে এবং তা আল্লাহর জন্য সহজ।” আল-বায়ান 4:169

(মায়েদা-৫:৩৭) তারা চাইবে আগুন থেকে বের হতে, কিন্তু তারা সেখান থেকে বের হবার নয় এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আযাব। আল-বায়ান  5:37

(আরাফ-৭:৩৬) আর যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং তার ব্যাপারে অহঙ্কার করেছে, তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে হবে স্থায়ী। 7:36

(তওবা-৯:৬৩-৬৮) তারা কি জানে না, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে, তবে তার জন্য অবশ্যই জাহান্নাম, তাতে সে চিরকাল থাকবে। এটা মহালাঞ্ছনা। 9:63

তোমরা ওযর পেশ করো না। তোমরা তোমাদের ঈমানের পর অবশ্যই কুফরী করেছ। যদি আমি তোমাদের থেকে একটি দলকে ক্ষমা করে দেই, তবে অপর দলকে আযাব দেব। কারণ, তারা হচ্ছে অপরাধী। 9:66

আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী ও কাফিরদেরকে জাহান্নামের আগুনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাতে তারা চিরদিন থাকবে, এটি তাদের জন্য যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের লা‘নত করেন এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আযাব।  9:67

(নাহল-১৬:২৯) সুতরাং তোমরা জাহান্নামের দরজাগুলো দিয়ে প্রবেশ কর, তাতে স্থায়ী হয়ে। অতএব অবশ্যই অহঙ্কারীদের আবাস অতিনিকৃষ্ট। ১৬:২৯

(বনীইসরাইল- ১৭:৯৭) আর আল্লাহ যাকে হিদায়াত দান করেন সে-ই হিদায়াতপ্রাপ্ত এবং যাকে তিনি পথহারা করেন তুমি কখনো তাদের জন্য তাঁকে ছাড়া অভিভাবক পাবে না। আর আমি কিয়ামতের দিনে তাদেরকে একত্র করব উপুড় করে, অন্ধ, মূক ও বধির অবস্থায়। তাদের আশ্রয়স্থল জাহান্নাম; যখনই তা নিস্তেজ হবে তখনই আমি তাদের জন্য আগুন বাড়িয়ে দেব। ১৭:৯৭

(ত্বোয়াহা- ২০:৭৪) যে তার রবের নিকট অপরাধী অবস্থায় আসবে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম। সেখানে সে মরবেও না, বাঁচবেও না। ২০:৭৪ 

(আম্বিয়া- ২১:৯৯- ১০২)   যদি তারা ইলাহ হত তবে তারা জাহান্নামে প্রবেশ করত না। আর তারা সবাই তাতে স্থায়ী হয়ে থাকবে। ২১: ৯৯ 

তারা জাহান্নামের ক্ষীণতম শব্দও শুনতে পাবে না। সেখানে তারা তাদের মনঃপুত বস্তুর মধ্যে চিরকাল থাকবে। ২১: ১০২

(হাজ্জ্ব-২২:৫১) আর যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করে দেয়ার চেষ্টা করে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী।  ২২:৫১

(মুমিনুন-২৩:১০৩) আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজদের ক্ষতি করল; জাহান্নামে তারা হবে স্থায়ী।  ২৩:১০৩

(যুমার- ৩৯:৭২)  

বলা হবে, ‘তোমরা জাহান্নামের দরজাসমূহে প্রবেশ কর, তাতেই স্থায়ীভাবে থাকার জন্য। অতএব অহঙ্কারীদের আবাসস্থল কতই না নিকৃষ্ট’! আল-বায়ান ৩৯:৭২

(মুমিন- ৪০:৭৬) 

তোমরা জাহান্নামের দরজাসমূহ দিয়ে প্রবেশ কর চিরকাল তাতে অবস্থানের জন্য। অতএব অহঙ্কারীদের বাসস্থান কতইনা নিকৃষ্ট! আল-বায়ান

(হামীম সেজদা- ৪১:২৮- ৪৫) 

এই আগুন, আল্লাহর দুশমনদের প্রতিদান। সেখানে থাকবে তাদের জন্য স্থায়ী নিবাস তারা যে আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করত তারই প্রতিফলস্বরূপ। ৪১:২৮ 

আর অবশ্যই আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম। অতঃপর তাতে মতভেদ করা হয়। আর যদি তোমার রবের পক্ষ থেকে একটি বাণী পূর্বেই না হত, তবে এদের মধ্যে ফয়সালা হয়ে যেত। আর এরা নিশ্চয় সে সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সংশয়েই লিপ্ত রয়েছে। আল-বায়ান ৪১:৪৫

(যুখরুফ- ৪৩:৭৪)- নিশ্চয় অপরাধীরা জাহান্নামের আযাবে স্থায়ী হবে; আল-বায়ান

(মুহাম্মাদ- ৪৭:১৫)- মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত হল, তাতে রয়েছে নির্মল পানির নহরসমূহ, দুধের ঝর্নাধারা, যার স্বাদ পরিবর্তিত হয়নি, পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহরসমূহ এবং আছে পরিশোধিত মধুর ঝর্নাধারা। তথায় তাদের জন্য থাকবে সব ধরনের ফলমূল আর তাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা। তারা কি তাদের ন্যায়, যারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে এবং তাদেরকে ফুটন্ত পানি পান করানো হবে ফলে তা তাদের নাড়িভুঁড়ি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেবে? আল-বায়ান ৪৭:১৫

(মুজাদালা- ৫৮:১৭)- আল্লাহর বিপরীতে তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তাদের আদৌ কোন কাজে আসবে না। এরাই জাহান্নামের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে। আল-বায়ান

(হাশর-৫৯:১৭)-তাদের দু’জনের পরিণতি ছিল এই যে, তারা দু’জনেই জাহান্নামী হবে, সেখানে তারা স্থায়ী হবে; আর এটাই যালিমদের প্রতিদান। আল-বায়ান ৫৮:১৭)

(তাগাবুন- ৬৪:১০)-কিন্তু যারা কুফরী করে এবং আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে তারাই জাহান্নামের অধিবাসী। তথায় তারা স্থায়ী হবে। আর তা কতইনা নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল। আল-বায়ান

(জ্বীন- ৭২:২৩)- কেবল আল্লাহর বাণী ও তাঁর রিসালাত পৌঁছানোই দায়িত্ব। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাতে তারা চিরস্থায়ী হবে। আল-বায়ান ৬৪:১০

(বাইয়্যিনাহ- ৯৮:৬)- নিশ্চয় কিতাবীদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে ও মুশরিকরা, জাহান্নামের আগুনে থাকবে স্থায়ীভাবে। ওরাই হল নিকৃষ্ট সৃষ্টি। আল-বায়ান

তাহলে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। সবাই যদি জাহান্নামে স্থায়ী হয় তবে সেটা কেমন ন্যায় বিচার। কেননা সবার তো পাপ আরে এক নয়! এবং সবার সাজা তো সমান হওয়ার কথা নয়! তাহলে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানা দরকার!

১৩ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে,আল কুরআনের গুরুত্ব এবং কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম আল-কুরআন সম্পর্কে সবাইকে জিজ্ঞাসিত করা হবে!

এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন,

নিশ্চয়ই এই কুরআন তোমার এবং তোমার সম্প্রদায়ের জন্য উপদেশ, তোমাদেরকে অবশ্যই এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে।আমি তোমাদের নিকট সত্য (কুরআন) পৌঁছিয়ে ছিলাম, কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই ছিলে সত্য বিমুখ। (৪৩:৪৪,৭৮)  

কিয়ামতের দিন, রাসূল বলবে, হে আমার রব! আমার সম্প্রদায়তো এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করেছিল। (২৫:৩০) 

আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি,তারা যথাযথভাবে সত্য বুঝে পাঠ করে, আর তারাই এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী,আর যারা এর প্রতি অবিশ্বাস করে,তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। (২:১২১) 

সুতরাং তাদের কি হল যে,তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না? আর যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করে শোননো হয়, তখন তারা সিজদা করে না (অর্থাৎ আল্লাহর বিধি-বিধান সমূহ পাঠ করে শোননো হলে, তা মান্য করে না বা মেনে নেয়না)? বরং যারা অবিশ্বাস করে,তারাই মিথ্যা মনে করে।(৮৪:২০-২২)

হে জিন ও মানব জাতি,তোমাদের মধ্য থেকে কি তোমাদের নিকট রাসূলগণ (বার্তাবাহকগণ) আসেনি, যারা তোমাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ বর্ণনা করত এবং তোমাদেরকে এই দিনের সাক্ষাতের ব্যাপারে তোমাদেরকে সতর্ক করত ? তারা বলবে, ‘আমরা আমাদের নিজদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলাম। আর দুনিয়ার জীবন তাদেরকে প্রতারিত করেছে এবং তারা নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে যে, তারা ছিল অবিশ্বাসী।(৬:১৩০) 

এটা এ জন্যে যে, অধিবাসীরা যখন গাফেল থাকে, তখন জনপদসমূহের অন্যায় আচরনের জন্য তাকে ধ্বংস করা তোমার রবের কাজ নয়। (৬:১৩১) 

আর তোমার রব কোন জনপদকে ধ্বংস করেন না, যতক্ষণ না তিনি তার মূল ভূখন্ডে রাসূল (বার্তাবাহক) প্রেরণ করেন, যে তাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে। আর কোন জনপদের অধিবাসীরা যালিম না হলে আমি তাদেরকে ধ্বংস করি না। (২৮:৫৯)

সুসংবাদদাতা ও সাবধানকারী রাসূল (বার্তাবাহক) প্রেরণ করেছি, যাতে রাসূলগণ (বার্তাবাহকগণ) আসার পর আল্লাহর বিরুদ্ধে মানুষের কোন অভিযোগ না থাকে। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।(৪:১৬৫) 

হে কিতাবীগণ, তোমাদের নিকট আমার রাসূল (বার্তাবাহক) এসেছে, রাসূলদের (বার্তাবাহকদের) একটি বিরতির পর তোমাদের জন্য তিনি স্পষ্ট বর্ণনা করছেন. যেন তোমরা না বল যে, আমাদের নিকট কোন সুসংবাদদাতা কিংবা সতর্ককারী আসেনি’। অবশ্যই তোমাদের নিকট সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী এসেছে। আর আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। (৫:১৯) 

নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, অচিরেই আমি তাদেরকে প্রবেশ করাব আগুনে। যখনই তাদের চামড়াগুলো পুড়ে যাবে তখনই আমি তাদেরকে পালটে দিব অন্য চামড়া দিয়ে যাতে তারা আস্বাদন করে আযাব। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।(৪:৫৬)

নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং তার ব্যাপারে অহঙ্কার করেছে, তাদের জন্য আসমানের দরজাসমূহ খোলা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ না উট সূঁচের ছিদ্রতে প্রবেশ করে। আর এভাবেই আমি অপরাধীদেরকে প্রতিদান দেই। তাদের জন্য থাকবে জাহান্নামের বিছানা এবং তাদের উপরে থাকবে আগুনের আচ্ছাদন। আর এভাবেই আমি যালিমদেরকে প্রতিদান দেই।  (৭:৪০,৪১) 

আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা সেখানে থাকবে বীভৎস চেহারায়, তোমাদের কাছে কি আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হত না? তারপর তোমরা সেসবে মিথ্যারোপ করতে। তারা বলবে, হে আমাদের রব! দুর্ভাগ্য আমাদেরকে পেয়ে বসেছিল এবং আমরা ছিলাম এক পথভ্রষ্ট সম্প্রদায়। হে আমাদের রব! এ আগুন থেকে আমাদেরকে বের করুন, তারপর আমরা যদি পুনরায় কুফরী করি, তবে তো আমরা অবশ্যই যালিম হব। আল্লাহ বলবেন, তোমরা হীন অবস্থায় এখানেই থাক এবং আমার সাথে কোন কথা বলবে না। (২৩:১০৪-১০৮)

আর কাফিরদেরকে দলে দলে জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। অবশেষে তারা যখন জাহান্নামের কাছে এসে পৌঁছবে তখন তার দরজাগুলো খুলে দেয়া হবে এবং জাহান্নামের রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, ‘তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে কি রাসূলগণ (বার্তাবাহকগণ) আসেনি? যারা তোমাদের কাছে তোমাদের রবের আয়াতগুলো তিলাওয়াত করত এবং এ দিনের সাক্ষাৎ সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করত ? তারা বলবে, অবশ্যই এসেছিল, কিন্তু কাফিরদের উপর আযাবের বাণী সত্যে পরিণত হল।(৩৯:৭১) 

নিশ্চয় আমি তাদেরকে যেভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম তোমাদেরকে সেভাবে প্রতিষ্ঠিত করিনি,আর আমি তাদেরকে দিয়েছিলাম কান, চোখ ও হৃদয়। অতঃপর তাদের কান, চোখ ও হৃদয় তাদের কোন কাজে আসেনি। যখন তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছিল। আর যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত, তা-ই তাদেরকে পরিবেষ্টন করল। আর যখন তাদের কাছে আমাদের সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন যারা কুফরী করেছে তাদের কাছে সত্য আসার পর তারা বলে, এ তো সুস্পষ্ট জাদু। (৪৬:২,৭)

জাহান্নামী বা অপরাধীদের উক্তি সমূহ : এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন,

যদি আমি তাদেরকে ইতোপূর্বে শাস্তি দ্বারা ধ্বংস করতাম তাহলে তারা বলত, হে আমাদের রব, আপনি আমাদের নিকট একজন রাসূল (বার্তাবাহক) প্রেরণ করলেন না কেন? তা হলে আমরা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবার পূর্বে আপনার আয়াতসমূহ মেনে চলতাম।(২০:১৩৪)

 রাসূল (বার্তাবাহক) না পাঠালে তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের কোন বিপদ হলে তারা বলত, হে আমাদের রব, আপনি আমাদের নিকট কোন রাসূল (বার্তাবাহক) প্রেরণ করলেন না কেন? তাহলে আমরা আপনার আয়াতসমূহ মেনে চলতাম এবং আমরা হইতাম বিশ^াসী।(২৮:৪৭).

আর প্রত্যেককে তার আমলের পূর্ণ প্রতিফল দেওয়া হবে এবং তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সর্বাধিক অবগত। আর অবিশ্বাসীদেরকে দলে দলে জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। অবশেষে তারা যখন জাহান্নামের কাছে এসে পৌঁছবে তখন তার দরজাগুলো খুলে দেয়া হবে এবং জাহান্নামের রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, ‘তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে কি রাসূলগণ (বার্তাবাহকগণ) আসেনি, যারা তোমাদের কাছে তোমাদের রবের আয়াতগুলো তিলাওয়াত করত এবং এ দিনের সাক্ষাৎ সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করত’? তারা বলবে, অবশ্যই এসেছিল  কিন্তু অবিশ্বাসীদের উপর আযাবের বাণী সত্যে পরিণত হল।(৩৯:৭০,৭১) 

যখন তাদেরকে তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার বিকট শব্দ শুনতে পাবে। আর তা উথলিয়ে উঠবে। রোষে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে, যখনই তাতে কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তাদেরকে রক্ষীরা জিজ্ঞেস করবে, তোমাদের নিকট কি কোন সতর্ককারী আসেনি? তারা বলবে, ‘অবশ্যই আমাদের নিকট সতর্ককারী এসেছিল, কিন্তু আমরা তাদেরকে মিথ্যাবাদী গণ্য করেছিলাম এবং বলেছিলাম, আল্লাহ কিছুই অবতীর্ণ করেননি, তোমরা তো মহা বিভ্রান্তিতে রয়েছ। এবং তারা আরও বলবে, যদি আমরা শুনতাম অথবা বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম তাহলে আমরা জাহান্নামবাসী হতামনা। ৬৭:৭-১০) 

যদি তুমি দেখতে যখন তাদেরকে জাহান্নামের কিনারায় দাঁড় করানো হবে তখন তারা বলবে হায়! আমাদেরকে যদি আবার (পৃথিবীতে) পাঠানো হত। আর আমরা আমাদের রবের আয়াতসমূহ অস্বীকার করতাম না এবং আমরা অবিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। বরং তাদের কাছে প্রকাশ হয়ে গিয়েছে পূর্বে যা তারা গোপন করত। আর যদি তাদের ফেরত পাঠানো হয় অবশ্যই যা থেকে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে তারা তাতে ফিরে যেত এবং নিশ্চয়ই তারা মিথ্যাবাদী। (৬:২৭-২৮)

তোমাদের কি হয়েছে? তোমাদের এ কেমন সিদ্ধান্ত? তোমাদের কাছে কি কোন কিতাব আছে যা তোমরা অধ্যয়ন করছ? তোমাদের জন্য সেখানে তাই আছে যা তোমরা পছন্দ কর? অথবা তোমাদের জন্য কি আমার উপর কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ কোন অঙ্গীকার রয়েছে যে, অবশ্যই তোমাদের জন্য থাকবে তোমরা যা পছন্দ করবে? তুমি তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর, কে এই দাবীর ব্যাপারে যিম্মাদার?(৬৮:৩৬-৪০) 

বস্তুত তাদের প্রত্যেকেই কামনা করে যে, তাকে একটি উম্মুক্ত  গ্রন্থ দেয়া হোক। না, এটা হবার নয়। বরং তারা তো  আখিরাতকে ভয় করে না। কখনও নয়! এ কুরআন সকলের জন্য উপদেশ। অতএব যার ইচ্ছা সে ইহা হতে উপদেশ গ্রহণ করুক। (৭৪:৫২-৫৫) 

সেদিন দুর্ভোগ সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের জন্য। সুতরাং তারা এ কুরআনের পরিবর্তে আর কোন কথায় বিশ্বাস স্থাপন করবে? (৭৭:৪৯,৫০)  

আর তারা বলত,পূর্ববর্তীদের কিতাবের মত যদি আমাদের কোন কিতাব থাকত, তাহলে অবশ্যই আমরা আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দা হতাম। কিন্তু তারা কুরআন প্রত্যাখ্যান করল এবং শীঘ্রই তারা জানতে পারবে। (৩৭:১৬৭-১৭০) 

অতএব ছেড়ে দাও আমাকে এবং যারা এ বাণী প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকে,আমি তাদেরকে ধীরে ধীরে এমনভাবে পাকড়াও করব যে, তারা জানতে পারবে না। আর আমি তাদেরকে সময় দিয়ে থাকি, আমার কৌশল অত্যন্ত বলিষ্ঠ। (৬৮:৪৪,৪৫)

আর যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, অচিরেই আমি তাদেরকে ধীরে ধীরে এমনভাবে পাকড়াও করব যে, তারা জানতেও পারবে না।(৭:১৮২) 

আর যে ব্যক্তি আমার যিকির (নিদর্শনাবলী,উপদেশ বা কুরআন) থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে, তার জীবন হবে সংকীর্ণ আর আমি তাকে কিয়ামাতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়। সে বলবে, হে আমার রব, কেন আমাকে অন্ধ অবস্থায় উঠালেন? অথচ আমি তো ছিলাম দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন’? তিনি বলবেন, ‘এভাবেই তোমার নিকট আমার নিদর্শনাবলী এসেছিল, কিন্তু তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে এবং সেভাবেই আজ তোমাকে ভুলে যাওয়া হল’।(২০:১২৪-১২৬)

আর আমি আমার নিকট থেকে তোমাকে দান করেছি যিকির (নিদর্শনাবলী, উপদেশ বা কুরআন) । এটা থেকে যে বিমুখ হবে, অবশ্যই সে কিয়ামতের দিন মহাভার বহন করবে।(২০:৯৯-১০০) 

আর যে ব্যক্তি তার রবের যিকির (নিদর্শনাবলী,উপদেশ বা কুরআন) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাকে তিনি কঠিন আযাবে প্রবেশ করাবেন।(৭২:১৭) 

নিশ্চয় যারা যিকির (নিদর্শনাবলী,উপদেশ বা কুরআন) আসার পরও তা অস্বীকার করে তাদেরকে অবশ্যই এর পরিণাম ভোগ করতে হবে। আর এটি নিশ্চয় এক সম্মানিত গ্রন্থ। কোন মিথ্যা এতে অনুপ্রবেশ করবে না। সম্মুখ হতেও নয়, পশ্চাৎ হতেও নয়,এটা প্রজ্ঞাময় প্রশংসা আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ। (৪১:৪১,৪২) 

আর যে পরম করুণাময়ের যিকির (নিদর্শনাবলী, উপদেশ বা কুরআন) থেকে বিমুখ থাকে আমি তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করি, ফলে সে হয়ে যায় তার সঙ্গী। তারাই মানুষকে সৎপথে চলতে অবশ্যই বাধা দেয়, আর মানুষ মনে করে যে, তারা সঠিক পথে রয়েছে। (৪৩:৩৬.৩৭)

অতএব তুমি তাকে উপেক্ষা করে চল, যে আমার যিকির (নিদর্শনাবলী,উপদেশ বা কুরআন) থেকে বিমুখ হয় এবং কেবল দুনিয়ার জীবনই কামনা করে। (৫৩:২৯)

তবে কি তারা কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা- ভাবনা করে না? নাকি তাদের অন্তরসমূহে তালা রয়েছে? (৪৭:২৪)

তবে তারা কি কুরআন নিয়ে গবেষণা করে না? আর যদি তা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো পক্ষ থেকে হত, তবে অবশ্যই তারা এতে অনেক বৈপরীত্য দেখতে পেত। (৪:৮২)

তবে কি তারা এই বাণী অনুধাবন করে না? (২৩:৬৮)

অতএব তোমরা কুরআন থেকে যতটুকু সহজ ততটুকু পড়। তিনি জানেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়বে। আর কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে পৃথিবীতে ভ্রমণ করবে, আর কেউ কেউ আল্লাহর পথে লড়াই করবে। অতএব তোমরা কুরআন থেকে যতটুকু সহজ ততটুকু পড়।(৭৩:২০) 

অতএব তারা যা বলে তা আমি জানি, তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও। সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে তাকে উপদেশ দান কর কুরআনের সাহায্যে।(৫০:৪৫) .

সুতরাং তুমি অবিশ্বাসীদের আনুগত্য করো না এবং তুমি কুরআনের সাহায্যে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সংগ্রাম চালিয়ে যাও। (২৫:৫২) 

আর তার চেয়ে বড় যালিম আর কে, যাকে স্বীয় রবের আয়াতসমূহের মাধ্যমে উপদেশ দেয়ার পর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। নিশ্চয় আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দিয়ে থাকি। (৩২:২২)

আর তার চেয়ে অধিক যালিম আর কে হতে পারে, যাকে তার রবের আয়াতসমূহ স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে, অতঃপর সে তা থেকে বিমুখ হয়েছে এবং সে ভুলে গেছে যা তার দু-হাত পেশ করেছে? । (১৮:৫৭)

১৪ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ  আল্লাহর প্রদত্ব জীবন ব্যবস্থা  সমন্ধে জানতে হলে, কোন ব্যক্তি দিয়ে নয় বরং আল্লাহর কিতাব  আল কুরআন দিয়ে জানতে হবে   !

এ সম্পর্কে  আল্লাহ বলেন,

হে মানুষ, তুমি তোমার রবের কাছে পৌছা পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, অতঃপর তুমি তাঁর সাক্ষাত লাভ করবে। (৮৪:৬) 

নিশ্চয় আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, আমি তাকে পরীক্ষা করব, ফলে আমি তাকে বানিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন। নিশ্চয় আমি তাকে পথের নির্দেশ দিয়েছি, হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, না হয় সে অকৃতজ্ঞ হবে। (৭৬:২,৩)(৭:১৭৯) 

শপথ নফসের এবং তার, যিনি তাকে সুবিন্যস্ত করেছেন। অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। সেই সফলকাম হয়েছে যে নিজ আত্মাকে পরিশুদ্ধ  করেছে এবং সেই ব্যর্থ হয়েছে যে নিজ আত্মাকে কলূষিত করেছে। (৯১:৭-১০) 

শপথ তাঁর যিনি নর-নারীর সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা বিভিন্ন প্রকৃতির। সুতরাং যে দান করেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে এবং যা উত্তম তা সত্য বলে গ্রহণ করেছে, আমি তার জন্য সহজ পথে চলা সহজ করে দিব।  আর যে কার্পণ্য করেছে এবং নিজকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করেছে,  আর যা উত্তম তাতে মিথ্যারোপ করেছে, আমি তার জন্য  সুগম করে দিব কঠোর পথ। আর তার সম্পদ তার কোন কাজে আসবে না, যখন সে ধ্বংস হবে। নিশ্চয় পথ প্রদর্শন করাই আমার দায়িত্ব। আর পরকাল ও ইহকালের একমাত্র মালিক আমি।  (৯২:৩-১৩) 

আমি তোমার জন্য কল্যাণের পথকে সহজ করে দিব। অতএব উপদেশ দাও, যদি উপদেশ ফলপ্রসূ হয়। যে ভয় করে, সে উপদেশ গ্রহণ করবে। আর নিতান্ত হতভাগ্য তা উপেক্ষা করবে। সে মহা অগ্নিতে প্রবেশ করবে। অতঃপর সে সেখানে মরবেও না,  বাচবেও না। নিশ্চয় সে সাফল্য লাভ করে, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে।(৮৭:৮-১৪) 

আর যে ব্যক্তি পরিশুদ্ধি অর্জন করে সে নিজের জন্যই পরিশুদ্ধি অর্জন করে। আর আল্লাহর কাছেই প্রত্যাবর্তন। (৩৫:১৮) 

যে সৎকাজ করে সে তার নিজের কল্যাণের জন্যই তা করে এবং কেউ মন্দ কাজ করলে তার প্রতিফল সে-ই ভোগ করবে। আর আপনার রব তার বান্দাদের প্রতি মোটেই যুলুমকারী নন। (৪১:৪৬) 

আর আমি তাকে (পাপ ও পুণ্যের) দু’টো পথ দেখিয়েছি। তবে সে তো বন্ধুর গিরিপথে প্রবেশ করেনি। (৯০:১০,১১)  

নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকর্ম করেছে তারাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ। (৯৮:৭) 

“স্থায়ী সৎকর্ম তোমার রবের পুরুষ্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং প্রতিদান হিসাবেও শ্রেষ্ঠ। (১৮:৪৬) (১৯:৭৬) 

“অতএব তোমরা  সৎকাজে প্রতিযোগিতা কর। (২:১৪৮) (৫:৪৮) 

এবং সতকর্মের বিনিময়ে তোমাদের পুরস্কৃত করা হবে। (৩৯:৩৫) 

সুতরাং যদি কেহ বিশ্বাসী হয়ে সৎ কাজ করে তাহলে তার কাজ প্রচেষ্টা অগ্রাহ্য হবেনা এবং আমিতো তা লিখে রাখি। (২১:৯৪) 

আর যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকাজ করেছে, আমি কোন ব্যক্তিকে তার সাধ্যের বাইরে দায়িত্ব অর্পণ করি না। তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানে হবে স্থায়ী। (৭:৪২) 


আর কোন বোঝা বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না এবং কোন ভারাক্রান্ত ব্যক্তি যদি তার বোঝা বহনের জন্য কাউকে ডাকে তবে তার বোঝার কোন অংশই বহন করা হবে না যদিও সে আত্মীয় হয়। (৩৫:১৮)

যখনই জাহান্নামে কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তার প্রহরীরা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের নিকট কি কোন সতর্ককারী আসেনি’? তারা বলবে হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদের নিকট সতর্ককারী এসেছিল, কিন্তু আমরা তাদেরকে অস্বীকার করেছিলাম আর আমরা বলেছিলাম, ‘আল্লাহ কোন কিছুই অবতীর্ণ করেননি, তোমরা তো ঘোর বিভ্রান্তিতে পড়ে আছ। এবং তারা আরও বলবে, যদি আমরা শুনতাম অথবা বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম তাহলে আমরা জাহান্নামবাসী হতাম না। (৬৭:৭-১০)

আর অবশ্যই আমি সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য বহু জিন ও মানুষকে। তাদের রয়েছে অন্তর, তা দ্বারা তারা বুঝে না, তাদের রয়েছে চোখ, তা দ্বারা তারা দেখে না এবং তাদের রয়েছে কান, তা দ্বারা তারা শুনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত বরং তারা অধিক পথভ্রষ্ট। তারাই হচ্ছে গাফেল। (৭:১৭৯) 

আর আমি অবশ্যই তাদেরকে যাতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, তোমাদেরকে তাতে প্রতিষ্ঠিত করিনি। আর আমি তাদেরকে কান, চোখ ও হৃদয় দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা যখন আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত, তখন তাদের কান, তাদের চোখ ও তাদের হৃদয়সমূহ তাদের কোন উপকারে আসেনি। আর তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত তা-ই তাদেরকে পরিবেষ্টন করল। (৪৬:২৬)

তারা কি যমীনে ভ্রমন করেনি? তাহলে তারা জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন হৃদয় ও শ্রুতিশক্তিসম্পন্ন শ্রবণের অধিকারী হতে পারত। বস্তুত তাদের চোখ তো অন্ধ নয়,বরং অন্ধ হচ্ছে বুকের মধ্যে অবস্থিত হৃদয়।(২২:৪৬) 

তুমি কি শোনাতে পারবে বধিরকে? অথবা যে অন্ধ এবং যে ব্যক্তি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছে তাকে কি পারবে সৎ পথে পরিচালিত করতে?(৪৩:৪০) 

নিশ্চয় তুমি মৃতকে শোনাতে পারবে না, আর তুমি বধিরকে আহবান শোনাতে পারবে না, যখন তারা পিঠ দেখিয়ে চলে যায়। আর তুমি অন্ধদেরকে তাদের পথভ্রষ্টতা হতে পথে আনতে পারবে না। তুমি শোনাতে পারবে শুধু তাদেরকে যারা বিশ্বাস করে। আর তারাই আত্মসমর্পনকারী (মুসলিম)। (২৭:৮০, ৮১) (৩০:৫১, ৫২) 

হে আমার বান্দাগণ, আজ তোমাদের কোন ভয় নেই এবং তোমরা চিন্তিতও হবে না। যারা আমার আয়াতে বিশ্বাস করেছিল এবং আত্মসমর্পণ(মুসলিম) করেছিল। (৪৩:৬৮, ৬৯) 

মানুষ সৃষ্টিরকারণ। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,আর জিন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে তারা আমার ইবাদাত করবে।(৫১:৫৬) 

নিশ্চয় আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিলিত শুক্রবিন্দু হতে,যাতে আমি তাকে পরীক্ষা করি,এই জন্য আমি তাকে করেছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।(৭৬:২)

আর তিনিই সেই মহান সত্তা, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন এবং সেই সময় তাঁর আরশ পানির উপরে ছিল,যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করে নেন, তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম কে? (১১:৭) 

যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল। (৬৭:২) 

নিশ্চয় যমীনের উপর যা রয়েছে, তা আমি শোভা-সৌন্দর্য করেছি তার জন্য, যাতে তাদেরকে পরীক্ষা করি যে, কর্মে তাদের মধ্যে কে উত্তম। (১৮:৭) 

জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে, আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা বিশেষভাবে পরীক্ষা করে থাকি। আর আমারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। (২১:৩৫) 

তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন, তাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান। সুতরাং তোমরা ভাল কাজে প্রতিযোগিতা কর। আল্লাহরই দিকে তোমাদের সবার প্রত্যাবর্তনস্থল। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন, যা নিয়ে তোমরা মতবিরোধ করতে। (৫:৪৮)

মানুষ যা চায় তাই কি সে পায়? আর এই যে, মানুষ তাই পায় যা সে চেষ্টা করে।(৫৩:২৪,৩৯) প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের দায়ে আবদ্ধ। (৭৪:৩৮) 

বল,প্রত্যেকেই নিজ প্রকৃতি অনুযায়ী আমল (কাজ) করে থাকে । কিন্তু তোমার রবই ভাল করে জানেন, কে সর্বাধিক নির্ভুল পথে আছে। (১৭:৮৪)

আল্লাহর নিকট তাদের বিভিন্ন মর্যাদা রয়েছে এবং তারা যা কিছুই করছে, আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা। (৩:১৬৩) 

আর প্রত্যেকই নিজ নিজ আমলের কারণে মর্যাদা লাভ করবে,তারা কি আমল করত সে বিষয়ে তোমার রব উদাসীন নন।(৬:১৩২) 

তাদের জন্য তাদের রবের নিকট রয়েছে শান্তির আবাস এবং তারা যে আমল করত, তার কারণে তিনি তাদের অভিভাবক।(৬:১২৭) 

আর নিশ্চয় তোমার রব সবাইকে তাদের আমলের প্রতিদান পুরোপুরি দান করবেন। তারা যা আমল করে, অবশ্যই তিনি সে ব্যাপারে সবিশেষ অবহিত। (১১:১১১) 

আর তারা স্বল্প কিংবা অধিক যা-ই ব্যয় করে এবং অতিক্রম করে যে প্রান্তরই, তা তাদের জন্য লিখে দেয়া হয়, যাতে তারা যা আমল করত, আল্লাহ তাদেরকে তার চেয়ে উত্তম প্রতিদান দেন। (৯:১২১) 

যে কেউ সৎকর্ম নিয়ে হাজির হবে তার জন্য আছে আরো উত্তম প্রতিদান। আর যে মন্দ কাজ নিয়ে হাজির হবে তাহলে যারা মন্দকর্ম করে তাদেরকে তাদের কাজ অনুপাতেই শাস্তি দেয়া হবে। (২৮:৮৪)

অতঃপর কোন ব্যক্তি জানে না তাদের জন্য চোখ জুড়ানো কী জিনিস লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তারা যা করত, তার বিনিময়স্বরূপ। (৩৪:১৭) 

তারাই জান্নাতের অধিবাসী, তাতে তারা স্থায়ীভাবে থাকবে,তারা যা আমল করত তার বিনিময়স্বরূপ। (৪৬:১৪)

তারা যে আমল করত তার প্রতিদানস্বরূপ। (৫৬:২৪) 

যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে,অবশ্যই আমি তাদের থেকে তাদের পাপসমূহ দূর করে দিব এবং আমি অবশ্যই তাদের সেই উত্তম আমলের প্রতিদান দেব, যা তারা করত।(২৯:৭)

তবে যে অনুশোচনা করে,  বিশ্বাস করে এবং সৎকর্ম করে। পরিণামে আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দিবেন। আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(২৫:৭০)

আর যে সত্য নিয়ে এসেছে এবং যে তা সত্য বলে মেনে নিয়েছে, তারাই হল মুত্তাকী। তাদের জন্য তাদের রবের কাছে তা-ই রয়েছে যা তারা চাইবে। এটাই সৎকর্মশীলদের প্রতিদান। যাতে তারা যে সব মন্দ কাজ করেছে আল্লাহ্ তা মুছে দিতে পারেন, আর তারা যে সব সৎ কাজ করেছে তার জন্য তাদেরকে পুরস্কৃত করেন। (৩৫:৩৩-৩৫)

বিশ্বাসীদেরকে  আল্লাহর কাছে পরীক্ষা দিতে হবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,মানুষ কি মনে করে যে, তাকে এমনি ছেড়ে দেওয়া হবে? (৭৫:৩৬) 

আলিফ-লাম-মীম। মানুষ কি মনে করেছে যে, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করছি, এ কথা বললেই তাদেরকে পরীক্ষা না করে ছেড়ে দেওয়া হবে? আর আমি তো তাদের পূর্ববর্তীদের পরীক্ষা করেছি। ফলে আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন, কারা সত্য বলে এবং অবশ্যই তিনি জেনে নেবেন, কারা মিথ্যাবাদী।  (২৯:১-৩)

তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ তোমরা এখনও তাদের অবস্থা প্রাপ্ত হওনি যারা তোমাদের পূর্বে বিগত হয়েছে, তাদেরকে বিপদ ও দুঃখ স্পর্শ করেছিল এবং তাদেরকে প্রকম্পিত করা হয়েছিল, এমন কি রাসূল ও তৎসহ বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ বলেছিল, কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে? সতর্ক হও, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী। (২:২১৪)

তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, অথচ আল্লাহ তোমাদের মধ্যে কে সংগ্রাম করেছে আর কে ধৈর্যশীল তা এখনো প্রকাশ করেননি?(৩:১৪২) 

তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমাদেরকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে অথচ এখনও আল্লাহ প্রকাশ করেননি যে, তোমাদের মধ্যে কারা সংগ্রাম করেছে এবং কারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ও মুমিনগণ ছাড়া অন্য কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করেনি? আর তোমরা যা কর, সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।(৯:১৬) 

আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যতক্ষণ না আমি প্রকাশ করে দেই তোমাদের মধ্যে কারা সংগ্রামকারী ও ধৈর্যশীল এবং আমি তোমাদের কথা- কাজ পরীক্ষা করে নেব।(৪৭:৩১) 

আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে অবশ্যই পরিক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষয়-ক্ষতি দ্বারা। আর আপনি সুসংবাদ দিন ধৈর্যশীলদেরকে। যারা তাদের উপর কোন বিপদ এলে বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর এবং নিশ্চিতভাবে তারই দিকে ফিরে যাব। এরাই তারা, যাদের প্রতি তাদের রবের কাছ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ এবং রহমত বর্ষিত হয়, আর তারাই সৎপথে পরিচালিত। (২:১৫৫-১৫৭) 

নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বাসীদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে), তাদের জন্য আছে জান্নাত। (৯:১১১)  

আর আমি তোমাদের পূর্বেকার জাতিসমূহের কাছে বহু রাসূল পাঠিয়েছি, আমি তাদের প্রতি ক্ষুধা, দারিদ্রতা ও রোগ ব্যাধি চাপিয়ে দিয়েছি, যেন তারা নম্রতা প্রকাশ করে আমার সামনে নতি স্বীকার করে। (৬:৪২) 

আর আমরা কোন জনপদে নবী পাঠালেই সেখানকার অধিবাসীদেরকে অর্থ-সংকট ও দুঃখ-কষ্ট দ্বারা আক্রান্ত করি, যাতে তারা কাকুতি-মিনতি করে। তারপর আমরা অকল্যাণকে কল্যাণে পরিবর্তিত করি। অবশেষে তারা প্রাচুর্যের অধিকারী হয় এবং বলে, আমাদের পূর্বপুরুষরাও তো দুঃখ-সুখ ভোগ করেছে। অতঃপর হঠাৎ আমরা তাদেরকে পাকড়াও করি, এমনভাবে যে, তারা উপলব্ধিও করতে পারে না। আর যদি সে সব জনপদের অধিবাসীরা বিশ্বাস স্থাপন করত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তবে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আসমান ও যমীনের বরকতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম, কিন্তু তারা মিথ্যারোপ করেছিল; কাজেই আমরা তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদেরকে পাকড়াও করেছি। (৭:৯৪-৯৬) 

আর অবশ্যই তোমার পূর্বে অনেক রাসূলকে অস্বীকার করা হয়েছে, অতঃপর তারা তাদেরকে অস্বীকার করা ও কষ্ট দেয়ার ক্ষেত্রে ধৈর্যধারণ করেছে, যতক্ষণ না আমার সাহায্য তাদের কাছে এসেছে। আর আল্লাহর বাণীসমূহের কোন পরিবর্তনকারী নেই এবং অবশ্যই রাসূলগণের কিছু সংবাদ তোমার কাছে এসেছে। (৬:৩৪)

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে নিন্মক্ত আয়াত গুলো দেখে নেয়া যেতে পারে। 

(২৭:৯২) (৩৯:৪১) (৪৫:১৫) (২৭:৮৯,৯০) (১৭:১৫) (১৭:৭) (২৮:৮৪) (৪:৮৫) (২৮:৫৬) (২:২৭২) (২৯:৬৯) (২০:১১২) (৪:৩২) (৪:১২৪) (৪০:৪০) (১৬:৯৭) (৩:১৯৫) (৪৮:৫) (৯:৭১, ৭২) (৯:১১২) (৩৩:৩৫, ৩৬) (২:২৮৬) (২৩:৬২) (৬:১৫২) (৬৫:৭)  (৬:১৬৪) (১৭:১৫) (৩৯:৭) (৫৩:৩৮) (৪:১১২) (২৯:১২,১৩) (১৬:২৪,২৫) (৩৩:৫৭, ৫৮) (৮৫:১০) (৪১:২৯) 

১৫ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে  রব্বুন আল্লাহ ঘোষণা করা। একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে “রব্বুন  আল্লাহ” (আমাদের রব আল্লাহ) ঘোষণা করতে হবে!

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

তাদেরকে তাদের ঘর বাড়ী হতে অন্যায়ভাবে বহিস্কৃত করা হয়েছে শুধু এ কারণে যে, তারা বলে,আমাদের রব আল্লাহ। (২২:৪০)

নিশ্চয় যারা বলে,আমাদের রব আল্লাহ। অতঃপর এই বিশ্বাসে অবিচলিত থাকে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।(৪৬:১৩) 

নিশ্চয় যারা বলে, আল্লাহই আমাদের রব। অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের নিকট অবতীর্ণ হয় মালাইকারা এবং বলে, তোমরা ভয় পেয়ো না, দুশ্চিন্তা করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ কর তোমাদেরকে যার ওয়াদা দেয়া হয়েছিল।(৪১:৩০)

যদি কেহ সৎ কর্মপরায়ণ হয়ে একনিষ্ঠ ও বিশুদ্ধচিত্তে আল্লাহর কাছে নিজকে আত্মসমর্পন করে তাহলে সেতো দৃঢ়ভাবে ধারণ করে এক মযবুত হাতল। আর সকল বিষয়ের পরিণাম আল্লাহরই কাছে।(৩১:২২) 

হ্যাঁ, যে ব্যক্তি নিজকে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে আর সৎকর্মশীল হয়, তবে তার জন্য রয়েছে তার রবের নিকট প্রতিদান। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।(২:১১২)

আর দীনের ব্যাপারে তার তুলনায় কে উত্তম,যে সৎকর্মপরায়ণ অবস্থায় আল্লাহর কাছে নিজকে আত্মসমর্পণ করল এবং একনিষ্ঠভাবে ইবরাহীমের আদর্শ অনুসরণ করল? আর আল্লাহ ইবরাহীমকে পরম বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন।(৪:১২৫) 

যখন তার রব তাকে বললেন,তুমি আত্মসমর্পণ কর। সে বলল,আমি বিশ্বজগতের রবের নিকট আত্মসমর্পণ করলাম। (২:২৩১) 

যদি তারা তোমার সাথে বিতর্ক করে, তবে তুমি বল, আমি আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করলাম এবং আমার অনুসারীরাও। আর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদেরকে এবং উম্মীদেরকে(কিতাবের জ্ঞান না জানাদের) বল, তোমরা কি আত্মসমর্পণ করেছ? তখন যদি তারা আত্মসমর্পণ করে, তাহলে তারা অবশ্যই হিদায়াতপ্রাপ্ত হবে। আর যদি ফিরে যায়, তাহলে তোমার দায়িত্ব শুধু পৌঁছিয়ে দেয়া। আর আল্লাহ বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা।(৩:২০)

বল, আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্যকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করব, যিনি আসমানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা? তিনি আহার দেন, তাঁকে আহার দেয়া হয় না। বল, নিশ্চয় আমি আদিষ্ট হয়েছি যে, যারা আত্মসমর্পণ করেছে যেন আমি তাদের প্রথম হই। আর তুমি কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। (৬:১৪) 

বল, ‘আল্লাহর পথই পথ এবং আমরা বিশ্বজগতের  রবের নিকট আত্মসমর্পণ করতে আদিষ্ট হয়েছি।(৬:৭১) 

এইভাবে তিনি তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করেন, যাতে তোমরা আত্মসমর্পণ কর।(১৬:৮১) 

তোমাদের ইলাহ তো এক ইলাহ, অতএব তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণ কর।(২২:৩৪) তারা কি আল্লাহর দীনের পরিবর্তে অন্য কিছু তালাশ করছে? অথচ আসমান ও যমীনে যা আছে সবই ইচ্ছা ও অনিচ্ছায় তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণ করেছে এবং তাদেরকে তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তন করা হবে।(৩:৮৩) 

আল্লাহর নিকট একমাত্র গ্রহণযোগ্য দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থার নাম হচ্ছে ইসলাম অর্থাৎ শান্তি। আজ আমি  তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে (শান্তির জীবন ব্যবস্থাকে) তোমাদের জন্য দীন হিসাবে মনোনীত করলাম।(৫:৩)

নিশ্চয় আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন হল ইসলাম।(৩:১৯)

আর যে কেহ ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্ম অন্বেষণ করে তা কখনই তার নিকট হতে গৃহীত হবেনা এবং পরলোকে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (৩:৮৫) 

হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ কর।(২:২০৮) 

হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা আল্লাহকে যথার্থভাবে ভয় কর এবং তোমরা আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। (৩:১০২)

আমি সকল সৃষ্টির রবের কাছে নিজকে সমর্পণ করলাম’। (২ঃ১৩১)

‘নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু আল্লাহর জন্য, যিনি সকল সৃষ্টির রব’। (৬ঃ১৬২)

নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। (২ঃ১৫৬)

‘হে আমার রব, আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই’। আর হে আমার রব, আমার কাছে তাদের উপস্থিতি হতে আপনার কাছে পানাহ চাই।’ (২৩ঃ৯৭-৯৮)

হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আপনার ওপরই ভরসা করি, আপনারই অভিমুখী হই আর প্রত্যাবর্তন তো আপনারই কাছে। (৬০ঃ৪, ইব্রাহীম আঃ)

‘হে আমার রব, নিশ্চয় আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহই নাযিল করবেন, আমি তার মুখাপেক্ষী’। (২৮ঃ২৪, মূসা আঃ)

‘হে আমাদের রব, আমাদের পক্ষ থেকে কবূল করুন। নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’।(২ঃ১২৭,ইব্রাহিম আঃ)

‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদাতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’। (২ঃ১২৮, ইব্রাহিম আঃ)

‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা নাযিল করা হয়েছে আমাদের উপর ও যা নাযিল করা হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর আর যা প্রদান করা হয়েছে মূসা ও ঈসাকে এবং যা প্রদান করা হয়েছে তাদের রবের পক্ষ হতে নবীগণকে। আমরা তাদের কারো মধ্যে তারতম্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত’। (২ঃ১৩৬)

‘আমাদের রব! আল্লাহর কসম! আমরা মুশরিক ছিলাম না’। (৬ঃ২৩)

‘নিশ্চয় আমি নিবিষ্ট করেছি আমার চেহারা একনিষ্ঠভাবে তাঁর জন্য, যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই’। (৬ঃ৭৯)

‘আমি আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করলাম এবং আমার অনুসারীরাও’। (৩ঃ২০)

হে আমাদের রব, আমাদেরকে পরিপূর্ণ ধৈর্য দান করুন এবং মুসলিম হিসাবে আমাদেরকে মৃত্যু দান করুন।’ (৭ঃ১২৬)

‘আপনি পবিত্র মহান, আমি আপনার নিকট তাওবা করলাম এবং আমি মুমিনদের মধ্যে প্রথম।’ (৭ঃ১৪৩)

হে আমার রব, আমি তাড়াতাড়ি করে আপনার নিকট এসেছি, যাতে আপনি আমার উপর সন্তুষ্ট হন’। (২০ঃ৮৪)

‘আমার রব, ক্ষমা করুন আমাকে ও আমার ভাইকে এবং আপনার রহমতে আমাদের প্রবেশ করান। আর আপনিই রহমকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। (৭ঃ১৫১)

‘হে আমার রব, যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই তা চাওয়া থেকে আমি অবশ্যই আপনার আশ্রয় চাই। আর যদি আপনি আমাকে মাফ না করেন এবং আমার প্রতি দয়া না করেন, তবে আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব’। (১১ঃ৪৭)

‘অবশ্যই আমরা তো আমাদের রবের দিকেই ফিরে যাব।’ (২৬ঃ৫০)

আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না; আমার প্রতিদান কেবল সৃষ্টিকুলের রবের নিকট’ (২৬ঃ১২৭)

‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আমার নিজের প্রতি যুলম করেছি। আমি সুলাইমানের সাথে সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করলাম’। (২৭ঃ৪৪, রানী বিলকিস)

১৬ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ  বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে (আল্লাহর উপর, ফেরেশতা গণের উপর, সমস্ত নবী ও রাসুলগণের উপর, সমস্ত আসমানী কিতাবের উপর ,আখিরাতের উপর ) !

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, হে বিশ্বাসী গণ, তোমরা আল্লাহতে, তার রাসূলে (বার্তাবাহকে), তিনি যে কিতাব তার রাসূলের (বার্তাবাহকের ) প্রতি অবতীর্ণ করেছেন তাতে এবং যে কিতাব তিনি পূর্বে অবতীর্ণ করেছেন তাতে বিশ্বাস কর। আর যে কেউ আল্লাহ, তার ফেরেশতাগণ, তার কিতাবসমূহ, তার রাসূলগণ (বার্তাবাহকগণ) এবং পরকালকে অবিশ্বাস করে, সে পথভ্রষ্ট হয়ে সুদূরে চলে যায়। নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তার রাসূলগণকে অবিশ্বাস করে আর আল্লাহ ও রাসূলদের মধ্যে পার্থক্য করতে ইচ্ছা করে এবং বলে,আমরা কতককে বিশ্বাস করি ও কতককে অবিশ্বাস করি এবং তারা এর মধ্যবর্তী এক পথ অবলম্বন করতে চায়। তারাই  হল প্রকৃতপক্ষে অবিশ্বাসী। আর আমি অবিশ্বাসীদের জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তি প্রস্তত রেখেছি। পক্ষান্তরে যারা আল্লাহ এবং তার রাসূলগণে বিশ্বাস করে এবং তাদের কোন একজনের সাথে অন্য জনের পার্থক্য করে না,তাদেরকেই তিনি পুরস্কার দিবেন। আর আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু। পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে মুখ ফেরানোতে তোমাদের কোন কল্যাণ নেই। কিন্তু কল্যাণ আছেআল্লাহ, পরকাল, ফিরিশতাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণকে বিশ্বাস করলে।

”তোমরা বল, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা নাযিল করা হয়েছে আমাদের উপর ও যা নাযিল করা হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর আর যা প্রদান করা হয়েছে মূসা ও ঈসাকে এবং যা প্রদান করা হয়েছে তাদের রবের পক্ষ হতে নবীগণকে। আমরা তাদের কারো মধ্যে তারতম্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত’।” আল-বায়ান(২:১৩৬)

”ভালো কাজ এটা নয় যে, তোমরা তোমাদের চেহারা পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ফিরাবে; বরং ভালো কাজ হল যে ঈমান আনে আল্লাহ, শেষ দিবস, ফেরেশতাগণ, কিতাব ও নবীগণের প্রতি এবং যে সম্পদ প্রদান করে তার প্রতি আসক্তি সত্ত্বেও নিকটাত্মীয়গণকে, ইয়াতীম, অসহায়, মুসাফির ও প্রার্থনাকারীকে এবং বন্দিমুক্তিতে এবং যে সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং যারা অঙ্গীকার করে তা পূর্ণ করে, যারা ধৈর্যধারণ করে কষ্ট ও দুর্দশায় ও যুদ্ধের সময়ে। তারাই সত্যবাদী এবং তারাই মুত্তাকী।”  আল-বায়ান(২:১৭৭) 

রাসূল তার নিকট তার রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত বিষয়ের প্রতি ঈমান এনেছে, আর মুমিনগণও। প্রত্যেকে ঈমান এনেছে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ ও তাঁর রাসূলগণের উপর, আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং মানলাম। হে আমাদের রব! আমরা আপনারই ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল। আল-বায়ান(২:২৮৫) 

বল, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং যা নাযিল করা হয়েছে আমাদের উপর, আর যা নাযিল হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর। আর যা দেয়া হয়েছে মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীকে তাদের রবের পক্ষ থেকে, আমরা তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না এবং আমরা তারই প্রতি আত্মসমর্পণকারী’। আল-বায়ান(৩:৮৪)

হে মুমিনগণ, তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসূলের প্রতি এবং সে কিতাবের প্রতি যা তিনি তাঁর রাসূলের উপর নাযিল করেছেন এবং সে কিতাবের প্রতি যা তিনি পূর্বে নাযিল করেছেন। আর যে আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং শেষ দিনকে অস্বীকার করবে, সে ঘোর বিভ্রান্তিতে বিভ্রান্ত হবে। আল-বায়ান(৪:১৩৬)

নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের সাথে কুফরী করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় এবং বলে, ‘আমরা কতককে বিশ্বাস করি আর কতকের সাথে কুফরী করি’ এবং তারা এর মাঝামাঝি একটি পথ গ্রহণ করতে চায় । তারাই প্রকৃত কাফির এবং আমি কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করেছি অপমানকর আযাব। আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছে এবং তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করেনি, তাদেরকে অচিরেই তিনি তাদের প্রতিদান দিবেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আল-বায়ান (৪:১৫০-১৫২) 

হে মানুষ, অবশ্যই তোমাদের নিকট রাসূল এসেছে, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য নিয়ে। সুতরাং তোমরা ঈমান আন, তা তোমাদের জন্য উত্তম হবে। আর যদি কুফরী কর, তবে নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনে যা রয়েছে, তা আল্লাহর জন্যই এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। আল-বায়ান অতঃপর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে এবং তাকে আঁকড়ে ধরেছে তিনি অবশ্যই তাদেরকে তাঁর পক্ষ থেকে দয়া ও অনুগ্রহে প্রবেশ করাবেন এবং তাঁর দিকে সরল পথ দেখাবেন। আল-বায়ান (৪:১৭০,ও ১৭৫)

তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন এবং তিনি তোমাদেরকে যা কিছুর উত্তরাধিকারী করেছেন, তা থেকে ব্যয় কর। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে তাদের জন্য রয়েছে বিরাট প্রতিফল। আর তোমাদের কী হলো যে, তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনছ না? অথচ রাসূল তোমাদেরকে তোমাদের রবের প্রতি ঈমান আনতে আহবান করছে। আর তিনি তোমাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন, যদি তোমরা মুমিন হও। তিনিই তাঁর বান্দার প্রতি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ নাযিল করেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনতে পারেন। আর নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি অতিশয় দয়ালু, পরম করুণাময়। আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের প্রতি ঈমান আনে, তারাই তাদের রবের নিকট সিদ্দীক ও শহীদ। তাদের জন্য রয়েছে তাদের প্রতিফল এবং তাদের নূর। আর যারা কুফরী করে এবং আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী।  হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন, তিনি স্বীয় রহমতে তোমাদেরকে দ্বিগুণ পুরস্কার দেবেন, আর তোমাদেরকে নূর দেবেন যার সাহায্যে তোমরা চলতে পারবে এবং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আল-বায়ান(৫৭:৭, ৮, ৯, ১৯, ২৮) 

যখন আল্লাহ ইব্রাহিমকে সঠিক ধর্মের নির্দেশনা দিলেন , তখন তিনি ইব্রাহিমকে আত্মসমর্পন (আসলিমু) করতে বল্লেন এবং ইব্রাহিম বল্লেন, "আসলামতু লি রাব্বিল আলামিন"। “আমি বিশ্বপালকের কাছে নিজেকে সমর্পন করলাম" এরই ওছিয়ত করেছে ইব্রাহীম তার সন্তানদের এবং ইয়াকুবও যে, 

হে আমার সন্তানগণ, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য এ ধর্মকে মনোনীত করেছেন। কাজেই তোমরা মুসলমান না হয়ে (আত্মসমর্পন না করে) কখনও মৃত্যুবরণ করো না।(২:১৩২) 

"তোমরা কি উপস্থিত ছিলে, যখন ইয়াকুবের মৃত্যু নিকটবর্তী হয়? যখন সে সন্তানদের বললঃ আমার পর তোমরা কার এবাদত করবে? তারা বললো, আমরা তোমার পিতৃ-পুরুষ ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের উপাস্যের এবাদত করব। তিনি একক উপাস্য। আমরা সবাই তাঁর কাছে আত্মসমর্পন করলাম।(২:১৩৩) 

তাহলে দেখা যাচ্ছে ইব্রাহিম ও তার বংশধরগন সকলেই আল্লাহর কাছেই আত্মসমর্পন করেছিলেন। এটাই সত্য ঘটনা , এটাই কোরানের বানী। কোরানে আমাদের নবীকে আদেশ করা হয়েছে ইব্রাহিমকে অনুসরন করার জন্য। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন,

”আর তারা বলে, ‘তোমরা ইয়াহূদী কিংবা নাসারা হয়ে যাও, হিদায়াত পেয়ে যাবে’। বল, ‘বরং আমরা ইবরাহীমের মিল্লাতের অনুসরণ করি, যে একনিষ্ঠ ছিল এবং যে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না’। তোমরা বল, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা নাযিল করা হয়েছে আমাদের উপর ও যা নাযিল করা হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর আর যা প্রদান করা হয়েছে মূসা ও ঈসাকে এবং যা প্রদান করা হয়েছে তাদের রবের পক্ষ হতে নবীগণকে। আমরা তাদের কারো মধ্যে তারতম্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত’।”  আল-বায়ান (২:১৩৫-১৩৬)

”সে বলল, ‘তোমাদেরকে যে খাদ্য দেয়া হয় তা তোমাদের কাছে আসার পূর্বেই আমি তোমাদেরকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানিয়ে দেব। সেটি এমন জ্ঞান থেকেই বলব যা আমার রব আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আমি পরিত্যাগ করেছি সে কওমের ধর্ম যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে না এবং যারা আখিরাতকে অস্বীকারকারী’। আর আমি আমার পূর্বপুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকূবের মতবাদ অনুসরণ করি। আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করা আমাদের কাজ নয়। এটা আমাদের প্রতি ও মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ কিন্তু অধিকাংশ মানুষই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেনা। হে আমার কারা-সঙ্গীদ্বয়! ভিন্ন ভিন্ন বহু রব উত্তম, না মহাপ্রতাপশালী এক আল্লাহ? তাঁকে ছেড়ে তোমরা শুধু কতকগুলি নামের ইবাদাত করছ, যে নাম তোমাদের পিতৃপুরুষ ও তোমরা রেখেছ, এইগুলির কোন প্রমাণ আল্লাহ পাঠাননি। হুকুম (বিধান) দেয়ার অধিকার শুধু আল্লাহরই। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদাত করবে, আর কারও ইবাদাত করবেনা; এটাই সরল সঠিক দীন, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়।”  (12:37-40)

১৭ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে যেভাবে অনুতপ্ত হয়ে, অনুশোচনা করে, সকল অন্যায়, অনৈতিক ও অপকর্ম থেকে বিরত থেকে রব্বুন আল্লাহ ঘোষণা করে একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে বিশ্বাসী ও আত্মসমর্পণ কারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। 

”তাই আসুন আমরা সবাই নির্জনে, নিরবে, রাতের অন্ধকারে দুচোখের পানি ফেলে আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান রব”। (৭:১২৭) 

আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করি!! পরম করুণাময় অসীম দয়াল,আল্লাহর নামে শুরু করছি।” (২৭:৩০) 

”হে আমার রব! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় লইতেছি এবং হে আমার রব! আমার নিকট তাদের উপস্থিতি থেকেও  আপনার আশ্রয় লইতেছি।” (২৩:৯৭,৯৮) “

”যে সম্প্রদায় আল্লাহতে বিশ্বাস করে না আর আখেরাতে অবিশ্বাসী, আমি আমি তাদের মতবাদ বর্জন করেছি। আর আমি আমার পূর্বপুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকূবের মতবাদ অনুসরণ করি। আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করা আমাদের কাজ নয়। এটা আমাদের প্রতি ও মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ কিন্তু অধিকাংশ মানুষই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেনা। হে আমার কারা-সঙ্গীদ্বয়! ভিন্ন ভিন্ন বহু রব উত্তম, না মহাপ্রতাপশালী এক আল্লাহ? তাঁকে ছেড়ে তোমরা শুধু কতকগুলি নামের ইবাদাত করছ, যে নাম তোমাদের পিতৃপুরুষ ও তোমরা রেখেছ, এইগুলির কোন প্রমাণ আল্লাহ পাঠাননি। হুকুম (বিধান) দেয়ার অধিকার শুধু আল্লাহরই। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদাত করবে, আর কারও ইবাদাত করবেনা; এটাই সরল সঠিক দীন, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়।” (12:37-40)

”হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি যাকে আগুনে প্রবেশ করাবে, অবশ্যই তাকে আপনি অপমান করবেন। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। হে আমাদের রব, নিশ্চয়ই আমরা এক আহবানকারীকে ঈমানের প্রতি আহবান করতে শুনেছিলাম যে, তোমরা স্বীয় রবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, তাই আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি, হে আমাদের রব! অতএব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন ও আমাদের সকল দোষক্রটি দূর করুন এবং পুন্যবানদের সাথে আমাদের মৃত্যু দান করুন। হে আমাদের রব, আর আপনি আমাদেরকে তা প্রদান করুন যার ওয়াদা আপনি আমাদেরকে দিয়েছেন আপনার বার্তাবাহক গণের মাধ্যমে। আর কিয়ামতের দিনে আপনি আমাদেরকে অপমান করবেন না। নিশ্চয় আপনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না।” (৩:১৯২-১৯৪) 

”আমরা বিশ্বজগতের রবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম।”  (৭:১২১) 

”আমরা বিশ্বাস স্থাপন করছি,আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ করা হয়েছে আমাদের উপর ও যা অবতীর্ণ করা হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর, আর যা প্রদান করা হয়েছে মূসা ও ঈসাকে এবং যা প্রদান করা হয়েছে তাদের রবের পক্ষ হতে অন্যান্য নবীগণকে। আমরা তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না এবং আমরা তাঁর কাছে আত্মসমর্পণকারী “ (৩:৮৪)(২:১৩৬) 

”আমরা শুনিয়াছি এবং পালন করিয়াছি, হে আমাদের রব! আমরা আপনার ক্ষমা চাই আর প্রত্যাবর্তন তোমারই নিকট।” (২:২৮৫)

”আপনি পবিত্র মহান, আমি আপনার  কাছে অনুতপ্ত হয়ে অনুশোচনা করছি এবং আমিই সর্বপ্রথম বিশ্বাস স্থাপন করছি।” (৭:১৪৩)  “

”নিশ্চয় আমি আপনার  কাছে অনুতপ্ত হয়ে অনুশোচনা করছি  এবং আমি অবশ্যই আত্মসমর্পণকারীদের অর্ন্তভুক্ত।” (৪৬:১৫) 

”হে আমার রব, আমি তো নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন।” (২৮:১৬) 

হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আমার নিজের প্রতি যুলম করেছি। আমি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করলাম।(২৭:৪৪)

আমি বিশ্বজগতের রবের নিকট আত্মসমর্পণ করলাম (২:১৩১) আমি আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করলাম। (৩:২০)

“রব্বুন  আল্লাহ (আমাদের রব আল্লাহ) (২২:৪০ , ৪১:৩০, ৪৬:১৩) 

আমরা বিশ্বজগতের রবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম। (৭:১২১)

হে আমাদের রব! আমরা সে সকল বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি যা আপনি অবতীর্ণ করেছন, আমরা রাসূলের অনুগত হয়েছি। অতএব,আমাদিগকে সাক্ষ্যদানকারীদের তালিকাভুক্ত করুন ।(৩:৫৩)

হে আমাদের রব,আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি , কাজেই আপনি আমাদেরকে সাক্ষীদাতাদের তালিকাভূক্ত করুন।(৫: ৮৩) 

হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি , কাজেই আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দিন আর আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন।(৩:১৬)

হে আমাদের রব,আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব আমাদেরকে ক্ষমা ও দয়া করুন, আর আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (২৩ : ১০৯) 

হে আমাদের রব, আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও  দয়া করুন, আর আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (২৩ঃ ১১৮)

হে আল্লাহ, আপনিই আমাদের রক্ষক। আপনি ক্ষমা করুন ও দয়া করুন। আপনিই শ্রেষ্ঠ ক্ষমাশীল। (৭:১৫৫) 

সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন, আল্লাহ আমাদেরকে পথ প্রদর্শন না করলে আমরা পথ পেতামনা যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন করেন। তিনিই আমাকে খাওয়ান এবং তিনিই আমাকে পান করানএবং রোগাক্রান্ত হলে তিনিই আমাকে রোগমুক্ত করেন এবং তিনিই আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর আমাকে পুনর্জীবিত করবেন। এবং আশা করি, তিনি কিয়ামতের দিন আমার অপরাধসমূহ  মার্জনা করে দেবেন।(২৬:৭৮-৮২)(৭:৪৩) 

আপনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নাই,আপনি পবিত্র মহান। আমি তো সীমালংঘনকারী। (২১ঃ ৮৭)

হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছি,যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন তবে তো আমরা  ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব। (৭ঃ ২৩) 

হে আমাদের রব,আপনি হিদায়াত দেয়ার পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান করুন। নিশ্চয় আপনি মহান দাতা।(৩ঃ ১৬) হে আমাদের রব! আমাদেরকে নিজের কাছ থেকে রহমত দান করুন এবং  আমাদের জন্যে  আমাদের  কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা করুন । (১৮ঃ ১০)  


হে আমার রব, আপনি আমাকে সামর্থ্য  দিন যাতে আমি  আপনার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা  প্রকাশ করতে পারি, যা আপনি আমাকে ও আমার  পিতা-মাতাকে  দান করেছন  এবং যাতে আমি  আপনার  পছন্দনীয়  সৎকর্ম করতে পারি  এবং আমাকে নিজ অনুগ্রহে আপনার সৎকর্মপরায়ণ  বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন।(২৭: ১৯) 

হে আমার রব, আপনি আমাকে সামর্থ্য  দিন যাতে আমি  আপনার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা  প্রকাশ করতে পারি, যা আপনি আমাকে ও আমার  পিতা-মাতাকে  দান করেছন  এবং আমার জন্য আমার সন্তানদের সৎকর্ম পরায়ণ করে দিন। “নিশ্চয় আমি আপনার  কাছে অনুতপ্ত হয়ে অনুশোচনা করছি এবং আমি অবশ্যই আত্মসর্মপণকারীদের অর্ন্তভুক্ত। (৪৬:১৫) 

হে আমাদের রব, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করবেন না। হে আমাদের   রব! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করবেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছেন, হে আমাদের রব, আমাদেরকে এমন কিছু বহন করাবেন না যার সামর্থ্য আমাদের নেই। আর আপনি আমাদের পাপ মোচন করুন এবং আমাদের ক্ষমা করুন ও আমাদের উপর দয়া করুন, আপনিই আমাদের অভিভাবক। অতএব আপনি  অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে  আমাদেরকে সাহায্য করুন। (২:২৮৬) 

আমি একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর দিকে আমার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছি যিনি আকাশমন্ডলী আর পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।(৬:৭৯) 

নিশ্চয় আমার সালাত,আমার ইবাদত, আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের রব আল্লাহর জন্যেই। তাহার কোন শরীক নাই এবং আমি ইহার জন্যেই আদিষ্ট হইয়াছি এবং আমিই প্রথম আত্মসমর্পণকারী (৬: ১৬২-১৬৩)

হে আমাদের রব, আমাদেরকে  ধৈর্য দান করুন  এবং আত্মসমর্পণকারী হিসাবে  আমাদেরকে  মৃত্যু দান করুন।(৭:১২৬)

হে আকাশ ও জমিনের মালিক! দুনিয়া ও আখিরাতে আপনিই আমার অভিভাবক, আপনি আমাকে আত্মসমর্পণকারী হিসাবে মৃত্যু দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অর্ন্তভুক্ত করুন। (১২: ১০১)

১৮ নং- মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক বা অংশীদার স্থাপন করা যাবে না!

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

আল্লাহ সাথে কোন  অংশীদার  স্থাপন করো না, নিশ্চয় আল্লাহর সাথে কোন  অংশীদার  স্থাপন করা  হল বড় যুলম। এছাডা আল্লাহ বলেন, তোমরা দুই ইলাহ গ্রহণ করবে না।

তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে, নিকট আত্মীয়ের সাথে, ইয়াতীম, মিসকীন, নিকট আত্মীয়- প্রতিবেশী, অনাত্মীয়- প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী। আল-বায়ান(৪:৩৬) 

নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না। তিনি ক্ষমা করেন এ ছাড়া অন্যান্য পাপ, যার জন্য তিনি চান। আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে অবশ্যই মহাপাপ রচনা করে। আল-বায়ান (৪:৪৮,)

নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমা করেন না তাঁর সাথে শরীক করাকে এবং এ ছাড়া যাকে চান ক্ষমা করেন। আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে তো ঘোর পথভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট হল। আল-বায়ান ৪:১১৬) 

”অবশ্যই তারা কুফরী করেছে, যারা বলেছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ হচ্ছেন মারইয়াম পুত্র মাসীহ’। আর মাসীহ বলেছে, ‘হে বনী ইসরাঈল, তোমরা আমার রব ও তোমাদের রব আল্লাহর ইবাদাত কর’। নিশ্চয় যে আল্লাহর সাথে শরীক করে, তার উপর অবশ্যই আল্লাহ জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা আগুন। আর যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই। অবশ্যই তারা কুফরী করেছে, যারা বলে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তিন জনের তৃতীয়জন’। যদিও এক ইলাহ ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। আর যদি তারা যা বলছে, তা থেকে বিরত না হয়, তবে অবশ্যই তাদের মধ্য থেকে কাফিরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আযাব স্পর্শ করবে।” আল-বায়ান(৫:৭২-৭৩) 

”বল, ‘আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্যকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করব, যিনি আসমানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা? তিনি আহার দেন, তাঁকে আহার দেয়া হয় না।’ বল, ‘নিশ্চয় আমি আদিষ্ট হয়েছি যে, যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে যেন আমি তাদের প্রথম হই’। আর তুমি কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না’।” আল-বায়ান(৬:১৪,

আর এ দ্বারা তুমি তাদেরকে সতর্ক কর, যারা ভয় করে যে, তাদেরকে তাদের রবের দিকে সমবেত করা হবে, (এ অবস্থায় যে) তিনি ছাড়া তাদের জন্য থাকবে না কোন সাহায্যকারী আর না সুপারিশকারী। হয়ত তারা তাকওয়া অবলম্বন করবে। আল-বায়ান (৬:৫১) 

অতঃপর যখন সে সূর্য উজ্জ্বলরূপে উদীয়মান দেখল, বলল, ‘এ আমার রব, এ সবচেয়ে বড়’। পরে যখন তা ডুবে গেল, তখন সে বলল, ‘হে আমার কওম, তোমরা যা শরীক কর, নিশ্চয় আমি তা থেকে মুক্ত’। আল-বায়ান৬:৭৮)

আর তারা জিনকে আল্লাহর জন্য শরীক সাব্যস্ত করেছে, অথচ তিনি তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আর তারা অজ্ঞতাবশত মনগড়াভাবে নির্ধারণ করেছে তার জন্য পুত্র ও কন্যা সন্তান। তিনি পবিত্র মহান এবং তারা যা বিবরণ দেয় তা থেকে ঊর্ধ্বে। আল-বায়ান৬:১০০)

‘তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমাকে এরই নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আর আমি মুসলমানদের মধ্যে প্রথম’। আল-বায়ান (৬:১৬৩)

নিশ্চয় তোমাদের রব আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশে উঠেছেন। তিনি রাত দ্বারা দিনকে ঢেকে দেন। প্রত্যেকটি একে অপরকে দ্রুত অনুসরণ করে। আর (সৃষ্টি করেছেন) সূর্য, চাঁদ ও তারকারাজী, যা তাঁর নির্দেশে নিয়োজিত। জেনে রাখ, সৃষ্টি ও নির্দেশ তাঁরই। আল্লাহ মহান, যিনি সকল সৃষ্টির রব। আল-বায়ান(৭:৫৪)

আর ইয়াহূদীরা বলে, উযাইর আল্লাহর পুত্র এবং নাসারারা বলে, মাসীহ আল্লাহর পুত্র। এটা তাদের মুখের কথা, তারা সেসব লোকের কথার অনুরূপ বলছে যারা ইতঃপূর্বে কুফরী করেছে। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন, কোথায় ফেরানো হচ্ছে এদেরকে? তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদের পন্ডিত ও সংসার-বিরাগীদের* রব হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং মারইয়ামপুত্র মাসীহকেও। অথচ তারা এক ইলাহের ইবাদত করার জন্যই আদিষ্ট হয়েছে, তিনি ছাড়া কোন (হক) ইলাহ নেই। তারা যে শরীক করে তিনি তা থেকে পবিত্র। আল-বায়ান (৯:৩০,৩১)


‘আর আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুকে ডেকো না, যা তোমার উপকার করতে পারে না এবং তোমার ক্ষতিও করতে পারে না। অতএব তুমি যদি কর, তাহলে নিশ্চয় তুমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল-বায়ান(১০:১০৬)

‘তোমরা তাঁকে বাদ দিয়ে নিছক কতগুলো নামের ইবাদাত করছ, যাদের নামকরণ তোমরা ও তোমাদের পিতৃপুরুষরা করেছ, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ প্রমাণ নাযিল করেননি। বিধান একমাত্র আল্লাহরই। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, ‘তাঁকে ছাড়া আর কারো ইবাদাত করো না’। এটিই সঠিক দীন, কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না’। আল-বায়ান 12:40

আর আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা দুই ইলাহ গ্রহণ করো না। তিনি তো কেবল এক ইলাহ। সুতরাং তোমরা আমাকেই ভয় কর।’ আল-বায়ান (১৬ঃ৫১)

আল্লাহর সাথে অপর কোন ইলাহ নির্ধারণ করো না। তাহলে তুমি নিন্দিত ও লাঞ্ছিত হয়ে বসে পড়বে। আল-বায়ান(১৭:২২) 

এগুলো সেই হিকমতভুক্ত, যা তোমার রব তোমার নিকট ওহীরূপে পাঠিয়েছেন। আর তুমি আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য নির্ধারণ করো না, তাহলে তুমি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে নিন্দিত ও বিতাড়িত হয়ে। আল-বায়ান১৭: ৩৯)

বল, ‘তারা যে সময়টুকু অবস্থান করেছিল, সে ব্যাপারে আল্লাহই অধিক জানেন’। আসমানসমূহ ও যমীনের গায়েবী বিষয় তাঁরই। এ ব্যাপারে তিনিই উত্তম দ্রষ্টা ও উত্তম শ্রোতা। তিনি ছাড়া তাদের কোন অভিভাবক নেই। তাঁর সিদ্ধান্তে তিনি কাউকে শরীক করেন না। আল-বায়ান(১৮:২৬)

অতএব, তুমি আল্লাহর সাথে অন্য কোন ইলাহকে ডেকো না, তাহলে তুমি আযাবপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। আল-বায়ান(২৬:২১৩) 

”আর আমি তো লুকমানকে হিকমাত* দিয়েছিলাম (এবং বলেছিলাম) যে, ‘আল্লাহর শুকরিয়া আদায় কর। আর যে শুকরিয়া আদায় করে সে তো নিজের জন্যই শুকরিয়া আদায় করে এবং যে অকৃতজ্ঞ হয় (তার জেনে রাখা উচিত) আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, প্রশংসিত’। আল-বায়ান(৩১::১২)

আর স্মরণ কর, যখন লুকমান তার পুত্রকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছিল, ‘প্রিয় বৎস, আল্লাহর সাথে শিরক করো না; নিশ্চয় শিরক হল বড় যুলম'। আল-বায়ান(৩১:১৩) 

আর অবশ্যই তোমার কাছে এবং তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে ওহী পাঠানো হয়েছে যে, তুমি শির্ক করলে তোমার কর্ম নিষ্ফল হবেই। আর অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল-বায়ান(৩৯:৬৫) 

আর তোমরা আল্লাহর সাথে কোন ইলাহ নির্ধারণ করো না; আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য এক স্পষ্ট সতর্ককারী। আল-বায়ান (৫১:৫১) 

১৯ নং-মেসেজ বা বার্তা  হচ্ছেঃ পরিবার গঠন বা স্বামী-স্ত্রী বা জীবন সঙ্গী!

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, হে মানুষ, 

আমি তোমাদেরকে এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে  আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত।(৪৯:১৩)(৪:১)

আর তার নিদর্শনের মধ্যে হল এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের সঙ্গিণী সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা তার কাছে শান্তি লাভ করতে পার আর তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। এর মাঝে অবশ্যই বহু নিদর্শন আছে সেই সম্প্রদায়ের জন্য যারা চিন্তা করে।(৩০:২১)(৭:১৮৯) 

হে বিশ্বাসীগণ, জোরজবরদস্তি করে তোমাদের নিজেদেরকে নারীদের উত্তরাধিকারী গণ্য করা বৈধ নয়। তোমরা তাদেরকে যা দিয়েছ তা থেকে কিছু আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে তাদেরকে আটক রেখো না, যদি না তারা প্রকাশ্য অশ্লীলতা বা অনৈতিক কাজ করে। আর তোমরা তাদের সাথে সৎভাবে জীবন যাপন করবে, তোমরা যদি তাদেরকে অপছন্দ কর তবে এমন হতে পারে যে, আল্লাহ যাতে প্রভূত কল্যাণ রেখেছেন তোমরা তাকেই অপছন্দ করছ।(৪:১৯)

পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সুতরাং যে সমস্ত নারী পুণ্যবতী তারা আনুগত্য করে, আল্লাহর সংরক্ষিত প্রচ্ছন্ন বিষয় সংরক্ষণ করে, যদি নারীদের অবাধ্যতার আশংকা হয় তাহলে তাদেরকে সদুপদেশ প্রদান কর, তাদেরকে শয্যা হতে পৃথক কর অথবা তাদেরকে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দাও। অতঃপর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তাহলে তাদের উপর নির্যাতনের বাহানা খোঁজ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমুন্নত মহান।(৪:৩৪) 

যদি কোন নারী তার স্বামীর পক্ষ থেকে কোন দুর্ব্যবহার কিংবা উপেক্ষার আশঙ্কা করে, তাহলে তারা উভয়ে কোন মীমাংসা করলে তাদের কোন অপরাধ নেই। আর মীমাংসা কল্যাণকর এবং মানুষের মধ্যে কৃপণতা বিদ্যমান রয়েছে। আর যদি তোমরা সৎকর্ম কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর তবে আল্লাহ তোমরা যা কর সে বিষয়ে সম্যক অবগত।(৪:১২৮) 

যদি তারা আপোস-নিস্পত্তি করতে চায় এবং পুরুষদের উপর নারীদেরও হাক্ব আছে, যেমন নিয়ম অনুযায়ী পুরুষদের নারীদের উপরও হাক্ব আছে, অবশ্য নারীদের উপর পুরুষদের বিশেষ মর্যাদা আছে এবং আল্লাহ মহাপরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাশীল।(২:২২৮) 

তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ।(২:১৮৭) 

তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেখানে তোমরা বসবাস কর সেখানে তাদেরকেও বাস করতে দাও, তাদেরকে সঙ্কটে ফেলার জন্য কষ্ট দিয়ো না।(৬৫:৬)

সচ্ছল ব্যক্তি তার সচ্ছলতা অনুসারে ব্যয় করবে। আর যার রিযিক সীমিত করা হয়েছে, সে ব্যয় করবে আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তা থেকে। আল্লাহ যাকে যতটা দিয়েছেন তার অতিরিক্ত বোঝা তার উপর চাপান না। আল্লাহ কষ্টের পর দিবেন স্বস্তি।(৬৫:৭) 

হে নবী,তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে বল, যদি তোমরা দুনিয়ার জীবন ও তার চাকচিক্য কামনা কর তবে আস, আমি তোমাদের ভোগ-বিলাসের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় করে দেই। আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল (বার্তাবাহক) ও আখিরাত কামনা কর তাহলে তোমাদের মধ্যে যারা সৎ কর্মশীল আল্লাহ তাদের জন্য মহা প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন। হে নবী-পত্নী গণ, তোমাদের মধ্যে যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল বা অনৈতিক কাজ করবে,তার জন্য শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে। আর এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (বার্তাবাহকের) আনুগত্য করবে এবং নেক আমল করবে আমি তাকে দু’বার তার প্রতিদান দিব এবং আমি তার জন্য প্রস্তুত রেখেছি সম্মানজনক রিযিক। হে নবী পত্নী গণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও। যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তাহলে পর-পুরুষের সাথে কোমল কন্ঠে এমনভাবে কথা বলনা যাতে অন্তরে যার ব্যাধি রয়েছে সে প্রলুব্ধ হয় এবং তোমরা ন্যায় সঙ্গত কথা বলবে। আর তোমরা নিজ গৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাক-জাহেলী যুগের মত সৌন্দর্য প্রদর্শন করো না। আর তোমরা সালাত (দায়িত্ব কর্তব্য বাস্তবায়ন) কায়েম কর, যাকাত (পরিশুব্দতা অর্জন) প্রদান কর এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের(বার্তাবাহকের) আনুগত্য কর। হে নবী পরিবার, আল্লাহ তো কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতাকে দূরীভূত করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে। আর তোমাদের গৃহে আল্লাহর আয়াত ও হিকমাহ    (প্রজ্ঞা বা জ্ঞান) থেকে যা পাঠ করা হয় তার চর্চা কর। আল্লাহ অতি সূক্ষণদর্শী, সর্ববিষয়ে খবর রাখেন। (৩৩:২৮-৩৪)

এই বিষয়ে আরো ভালো করে জানতে কুরানের এই আয়াতগুলো দেখা যেতে পারে। (৪:১-১৭৬) (৬৪:১৪,১৫) (৬৫:১-৭) (৬৬:৬,১১) (২:২২১- ২৪২)

আদর্শবান স্বামী স্ত্রীর বা ভালো জীবনসঙ্গীর বৈশিষ্ট্য আল-কুরআন অনুসারে। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, কেউ কোন ভাল কাজের সুপারিশ করলে তাতে তার অংশ থাকবে এবং কেউ কোন মন্দ কাজের সুপারিশ করলে তাতে তার অংশ থাকবে। আর আল্লাহ সব কিছুর উপর নজর রাখেন। (৪:৮৫) 

যে সৎকাজ করে, সে নিজ কল্যাণের জন্যই তা করে এবং কেউ মন্দ কাজ করলে তার প্রতিফল সেই ভোগ করবে। অতঃপর তোমরা তোমাদের রবের নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। (৪৫:১৫) 

আর পুরুষই হোক অথবা নারীই হোক, যারাই বিশ্বাসী হয়ে সৎকাজ করবে,তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি বিন্দু পরিমাণও যুলুম করা হবে না। (৪:১২৪

নারী কিংবা পুরুষের মধ্যে যারা বিশ্বাসী হয়ে সৎকাজ করে, তারা প্রবেশ করবে জান্নাতে, সেখানে তাদেরকে অপরিমিত রিযিক দান করা হবে। (৪০:৪০) 

পুরুষ ও নারী যে কেউই বিশ্বাসী হয়ে সৎকর্ম করবে, তাকে আমি নিশ্চয়ই সুখী জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্ম অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব। (১৬:৯৭) 

নিশ্চয় আমি তোমাদের মধ্যে আমলকারী পুরুষ হোক কিংবা নারীই হোক আমল বিফল করি না,কারণ তোমরা তো একে অপরের অংশ। (৩:১৯৫) 

পুরুষ যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য অংশ এবং নারী যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য অংশ। আর আল্লাহর কাছে তার অনুগ্রহ প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞ। (৪:৩২) 

এটা এ জন্য যে, তিনি বিশ্বাসী পুরুষদেরকে ও বিশ্বাসী নারীদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে যার নিচ দিয়ে ঝর্ণাসমূহ প্রবাহিত, যেখানে তারা স্থায়ী হবে এবং তিনি তাদের পাপসমূহ মোচন করবেন,আর এটাই হলো আল্লাহর নিকট মহাসাফল্য। (৪৮:৫) 

আর বিশ্বাসী পুরুষরা ও বিশ্বাসী নারীরা হচ্ছে একে অপরের বন্ধু, তারা সৎকাজের নির্দেশ দেয় ও অসৎকাজে নিষেধ করে, সালাত (দায়িত্ব কর্তব্য পালন) কায়েম করে, যাকাত (পরিশুদ্ধতা অর্জন করে) দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (বার্তাবাহকের) আনুগত্য করে, তারাই যাদেরকে আল্লাহ অচিরেই দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আল্লাহ বিশ্বাসী পুরুষ ও বিশ্বাসী নারীদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জান্নাতের যার নিচে নদীসমূহ প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আরও স্থায়ী জান্নাতসমূহে উত্তম বাসস্থানের। আর আল্লাহ্র সন্তুষ্টিই সর্বশ্রেষ্ঠ এবং এটাই মহাসাফল্য। (৯:৭১,৭২) 

এবং বিশ্বাসী পুরুষ ও বিশ্বাসী নারীকে ক্ষমা করেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৩৩:৭৩) 

আর তারা তাওবাকারী, ইবাদাতকারী,আল্লাহর প্রশংসাকারী, সিয়াম পালনকারী, রুকূকারী (বিনয়ী), সিজদাকারী (মান্যকারী), সৎকাজের আদেশদাতা, অসৎকাজের নিষেধকারী এবং আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা হেফাযতকারী। আর এই বিশ্বাসীদেরকে তুমি সুসংবাদ দাও।(৯:১১২) 

নিশ্চয়ই আত্মসমর্পণকারী পুরুষ ও  নারী, বিশ্বাসী পুরুষ ও  নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনয়ী পুরুষ ও  নারী, দানশীল পুরুষ ও  নারী, সিয়ামপালনকারী পুরুষ ও  নারী, লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও  নারী এদের জন্য আল্লাহ ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান রেখেছেন। আল্লাহ ও তার রাসূল কোন বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোন বিশ্বাসী পুরুষ কিংবা নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না। কেউ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের(বার্তাবাহকের) অবাধ্য হলে সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে। (৩৩:৩৫,৩৬) 

অপর পক্ষে মুনাফেক পুরুষ ও নারী একে অপরের অংশ, তারা অসৎকাজের নির্দেশ দেয় এবং সৎকাজে নিষেধ করে, তারা তাদের হাতগুটিয়ে রাখে, তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছে, ফলে তিনিও তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছেন, আর  মুনাফেকরা তো ফাসিক। আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ ও নারী এবং অস্বীকারকারীদের জাহান্নামের আগুনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে, এটা তাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাদেরকে অভিশাপ করেছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী শাস্তি। (৯:৬৭,৬৮) 

পরিণামে আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ ও নারী এবং মুশরিক পুরুষ ও নারীকে শাস্তি দিবেন । (৩৩:৭৩)

আর যাতে তিনি মুনাফিক পুরুষ ও নারী, মুশরিক পুরুষ ও নারী যারা আল্লাহ সম্বন্ধে মন্দ ধারণা পোষণ করে তাদেরকে শাস্তি দেন। অমঙ্গল চক্র তাদের উপরই আপতিত হয়। আর আল্লাহ তাদের প্রতি রুষ্ট হয়েছেন এবং তাদেরকে লানত করেছেন,আর তাদের জন্য জাহান্নাম প্রস্তুত রেখেছেন। আর সেটা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।(৪৮:৬) 

হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের ধন-সম্পত্তি ও সন্তান- সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ হতে উদাসীন না করে,যারা উদাসীন হবে, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। আর আমি তোমাদেরকে  যে রিযক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় কর, তোমাদের কারো মৃত্যু আসার পূর্বে। কেননা তখন সে বলবে, হে আমার রব, যদি আপনি আমাকে আরো কিছু কাল পর্যন্ত অবকাশ দিতেন, তাহলে আমি দান-সদাকা করতাম। আর সৎ লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। (৬৩:৯,১০)

হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে কেউ কেউ তোমাদের শত্রু, অতএব তাদের সম্পর্কে তোমরা সতর্ক থেকো। আর তোমরা যদি তাদেরকে মার্জনা কর,তাদের দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা কর এবং তাদেরকে ক্ষমা কর, তাহলে জেনে রেখো যে,নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো কেবল পরীক্ষা বিশেষ। আর আল্লাহর নিকটই মহান প্রতিদান।(৬৪:১৪,১৫) 

হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের মধ্যে যারা ধনসম্পদে ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্য্যরে অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তদেরকে এবং আল্লাহর পথে যারা গৃহত্যাগ করেছে তাদেরকে কিছুই দিবেনা। তারা যেন তাদের দোষ-ক্রটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাওনা যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করেন? এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(২৪:২২)

নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর বার্তাবাহককে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে লানত করেন এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন অপমানজনক শাস্তি। আর যারা বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীদেরকে  কষ্ট দেয় যা তারা করেনি তার জন্য। নিশ্চয় তারা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করবে। (৩৩:৫৭,৫৮)

নিশ্চয় যারা বিশ্বাসী নর-নারীকে বিপদাপন্ন করেছে এবং পরে তাওবা (অনুশোচনা) করেনি, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি ও দহন যন্ত্রণা। (৮৫:১০)

২০ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে পারিবারের প্রধানের দায়িত্ব ও কর্তব্য !

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

 “হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা কর অগ্নি হতে,যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে নির্মম-হৃদয়, কঠোর-স্বভাব ফিরিশতাগণ, যারা আল্লাহ যা তাদেরকে আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং তারা যা করতে আদিষ্ট হয়, তাই করে। আর কিয়ামতের দিন বিশ্বাসীগণ! বলবে, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত যারা নিজদের ও পরিবার-পরিজনের ক্ষতি সাধন করেছে। জেনে রেখ, এটাই স্পষ্ট ক্ষতি’। আর তুমি তোমার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দাও। এবং যারা তোমার অনুসরণ করে, সেই সব বিশ্বাসীদের  প্রতি বিনয়ী হও। তারপর যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বল, নিশ্চয় তোমরা যা কর তার জন্য আমি দায়ী নই। তুমি নির্ভর কর পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু আল্লাহর উপর।” (২৬:২১৪-২১৭) 

”তারা যা বলে, তা আমি খুব জানি, তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও, সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে, তাকে কুরআনের সাহায্যে উপদেশ দান কর।” (৫০:৪৫) (৬:১৯. ৫১, ৭০, ৯২)

নিজেকে এবং নিজেদের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা  করার চেষ্টা করতে হবে সেই জাহান্নামের আগুন থেকে। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন,

নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে এবং কাফের অবস্থায় মারা গেছে, তাদের কারো কাছ থেকে যমীন ভরা স্বর্ণ বিনিময়স্বরূপ প্রদান করলেও গ্রহণ করা হবে না, তাদের জন্যই রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব, আর তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। আল-বায়ান  (৩:৯১) 

নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, যদি যমীনে যা আছে তার সব ও তার সাথে সমপরিমাণও তাদের জন্য থাকে, যাতে তারা তার মাধ্যমে কিয়ামতের আযাব থেকে রক্ষার মুক্তিপণ দিতে পারে, তাহলেও তাদের থেকে তা গ্রহণ করা হবে না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আল-বায়ান (৫:৩৬)

স্মরণ কর, যখন তাদের একদল বলল, ‘তোমরা কেন উপদেশ দিচ্ছ এমন কওমকে, যাদেরকে আল্লাহ ধ্বংস করবেন অথবা কঠিন আযাব দেবেন’? তারা বলল, ‘তোমাদের রবের নিকট ওযর পেশ করার উদ্দেশ্যে। আশা করা যায় তারা সাবধান হবে’। আল-বায়ান (৭:১৬৪)  

তুমি তাদেরকে আরো দেখবে যে, তাদেরকে অপমানে অবনত অবস্থায় জাহান্নামে উপস্থিত করা হচ্ছে, তারা আড় চোখে তাকাচ্ছে। আর কিয়ামতের দিন মুমিনগণ বলবে, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত যারা নিজদের ও পরিবার-পরিজনের ক্ষতি সাধন করেছে। সাবধান! যালিমরাই থাকবে স্থায়ী আযাবে। আল-বায়ান (৪২:৪৫)  

‘অতএব তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য যা কিছুর ইচ্ছা তোমরা ‘ইবাদাত কর’। বল, ‘নিশ্চয় তারা ক্ষতিগ্রস্ত যারা কিয়ামত দিবসে নিজদেরকে ও তাদের পরিবারবর্গকে ক্ষতিগ্রস্ত পাবে। জেনে রেখ, এটাই স্পষ্ট ক্ষতি’। আল-বায়ান (৩৯:১৫)

এরা যা বলে আমি তা সবচেয়ে ভাল জানি। আর তুমি তাদের উপর কোন জোর- জবরদস্তিকারী নও। সুতরাং যে আমার ধমককে ভয় করে তাকে কুরআনের সাহায্যে উপদেশ দাও। আল-বায়ান (৫০:৪৫) 

এই বিষয়ে আরো ভালো করে জানতে আল-কুরানের এই আয়াতগুলো পড়ে নেয়া যেতে পারে। (৮৭:৯- ১১) (৫১:৫৪, ৫৫) (৬৬:৬) (২৬:২১৫- ২১৭)  (৬:১৯. ৫১, ৬৯,৭০, ৯২) (৩৬:১১) (৬৪:১৪, ১৫) (৬৩:৯) (৮:২৮) (৩১:৩৩) (৬০:৩) (৫৮:১৭) (৩৪:৩৭) (৩:১১৬) (৫৭:১৫) (৪৪:৪১, ৪২) (৪৩:৬৭- ৬৯) (৮০:৩৩- ৩৭) (৭০:১০- ১৮) 

আর স্মরণ কর, যখন তাদের একদল বলেছিল,আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দিবেন তোমরা তাদেরকে সদুপদেশ দাও কেন? তারা বলেছিল, তোমাদের রবের কাছে দায়িত্ব-মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এ জন্য। অতঃপর যে উপদেশ তাদেরকে দেওয়া হয়েছিল, তারা যখন তা ভুলে গেল, তখন যারা অসৎকাজ থেকে নিষেধ করত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি। আর যারা যুলম করেছিল তাদেরকে আমরা কঠোর শাস্তি দিলাম, কারণ তারা সত্যকে ত্যাগ করত। (৭:১৬৩, ১৬৪)

২১ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে সন্তানদের প্রতি পিতা-মাতার উপদেশ! (দ্বায়িত্ব কর্তব্য!)

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,  লুকমান সন্তানকে বাবা হিসাবে যে সকল উপদেশ দিয়ে ছিলেন, তা হলো।

১. হে বৎস, আল্লাহর সাথে কাউ অংশীদার স্থাপন করো না, নিশ্চয় অংশীদার স্থাপন করা হচ্ছে বিরাট যুলম।

২. হে বৎস, কোন (পাপ অথবা পুণ্য) যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয় এবং তা যদি কোন পাথরের ভিতরে অথবা আকাশমন্ডলীতে অথবা মাটির নীচে থাকে,আল্লাহ তা উপস্থিত করবেন। আল্লাহ সূক্ষ্মদর্শী, সকল বিষয়ে অবগত।

৩.হে বৎস, সালাত (দায়িত্ব-কর্তব্য,রবের বিধানসমূহ বাস্তবায়ন) কায়েম করো। 

৪. সৎ কাজের নির্দেশ দাও এবং অসৎ কাজে নিষেধ কর।

৫. আর বিপদে আপদে ধৈর্য্য ধারণ করো। নিশ্চয় এটা অন্যতম দৃঢ সংকল্পের কাজ। 

৬. আর তুমি অহঙ্কারবশে মানুষকে অবজ্ঞা করিও না।

৭. আর যমীনে দম্ভভরে চলাফেরা করো না, নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক, অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না। 

৮. আর তুমি তোমার চলার ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন কর।

৯. এবং তোমার কণ্ঠস্বর নীচু করো, নিশ্চয় স্বরের মধ্যে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর। (৩১:১৩,১৬-১৯) 

১০. আর এরই উপদেশ দিয়েছে ইবরাহীম তার সন্তানদেরকে এবং ইয়াকুবও তার সন্তানদেরকে যে, হে আমার সন্তানেরা, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য এই দীনকে পছন্দ  করেছেন। সুতরাং তোমরা আত্মসমর্পণকারী না  হয়ে মৃত্যু বরণ করো না। যখন ইয়াকুবের মৃত্যু উপস্থিত হল তখন কি তোমরা উপস্থিত ছিলে, যখন সে তার সন্তানদেরকে বলেছিল,আমার পর তোমরা কার ইবাদাত করবে? তারা বলল, আমরা ইবাদাত করব আপনার ইলাহের, আপনার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের ইলাহের, যিনি এক ইলাহ। আর আমরা তার কাছে আত্মসমর্পণকারী।(২:১৩২,১৩৩)

১১. ইউসুফ বলল, তোমাদেরকে যে খাদ্য দেওয়া হয়, তা আসবার পূর্বে আমি তোমাদেরকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানিয়ে দিব, এ জ্ঞান আমার রব আমাকে যা শিক্ষা দিয়েছেন তারই অন্তর্ভুক্ত। যে সম্প্রদায় আল্লাহকে বিশ্বাস করে না ও পরলোকে অবিশ্বাসী আমি তাদের মতবাদ বর্জন করেছি। আমি আমার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইসহাক এবং ইয়াকুবের দ্বীন অনুসরণ করি। আল্লাহর সাথে কোন বস্তুকে শরীক করা আমাদের কাজ নয়। এটা আমাদের এবং সমস্ত মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না। হে আমার কারা সঙ্গীদ্বয়, বহু সংখ্যক ভিন্ন ভিন্ন রব ভাল নাকি মহাপরাক্রমশালী এক আল্লাহ। তোমরা তাঁকে বাদ দিয়ে নিছক কতগুলো নামের ইবাদাত করছ, যাদের নামকরণ তোমরা ও তোমাদের পিতৃপুরুষরা করেছ, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। বিধান একমাত্র আল্লাহরই। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, ‘তাকে ছাড়া আর কারো ইবাদাত করো না। এটিই সঠিক দীন, কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না। (১২:৩৭-৪০)

১২. পিতা বলল, “আমি তোমাদের সাথে তাকে কখনো পাঠাব না, যতক্ষণ না তোমরা আমাকে আল্লাহর নামে অঙ্গীকার প্রদান কর যে, তাকে অবশ্যই আমার কাছে নিয়ে আসবে। তবে তোমরা শত্রু বা বিপদ দ্বারা বেষ্টিত হলে ভিন্ন কথা। অতঃপর যখন তারা তাকে প্রতিশ্রুতি দিল, তখন সে বলল, আমরা যা বলছি সে ব্যাপারে আল্লাহই সাক্ষী। পিতা বলল, হে আমার ছেলেরা, তোমরা এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করো না, বরং ভিন্ন ভিন্ন দরজা দিয়ে প্রবেশ কর এবং আল্লাহর সিদ্ধান্তের বিপরীতে আমি তোমাদের কোন উপকার করতে পারব না। হুকুম একমাত্র আল্লাহরই। আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং যারা নির্ভর করতে চায় তারা  আল্লাহরই উপর নির্ভর করুক। আর যখন তারা প্রবেশ করল, যেভাবে তাদের পিতা তাদেরকে আদেশ করেছিল, তা আল্লাহর হুকুমের বিপরীতে তাদের কোন উপকারে আসেনি, তবে তা ছিল ইয়া‘কূবের মনের একটি ইচ্ছা, যা সে ব্যক্ত করেছিল। আর সে ছিল জ্ঞানী, কারণ আমি তাকে শিখিয়েছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।” (১২:৬৬-৬৮)

১৩. আমি তোমার নিকট সুন্দরতম কাহিনী বর্ণনা করছি, এ কুরআন আমার ওহী হিসেবে তোমার কাছে প্রেরণ করার মাধ্যমে। যদিও তুমি এর পূর্বে অনঅবহিতদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে। (১২:৩) 

১৪. ইউসুফ ও তার ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসুদের জন্য অবশ্যই অনেক নিদর্শন রয়েছে। (১২:৭) 

১৫. তাদের এ কাহিনীগুলোতে অবশ্যই বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে শিক্ষা, এটা কোন বানানো গল্প নয়, বরং তাদের পূর্ববর্তী কিতাবের সত্যায়নকারী এবং প্রতিটি বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ। আর হিদায়াত ও রহমত ঐ সম্প্রদায়ের জন্য যারা বিশ্বাস স্থাপন করে।  (১২:১১১)

২২ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে পিতা মাতার প্রতি সন্তানের দ্বায়িত্ব কর্তব্য! তাদের প্রতি আছান করতে হবে! 

এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন,

তোমরা পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বলবে। আর তাদের জন্য সর্বদা দোয়া করবে এবং বৃদ্ধ অবস্থায় তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পালন করবে। তবে তারা যদি তোমার উপর বল প্রয়োগ করে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করতে যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তাহলে তুমি তাদেরকে মেনো না,তবে দুনিয়াতে তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে আর যে আমার অভিমুখী হয়েছে তার পথ অনুসরণ কর। তারপর তোমাদের ফিরে আসা আমারই কাছে, তখন তোমরা যা করতে সে বিষয়ে আমি তোমাদেরকে অবিহিত করব।  এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

”আর আমিতো মানুষকে তার মাতাপিতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। মা সন্তানকে কষ্টের পর কষ্ট বরণ করে গর্ভে ধারণ করে এবং তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে। সুতরাং আমার প্রতি ও তোমার মাতাপিতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। প্রত্যাবর্তনতো আমারই নিকট।” (৩১:১৪) 

আর আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতিকষ্টে গর্ভে ধারণ করেছে এবং অতি কষ্টে তাকে প্রসব করেছে। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় লাগে ত্রিশ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌঁছে এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হয়, তখন সে বলে, ‘হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার উপর ও আমার মাতা-পিতার উপর যে নিআমত দান করেছ, তোমার সে নিআমতের যেন আমি শোকর আদায় করতে পারি এবং আমি যেন সৎকর্ম করতে পারি, যা তুমি পছন্দ কর। আর আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয় আমি তোমার কাছে তাওবা করলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’। আল-বায়ান (৪৬:১৫)

আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়,তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মান জনক কথা বল। আর তাদের জন্য সদয়ভাবে নম্রতার বাহু প্রসারিত করে দাও আর বল, ‘হে আমার রব! তাদের প্রতি দয়া কর যেমনভাবে তারা আমাকে শৈশবে লালন পালন করেছেন। (১৭:২৩,২৪) 

বল,এসো তোমাদের রব তোমাদের জন্য যা নিষিদ্ধ করেছেন তা পড়ে শোনাই, তা এই যে, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না, পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর। এ সম্পর্কে তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যাতে তোমরা চিন্তা-ভাবনা করে কাজ কর।(৬:১৫১) 

তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী।(৪:৩৬) 

আর স্মরণ কর, যখন আমি বনী ইসরাঈলের অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত করবে না এবং সদাচার করবে পিতা-মাতা সাথে।(২:৮৩) 

তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তারা কী ব্যয় করবে? বল, ‘তোমরা যে সম্পদ ব্যয় করবে, তা পিতা-মাতা জন্য। আর যে কোন ভাল কাজ তোমরা কর, নিশ্চয় সে ব্যাপারে আল্লাহ সুপরিজ্ঞাত’।(২:২১৫) 

আর আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি তার পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করতে। তবে যদি তারা তোমার উপর প্রচেষ্টা চালায় আমার সাথে এমন কিছুকে শরীক করতে যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তাহলে তুমি তাদের মান্য কর না। আমার দিকেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তোমরা যা করতে আমি তা তোমাদেরকে জানিয়ে দেব।(২৯:৮)

আর তোমার মাতা-পিতা যদি তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সাথে শরীক করতে যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই তাহলে তুমি তাদের কথা মানবেনা। তবে পৃথিবীতে তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে এবং যে বিশুদ্ধ চিত্তে আমার অভিমুখি হয়েছে তার পথ অবলম্বন কর, অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই নিকট এবং তোমরা যা করতে সে বিষয়ে আমি তোমাদেরকে অবহিত করব। (৩১:১৫)           

হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা তোমাদের পিতা আর ভাইদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না যদি তারা ঈমানের চেয়ে কুফরীকেই বেশি ভালবাসে। তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই যালিম। বল, ‘তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের গোত্র, তোমাদের সে সম্পদ যা তোমরা অর্জন করেছ, আর সে ব্যবসা যার মন্দা হওয়ার আশঙ্কা তোমরা করছ এবং সে বাসস্থান, যা তোমরা পছন্দ করছ, যদি তোমাদের কাছে অধিক প্রিয় হয় আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তাঁর পথে সংগ্রাম করার চেয়ে, তবে তোমরা অপেক্ষা কর আল্লাহ তাঁর নির্দেশ নিয়ে আসা পর্যন্ত। আর আল্লাহ ফাসিক সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না। (৯:২৩,২৪)

তুমি পাবে না এমন জাতিকে যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান আনে, বন্ধুত্ব করতে তার সাথে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধীতা করে, যদিও তারা তাদের পিতা, অথবা পুত্র, অথবা ভাই, অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। এরাই, যাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে রূহ দ্বারা তাদের শক্তিশালী করেছেন। তিনি তাদের প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতসমূহে যার নিচে দিয়ে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। এরাই আল্লাহর দল। জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর দলই সফলকাম। (৫৮:২২) 

আর যে ব্যক্তি তার মাতা-পিতাকে বলে, ‘তোমাদের জন্য আফসোস’! তোমরা কি আমাকে এই প্রতিশ্রুতি দাও যে, আমি পুনরুত্থিত হব’ অথচ আমার পূর্বে অনেক প্রজন্ম গত হয়ে গেছে’? আর তারা দু’জন আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে বলে, দুর্ভোগ তোমার জন্য! তুমি  বিশ্বাস স্থাপন কর। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। তখন সে বলে,এটা কেবল অতীতকালের কল্পকাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়। (৪৬:১৭) 

আর আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি তার পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করতে। তবে যদি তারা তোমার উপর প্রচেষ্টা চালায় আমার সাথে এমন কিছুকে শরীক করতে যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তাহলে তুমি তাদের আনুগত্য করবে না। আমার দিকেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তোমরা যা করতে আমি তা তোমাদেরকে জানিয়ে দেব। আল-বায়ান (২৯:৮)

আর স্মরণ কর, যখন আমি বনী ইসরাঈলের অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত করবে না এবং সদাচার করবে পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম ও মিসকীনদের সাথে। আর মানুষকে উত্তম কথা বল, সালাত কায়েম কর এবং যাকাত প্রদান কর। অতঃপর তোমাদের মধ্য থেকে স্বল্প সংখ্যক ছাড়া তোমরা সকলে উপেক্ষা করে মুখ ফিরিয়ে নিলে। আল-বায়ান (২:৮৩)

আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। আর তাদের উভয়ের জন্য দয়াপরবশ হয়ে বিনয়ের ডানা নত করে দাও এবং বল, ‘হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন’। আল-বায়ান  (১৭:২৩,২৪)

আর আমি মানুষকে তার মাতাপিতার ব্যাপারে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরে; সুতরাং আমার ও তোমার পিতা-মাতার শুকরিয়া আদায় কর। প্রত্যাবর্তন তো আমার কাছেই।আর যদি তারা তোমাকে আমার সাথে শিরক করতে জোর চেষ্টা করে, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তখন তাদের আনুগত্য করবে না এবং দুনিয়ায় তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে। আর অনুসরণ কর তার পথ, যে আমার অভিমুখী হয়। তারপর আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। তখন আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেব, যা তোমরা করতে। আল-বায়ান  (৩১:১৪,১৫) 

এ ছাড়াও এ আয়াত গুলো ও দেখে নেওয়া যেতে পারে। (৪৬:১৫,১৭) (৬:১৫১) (৪:৩৬) (২:২১৫)(৯:২৩,২৪) (৫৮:২২)

২৩ নং-মেসেজ বা বার্তা  হচ্ছে সামর্থ অনুযায়ী আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করতে হবে!!

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,  

আর তোমার আত্মীয়-স্বজনকে  তাদের হক দিয়ে দাও, তাদেরকে দান কর, তাদের সাথে সদাচারণ কর। তোমাদের মধ্যে যারা ধনসম্পদ ও প্রাচুয্যের অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তদেরকে এবং আল্লাহর পথে যারা গৃহত্যাগ করেছে তাদেরকে কিছুই দিবেনা। তারা যেন তাদের দোষ-ক্রটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাওনা যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করেন? এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। যে দানের পর কষ্ট দেয়া হয় তার চেয়ে ভাল কথা ও ক্ষমা উত্তম। আর আল্লাহ অভাবমুক্ত, সহনশীল। হে বিশ্বাসিগণ, দানের কথা প্রচার করে এবং কষ্ট দিয়ে তোমরা তোমাদের দানকে নষ্ট করে দিও না, ঐ লোকের মত যে নিজের ধন লোক দেখানোর জন্য ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে না।

নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফ, সদাচার ও নিকট আত্মীয়দের দান করার আদেশ দেন এবং তিনি আশ্লীলতা, মন্দ কাজ ও সীমালঙ্ঘন থেকে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। আল-বায়ান (১৬:৯০) 

”অতএব আত্মীয়-স্বজনকে তাদের হক দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও। এটি উত্তম তাদের জন্য, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চায় এবং তারাই সফলকাম। আল-বায়ান  (৩০:৩৮)

“আর আত্মীয়কে তার হক দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও। আর কোনভাবেই অপব্যয় করো না।”  আল-বায়ান (১৭:২৬)

“আর তোমাদের মধ্যে যারা মর্যাদা ও প্রাচুর্যের অধিকারী, তারা যেন এমন কসম না করে যে, তারা নিকটাত্মীয়দের, মিসকীনদের ও আল্লাহর পথে হিজরতকারীদের কিছুই দেবে না। আর তারা যেন তাদের ক্ষমা করে এবং তাদের দোষত্রুটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি পছন্দ কর না যে, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করে দেন? আর আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” আল-বায়ান (২৪:২২) 

“তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে, নিকট আত্মীয়ের সাথে, ইয়াতীম, মিসকীন, নিকট আত্মীয়- প্রতিবেশী, অনাত্মীয়- প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী। আল-বায়ান (৪:৩৬) 

“আর স্মরণ কর, যখন আমি বনী ইসরাঈলের অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত করবে না এবং সদাচার করবে পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম ও মিসকীনদের সাথে। আর মানুষকে উত্তম কথা বল, সালাত কায়েম কর এবং যাকাত প্রদান কর। অতঃপর তোমাদের মধ্য থেকে স্বল্প সংখ্যক ছাড়া তোমরা সকলে উপেক্ষা করে মুখ ফিরিয়ে নিলে।”  আল-বায়ান(২:৮৩) 

তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তারা কী ব্যয় করবে? বল, ‘তোমরা যে সম্পদ ব্যয় করবে, তা পিতা-মাতা, আত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন ও মুসাফিরদের জন্য। আর যে কোন ভাল কাজ তোমরা কর, নিশ্চয় সে ব্যাপারে আল্লাহ সুপরিজ্ঞাত’। আল-বায়ান (২:২১৫)

”তারা তোমাকে হারাম মাস সম্পর্কে, তাতে লড়াই করা বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। বল, ‘তাতে লড়াই করা বড় পাপ; কিন্তু আল্লাহর পথে বাধা প্রদান, তাঁর সাথে কুফরী করা, মাসজিদুল হারাম থেকে বাধা দেয়া এবং তার অধিবাসীদেরকে তা থেকে বের করে দেয়া আল্লাহর নিকট অধিক বড় পাপ। আর ফিতনা হত্যার চেয়েও বড়’। আর তারা তোমাদের সাথে লড়াই করতে থাকবে, যতক্ষণ না তোমাদেরকে তোমাদের দীন থেকে ফিরিয়ে দেয়, তারা যদি পারে। আর যে তোমাদের মধ্য থেকে তাঁর দীন থেকে ফিরে যাবে, অতঃপর কাফির অবস্থায় মৃত্যু বরণ করবে, বস্তুত এদের আমলসমূহ দুনিয়া ও আখিরাতে বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে “ আল-বায়ান (২:১৭৭)

”পুরুষদের জন্য মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ রয়েছে। আর নারীদের জন্য রয়েছে মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ- তা থেকে কম হোক বা বেশি হোক- নির্ধারিত হারে। আর যদি বণ্টনে নিকটাত্মীয় এবং ইয়াতীম ও মিসকীনরা উপস্থিত হয়, তাহলে তোমরা তাদেরকে তা থেকে আহার দেবে এবং তাদের সাথে তোমরা উত্তম কথা বলবে “ আল-বায়ান (৪:৭,৮)

”উত্তম কথা ও ক্ষমা প্রদর্শন শ্রেয়, যে দানের পর কষ্ট দেয়া হয় তার চেয়ে। আর আল্লাহ অভাবমুক্ত, সহনশীল। হে মুমিনগণ, তোমরা খোঁটা ও কষ্ট দেয়ার মাধ্যমে তোমাদের সদাকা বাতিল করো না। সে ব্যক্তির মত, যে তার সম্পদ ব্যয় করে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে এবং বিশ্বাস করে না আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি। অতএব তার উপমা এমন একটি মসৃণ পাথর, যার উপর রয়েছে মাটি। অতঃপর তাতে প্রবল বৃষ্টি পড়ল, ফলে তাকে একেবারে পরিষ্কার করে ফেলল। তারা যা অর্জন করেছে তার মাধ্যমে তারা কোন কিছু করার ক্ষমতা রাখে না। আর আল্লাহ কাফির জাতিকে হিদায়াত দেন না।” আল-বায়ান (২:২৬৩,২৬৪) 

২৪ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ  ইয়াতীমদের হক আদায় করতে হবে! এবং সামর্থ অনুযায়ী তাদের সাহায্য সহোযোগিতা করতে হবে।

 এ সম্পর্কে আল্লাহ আরো বলেন, 

(সুরা বাকারা- ২:৮৩) আর স্মরণ কর, যখন আমি বনী ইসরাঈলের অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত করবে না এবং সদাচার করবে পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম ও মিসকীনদের সাথে। আর মানুষকে উত্তম কথা বল, সালাত কায়েম কর এবং যাকাত প্রদান কর। অতঃপর তোমাদের মধ্য থেকে স্বল্প সংখ্যক ছাড়া তোমরা সকলে উপেক্ষা করে মুখ ফিরিয়ে নিলে। আল-বায়ান 2:83

”ভালো কাজ এটা নয় যে, তোমরা তোমাদের চেহারা পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ফিরাবে; বরং ভালো কাজ হল যে ঈমান আনে আল্লাহ, শেষ দিবস, ফেরেশতাগণ, কিতাব ও নবীগণের প্রতি এবং যে সম্পদ প্রদান করে তার প্রতি আসক্তি সত্ত্বেও নিকটাত্মীয়গণকে, ইয়াতীম, অসহায়, মুসাফির ও প্রার্থনাকারীকে এবং বন্দিমুক্তিতে এবং যে সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং যারা অঙ্গীকার করে তা পূর্ণ করে, যারা ধৈর্যধারণ করে কষ্ট ও দুর্দশায় ও যুদ্ধের সময়ে। তারাই সত্যবাদী এবং তারাই মুত্তাকী।” আল-বায়ান 2:177

”তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তারা কী ব্যয় করবে? বল, ‘তোমরা যে সম্পদ ব্যয় করবে, তা পিতা-মাতা, আত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন ও মুসাফিরদের জন্য। আর যে কোন ভাল কাজ তোমরা কর, নিশ্চয় সে ব্যাপারে আল্লাহ সুপরিজ্ঞাত’।” আল-বায়ান 2:215

দুনিয়া ও আখিরাতের ব্যাপারে। আর তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে ইয়াতীমদের সম্পর্কে। বল, সংশোধন করা তাদের জন্য উত্তম। আর যদি তাদেরকে নিজদের সাথে মিশিয়ে নাও, তবে তারা তোমাদেরই ভাই। আর আল্লাহ জানেন কে ফাসাদকারী, কে সংশোধনকারী এবং আল্লাহ যদি চাইতেন, অবশ্যই তোমাদের জন্য (বিষয়টি) কঠিন করে দিতেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আল-বায়ান 2:220

আর তোমরা ইয়াতীমদেরকে তাদের ধন-সম্পদ দিয়ে দাও এবং তোমরা অপবিত্র বস্ত্তকে পবিত্র বস্ত্ত দ্বারা পরিবর্তন করো না এবং তাদের ধন-সম্পদকে তোমাদের ধন-সম্পদের সাথে খেয়ো না। নিশ্চয় তা বড় পাপ।” আল-বায়ান4:2

”আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীমদের ব্যাপারে তোমরা ইনসাফ করতে পারবে না, তাহলে তোমরা বিয়ে কর নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে; দু’টি, তিনটি অথবা চারটি। আর যদি ভয় কর যে, তোমরা সমান আচরণ করতে পারবে না, তবে একটি অথবা তোমাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে। এটা অধিকতর নিকটবর্তী যে, তোমরা যুলম করবে না।” আল-বায়ান 4:3

আর তোমরা ইয়াতীমদেরকে পরীক্ষা কর যতক্ষণ না তারা বিবাহের বয়সে পৌঁছে। সুতরাং যদি তোমরা তাদের মধ্যে বিবেকের পরিপক্কতা দেখতে পাও, তবে তাদের ধন-সম্পদ তাদেরকে দিয়ে দাও। আর তোমরা তাদের সম্পদ খেয়ো না অপচয় করে এবং তারা বড় হওয়ার আগে তাড়াহুড়া করে। আর যে ধনী সে যেন সংযত থাকে, আর যে দরিদ্র সে যেন ন্যায়সঙ্গতভাবে খায়। অতঃপর যখন তোমরা তাদের ধন-সম্পদ তাদের নিকট সোপর্দ করবে তখন তাদের উপর তোমরা সাক্ষী রাখবে। আর হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে আল্লাহ যথেষ্ট। আল-বায়ান 4:6

পুরুষদের জন্য মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ রয়েছে। আর নারীদের জন্য রয়েছে মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ- তা থেকে কম হোক বা বেশি হোক- নির্ধারিত হারে। আল-বায়ান 4:7

আর যদি বণ্টনে নিকটাত্মীয় এবং ইয়াতীম ও মিসকীনরা উপস্থিত হয়, তাহলে তোমরা তাদেরকে তা থেকে আহার দেবে এবং তাদের সাথে তোমরা উত্তম কথা বলবে। আল-বায়ান 4:8

আর তাদের ভয় করা উচিৎ যে, যদি তারা তাদের পেছনে অসহায় সন্তান রেখে যেত, তাহলে তারা তাদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হত। সুতরাং তারা যেন আল্লাহকে ভয় করে এবং যেন সঠিক কথা বলে। আল-বায়ান 4:9

আর যদি বণ্টনে নিকটাত্মীয় এবং ইয়াতীম ও মিসকীনরা উপস্থিত হয়, তাহলে তোমরা তাদেরকে তা থেকে আহার দেবে এবং তাদের সাথে তোমরা উত্তম কথা বলবে। আল-বায়ান 4:9

নিশ্চয় যারা ইয়াতীমদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে তারা তো তাদের পেটে আগুন খাচ্ছে; আর অচিরেই তারা প্রজ্জ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে। আল-বায়ান 4:10

তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে, নিকট আত্মীয়ের সাথে, ইয়াতীম, মিসকীন, নিকট আত্মীয়- প্রতিবেশী, অনাত্মীয়- প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী। আল-বায়ান 4:36 

তারা তোমার কাছে নারীদের ব্যাপারে সমাধান চায়। বল, আল্লাহ তাদের ব্যাপারে তোমাদেরকে সমাধান দিচ্ছেন এবং সমাধান দিচ্ছে ঐ আয়াতসমূহ যা কিতাবে তোমাদেরকে পাঠ করে শুনানো হয় ইয়াতীম নারীদের ব্যাপারে। যাদেরকে তোমরা প্রদান কর না যা তাদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে, অথচ তোমরা তাদেরকে বিবাহ করতে আগ্রহী হও। আর দুর্বল শিশুদের ব্যাপারে ও ইয়াতীমদের প্রতি তোমাদের ইনসাফ প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে। আর তোমরা যে কোন ভালো কাজ কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে পরিজ্ঞাত। আল-বায়ান 4:127

আর তোমরা ইয়াতীমের সম্পদের নিকটবর্তী হয়ো না, সুন্দর পন্থা ছাড়া। যতক্ষণ না সে পরিণত বয়সে উপনীত হয়, আর পরিমাপ ও ওযন ইনসাফের সাথে পরিপূর্ণ দেবে। আমি কাউকে তার সাধ্য ছাড়া দায়িত্ব অর্পণ করি না। আর যখন তোমরা কথা বলবে, তখন ইনসাফ কর, যদিও সে আত্মীয় হয় এবং আল্লাহর ওয়াদা পূর্ণ কর। এগুলো তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। আল-বায়ান (৬:১৫২)

তারা তোমার কাছে সমাধান চায়। বল, ‘আল্লাহ তোমাদেরকে সমাধান দিচ্ছেন ‘কালালা’* সম্পর্কে। কোন ব্যক্তি যদি মারা যায় এমন অবস্থায় যে, তার কোন সন্তান নেই এবং তার এক বোন রয়েছে, তবে সে যা রেখে গিয়েছে বোনের জন্য তার অর্ধেক, আর সে (মহিলা)যদি সন্তানহীনা হয় তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে। কিন্তু যদি তারা (বোনেরা) দু’জন হয়, তবে সে যা রেখে গিয়েছে তাদের জন্য তার দুই তৃতীয়াংশ। আর যদি তারা কয়েক ভাই বোন পুরুষ ও নারী হয়, তবে পুরুষের জন্য দুই নারীর অংশের সমান হবে’। আল্লাহ তোমাদেরকে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, যাতে তোমরা পথভ্রষ্ট না হও এবং আল্লাহ প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে সর্বজ্ঞ’। আল-বায়ান 4:176

আর তোমরা ইয়াতীমের সম্পদের কাছে যেয়ো না সুন্দরতম পন্থা* ছাড়া, যতক্ষণ না সে বয়সের পূর্ণতায় উপনীত হয়। আর অঙ্গীকার পূর্ণ কর, নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আল-বায়ান17:34

তিনি তোমাকে পেয়েছেন নিঃস্ব। অতঃপর তিনি সমৃদ্ধ করেছেন। সুতরাং তুমি ইয়াতীমের প্রতি কঠোর হয়ো না। আর ভিক্ষুককে তুমি ধমক দিওনা। আল-বায়ান (৯৩:৮-১০ ) 

তুমি কি তাকে দেখেছ, যে হিসাব-প্রতিদানকে অস্বীকার করে?  সে-ই ইয়াতীমকে কঠোরভাবে তাড়িয়ে দেয়, আর মিসকীনকে খাদ্যদানে উৎসাহ দেয় না।  অতএব সেই সালাত আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ,  যারা নিজদের সালাতে অমনোযোগী, যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে,  এবং ছোট-খাট গৃহসামগ্রী* দানে নিষেধ করে। আল-বায়ান (১০৭:১-৭)

আর আমি তাকে দু’টি পথ প্রদর্শন করেছি। তবে সে বন্ধুর গিরিপথটি অতিক্রম করতে সচেষ্ট হয়নি। আর কিসে তোমাকে জানাবে, বন্ধুর গিরিপথটি কি? তা হচ্ছে, দাস মুক্তকরণ। অথবা খাদ্য দান করা দুর্ভিক্ষের দিনে। ইয়াতীম আত্মীয়-স্বজনকে।  অথবা ধূলি-মলিন মিসকীনকে। অতঃপর সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, যারা ঈমান এনেছে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় ধৈর্যধারণের, আর পরস্পরকে উপদেশ দেয় দয়া-অনুগ্রহের।  তারাই সৌভাগ্যবান।  আর যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে তারাই দুর্ভাগা। তাদের উপর থাকবে অবরুদ্ধ আগুন। আল-বায়ান (৯০:১০- ২০)

২৫ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে সামর্থ অনুযায়ী মিসকীনদের (অভাবগ্রস্তদের) হক আদায় করতে হবে!

 এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

(১৭:২৬) ”আর আত্মীয়কে তার হক দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও। আর কোনভাবেই অপব্যয় করো না “ আল-বায়ান  

(30:38) ”অতএব আত্মীয়-স্বজনকে তাদের হক দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও। এটি উত্তম তাদের জন্য, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চায় এবং তারাই সফলকাম।’’ আল-বায়ান 

(24:22)”আর তোমাদের মধ্যে যারা মর্যাদা ও প্রাচুর্যের অধিকারী, তারা যেন এমন কসম না করে যে, তারা নিকটাত্মীয়দের, মিসকীনদের ও আল্লাহর পথে হিজরতকারীদের কিছুই দেবে না। আর তারা যেন তাদের ক্ষমা করে এবং তাদের দোষত্রুটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি পছন্দ কর না যে, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করে দেন? আর আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” আল-বায়ান 

(২:২১৫) তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তারা কী ব্যয় করবে? বল, ‘তোমরা যে সম্পদ ব্যয় করবে, তা পিতা-মাতা, আত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন ও মুসাফিরদের জন্য। আর যে কোন ভাল কাজ তোমরা কর, নিশ্চয় সে ব্যাপারে আল্লাহ সুপরিজ্ঞাত’। আল-বায়ান 

(৪: ৭,৮,৩৬)  ”পুরুষদের জন্য মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ রয়েছে। আর নারীদের জন্য রয়েছে মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ- তা থেকে কম হোক বা বেশি হোক- নির্ধারিত হারে। আর যদি বণ্টনে নিকটাত্মীয় এবং ইয়াতীম ও মিসকীনরা উপস্থিত হয়, তাহলে তোমরা তাদেরকে তা থেকে আহার দেবে এবং তাদের সাথে তোমরা উত্তম কথা বলবে। তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে, নিকট আত্মীয়ের সাথে, ইয়াতীম, মিসকীন, নিকট আত্মীয়- প্রতিবেশী, অনাত্মীয়- প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী।” আল-বায়ান 

(৭৬:৬-১২)  এমন এক ঝর্ণা যা থেকে আল্লাহর বান্দাগণ পান করবে, তারা এটিকে যথা ইচ্ছা প্রবাহিত করবে। তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনকে ভয় করে যার অকল্যাণ হবে সুবিস্তৃত। তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীকে খাদ্য দান করে। তারা বলে,‘আমরা তো আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদেরকে খাদ্য দান করি। আমরা তোমাদের থেকে কোন প্রতিদান চাই না এবং কোন শোকরও না।  আমরা আমাদের রবের পক্ষ থেকে এক ভয়ংকর ভীতিপ্রদ দিবসের ভয় করি। সুতরাং সেই দিবসের অকল্যাণ থেকে আল্লাহ তাদের রক্ষা করলেন এবং তাদের প্রদান করলেন উজ্জ্বলতা ও উৎফুল্লতা।  আর তারা যে ধৈর্যধারণ করেছিল তার পরিণামে তিনি তাদেরকে জান্নাত ও রেশমী বস্ত্রের পুরস্কার প্রদান করবেন। আল-বায়ান 

(৯০:১০-২০)  আর আমি তাকে দু’টি পথ প্রদর্শন করেছি। তবে সে বন্ধুর গিরিপথটি অতিক্রম করতে সচেষ্ট হয়নি। আর কিসে তোমাকে জানাবে, বন্ধুর গিরিপথটি কি? তা হচ্ছে, দাস মুক্তকরণ। অথবা খাদ্য দান করা দুর্ভিক্ষের দিনে। ইয়াতীম আত্মীয়-স্বজনকে।  অথবা ধূলি-মলিন মিসকীনকে। অতঃপর সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, যারা ঈমান এনেছে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় ধৈর্যধারণের, আর পরস্পরকে উপদেশ দেয় দয়া-অনুগ্রহের।  তারাই সৌভাগ্যবান।  আর যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে তারাই দুর্ভাগা। তাদের উপর থাকবে অবরুদ্ধ আগুন। আল-বায়ান

(৬৯:28 - ৩৪) ”কিন্তু যার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে সে বলবে, ‘হায়, আমাকে যদি আমার আমলনামা দেয়া না হত’!  ‘আর যদি আমি না জানতাম আমার হিসাব’!  ‘হায়, মৃত্যুই যদি আমার চূড়ান্ত ফয়সালা হত’! ‘আমার সম্পদ আমার কোন কাজেই আসল না!’  ‘আমার ক্ষমতাও আমার থেকে চলে গেল! (বলা হবে,) ‘তাকে ধর অতঃপর তাকে বেড়ি পরিয়ে দাও।’ ‘তারপর তাকে তোমরা নিক্ষেপ কর জাহান্নামে’। ‘তারপর তাকে বাঁধ এমন এক শেকলে যার দৈর্ঘ্য হবে সত্তর হাত।’সে তো মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করত না।” আল-বায়ান

(৬৮:২১- ২৭)  “”অথবা এমন কে আছে, যে তোমাদেরকে রিয্ক দান করবে যদি আল্লাহ তাঁর রিয্ক বন্ধ করে দেন? বরং তারা অহমিকা ও অনীহায় নিমজ্জিত হয়ে আছে।  যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখের উপর ভর দিয়ে চলে সে কি অধিক হিদায়াতপ্রাপ্ত নাকি সেই ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরল পথে চলে ? বল, ‘তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি এবং অন্তকরণসমূহ দিয়েছেন। তোমরা খুব অল্পই শোকর কর’। বল, ‘তিনিই তোমাদেরকে যমীনে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে’।  আর তারা বলে, ‘সে ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।  বল, ‘এ বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই নিকট। আর আমি তো স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’। অতঃপর তারা যখন তা* আসন্ন দেখতে পাবে, তখন কাফিরদের চেহারা মলিন হয়ে যাবে এবং বলা হবে, ‘এটাই হল তা, যা তোমরা দাবী করছিলে’।” আল-বায়ান

(২:৮৩) ”আর স্মরণ কর, যখন আমি বনী ইসরাঈলের অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত করবে না এবং সদাচার করবে পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম ও মিসকীনদের সাথে। আর মানুষকে উত্তম কথা বল, সালাত কায়েম কর এবং যাকাত প্রদান কর। অতঃপর তোমাদের মধ্য থেকে স্বল্প সংখ্যক ছাড়া তোমরা সকলে উপেক্ষা করে মুখ ফিরিয়ে নিলে। আল-বায়ান 

(২:১৭৭) ভালো কাজ এটা নয় যে, তোমরা তোমাদের চেহারা পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ফিরাবে; বরং ভালো কাজ হল যে ঈমান আনে আল্লাহ, শেষ দিবস, ফেরেশতাগণ, কিতাব ও নবীগণের প্রতি এবং যে সম্পদ প্রদান করে তার প্রতি আসক্তি সত্ত্বেও নিকটাত্মীয়গণকে, ইয়াতীম, অসহায়, মুসাফির ও প্রার্থনাকারীকে এবং বন্দিমুক্তিতে এবং যে সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং যারা অঙ্গীকার করে তা পূর্ণ করে, যারা ধৈর্যধারণ করে কষ্ট ও দুর্দশায় ও যুদ্ধের সময়ে। তারাই সত্যবাদী এবং তারাই মুত্তাকী। আল-বায়ান 

২৬ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ উত্তরাধিকারের সম্পত্তি সুষ্ঠভাবে বন্ঠন করতে হবে!

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,  ”পিতা-মাতা এবং আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষের অংশ আছে এবং পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীরও অংশ আছে, সেটা অল্পই হোক বা বেশীই হোক, এক নির্ধারিত অংশ। আর সম্পত্তি বণ্টনকালে আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন এবং অভাবগ্রস্ত লোক উপস্থিত থাকলে, তাদেরকে তা হতে কিছু দান কর এবং তাদের সাথে সদালাপ কর। আর তাদের ভয় করা উচিৎ যে, যদি তারা তাদের পেছনে অসহায় সন্তান রেখে যেত, তাহলে তারা তাদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হত। সুতরাং তারা যেন আল্লাহকে ভয় করে এবং যেন সঠিক কথা বলে। নিশ্চয় যারা পিতৃহীনদের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করে, তারা আসলে নিজেদের উদরে অগ্নি ভক্ষণ করে। আর অচিরেই তারা জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করবে। পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যাক্ত সম্পত্তির প্রত্যেকটির জন্য আমি উত্তরাধিকারী করেছি এবং যাদের সাথে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ তাদেরকে তাদের অংশ দিবে। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বকিছুর সম্যক দ্রষ্টা। হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না,আর যে কেউ সীমালংঘন করে অন্যায়ভাবে তা করবে, তাকে অবশ্যই আমি অগ্নিদগ্ধ করব এবং তা আল্লাহর পক্ষে সহজসাধ্য।” 

২. আল-বাকারা 2:188

আর তোমরা নিজদের মধ্যে তোমাদের সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না এবং তা বিচারকদেরকে (ঘুষ হিসেবে) প্রদান করো না। যাতে মানুষের সম্পদের কোন অংশ পাপের মাধ্যমে জেনে বুঝে খেয়ে ফেলতে পার। আল-বায়ান(২:১৮৮)

৪. আন-নিস আয়াত নং(৭-১৪)

”পুরুষদের জন্য মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ রয়েছে। আর নারীদের জন্য রয়েছে মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ- তা থেকে কম হোক বা বেশি হোক- নির্ধারিত হারে। আর যদি বণ্টনে নিকটাত্মীয় এবং ইয়াতীম ও মিসকীনরা উপস্থিত হয়, তাহলে তোমরা তাদেরকে তা থেকে আহার দেবে এবং তাদের সাথে তোমরা উত্তম কথা বলবে। আর তাদের ভয় করা উচিৎ যে, যদি তারা তাদের পেছনে অসহায় সন্তান রেখে যেত, তাহলে তারা তাদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হত। সুতরাং তারা যেন আল্লাহকে ভয় করে এবং যেন সঠিক কথা বলে।নিশ্চয় যারা ইয়াতীমদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে তারা তো তাদের পেটে আগুন খাচ্ছে; আর অচিরেই তারা প্রজ্জ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন, এক ছেলের জন্য দুই মেয়ের অংশের সমপরিমাণ। তবে যদি তারা দুইয়ের অধিক মেয়ে হয়, তাহলে তাদের জন্য হবে, যা সে রেখে গেছে তার তিন ভাগের দুই ভাগ; আর যদি একজন মেয়ে হয় তখন তার জন্য অর্ধেক। আর তার মাতা পিতা উভয়ের প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ সে যা রেখে গেছে তা থেকে, যদি তার সন্তান থাকে। আর যদি তার সন্তান না থাকে এবং তার ওয়ারিছ হয় তার মাতা পিতা তখন তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ। আর যদি তার ভাই-বোন থাকে তবে তার মায়ের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ। অসিয়ত পালনের পর, যা দ্বারা সে অসিয়ত করেছে অথবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের মাতা পিতা ও তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের মধ্য থেকে তোমাদের উপকারে কে অধিক নিকটবর্তী তা তোমরা জান না। আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। আর তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীগণ যা রেখে গেছে তার অর্ধেক, যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তারা যা রেখে গেছে তা থেকে তোমাদের জন্য চার ভাগের এক ভাগ। তারা যে অসিয়ত করে গেছে তা পালনের পর অথবা ঋণ পরিশোধের পর। আর স্ত্রীদের জন্য তোমরা যা রেখে গিয়েছ তা থেকে চার ভাগের একভাগ, যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে তাহলে তাদের জন্য আট ভাগের এক ভাগ, তোমরা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে। তোমরা যে অসিয়ত করেছ তা পালন অথবা ঋণ পরিশোধের পর। আর যদি মা বাবা এবং সন্তান-সন্ততি নাই এমন কোন পুরুষ বা মহিলা মারা যায় এবং তার থাকে এক ভাই অথবা এক বোন, তখন তাদের প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের একভাগ। আর যদি তারা এর থেকে অধিক হয় তবে তারা সবাই তিন ভাগের এক ভাগের মধ্যে সমঅংশীদার হবে, যে অসিয়ত করা হয়েছে তা পালনের পর অথবা ঋণ পরিশোধের পর। কারো কোন ক্ষতি না করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে অসিয়তস্বরূপ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।  এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর এটা মহা সফলতা । আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক আযাব।” আল-বায়ান(৪:৭-১৪,)

৪. আন-নিসা, আয়াত নং (7: 29,30,33) হে মুমিনগণ, তোমরা পরস্পরের মধ্যে তোমাদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না, তবে পারস্পরিক সম্মতিতে ব্যবসার মাধ্যমে হলে ভিন্ন কথা। আর তোমরা নিজেরা নিজদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে পরম দয়ালু। আর যে ঐ কাজ করবে সীমালঙ্ঘন ও অন্যায়ভাবে, আমি অচিরেই তাকে আগুনে প্রবেশ করাব। আর সেটি হবে আল্লাহর উপর সহজ।আর আমি প্রত্যেকের জন্য নির্ধারণ করেছি উত্তরাধিকারী, পিতা-মাতা ও নিকট আত্মীয়-স্বজন যা রেখে যায় এবং যাদের সাথে তোমরা চুক্তি করেছ, তা থেকে* । সুতরাং তোমরা তাদেরকে তাদের অংশ দিয়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছুর উপর সাক্ষী।  (৪:২৯,৩০,৩৩)

৮৯. আল-ফজর আয়াত নং(19)ঃ  আর তোমরা উত্তরাধিকারের সম্পত্তি সম্পূর্ণরূপে ভক্ষণ কর। আল-বায়ান (৮৯:১৯)

২৭ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ পাড়া প্রতিবেশী,সঙ্গী-সাথী ও মুসাফিরদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হব‌ে!

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

সুরা বাকারাহ (২:১১৫, ২১৭) 

তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তারা কী ব্যয় করবে? বল, ‘তোমরা যে সম্পদ ব্যয় করবে, তা পিতা-মাতা, আত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন ও মুসাফিরদের জন্য। আর যে কোন ভাল কাজ তোমরা কর, নিশ্চয় সে ব্যাপারে আল্লাহ সুপরিজ্ঞাত’। 2:215

তিনি আসমানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা। আর যখন তিনি কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেন, তখন কেবল বলেন ‘হও’ ফলে তা হয়ে যায়। আল-বায়ান 2:117

সূরা আল-বাকারাহ : আয়াত:  ২৭৩

খয়রাত ঐ সকল গরীব লোকের জন্যে যারা আল্লাহর পথে আবদ্ধ হয়ে গেছে-জীবিকা র সন্ধানে অন্যত্র ঘোরাফেরা করতে সক্ষম নয়। অজ্ঞ লোকেরা যাঞ্চা না করার কারণে তাদেরকে অভাবমুক্ত মনে করে। তোমরা তাদেরকে তাদের লক্ষণ দ্বারা চিনবে। তারা মানুষের কাছে কাকুতি-মিনতি করে ভিক্ষা চায় না। তোমরা যে অর্থ ব্যয় করবে, তা আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই পরিজ্ঞাত। [ সুরা বাকারা ২:২৭৩ ]

(৪:৩৬) তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে, নিকট আত্মীয়ের সাথে, ইয়াতীম, মিসকীন, নিকট আত্মীয়- প্রতিবেশী, অনাত্মীয়- প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী। আল-বায়ান 4:36

(৩০:৩৮) অতএব আত্মীয়-স্বজনকে তাদের হক দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও। এটি উত্তম তাদের জন্য, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চায় এবং তারাই সফলকাম। আল-বায়ান 30:38

২৮ নং মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ পরকালে মুক্তি পেতে হলে বিশ্বাস ও সৎকর্মের কোন বিকল্প নাই। সুতরাং আল্লাহর কোরান এর কথা মোতাবেক  বিশ্বাস এবং সৎকর্ম বেহেস্তের  এক মাত্র চাবি। নিঃসন্দেহে আল্লাহর কোরানে কোন সন্দেহ নেই। 

এ বিষয়ে পবিত্র কোরানে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

[ সুরা বাকারা ২:(২৩ -২৫ )

"এতদসম্পর্কে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে এস। তোমাদের সেসব সাহায্যকারীদেরকে সঙ্গে নাও- এক আল্লাহকে ছাড়া, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো।  আর যদি তা না পার-অবশ্য তা তোমরা কখনও পারবে না, তাহলে সে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য। আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে তাদেরকে শুভ সংবাদ দিন যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।" [ সুরা বাকারা ২:(২৩ -২৫ )

সূরা বাকারা আয়াত : 62

”নিঃসন্দেহে যারা মুসলমান হয়েছে এবং যারা ইহুদী, নাসারা ও সাবেঈন, (তাদের মধ্য থেকে) যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।” [ সুরা বাকারা ২:৬২] 

 [ সুরা বাকারা :৭৮ ]

তোমাদের কিছু লোক নিরক্ষর। তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া আল্লাহর গ্রন্থের কিছুই জানে না। তাদের কাছে কল্পনা ছাড়া কিছুই নেই।

[ সুরা বাকারা :৭৯ ]

অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ-যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে। [ সুরা বাকারা ২:৭৯ ]

[ সুরা বাকারা :৮০ ]

তারা বলেঃ আগুন আমাদিগকে কখনও স্পর্শ করবে না; কিন্তু গণাগনতি কয়েকদিন। বলে দিনঃ তোমরা কি আল্লাহর কাছ থেকে কোন অঙ্গীকার পেয়েছ যে, আল্লাহ কখনও তার খেলাফ করবেন না-না তোমরা যা জান না, তা আল্লাহর সাথে জুড়ে দিচ্ছ। [ সুরা বাকারা ২:৮০ ]

 [ সুরা বাকারা :  আয়াত ৮১ -৮২]

"হাঁ, যে ব্যক্তি পাপ অর্জন করেছে এবং সে পাপ তাকে পরিবেষ্টিত করে নিয়েছে, তারাই দোযখের অধিবাসী। তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে। পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে।"  (৮১ -৮২)

সূরা আন নিসা আয়াত -১২২

যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, আমি তাদেরকে উদ্যানসমূহে প্রবিষ্ট করাব, যেগুলোর তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়। তারা চিরকাল তথায় অবস্থান করবে। আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সত্য সত্য। আল্লাহর চাইতে অধিক সত্যবাদী কে? [ সুরা নিসা ৪:১২২ ]

সূরা আন নিসা আয়াত : ১২৪

যে লোক পুরুষ হোক কিংবা নারী, কোন সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়, তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রাপ্য তিল পরিমাণ ও নষ্ট হবে না। [ সুরা নিসা ৪:১২৪ ]

সূরা আন নিসা আয়াত : ১২৫

যে আল্লাহর নির্দেশের সামনে মস্তক অবনত করে সৎকাজে নিয়োজিত থাকে এবং ইব্রাহীমের ধর্ম অনুসরণ করে, যিনি একনিষ্ঠ ছিলেন, তার চাইতে উত্তম ধর্ম কার? আল্লাহ ইব্রাহীমকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন। [ সুরা নিসা ৪:১২৫] 

সূরা আল মায়দা  আয়াত-  09

যাহারা বিশ্বাস স্থাপন করে, এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও মহান প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। [ [সুরা মায়েদা ৫:৯]

সূরা আল ইউনুস আয়াত- 9

অবশ্য যেসব লোক ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদেরকে হেদায়েত দান করবেন তাদের পালনকর্তা, তাদের ঈমানের মাধ্যমে। এমন সুসময় কানন-কুঞ্জে র প্রতি যার তলদেশে প্রবাহিত হয় প্রস্রবণসমূহ। [ সুরা ইউনুস ১০:৯ ]

সূরা ল হুদ  আয়াত  : 11

তবে যারা ধৈর্য্যধারণ করেছে এবং সৎকার্য করেছে তাদের জন্য ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান রয়েছে। [ সুরা হুদ ১১:১১ ]

"সূরা আল হুদ  আয়াত  : 23

নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে এবং স্বীয় পালনকর্তার সমীপে বিনতি প্রকাশ করেছে তারাই বেহেশতবাসী, সেখানেই তারা চিরকাল থাকবে।" [সুরা হুদ:11:23]

সূরা আল কাহাফ আয়াত : 30

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কার নষ্ট করি না। [ সুরা কা’হফ ১৮:৩০ ]


[সূরা আল কাহাফ আয়াত :107]

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের অভ্যর্থনার জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস। [সূরা আল কাহাফ আয়াত :107]

সূরা হাজ্ব  আয়াত : 14 

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন। [ সুরা হাজ্জ্ব ২২:১৪ ]

সূরা হাজ্ব  আয়াত: 23

নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে দাখিল করবেন উদ্যান সমূহে, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হবে। তাদেরকে তথায় স্বর্ণ-কংকন ও মুক্তা দ্বারা অলংকৃত করা হবে এবং তথায় তাদের পোশাক হবে রেশমী। [ সুরা হাজ্জ্ব ২২:২৩ ]

সূরা হাজ্ব  আয়াত: 50

সুতরাং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে আছে পাপ মার্জনা এবং সম্মানজনক রুযী। [ সুরা হাজ্জ্ব ২২:৫০ ]

সূরা হাজ্ব  আয়াত: 56

রাজত্ব সেদিন আল্লাহরই; তিনিই তাদের বিচার করবেন। অতএব যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে তারা নেয়ামত পূর্ণ কাননে থাকবে। [ সুরা হাজ্জ্ব ২২:৫৬ 

সূরা লোকমান আয়াত : 0৮

যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত। [ সুরা লুকমান ৩১:৮ ]

সূরা লোকমান আয়াত : 0৯

সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আল্লাহর ওয়াদা যথার্থ। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। [ সুরা 

লুকমান ৩১:৯] 

সূরা সাবা  আয়াত :04 

তিনি পরিণামে যারা মুমিন ও সৎকর্ম পরায়ণ, তাদেরকে প্রতিদান দেবেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মান জনক রিযিক। [ সুরা সা’বা ৩৪:৪ ]

সূরা  ফাতির আয়াত : 07 

যারা কুফর করে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর আযাব। আর যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার।  (সুরা ফাতির ৩৫:৭) 

সুরা হা-মীম / সূরা  ফুসসিলাত : আয়াত  ৮

নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার। [ সুরা হা-মীম ৪১:৮ 

সুরা শূরা : আয়াত: 22

তুমি যালিমদেরকে তাদের কৃত কর্মের জন্য ভীত-সন্ত্রস্ত দেখতে পাবে। অথচ তা (তাদের কর্মের শাস্তি) তাদের উপর পতিত হবেই। আর যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তারা জান্নাতের উদ্যানসমূহে থাকবে। তারা যা চাইবে, তাদের রবের নিকট তাদের জন্য তাই থাকবে। এটাই তো মহাঅনুগ্রহ। আল-বায়ান

সুরা শূরা : আয়াত: 23

এরই সুসংবাদ দেন আল্লাহ তার সেসব বান্দাকে, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে। বলুন, আমি আমার দাওয়াতের জন্যে তোমাদের কাছে কেবল আত্নীয়তাজনিত সৌহার্দ চাই। যে কেউ উত্তম কাজ করে, আমি তার জন্যে তাতে পুণ্য বাড়িয়ে দেই। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকারী, গুণগ্রাহী। [ সুরা শূরা ৪২:২৩ ]

সূরা যাসিয়া  আয়াত: 30 

যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদেরকে তাদের পালনকর্তা স্বীয় রহমতে দাখিল করবেন। এটাই প্রকাশ্য সাফল্য। [ সুরা যাসিয়া ৪৫:৩০ ]

সূরা ত্বীন আয়াত  : 06

কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে অশেষ পুরস্কার। [ সুরা তীন ৯৫:৬ ]

সুরা বাইয়্যেনাহ , আয়াত : 07 

যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা। [ সুরা বাইয়্যেনাহ ৯৮:৭ ]

সুরা বাইয়্যেনাহ , আয়াত : 08

তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় করে।  [ সুরা বাইয়্যেনাহ ৯৮:৮ ] 

 সুরা বাকারা আয়াত নং ৬২:

"নিঃসন্দেহে যারা মুসলমান হয়েছে এবং যারা ইহুদী, নাসারা ও সাবেঈন, (তাদের মধ্য থেকে) যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।" (QS. Al-Baqarah 2: Verse 62)


এ সকল সূরার আয়াত সমূহে স্পষ্ট করে আল্লাহ বার বার উল্লেখ করেছেন বিশ্বাস এবং সৎ কর্ম বেহেস্তের চাবি !! সুতরাং আমাদের অবশ্যই ভাবতে হবে আমরা আসলে কোন পথে আছি বা চলছি! আল্লাহ বলেছে কি আর আমরা করছিটা কি!

কোরানে বর্ণিত বিশ্বাস ও সৎকাজের তালিকাঃ আল্লাহ পবিত্র কোরানে বিশ্বাস ও সৎকাজের যে তালিকা বা ফর্দ দিয়েছেন আসুন তা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা যাক!

Al-Baqarah 2:177

Allah Subhanahu Wa Ta'ala said:  

“সৎ কাজ এটা নয় যে, তোমরা তোমাদের চেহারা পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ফিরাবে; বরং সৎ কাজ হল, যে ঈমান আনে আল্লাহ, শেষ দিবস, ফেরেশতাগণ, কিতাব ও নবীগণের প্রতি এবং যে সম্পদ প্রদান করে তার প্রতি আসক্তি সত্ত্বেও নিকটাত্মীয়গণকে, ইয়াতীম, অসহায়, মুসাফির ও প্রার্থনাকারীকে এবং বন্দিমুক্তিতে এবং যে সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং যারা অঙ্গীকার করে তা পূর্ণ করে, যারা ধৈর্যধারণ করে কষ্ট ও দুর্দশায় ও যুদ্ধের সময়ে। তারাই সত্যবাদী এবং তারাই মুত্তাকী।" (2:177)

 ( Al-Baqarah 2: Verse 136)

 "বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তদীয় বংশধরের প্রতি এবং মূসা, ঈসা, অন্যান্য নবীকে পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা দান করা হয়েছে, তৎসমুদয়ের উপর। আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা তাঁরই আনুগত্যকারী।" ( Al-Baqarah 2: Verse 136)

সূরা আল-বাকারাহ : আয়াত:  ১৯৫ 

আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন। (সুরা বাকারা ২:১৯৫)

সূরা আল-বাকারাহ : আয়াত:  ২১৫ 

"(হে নবী) তারা আপনাকে প্রশ্ন করে যে, কি জিনিস তারা দান করবে? বলে দিন-যে বস্তুই তোমরা দান কর, তা হবে পিতা- মাতার জন্যে, আত্মীয়- আপনজনের জন্যে, এতীম- অনাথদের জন্যে, অসহায়দের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে। আর তোমরা যে কোন সৎকাজ কর না কেন, নিঃসন্দেহে তা ভালোভাবেই আল্লাহর জানা রয়েছে।" (২: ২১৫)

সূরা আল-বাকারাহ : আয়াত:  ২৬১

যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ। [ সুরা বাকারা ২:২৬১ ]

সূরা আল-বাকারাহ : আয়াত:  ২৬২

যারা স্বীয় ধন সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, এরপর ব্যয় করার পর সে অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে না এবং কষ্টও দেয় না, তাদেরই জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে পুরস্কার এবং তাদের কোন আশংকা নেই, তারা চিন্তিতও হবে না। [ সুরা বাকারা ২:২৬২ ]

সূরা আল-বাকারাহ : আয়াত:  ২৬৩ 

নম্র কথা বলে দেয়া এবং ক্ষমা প্রদর্শন করা ঐ দান খয়রাত অপেক্ষা উত্তম, যার পরে কষ্ট দেয়া হয়। আল্লাহ তা'আলা সম্পদশালী, সহিঞ্চু। [ সুরা বাকারা ২:২৬৩ ]

সূরা আল-বাকারাহ : আয়াত:  ২৭৩

খয়রাত ঐ সকল গরীব লোকের জন্যে যারা আল্লাহর পথে আবদ্ধ হয়ে গেছে-জীবিকা র সন্ধানে অন্যত্র ঘোরাফেরা করতে সক্ষম নয়। অজ্ঞ লোকেরা যাঞ্চা না করার কারণে তাদেরকে অভাবমুক্ত মনে করে। তোমরা তাদেরকে তাদের লক্ষণ দ্বারা চিনবে। তারা মানুষের কাছে কাকুতি-মিনতি করে ভিক্ষা চায় না। তোমরা যে অর্থ ব্যয় করবে, তা আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই পরিজ্ঞাত। [ সুরা বাকারা ২:২৭৩ ]

সূরা আল-বাকারাহ : আয়াত: ২৭৪

যারা স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে, রাত্রে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে। তাদের জন্যে তাদের সওয়াব রয়েছে তাদের পালনকর্তার কাছে। তাদের কোন আশংঙ্কা নেই এবং তারা চিন্তিত ও হবে না। [ সুরা বাকারা ২:২৭৪ ]

এছাড়াও, দরিদ্র অবস্থায় এবং স্বচ্ছল অবস্থায় দান করা, (পিতা মাতা, আত্মীয় স্বজন, এতিম, মিসকিন, ফকির, মুসাফির, দাশ মুক্তি), সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান, কোরানের মুসল্লি হওয়া! জীবনের কঠিন সময়ে ধর্য্য ধারন করা, ছোট খাটো কাজে পাশের প্রতিবেশী বা অন্যকে সাধ্য মতো সাহায্য করা! আমানতের খেয়ানত না করা সত্য কথা বলা, পরচর্চা না করা, ফায়সা কথা বা গাল মন্দ না করা, সবার ধর্ম বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করা, প্রভৃতি সহ সকল ভাল কাজের মধ্যে নিজেকে নিয়োজিত রাখা!  এটাই ইসলামের শিক্ষা !!

বিশ্বাস  বলতে, সর্বশক্তিমান এক আল্লাহর উপর দৃঢ বিশ্বাস, ফেরেস্তাগণে উপর বিশ্বাস, নবী রাসুল গণের উপর বিশ্বাস, আসমানী কিতাব সমুহের উপর বিশ্বাস, তাকদির এর উপর বিশ্বাস, পূনরূত্থান এর উপর পূর্ণ  অস্থা ও বিশ্বাস করতে হবে !! 

এটাই ইসলমের মূল কথা  আর এটাই ইসলাম !! কিন্তু আমরা আসলে আছির কোথায় !! আর আল্লাহর নিকট সাহায্য চাচ্ছি কোথায় !! আল্লাহ চলতে বলেছে কোন পথে, আর আমরা আজ চলছি কোন পথে !! এখন সময় এসেছে ভেবে দেখার ! সময় অনেক গড়িয়ে গেছে, সময় এসেছে কোরানের পথে ফেরার , সত্যকে অবলোকন করার। আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করন !! (আমিন)


২৯ নং ম্যাসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ অন্যের সম্পত্তি অন্যায় ভাবে আত্মসাৎ হতে আমাদের বিরত থাকতে হবে! কোন ভাবেই পর ধন বা সম্পত্তি ভোগ দখল করা যাবেনা। আমানতের খেয়ানত করা যাবে না। 

এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন,

সুর বাকারা আয়াত নং- 188 

“তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না। এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্নসাৎ করার উদ্দেশে শাসন কতৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না।”

Al-Baqarah 2: Verse 283

"আর তোমরা যদি প্রবাসে থাক এবং কোন লেখক না পাও তবে বন্ধকী বন্তু হস্তগত রাখা উচিত। যদি একে অন্যকে বিশ্বাস করে, তবে যাকে বিশ্বাস করা হয়, তার উচিত অন্যের প্রাপ্য পরিশোধ করা এবং স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় কর! তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না। যে কেউ তা গোপন করবে, তার অন্তর পাপপূর্ণ হবে। তোমরা যা করা, আল্লাহ সে সম্পর্কে খুব জ্ঞাত।"

An-Nisa' 4:2

"আর তোমরা ইয়াতীমদেরকে তাদের ধন-সম্পদ দিয়ে দাও এবং তোমরা অপবিত্র বস্ত্তকে পবিত্র বস্ত্ত দ্বারা পরিবর্তন করো না এবং তাদের ধন-সম্পদকে তোমাদের ধন-সম্পদের সাথে খেয়ো না। নিশ্চয় তা বড় পাপ।"

An-Nisa' 4:6

"আর তোমরা ইয়াতীমদেরকে পরীক্ষা কর যতক্ষণ না তারা বিবাহের বয়সে পৌঁছে। সুতরাং যদি তোমরা তাদের মধ্যে বিবেকের পরিপক্কতা দেখতে পাও, তবে তাদের ধন-সম্পদ তাদেরকে দিয়ে দাও। আর তোমরা তাদের সম্পদ খেয়ো না অপচয় করে এবং তারা বড় হওয়ার আগে তাড়াহুড়া করে। আর যে ধনী সে যেন সংযত থাকে, আর যে দরিদ্র সে যেন ন্যায়সঙ্গতভাবে খায়। অতঃপর যখন তোমরা তাদের ধন-সম্পদ তাদের নিকট সোপর্দ করবে তখন তাদের উপর তোমরা সাক্ষী রাখবে। আর হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে আল্লাহ যথেষ্ট।"

 An-Nisa' 4:10

"নিশ্চয় যারা ইয়াতীমদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে তারা তো তাদের পেটে আগুন খাচ্ছে; আর অচিরেই তারা প্রজ্জ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে।"

An-Nisa' 4:(29-30-31)

"হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। আর যে কেউ সীমালঙ্ঘন কিংবা জুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবে, তাকে খুব শীঘ্রই আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। এটা আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজসাধ্য। যেগুলো সম্পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সেসব বড় গোনাহ গুলো থেকে বেঁচে থাকতে পার। তবে আমি তোমাদের ক্রটি-বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করে দেব এবং সম্মান জনক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করাব।" (4:29-31)

এছািড়াও বিধি নিষেধ গুলো আল্লাহ গুরুত্ব সহকারে পালন করতে বলেছেন। যেমনঃ

০১.কেবলমাত্র নিজে আমল করে তারপর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যকে আমল করার আদেশ দিবে।(০২:৪৪)

০২. গালাগালি করবে না (০২:৬০)

০৩. প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে না (০২:১৭৭)

০৪. ঘুষ এর শনে জড়িত হবে না (০২:১৮৮)

০৫. খোঁটা দিয়ে দানকে নষ্ট কর না (০২:২৬৪)।

০৬. সুদ হতে বিরত রবে (০২:২৭৫)।

০৭. ঋণ গ্রহণকারীর কঠিন পরিস্থিতিতে পরিশোধের  সময় বাড়িয়ে দিবে (২:২৮০)

০৮. ঋণ গ্রহণ করলে তা লিখে রাখবে (০২:২৮২)

০৯. আমানত আদায় কর (০২:২৮৩)।

১০. কেবল তাদের সাথেই লড়াই কর, যারা তোমাদের সাথে লড়াই করে (০২:১৯০)

১১. যুদ্ধের শিষ্টাচার মেনে চল (০২:১৯১)।

১২. রাগকে নিয়ন্ত্রণ করুন (০৩:১৩৪)।

১৩. কথাবার্তায় কর্কশ হবে না (০৩:১৫৯)।

১৪. মৃতদের সম্পদ তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সুষ্ঠভাবে বিতরণ কর (০৪:০৭)।

১৫. এতিমদের সম্পত্তি গ্রাস করবে না (০৪:১০)।

১৬. অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করবে না (০৪:২৯)।

১৭. অন্যের সাথে ভালো ব্যবহার কর। (০৪:৩৬)

১৮. সাদাকাতে সম্পদ ব্যয় কর (৫৭:০৭)

১৯. আল্লাহর বিধানুসারে বিচার কর (০৫:৪৫)।

২০. অহংকার করবে না। (০৭:১৩)

২১. অন্যকে তার ভুলের জন্য ক্ষমা করা  (০৭:১৯৯)

২২. পিতামাতার প্রতি সম্মানজনক - দায়িত্বশীল আচরণ কর (১৭:২৩)।

২৩. অপব্যয় করবে না (১৭:২৯)।

২৪. লোকদের সাথে ধীরস্থির হয়ে শান্তভাবে কথা বল (২০:৪৪)।

২৫. উচ্চস্বরে কথা বলবে না অর্থাৎ কথা নিচু স্বরে বলবে, কারন গাধা স্বরই অধিক অপ্রীতিকর (৩১:১৯)। 

২৬. অন্যকে উপহাস করবে না (৪৯:১১)

২৭. গুপ্তচরবৃত্তি করবে না, কুৎসা রটাবে না (৪৯:১২)।

২৮. অতিথিকে সম্মান কর (৫১:২৬)।

২৯. দরিদ্রকে খাবার খাওয়াও (১০৭:০৩)।

৩০. গোপনপত্নী গ্রহন তথা ব্যভীচার কর না - (৫:৫; ১৭:৩২; ৬:১২)।

৩১ . সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করবে না (২:৪২)

৩০  নং ম্যাসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল কুরআন পড়ার সময় নিজেদের আকল, জ্ঞান,বুদ্ধি বিবেক বা বোধশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে: এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

"নিশ্চয় আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, আমি তাকে পরীক্ষা করব, ফলে আমি তাকে বানিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন। নিশ্চয় আমি তাকে পথের নির্দেশ দিয়েছি, হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, না হয় সে অকৃতজ্ঞ হবে।" (৭৬:২,৩) 

"শপথ নফসের এবং তার, যিনি তাকে সুবিন্যস্ত করেছেন। অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। সেই সফলকাম হয়েছে যে নিজ আত্মাকে পরিশুদ্ধ  করেছে এবং সেই ব্যর্থ হয়েছে যে নিজ আত্মাকে কলূষিত করেছে। "(৯১:৭-১০) 

"হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তাহলে তিনি তোমাদেরকে ন্যায়-অন্যায় পার্থক্যকারীর শক্তি দিবেন, তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ অতিশয় অনুগ্রহশীল।" (৮:২৯) 

"আর যে বিষয় তোমার কোন জ্ঞান নাই তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তকরণ- এদের প্রতিটির ব্যাপারে সে জিজ্ঞাসিত হবে।" (১৭:৩৬) 

"নিশ্চয় আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম বিচরণশীল জীব হচ্ছে বধির, বোবা, যারা তাদের বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগায় না।" (৮:২২) 

"নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকাজ করেছে তারাই সৃষ্টির সেরা।" (৯৮:৭) 

"আর অবশ্যই আমি সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য বহু জিন ও মানুষকে। তাদের হৃদয় আছে কিন্তু তা দিয়ে উপলব্ধি করে না, তাদের চোখ আছে কিন্তু তা দিয়ে দেখে না, তাদের কান আছে কিন্তু তা দিয়ে শোনে না, বরং তারা জন্তু-জানোয়ারের মত, বরং তার চেয়েও পথভ্রষ্ট, তারাই হল উদাসীন।" (৭:১৭৯) 

"অতঃপর কত জনপদ আমি ধ্বংস করেছি যেগুলির বাসিন্দারা ছিল যালিম, তাই এইসব জনপদ তাদের ঘরের ছাদসহ ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয়েছিল, কত কূপ পরিত্যক্ত হয়েছে এবং কত সুদৃঢ় প্রাসাদ ধ্বংস হয়েছে। তারা কি যমীনে ভ্রমণ করেনি? তাহলে তারা জ্ঞান বুদ্ধি বিবেক সম্পন্ন হৃদয় ও শ্রুতিশক্তি সম্পন্ন কর্ণের অধিকারী হতে পারত। প্রকৃতপক্ষে চোখ অন্ধ নয়, বরং বুকের ভিতর যে হৃদয় আছে তাই অন্ধ।" (২২:৪৫,৪৬) 

"আর আমি অবশ্যই তাদেরকে যাতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, তোমাদেরকে তাতে প্রতিষ্ঠিত করিনি। আর আমি তাদেরকে কান, চোখ ও হৃদয় দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা যখন আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত, তখন তাদের কান, তাদের চোখ ও তাদের হৃদয়সমূহ তাদের কোন উপকারে আসেনি। আর তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত তা-ই তাদেরকে পরিবেষ্টন করল।" (৪৬:২৬) 

"আর যদি তোমার রব ইচ্ছা করতেন, তাহলে বিশ্বের সকল লোকই বিশ্বাস করত, তাহলে তুমি কি বিশ্বাসী হওয়ার জন্য মানুষের উপর জবরদস্তি করবে? অথচ আল্লাহর অনুগ্রহ ছাড়া কারো বিশ্বাস স্থাপন করার সাধ্য নেই, আর যারা তাদের বিবেক বুদ্ধি খাটায় না, আল্লাহ তাদের উপর অপবিত্রতা চাপিয়ে দেন।" (১০:৯৯,১০০) 

"আর যারা বিশ্বাস করে না, আল্লাহ তাদের উপর অপবিত্রতা চাপিয়ে দেন।" (৬:১২৫) 

"আর তারা যদি তোমাকে মিথ্যাবাদী বলে, তবে তুমি বল,‘আমার কাজের জন্য আমি দায়ী, আর তোমাদের কাজের জন্য তোমরা দায়ী, আমি যা করি তার দায়-দায়িত্ব থেকে তোমরা মুক্ত, আর তোমরা যা কর তার দায়-দায়িত্ব থেকে আমি মুক্ত। আর তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে, যারা তোমার প্রতি মনোযোগ দিয়ে শুনে। তবে কি তুমি বধিরকে শোনাবে, যদি না তারা তাদের বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগায় ? আর তাদের মধ্যে কিছু লোক আছে, যারা তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে। তবে কি তুমি অন্ধকে পথ দেখাবে, যদিও তাদের দৃষ্টিশক্তি না থাকে? নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি কোন যুলুম করেন না, পরন্তু মানুষ নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করে থাকে।" (১০:৪১-৪৪) 

"আর যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা অনুসরণ কর, তারা বলে, বরং আমরা অনুসরণ করব আমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে যার উপর পেয়েছি। যদি তাদের পিতৃ-পুরুষরা কিছুই বুঝত না এবং সঠিক পথে চলত না তবুও। আর যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের দৃষ্টান্ত তার মত, যে এমন কিছুর জন্য চিৎকার করছে, হাঁক-ডাক ছাড়া যে কিছু শোনে না। তারা বধির, বোবা, অন্ধ। আর তাই তারা তাদের বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগায় না।" (২:১৭০,১৭১) 

"তুমি কি তাকে দেখনি, যে তার প্রবৃত্তিকে নিজের ইলাহরূপে গ্রহণ করেছে? তবুও কি তুমি তার যিম্মাদার হবে? তুমি কি মনে কর যে, তাদের অধিকাংশ লোক বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগাায়? তারা কেবল পশুদের মতো, বরং তারা আরো অধিক পথভ্রষ্ট।" (২৫:৪৩,৪৪) 

"রোষে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে, যখনই তাতে কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তাদেরকে রক্ষীরা জিজ্ঞেস করবে, তোমাদের কাছে কি কোন সতর্ককারী আসেনি? তারা বলবে, হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদের কাছে সতর্ককারী এসেছিল, তখন আমরা মিথ্যারোপ করেছিলাম এবং বলেছিলাম, আল্লাহ কিছুই অবতীর্ণ করেননি, তোমরা তো মহাবিভ্রান্তিতে রয়েছ। আর তারা বলবে, যদি আমরা শুনতাম অথবা বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসী হতাম না। অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। সুতরাং ধ্বংস জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের জন্য!" (৬৭:৮-১১)


৩১  নং ম্যাসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ প্রতেক নারী ও পুরুষকে অবশ্যই পর্দা করতে হবে।

আল্লাহ তায়ালা এ বিষয়ে বলেন,

২৪. সুরা আন-নূর আয়াত-২৬ 

দুশ্চরিত্রা নারীরা দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা নারীদের জন্য। আর সচ্চরিত্রা নারীরা সচ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষরা সচ্চরিত্রা নারীদের জন্য; লোকেরা যা বলে, তারা তা থেকে মুক্ত। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিয্ক। আল-বায়ান

 ২৪. সুরা আন-নূর আয়াত নং-২৭

হে মুমিনগণ, তোমরা নিজদের গৃহ ছাড়া অন্য কারও গৃহে প্রবেশ করো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। আল-বায়ান

২৪. আন-নূর আয়াত নং-২৮

অতঃপর যদি তোমরা সেখানে কাউকে না পাও তাহলে তোমাদেরকে অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত তোমরা সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি তোমাদেরকে বলা হয়, ‘ফিরে যাও’ তাহলে ফিরে যাবে। এটাই তোমাদের জন্য অধিক পবিত্র। তোমরা যা কর আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবগত। আল-বায়ান

২৪:২৯ আন-নূর আয়াত নং- ২৯

যে ঘরে কেউ বাস করে না, তাতে তোমাদের কোন ভোগসামগ্রী থাকলে, সেখানে তোমাদের প্রবেশে কোন পাপ হবে না। আর আল্লাহ জানেন যা তোমরা প্রকাশ কর আর যা তোমরা গোপন কর। আল-বায়ান

২৪. ৩০-আন-নূর আয়াত নং-৩০

মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত। আল-বায়ান

২৪. আন-নূর আয়াত নং-৩১

আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। আল-বায়ান

২৪. আন-নূর আয়াত নং-৩২

আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী। আল-বায়ান

২৪. আন-নূর আয়াত নং-৩৩

আর যাদের বিবাহের সামর্থ্য নেই আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে। আর তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীদের মধ্যে যারা মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি করতে চায় তাদের সাথে তোমরা লিখিত চুক্তি কর, যদি তোমরা তাদের মধ্যে কল্যাণ আছে বলে জানতে পার এবং আল্লাহ তোমাদেরকে যে সম্পদ দিয়েছেন তা থেকে তোমরা তাদেরকে দাও। তোমাদের দাসীরা সতীত্ব রক্ষা করতে চাইলে তোমরা দুনিয়ার জীবনের সম্পদের কামনায় তাদেরকে ব্যভিচারে বাধ্য করো না। আর যারা তাদেরকে বাধ্য করবে, নিশ্চয় তাদেরকে বাধ্য করার পর আল্লাহ তাদের প্রতি অত্যন্ত ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। আল-বায়ান

২৪.সুরা- আন-নূর ২৪:৫৮

হে মুমিনগণ, তোমাদের ডানহাত যার মালিক হয়েছে এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি তারা যেন অবশ্যই তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে। ফজরের সালাতের পূর্বে, দুপুরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখ, এবং ‘ইশার সালাতের পর; এই তিনটি তোমাদের [গোপনীয়তার] সময়। এই তিন সময়ের পর তোমাদের এবং তাদের কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অন্যের কাছে যাতায়াত করতেই হয়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের উদ্দেশ্যে তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। আল-বায়ান

২৪. আন-নূর আয়াত নং-৬০

আর বৃদ্ধা নারীরা, যারা বিয়ের প্রত্যাশা করে না, তাদের জন্য কোন দোষ নেই, যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাদের কিছু পোশাক খুলে রাখে এবং এ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী। আল-বায়ান

৩৩ সুরা আল- আহযাব আয়াত নং-৩২

হে নবী-পত্নিগণ, তোমরা অন্য কোন নারীর মত নও। যদি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে (পরপুরুষের সাথে) কোমল কণ্ঠে কথা বলো না, তাহলে যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে সে প্রলুব্ধ হয়। আর তোমরা ন্যায়সঙ্গত কথা বলবে। আল-বায়ান

৩৩. আল-আহযাব আয়অত-৩৩ 

আর তোমরা নিজ গৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাক-জাহেলী যুগের মত সৌন্দর্য প্রদর্শন করো না। আর তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর। হে নবী পরিবার, আল্লাহ তো কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতাকে দূরীভূত করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে। আল-বায়ান

৩৩. আল-আহযাব আয়অত-৩৫ 

নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষ ও নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী, বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী, সিয়ামপালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন। আল-বায়ান

৩৩ঃ সুরা আল-আহযাব -৫৩ 

হে মুমিনগণ, তোমরা নবীর ঘরসমূহে প্রবেশ করো না; অবশ্য যদি তোমাদেরকে খাবারের অনুমতি দেয়া হয় তাহলে (প্রবেশ কর) খাবারের প্রস্ত্ততির জন্য অপেক্ষা না করে। আর যখন তোমাদেরকে ডাকা হবে তখন তোমরা প্রবেশ কর এবং খাবার শেষ হলে চলে যাও আর কথাবার্তায় লিপ্ত হয়ো না; কারণ তা নবীকে কষ্ট দেয়, সে তোমাদের বিষয়ে সঙ্কোচ বোধ করে; কিন্তু আল্লাহ সত্য প্রকাশে সঙ্কোচ বোধ করেন না। আর যখন নবীপত্নীদের কাছে তোমরা কোন সামগ্রী চাইবে তখন পর্দার আড়াল থেকে চাইবে; এটি তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্র। আর আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তার (মৃত্যুর) পর তার স্ত্রীদেরকে বিয়ে করা কখনো তোমাদের জন্য সঙ্গত নয়। নিশ্চয় এটি আল্লাহর কাছে গুরুতর পাপ। আল-বায়ান

33. সুরা-আল-আহযাব আয়াত নং-৫৯

হে নবী, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বল, ‘তারা যেন তাদের জিলবাবে*র কিছু অংশ নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়, তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে তাদেরকে কষ্ট দেয়া হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আল-বায়ান

৩১/1 নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আমাদেরকে ন্যায়সঙ্গতভাবে  ন্যায় বিচারে, ন্যায় সাক্ষাদানে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে এবং কারো প্রতি জুলুম বা অবিচার করা যাবে না!!

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা ন্যায়ের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহর জন্য সাক্ষীরূপে। যদিও তা তোমাদের নিজদের কিংবা পিতা-মাতার অথবা নিকট আত্মীয়দের বিরুদ্ধে হয়। যদি সে বিত্তশালী হয় কিংবা দরিদ্র, তবে আল্লাহ উভয়ের ঘনিষ্ঠতর। সুতরাং ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে তোমরা প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে- পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা এড়িয়ে যাও তবে আল্লাহ তোমরা যা কর সে বিষয়ে সম্যক অবগত। হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষাদানে তোমরা অবিচল থাকবে,কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদেরকে যেন কখনও সুবিচার না করাতে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার কর, এটা আত্মসংযমের নিকটতর এবং আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর, আল্লাহ  তার খবর রাখেন।  হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদেরসাথে থাক।   (৪২:১৫) (৫৭:২৫) (৫:৪২) (১৬:৯০) (৭:২৯) (৪:৫৮) (৪:১৩৫) (৫:৮) (৭০:৩২,৩৩) (৬:১৫২) (৫:৪৮,৪৯) (৪:১০৫) (৫:৪৪,৪৫,৪৭) (৪:৬৪) (৯:১১৯) (২:৪৪) (৬১:২,৩) (৩৮:২২-২৬)

৩১/2 নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ ওজনে কম,মালে ভেজাল দেওয়া ও প্রতারণা করা যাবে না ।

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

হে বিশ্বাসীগণ,তোমরা ন্যায় সঙ্গতভাবে ওজন প্রতিষ্ঠা কর এবং ওজনে কম দিয়ো না। ধ্বংস তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়, যারা লোকের নিকট হতে মেপে নেওয়ার সময় পূর্ণ মাত্রায় গ্রহণ করে। এবং যখন তাদের জন্য মেপে অথবা ওজন করে দেয়,তখন কম দেয়। তারা কি চিন্তা করে না যে, তাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে। (৫৫:৭-৯) (৮৩:১-৪) (১৭:৩৫) (৬:১৫২) (২৬:১৮১-১৮৪) (১১:৮৪,৮৫) (৭:৮৫)

৩২  নং ম্যাসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল কোরান বিস্তা‌রিত ব‌্যাক্ষা সহ না‌যিল কৃত।

এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

২৭:৭৫ আর আসমান ও যমীনে এমন কোন গোপন বিষয় নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ নেই।


২:৭৯ সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব লিখে। তারপর বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, যাতে তা তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা লিখেছে তার পরিণামে তাদের জন্য ধ্বংস, আর তারা যা উপার্জন করেছে তার কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস।

২:৭৮ আর তাদের মধ্যে আছে নিরক্ষর, তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া কিতাবের কোন জ্ঞান রাখে না এবং তারা শুধুই ধারণা করে থাকে।

১৮:৫৪ আর আমি এই কুরআনে মানুষের জন্য সকল প্রকার উপমা বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। আর মানুষ সবচেয়ে বেশি তর্ককারী।

১২:১০৩ আর তুমি আকাঙ্খা করলেও অধিকাংশ মানুষ মুমিন হবার নয়।

১৪:১ আলিফ-লাম-রা; এই কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে তুমি মানুষকে তাদের রবের অনুমতিক্রমে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আন, পরাক্রমশালী সর্বপ্রশংসিতের পথের দিকে।

১৪:৫২ এটা মানুষের জন্য পয়গাম। আর যা দ্বারা তাদেরকে সতর্ক করা হয় এবং তারা জানতে পারে যে, তিনি কেবল এক ইলাহ, আর যাতে বুদ্ধিমানরা উপদেশ গ্রহণ করে।

১৭:৯ নিশ্চয় এ কুরআন এমন একটি পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল এবং যে মুমিনগণ নেক আমল করে তাদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।

৩৯:৪১ নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি যথাযথভাবে কিতাব নাযিল করেছি মানুষের জন্য; তাই যে সৎপথ অবলম্বন করে, সে তা নিজের জন্যই করে এবং যে পথভ্রষ্ট হয় সে নিজের ক্ষতির জন্যই পথভ্রষ্ট হয়। আর তুমি তাদের তত্ত্বাবধায়ক নও।

৬৮:৫২ আর এ কুরআন তো সৃষ্টিকুলের জন্য শুধুই উপদেশবাণী।

৩:১০১ আর কিভাবে তোমরা কুফরী কর, অথচ তোমাদের কাছে আল্লাহর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হচ্ছে এবং তোমাদের মধ্যে রয়েছে তাঁর রাসূল। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করবে তাকে অবশ্যই সরল পথের দিশা দেয়া হবে।

৩:১০২ হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যথাযথ ভয়। আর তোমরা মুসলমান হওয়া ছাড়া মারা যেও না।

৩:১০৩ আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিভক্ত হয়ো না। আর তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর, যখন তোমরা পরস্পরে শত্রু ছিলে। তারপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ভালবাসার সঞ্চার করেছেন। অতঃপর তাঁর অনুগ্রহে তোমরা ভাই-ভাই হয়ে গেল। আর তোমরা ছিলে আগুনের গর্তের কিনারায়, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বয়ান করেন, যাতে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হও।

৩:১০৪ আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।

৩:১০৫ আর তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা বিভক্ত হয়েছে এবং মতবিরোধ করেছে তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ আসার পর। আর তাদের জন্যই রয়েছে কঠোর আযাব।

৩:১০৬ সেদিন কতক চেহারা সাদা হবে এবং কতক চেহারা হবে কালো। আর যাদের চেহারা কালো হবে (তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা কি ঈমান আনার পর কুফরী করেছিলে? সুতরাং তোমরা আযাব আস্বাদন কর। কারণ তোমরা কুফরী করতে’।

৩:১০৭ আর যাদের চেহারা সাদা হবে, তারা তো আল্লাহর রহমতে থাকবে। তারা সেখানে স্থায়ী হবে।

৩:১০৮ এগুলো আল্লাহর নির্দশন, যা আমি তোমার উপর যথাযথভাবে তিলাওয়াত করছি। আর আল্লাহ সৃষ্টিকুলের প্রতি যুলম করতে চান না।

৩:১০৯ আর আসমানসমূহ ও যমীনে যা রয়েছে, তা আল্লাহর জন্যই এবং আল্লাহর দিকেই যাবতীয় কর্মকান্ড প্রত্যাবর্তিত হবে।  

৩৩  নং ম্যাসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ-  সত্যের সাথে মিথ্যা মিশ্রিত করা যা‌বেনা বা করা নিষেধ।

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

(১০:১৭) অতঃপর তার চেয়ে বড় জালেম, আর কে যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে কিংবা তাঁর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে অভিহিত করছে? কস্মিনকালেও পাপীদের কোন কল্যাণ হয় না।

(২: ৪২) ‘তুমি বলো: সত্য এসেছে, মিথ্যা অপসৃত হয়েছে; নিশ্চয় মিথ্যা দূরীভূত হবেই’ 

(১৭: ৮১)। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরও বলেন, ‘তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে সংমিশ্রণ করো না এবং জেনেশুনে সত্য গোপন করো না’ ।

(২১:১৮) বরং আমি সত্যকে মিথ্যার উপর নিক্ষেপ করি, অতঃপর সত্য মিথ্যার মস্তক চুর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়, অতঃপর মিথ্যা তৎক্ষণাৎ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। তোমরা যা বলছ, তার জন্যে তোমাদের দুর্ভোগ।

(সুরা : হুদ, আয়াত : ১৮)

তাদের চেয়ে বড় জালিম কে হতে পারে, যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে? এসব লোককে তাদের পালনকর্তার সামনে উপস্থিত করা হবে আর সাক্ষীরা বলবে, ‘এরাই এদের প্রতিপালকের বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করেছিল।’ জেনে রেখো, জালিমদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ। 

৩৩ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছে অনৈতিক ভাবে অপরের হক মারার জন্য ঘুষ নেওয়া ও দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে!

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা অন্যের অর্থ সম্পদ অন্যায়ভাবে  খেয়ো না, এবং মানুষের ধন-সম্পত্তির কিছু অংশ জেনে বুঝে অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে বিচারকগণকে ঘুষ দিও না। (২:১৮৮) (৪:২৯) (৩:১৬১) (৪:১৬১) (২৭:৩৫,৩৬)

দুর্নীতি সমাজকে ধ্বংস করে ! দুর্নীতি একটি সামাজিক ব্যাধি। এটি সমাজকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয়। ইসলামের দৃষ্টিতে দুর্নীতি করে মানুষের সম্পদ লুণ্ঠন করা জঘন্যতম অপরাধ। পবিত্র কোরআনে এ ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে।

ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না, এবং মানুষের ধন-সম্পত্তির কিছু অংশ জেনেবুঝে অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে বিচারকদের কাছে পেশ কোরো না।’ 

(সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৮)

এই আয়াতের দুটি অংশে দুই ধরনের দুর্নীতির ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। প্রথমাংশে চতুরতার আশ্রয় নিয়ে অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ গ্রাস করার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় অংশটির এক অর্থ হচ্ছে, শাসকদের ঘুষ দিয়ে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা কোরো না। 

দুর্নীতির মূল কারণ লোভ-লালসা। মানুষ লোভ-লালসা থেকে দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়, যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এছাড়াও সৎকাজে সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতা করাও আমাদের দায়িত্ব!  

 এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা সৎকাজ ও আত্মসংযমে পরস্পর সহযোগিতা কর এবং পাপ, অসৎকাজ ও সীমালংঘনের কাজে একে অন্যের সাহায্য করো না। অতএব তোমরা সৎকাজে  প্রতিযোগিতা কর। নিশ্চয়ই সৎকাজ মন্দকাজকে মিটিয়ে দেয়। এটি উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য উপদেশ। নিশ্চয়ই আল্লাহহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন। (৫:২) (২:১৪৮) (৫:৪৮) (১৮:৪৬) (১৯:৭৬) (২:১৯৫) (৩:১১৪) (৭:৩৩ (১৬:৯০) (৪১:৪৬) (২৭:৮৯,৯০) (২৮:৮৪) (৯:১১৯) (২:৪৪) (৬১:২,৩) (১১:১১৪) (২৫:৭০) 

তাই নিজের দ্বীন-ধর্ম বাঁচাতে হলে অবশ্যই লোভ-লালসা ত্যাগ করতে হবে। আর লোভ-লালসা ত্যাগ করা গেলে দুর্নীতিও কমে যাবে, ইনশাআল্লাহ। অর্থাৎ ইসলামের দৃষ্টিতে ঘুষ দাতা ও গ্রহীতা উভয়ই সমান অপরাধী। উভয়ই দুর্নীতিবাজ। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিদায়াত দান করুন।


৩৪ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ  রিবা বা সুদের কারবার থেকে বিরত থাকতে হবে!!! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

,হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধিহারে  রিবা বা সুদ  খেয়ো না এবং আল্লাহর ভয় কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার এবং রিবার যা বকেয়া আছে তা বর্জন কর, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।  (২:২৭৮)(৩:১৩০) (২:২৭৫,২৭৬,২৭৮,২৭৯) (৩০:৩৯) (৪:১৬১)

৩৫ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ অনৈতিক ভাবে ধনসম্পদ উপার্জন করার জন্য ফাসাদ,অশান্তি, নৈরাজ্য, ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হওয়া যাবে না!!

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা পৃথিবীতে ফাসাদ ,অশান্তি, নৈরাজ্য, ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হয়ো না । 

আল্লাহ আরও বলেন,

তোমরা  দুষ্কৃতকারীরূপে পৃথিবীতে অশান্তি  সৃষ্টি করো না। (২:১১,২৭,৩০,৬০,২০৫) (৭:৫৬,৮৫) (১৮:৯৪) (৪৭:২২)

৩৬ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ অনৈতিক ভাবে ধনসম্পদ উপার্জন করার জন্য সীমালংঘন করা যাবে না! 

এই সম্পর্কে আল্লাহ বলেন

হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা পৃথিবীতে ‘সীমা লঙ্ঘন কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের ভালোবাসেন না।  (২:৬১, ৬৫, ৮৫, ১৯০, ২২৯, ২৩১) (৩:১১২) (৫:২,৭৮,৮৭,৯৪)


৩৭ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ কোন অনৈতিক কাজে ও পাপাপচারে গোপন পরামর্শ করা যাবেনা ! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যখন গোপন পরামর্শ কর, সে পরামর্শ যেন পাপাচরণ, সীমালংঘন ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ সম্পর্কে না হয়। তোমরা কল্যাণমূলক কাজ ও আল্লাহভীরুতা অবলম্বনের পরামর্শ কর। আর সেই আল্লাহকে ভয় কর, যার নিকট তোমরা সমবেত হবে। (৫৮:৯) (৪:১১৪ ) (৪২:৩৮) (৩:১৫৯) (২:২৩৩) (৪:৮১)

৩৮ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ সকল প্রকার অন্যায়,অনৈতিক কাজ ও শ্লীলতা থেকে বিরত থাকতে হবে !

 আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা প্রকাশ্য এবং গোপন পাপ বর্জন কর। যারা পাপ করে, তাদের পাপের সমুচিত শাস্তি  তাদেরকে দেওয়া হবে। আর অশ্লীলতা  ও ব্যভিচারের ধারে কাছেও যাবে না, নিশ্চয় তা অনৈতিক বা অশ্লীলও নিকৃষ্ট আচরণ। (৬:১২০) (৭:৩৩) (১৬:৯০) (৬:১৫১) (১৭:৩২) (২৫:৬৮) (২৪:২১) (২:২৬৮)

৩৯ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ সকল প্রকার নেশাজাত দ্রব্য যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর তা থেকে বিরত থাকতে হবে ! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

আর তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, এ দু’টোয় রয়েছে বড় পাপ ও মানুষের জন্য উপকার। আর তার পাপ তার উপকারিতার চেয়ে অধিক বড়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা কর। হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্যনির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (৫:৯০,৯১) (২:২১৯) (৪:৪৩) (২২:২৩)

৪০ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ  গীবত বা চোগলখোরি হতে বিরত থাকতে হবে !

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

দুর্ভোগ প্রত্যেকের, যে পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের গীবত করে। হে বিশ্বাসীগণ! একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশ্ত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। (১০৪:১) (৪৯:১২) (৬৮:১০,১১)

৪১ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ কন্যা সন্তানদেরকে হত্যা করা যাবেনা!

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা  অভাব-অনটনের ভয়ে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। তাদেরকেও আমিই রিযক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ। (২:২৬৮) (৬:১৫১) (১৭:৩১) (৬:১৪০) (৮১:৮,৯) (৪২:৪৯,৫০) (১৬:৫৮,৫৯)  (৫২:৩৯) (৪৩:১৭) (৫৩:২১)

৪২ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ সব সময় খারাপ বা মন্দকে প্রতিহত করতে হবে ভালো দ্বারা ! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

আর ভাল ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দকে প্রতিহত কর তা দ্বারা যা উৎকৃষ্টতর, ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত। তাদেরকে সদুপদেশ দান কর, আর তাদেরকে এমন কথা বল যা তাদের অন্তর স্পর্শ করে। লোকে যা বলে,তাতে তুমি ধৈর্যধারণ  কর এবং সৌজন্য সহকারে তাদেরকে পরিহার করে চল। আর তাদেরকে কিছুকাল অবকাশ দাও। সুতরাং তুমি সুন্দরভাবে তাদেরকে এড়িয়ে যাও। তাদেরকে দু’বার প্রতিদান দেয়া হবে। এ কারণে যে, তারা ধৈর্যধারণ করে এবং ভাল দ্বারা মন্দকে প্রতিহত করে। আর আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। (৪১:৩৪) (২৮:৫৪) (২৩:৯৬) (১৩:২২) (১৭:২৮) (২০:৪৩,৪৪) (৭:১৯৯) (২৫:৬৩) (৫:১০০) (৪:৬৩) (২৪:২২) (৭৩:১০,১১) (১৫:৫৮)

৪৩ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ রাগ নয় ক্ষমায়  হচ্ছে মহান সফলতা!

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

দুনিয়াতে বহু অনিষ্টের কারণ হলো রাগ বা ক্রোধ। মানুষ এ রাগের বশবতী হয়ে অনেক নির্দয় ও অত্যাচারমূলক কাজ করে ফেলে। এ রাগের ফলে মানুষ সম্মানিত হওয়ার পরিবর্তে লজ্জা ও অবজ্ঞার শিকার হয়। তাই কারো দ্বারা কোনো ক্ষতি বা অন্যায়মূলক কাজ হয়ে গেলেও রাগ না করে ক্ষমা করা বা ধৈর্য ধারণ করার চেষ্টা করা উচিত। কারণ রাগ নয় ক্ষমায় রয়েছে বিশ্বাসীদের জন্য মহান সাফল্য। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, যখন তারা রাগান্বিত হয়, তখন তারা ক্ষমা করে দেয়। যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল উভয় অবস্থায় ব্যয় করে এবং যারা রাগ সংবরণকারী আর মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল। আল্লাহ নেককারদেরকে ভালবাসেন। আর মাফ করে দেয়াই তাকওয়ার অধিক নিকটবর্তী। তুমি ক্ষমাশীলতার নীতি অবলম্বন কর,সৎকাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খদেরকে এড়িয়ে চল। যদি তোমরা  প্রতিশোধ গ্রহণ করতে চাও তবে ততটুকু প্রতিশোধ গ্রহণ কর যতটুকু অন্যায় তোমাদের উপর করা হয়েছে। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, তবে ধৈর্যধারণকারীদের জন্য অবশ্যই তা উত্তম। তুমি ধৈর্য ধারণ কর, তোমার ধৈর্য হবে আল্লাহরই সাহায্যে, তাদের জন্য দুঃখ করনা এবং তাদের ষড়যন্ত্রে তুমি মনঃক্ষুন্ন হয়োনা। নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরই সঙ্গে থাকেন, যারা সংযম অবলম্বন করে এবং যারা সৎকর্মপরায়ণ। তারা যেন তাদের দোষ-ক্রটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাওনা যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করেন? এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। তাদেরকে দু’বার প্রতিদান দেয়া হবে। এ কারণে যে, তারা ধৈর্যধারণ করে এবং ভাল দ্বারা মন্দকে প্রতিহত করে। যে দানের পর কষ্ট দেয়া হয় তার চেয়ে ভাল কথা বলা ও ক্ষমা করা উত্তম। (৪২:৩৭) (৩:১৩৪) (৭:১৯৯) (২৪:২২) (৩:১৫৯) (৬৪:১৪) (২:২৩৭) (১৬:১২৬-১২৮) (৪:১৪৯) (২৮:৫৪) (২:২৬৩)

৪৪ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ রহমানের বান্দার বৈশিষ্ট্য! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

আর রহমানের বান্দা তারাই যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং অজ্ঞ লোকেরা যখন তাদেরকে সম্বোধন করে তখন তারা বলে ‘সালাম’। লোকে যা বলে,তাতে তুমি ধৈর্যধারণ  কর এবং সৌজন্য সহকারে তাদেরকে পরিহার করে চল। আরতাদেরকে কিছুকাল অবকাশ দাও। তুমি ক্ষমাশীলতার নীতি অবলম্বন কর,সৎকাজের নির্দেশ দাও এবং অজ্ঞদেরকে,অংশীবাদীদেরকে এড়িয়ে চল। সুতরাং তুমি সুন্দরভাবে তাদেরকে এড়িয়ে যাও। তাদেরকে দু’বার প্রতিদান দেয়া হবে। এ কারণে যে, তারা ধৈর্যধারণ করে এবং ভাল দ্বারা মন্দকে প্রতিহত করে। (২৫:৬৩-৭৪) (২৮:৫৪) (৭৩:১০,১১) (৭:১৯৯) (২৪:২২) (৫৩:২৯) (১৫:৯৪) (৬:১০৬) (৫:৪২) (৪:৮১) (৪:৬৩) (১৫:৫৮)

৪৫ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল্লাহর কিতাব অনুসারে কথা বলার নিয়মাবলী ! 

কারো সাথে কথা বলতে গেলে আমাদেরকে অতি সতর্কতার সাথে বিনয়ীভাবে, ভদ্রতার সাথে,উত্তমভাবে এবং নমনীয় ভাষায় কথা বলতে হবে। কেননা আমাদের প্রতিটি কথা রেকর্ড করে রাখা হচ্ছে। আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

”আমিই মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার প্রকৃতি তাকে যে কুমন্ত্রনা দেয় তা আমি জানি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমণী অপেক্ষাও নিকটতর। যখন ডানে ও বামে বসা দু’জন লিপিবদ্ধকারী পরস্পর গ্রহণ করবে। সে যে কথাই উচ্চারণ করে তার কাছে সদা উপস্থিত সংরক্ষণকারী রয়েছে।” (৫০:১৬-১৮) কথা বলার পূর্বে সালাম দেওয়া। তবে যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদন স্বরূপ, যা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র। (২৪:৬১) (৪:৮৬) (৬:৫৪) হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা তা কেন বল, যা তোমরা কর না? তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর নিকট বড়ই ক্রোধের বিষয়। (৬১:২,৩) আর তোমার চলার ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং কণ্ঠস্বর নীচু কর। স্বরের মধ্যে নিশ্চয়ই গাধার স্বর সর্বাপেক্ষা শ্রুতিকটু। (৩১:১৯) হে বিশ্বাসীগণ ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল। (৩৩:৭০) আর আমার বান্দাদেরকে বল,তারা যেন এমন কথা বলে যা উত্তম। (১৭:৫৩) আর যখন তোমরা কথা বলবে, তখন ইনসাফপূর্ণ কথা বলবে,নিকটাত্মীয়দের সম্পর্কে হলেও । (৬:১৫২) তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত করবে না এবং সদাচারণ করবে পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম ও মিসকীনদের সাথে। আর মানুষকে উত্তম কথা বল। (২:৮৩) আর যদি তুমি তাদের থেকে বিমুখ থাকতেই চাও তোমার রবের পক্ষ থেকে রহমতের প্রত্যাশায় যা তুমি চাচ্ছ, তাহলে তাদের সাথে নম্রভাবে কথা বল। (১৭:২৮) তোমরা দু’জন ফিরাউনের নিকট যাও, সে তো সীমালংঘন করেছে। তোমরা তার সাথে নম্রভাবে কথা বলবে। হয়তো বা সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা ভয় করবে। (২০:৪৩,৪৪) আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। (১৭:২৩) মেয়েরা পর পুরুষের সাথে কখনও আকর্ষণীয় ও কোমল ভাষায় কথা বলবে না । এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তাহলে পর পুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় কন্ঠে এমনভাবে কথা বলনা যাতে অন্তরে যার ব্যাধি রয়েছে সে প্রলুব্ধ হয় এবং তোমরা ন্যায় সঙ্গত কথা বলবে। (৩৩:৩২) হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোন কোন অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। (৪৯:১২) (১০৪:১) (৬৮:১১) আর  অনর্থক কথাকর্ম থেকে বিরত থাকতে হবে। (২৩:৩) (৫২:১২) (৭৪:৪৫) সুতরাং মূর্তিপূজার অপবিত্রতা থেকে এবং মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে । (২২:২৩) প্রমাণবিহীন কোন কথা বলা যাবে না। (২:১১১) তুমি বিনয়ী ও ক্ষমাশীলতার নীতি অবলম্বন কর, সত্য-সঠিক কাজের আদেশ দাও আর জাহেলদেরকে এড়িয়ে চল। (৭:১৯৯) (২৫:৬৩) মিথ্যা কথন থেকে দূরে সরে থাক। (২২:৩০) যদি এমন হতো,আল্লাহভীরুরা মিথ্যা বলা ভুলে যেত এবং সদা সর্বদা সত্য কথা বলত। তাহলে পৃথিবীটা কেমন হতো ? যদি আমাদের এমন একটি পৃথিবী থাকত যেখানে কেউ মিথ্যা বলে না, তাহলে সমাজটাই পাল্টে যেত।  শুধু জানো যে কেউ আপনাকে যা বলে তা সত্য, আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন কারণ আপনি পুরোপুরি নিশ্চিত যে তারা মিথ্যা বলছে না। আমরা একে অপরের সাথে  যেভাবে যোগাযোগ করি তার পরিবর্তন হবে। কারণ কখনও কখনও সত্য শুনতে কষ্ট হয় এবং আপনার সৎ মতামত দেওয়ার কারণে কিছু লোকের অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে। এই মুহুর্তে, আপনি যদি মনে করেন যে সত্য কারো অনুভূতিতে আঘাত করবে, তাহলে কিছু না বলাই ভালো। ভাবুন -সত্য ব্যবসার জগতে এবং রাজনীতিতে কীভাবে কাজ করবে?  কারণ সত্য বললে তারা তাদের ক্রেতাদের ও ভোটারদের খুশি করার জন্য এত মিথ্যা বলতে পারবে না। বিচার বিভাগের কাজ সহ্জ হয়ে যাবে। মিথ্যা সাক্ষী না দিলে ও অপরাধের ব্যাপারে কেউ সত্য বললে সব অপরাধের সমাধান হয়ে যাবে। কোম্পানি তাদের পণ্য সম্পর্কে আর মিথ্যা বলতে পারবে না। আমরা সত্যিই জানতে পারব একজন ব্যক্তির আসল পরিচয়। এটি প্যান্ডোরার বাক্স খোলার মতো হবে,সত্য আপনাকে মুক্ত করবে।

৪৬ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আমাদের সকল কৃতকর্ম সর্বদা লিপিবদ্ধ রাখা হচ্ছে ও ভিডিও করে রাখা হচ্ছে  ! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

আমিই মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার প্রকৃতি তাকে যে কুমন্ত্রনা দেয় তা আমি জানি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমণী অপেক্ষাও নিকটতর। যখন ডানে ও বামে বসা দু’জন লিপিবদ্ধকারী পরস্পর  গ্রহণ করবে। সে যে কথাই উচ্চারণ করে তার কাছে সদা উপস্থিত সংরক্ষণকারী রয়েছে। (৫০:১৬-১৮)  (৮২:১০-১২) (১৯:৭৯,৮০) (৪৩:৮০) (৫০:১৬-১৮)  (১৭:১৩,১৪)(১৭:৭১) (৪৫:২৮,২৯) (৫০:১৯-২৩) (১৮:৪৯) (৮৪:৭-১২)

৪৭ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আমাদের অঙ্গ প্রতঙ্গ সকল কৃতকর্মের স্বাক্ষী দিবে ! 

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, আর যে বিষয় তোমার জানা  নাই তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তকরণ  এদের প্রতিটির ব্যাপারে সে জিজ্ঞাসিত হবে। আজ আমি তাদের মুখে মোহর মেরে দেব এবং তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে ও তাদের পা সে সম্পর্কে সাক্ষ্য দিবে যা তারা অর্জন করত। হাশরে মাঠে হিসাব-নিকাশের  দিনে আমাদের হাত ,পা, জিহ্বা, কান, চোখ, চামড়া  সাক্ষ্য  দিবে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে। (১৭:৩৬) (৩৬:৬৫) (২৪:২৪) (৪১:২০) (৭৬:২) (২৩:৭৮) (৪৬:২৬) (৪০:১৯)

৪৮ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ সালামুন আলা মুহাম্মাদ সহ সকল নবী রাসুলকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন ! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

”অতএব তুমি ধৈর্য  ধারণ কর,নিশ্চয়ই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য, তুমি তোমার ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় তোমার রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।” (৪০:৫৫) লোকে যা বলে,তাতে তুমি ধৈর্যধারণ কর এবং সৌজন্য সহকারে তাদেরকে পরিহার করে চল। আর তাদেরকে কিছুকাল অবকাশ দাও। (৭৩:১০,১১) .অতএব তারা যা বলে তাতে তুমি ধৈর্য  ধারণ কর এবং তোমার রবের প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে। (৫০:৩৯) তোমার নিকট যে ওয়াহী অবতীর্ণ করা হয়েছে তুমি তার অনুসরণ কর আর তুমি ধৈর্য্য  অবলম্বন কর যে পর্যন্ত না আল্লাহ ফায়সালা প্রদান করেন। বস্তুত তিনিই হলেন সর্বোত্তম ফায়সালাকারী। (১০:১০৯)  এ সব হল অদৃশ্যের খবর যা তোমাকে ওয়াহী দ্বারা জানিয়ে দিচ্ছি, যা এর পূর্বে তুমি জানতে না এবং  তোমার জাতির লোকেরা জানত না। কাজেই ধৈর্য  ধর, শুভ পরিণতি মুত্তাকীদের জন্যই নির্দিষ্ট।  (১১:৪৯) (১১:১১৪,১১৫) (১৬:১২৬,১২৭) (১৮:২৮) (৫০:৩৯) (৫২:৪৮,৪৯)  (২০:১৩০)  (২০:১৩১-১৩২) (৭৬:২৪-২৬) (৭০:৫-৭) (১৫:৮৫) (৭৩:১০,১১) (৭৪:৬,৭) (৩০:৬০) (৩৮:১৭) (৬৮:৪৮) (৪০:৭৭) (৪৬:৩৫) (৩:১২০) (৩:১২৫) (৮:৬৬) (৫৪:২৭) (৭:৮৭) (৭:১২৮) (৭:১৩৭) 

এবং স্মরণ করুন ইসমাঈল, ইদরীস ও যুলকিফলকে, তাদের প্রত্যেকেই ছিলেন ধৈর্যশীল। (২১:৮৫) আর কত নবী ছিল, যার সাথে থেকে অনেক আল্লাহওয়ালা লড়াই করেছে। তবে আল্লাহর পথে তাদের উপর যা আপতিত হয়েছে তার জন্য তারা হতোদ্যম হয়নি। আর তারা দুর্বল হয়নি এবং তারা নত হয়নি। আর আল্লাহ ধৈর্যশীলদেরকে ভালবাসেন। (৩:১৪৬) তাই আল্লাহ আপনাকে, আমাকে ও ধৈর্য্যরে পরীক্ষা নিবেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির ক্ষতির মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা তাদের উপর কোন বিপদ এলে বলে, ‘নিশ্চয় আমরা আল্লাহর এবং নিশ্চিতভাবে তারই দিকে ফিরে যাব।এরাই তারা, যাদের প্রতি তাদের রব-এর কাছ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ এবং রহমত বর্ষিত হয়, আর তারাই সৎপথে পরিচালিত। (২:১৫৫-১৫৭) আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যতক্ষণ না আমি প্রকাশ করে দেই তোমাদের মধ্যে কারা সংগ্রামকারী  ও ধৈর্যশীল এবং আমি তোমাদের কথা- কাজ পরীক্ষা করে নেব। (৪৭:৩১) অবশ্যই তোমাদেরকে তোমাদের ধন-সম্পদ ও তোমাদের নিজ জীবন সম্পর্কে পরীক্ষা করা হবে। আর অবশ্যই তোমরা শুনবে তোমাদের পূর্বে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে এবং মুশরিকদের পক্ষ থেকে অনেক কষ্টদায়ক কথা। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর তবে নিশ্চয় তা হবে দৃঢ় সংকল্পের কাজ। (৩:১৮৬) হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ কর। ধৈর্য ধারণে প্রতিযোগিতা কর এবং নিজেদের প্রতিরক্ষাকল্পে পারস্পরিক বন্ধন মজবুত কর, আর আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (২:২০০) আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, তাহলে তাতে তোমাদের মঙ্গল রয়েছে। আল্লাহ মহা ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (৪:২৫) হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা ধৈর্য ও সালাতের(দায়িত্ব কর্তব্য পালনের) মাধ্যমে সাহায্য চাও, নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলগণের সাথে আছেন। (২:১৫৩) আর তোমরা ধৈর্য ও সালাতের(দায়িত্ব কর্তব্য পালনের) মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় তা বিনয়ী ছাড়া অন্যদের উপর কঠিন (২:৪৫) মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয়। আর উপদেশ দেয় পরস্পরকে ধৈর্য ধারণের। (১০৩:২,৩) যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তাহলে ঠিক ততখানি করবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। আর যদি তোমরা ধৈর্যধারণ কর, তাহলে অবশ্যই ধৈর্যশীলদের জন্য সেটাই উত্তম। পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফেরানোতে পুণ্য নেই, কিন্তু পুণ্য আছে দুঃখ-দৈন্য, রোগ-বালা ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য্যধারণ করলে। এরাই তারা, যারা সত্যপরায়ণ এবং ধর্মভীরু। (২:১৭৭) তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, অথচ আল্লাহ তোমাদের মধ্যে কে সংগ্রাম  করেছে আর কে ধৈর্যশীল তা এখনো প্রকাশ করেননি? (৩:১৪২) নিশ্চয় আত্মসর্মপনকারী পুরুষ ও নারী, বিশ্বাসী পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষ ও নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ  ও নারী, বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী, সিয়ামপালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ ক্ষমা ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত করে রেখেছেন। (৩৩:৩৫) (১৬:১২৬) (৯০:১২) (২২:৩৫) (১৯:৬৫) (৭৬:১১,১২) (৩১:১৭) (১৬:১১০)

৪৯ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ সূরা হুজুরাতে বিষয়বস্তু !

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

হে বিশ্বাসীগণ! যদি কোন পাপাচারী তোমাদের নিকট কোন বার্তা আনয়ন করে, তাহলে তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে,যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে আঘাত না কর এবং পরে তোমাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হও। (৪৯:৬) বিশ্বাসীদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে সন্ধি স্থাপন কর। অতঃপর তাদের একদল অপর দলের প্রতি বিদ্রোহাচরণ করলে তোমরা বিদ্রোহী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে,যদি তারা ফিরে আসে, তাহলে তাদের মধ্যে ন্যায়ের সাথে সন্ধি স্থাপন কর এবং সুবিচার কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালবাসেন। নিশ্চয় বিশ্বাসীরা তো পরস্পর ভাই ভাই, সুতরাং তোমরা তোমাদের দুই ভাই-এর মধ্যে সন্ধি স্থাপন কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা করুণাপ্রাপ্ত হও। (৪৯:৯,১০) হে বিশ্বাসীগণ! কোন সম্প্রদায় যেন অপর কোন সম্প্রদায়কে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর কোন নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর তোমরা একে অপরের নিন্দা করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ উপনামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নাম কতইনা নিকৃষ্ট! আর যারা তাওবা করে না, তারাই তো যালিম। (৪৯:১১) হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোন কোন অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশ্ত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তাওবা কবূলকারী, অসীম দয়ালু। (৪৯:১২) আর তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই সর্বাধিক প্রিয়ও যে অধিক তাকওয়া সমন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছুই জানেন ও সবকিছুর খবর রাখেন। (৪৯:১৩)

৫০ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ পোষাক বা পর্দা সম্পর্কে !

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

হে বনী আদম, আমি তো তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকবে এবং যা সৌন্দর্যস্বরূপ। আর তাকওয়ার পোশাক, তা উত্তম। এগুলো আল্লাহর আয়াতসমূহের অন্তর্ভুক্ত। যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। হে বনী আদম, শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে, যেভাবে সে তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত থেকে বের করেছিল। সে তাদের পোশাক টেনে নিচ্ছিল, যাতে সে তাদেরকে তাদের লজ্জাস্থান দেখাতে পারে। নিশ্চয় সে ও তার দলবল তোমাদেরকে দেখে যেখানে তোমরা তাদেরকে দেখ না। নিশ্চয় আমি শয়তানদেরকে তাদের জন্য অভিভাবক বানিয়েছি, যারা ঈমান গ্রহণ করে না। আর যখন তারা কোন অশ্লীল বা অনৈতিক কাজ করে তখন বলে, ‘আমরা এতে আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি এবং আল্লাহ আমাদেরকে এর নির্দেশ দিয়েছেন’। বল, ‘নিশ্চয় আল্লাহ অশ্লীল বা অনৈতিক কাজের নির্দেশ দেন না। তোমরা কি আল্লাহর ব্যাপারে এমন কিছু বলছ,যা তোমরা জান না’? (৭:২৬-২৮) নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায় পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয় স্বজনকে দানের নির্দেশ দেন এবং তিনি নিষেধ করেন অশ্লীলতা বা অনৈতিক কাজ, অসৎ কাজ ও সীমা লংঘন করতে। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর। (১৬:৯০) আর তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল বা অনৈতিক কাজ ও মন্দ পথ। (১৭:৩২) প্রকাশ্যে হোক কিংবা গোপনে হোক, অশ্লীল বা অনৈতিক কাজের ধারে কাছেও যাবে না। (৬:১৫১) তোমরা প্রকাশ্য এবং গোপন পাপ বর্জন কর। যারা পাপ করে, তাদের পাপের সমুচিত শাস্তি তাদেরকে দেওয়া হবে। (৬:১২০) আর রাহমান-এর বান্দা তারাই, যারা ব্যভিচার করে না,যে এগুলো করে, সে শাস্তি ভোগ করবে। (২৫:৬৮) বল, নিশ্চয় আমার রব হারাম করেছেন প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা বা অনৈতিক কাজ । আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালংঘন এবং কোন কিছুকে আল্লাহর শরীক করা-যার কোন সনদ তিনি অবতীর্ণ করেননি। আর আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না। (৭:৩২) হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করলে শয়তান তো অশ্লীলতা বা অনৈতিক ও মন্দ কাজের নির্দেশ দেয়। আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেউই কখনও পবিত্র হতে পারতো না,তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করে থাকেন। আর আল্লাহ সর্বশ্রোত,সর্বজ্ঞ।(২৪:২১) হে মানুষ, যমীনে যা রয়েছে, তা থেকে হালাল পবিত্র বস্তু আহার কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট শত্রু।(২:১৬৮) নিশ্চয় সে তোমাদেরকে আদেশ দেয় মন্দ ও অশ্লীল কাজের এবং আল্লাহর ব্যাপারে এমন কিছু বলতে, যা তোমরা জান না। (২:১৬৯) শয়তান তোমাদেরকে দারিদ্রতার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং অশ্লীল বা অনৈতিক কাজের আদেশ করে। আর আল্লাহ তোমাদেরকে তার পক্ষ থেকে ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (২:২৬৮) নিশ্চয় যারা বিশ্বাসীদের  মধ্যে অশ্লীলতার বা অনৈতিক কাজের  প্রসার কামনা করে, তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ জানেন তোমরা জান না। (২৪:১৯) আর যারা নিজেদের লজ্জাস্থানকে সংযত রাখে। তাদের স্ত্রী অথবা শপথ বা অঙ্গীকারভুক্তদের ক্ষেত্র ব্যতীত,এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। তবে কেউ এ ছাড়া অন্যকে কামনা করলে, তারা হবে সীমালংঘনকারী। (২৩:৫-৭) (৭০:২৯-৩১) হে নবী! বিশ্বাসী নারীরা যখন তোমার নিকট এসে শপথ করে এই মর্মে যে, তারা আল্লাহর সাথে কোন শরীক স্থির করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তান-সন্ততিদের হত্যা করবে না, তারা সজ্ঞানে কোন অপবাদ রচনা করে রটাবে না এবং সৎকার্যে তোমাকে অমান্য করবে না, তখন তাদের শপথ গ্রহণ কর এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু। (৬০:১২)

আর বিশ্বাসী পুরুষদেরকে বল,তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে, এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত। (২৪:৩০) আর বিশ্বাসী নারীদেরকে বল,তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে । আর তারা তাদের সৌন্দর্য  প্রদর্শন না করে তবে যা সাধারণত প্রকাশ হয়ে থাকে। আর তারা তাদের গলা ও বুক যেন মাথার কাপড় দ্বারা ঢেকে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীরা, তাদের মালিকানাধীন কর্মচারীগণ, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদচারণা না করে। হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে ফিরে আস, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (২৪:৩১) হে নবী,তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে বল, যদি তোমরা দুনিয়ার জীবন ও তার চাকচিক্য কামনা কর তবে আস, আমি তোমাদের ভোগ-বিলাসের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় করে দেই। আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল(বার্তাবাহক) ও আখিরাত কামনা কর তাহলে তোমাদের মধ্যে যারা সৎ কর্মশীল আল্লাহ তাদের জন্য মহা প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন। হে নবী-পতœীগণ, তোমাদের মধ্যে যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল বা অনৈতিক কাজ করবে,তার জন্য শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে। আর এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের(বার্তাবাহকের) আনুগত্য করবে এবং নেক আমল করবে আমি তাকে দু’বার তার প্রতিদান দিব এবং আমি তার জন্য প্রস্তুত রেখেছি সম্মানজনক রিযিক। হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও। যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তাহলে পর-পুরুষের সাথে কোমল কন্ঠে এমনভাবে কথা বলনা যাতে অন্তরে যার ব্যাধি রয়েছে সে প্রলুব্ধ হয় এবং তোমরা ন্যায় সঙ্গত কথা বলবে। আর তোমরা নিজ গৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাক-জাহেলী যুগের মত সৌন্দর্য প্রদর্শন করো না। আর তোমরা সালাত (দায়িত্ব কর্তব্য বাস্তবায়ন) কায়েম কর, যাকাত (পরিশুদ্ধতা অর্জন) প্রদান কর এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের(বার্তাবাহকের) আনুগত্য কর। হে নবী পরিবার, আল্লাহ তো কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতাকে দূরীভূত করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে। আর তোমাদের গৃহে আল্লাহর আয়াত ও হিকমাহ( প্রজ্ঞা বা জ্ঞান) থেকে যা পাঠ করা হয় তার চর্চা কর। আল্লাহ অতি সূক্ষণদর্শী, সর্ববিষয়ে খবর রাখেন। (৩৩:২৮-৩৪) হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও বিশ^াসী নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের জিলবাবের কিছু অংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজতর হবে, ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৩৩:৫৯) হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা নিজদের গৃহ ছাড়া অন্য কারও গৃহে প্রবেশ করো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। অতঃপর যদি তোমরা সেখানে কাউকে না পাও তাহলে তোমাদেরকে অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত তোমরা সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি তোমাদেরকে বলা হয়, ‘ফিরে যাও’ তাহলে ফিরে যাবে। এটাই তোমাদের জন্য অধিক পবিত্র। তোমরা যা কর আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবগত। যে ঘরে কেউ বাস করে না, তাতে তোমাদের কোন ভোগসামগ্রী থাকলে, সেখানে তোমাদের প্রবেশে কোন পাপ হবে না। আর আল্লাহ জানেন যা তোমরা প্রকাশ কর আর যা তোমরা গোপন কর। (২৪:২৭,২৮,২৯) হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের ডানহাত যার মালিক হয়েছে এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি তারা যেন অবশ্যই তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে। ফজরের সালাতের পূর্বে, দুপুরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখ এবং ইশার সালাতের পর, এই তিনটি তোমাদের গোপনীয়তার সময়। এই তিন সময়ের পর তোমাদের এবং তাদের কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অন্যের কাছে যাতায়াত করতেই হয়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের উদ্দেশ্যে তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। আর তোমাদের সন্তান-সন্ততি যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়, তখন তারাও যেন অনুমতি চায় যেমনিভাবে তাদের অগ্রজরা অনুমতি চাইত। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। আর বৃদ্ধা নারীরা যারা বিয়ের প্রত্যাশা করে না, তাদের জন্য কোন দোষ নেই, যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাদের কিছু পোশাক খুলে রাখে এবং এ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী। অন্ধের জন্য কোন দোষ নেই, পঙ্গুর জন্য কোন দোষ নেই, রোগাক্রান্তের জন্য কোন দোষ নেই এবং তোমাদের নিজদের জন্যও কোন দোষ নেই যে তোমরা খাবে তোমাদের নিজদের ঘরে, অথবা তোমাদের পিতাদের ঘরে, অথবা তোমাদের মায়েদের ঘরে, অথবা তোমাদের ভাইদের ঘরে, অথবা তোমাদের বোনদের ঘরে, অথবা তোমাদের চাচাদের ঘরে, অথবা তোমাদের ফুফুদের ঘরে, অথবা তোমাদের মামাদের ঘরে, অথবা তোমাদের খালাদের ঘরে, অথবা সেসব ঘরে যার চাবি তোমাদের অধিকারে রয়েছে, অথবা তোমাদের বন্ধুদের ঘরে। তোমরা একত্রে খাও অথবা আলাদা আলাদা খাও তাতে কোনও দোষ নেই। তবে তোমরা যখন কোন ঘরে প্রবেশ করবে তখন তোমরা নিজদের উপর সালাম করবে, আল্লাহর পক্ষ থেকে বরকতপূর্ণ ও পবিত্র অভিবাদনস্বরূপ। এভাবে আল্লাহ তোমাদের উদ্দেশ্যে তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার। (২৪:৫৮-৬১)

অতঃপর সে সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থিত হলেন। তারা বলল,হে মারইয়াম, তুমি একটি অঘটন ঘটিয়ে বসেছ।

হে হারুনের ভাগিনী, তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিলেন না এবং তোমার মাতাও ছিল না ব্যভিচারিনী। অতঃপর তিনি হাতে সন্তানের দিকে ইঙ্গিত করলেন। তারা বলল, যে কোলের শিশু তার সাথে আমরা কেমন করে কথা বলব? সন্তান বলল, আমি তো আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী করেছেন। (১৯:২৭-৩০)

৫১ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ যেভাবে ঋণের লেনদেন করতে হবে!

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

হে বিশ্বাসীগণ যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ঋণের আদান প্রদান করবে তখন তা লিখে রাখবে। আর কোন একজন লেখক যেন ন্যায্যভাবে তোমাদের মধ্যে ঐ আদান প্রদানের বিষয় লিখে দেয়, আর কোন লেখক যেন লিখে দিতে অস্বীকার না করে, আল্লাহ তাকে যেরূপ শিক্ষা দিয়েছেন, তার উচিত তা লিখে দেওয়া এবং ঋণ গ্রহিতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয় এবং তার উচিত স্বীয় রব আল্লাহকে ভয় করা এবং এর মধ্যে কিছুমাত্র ব্যতিক্রম না করা, অতঃপর ঋণ গ্রহীতা যদি নির্বোধ বা লিখিয়ে নিতে অসমর্থ হয় তাহলে তার অভিভাবকরা ন্যায় সঙ্গতভাবে লিখিয়ে নিবে এবং তোমাদের মধ্যে দু’জন পুরুষ সাক্ষীকে সাক্ষী করবে, কিন্তু যদি দু’জন পুরুষ না পাওয়া যায় তাহলে সাক্ষীগণের মধ্যে তোমরা একজন পুরুষ ও দু’জন নারী মনোনীত করবে, যদি নারীদ্বয়ের একজন ভুলে যায় তাহলে একজন অপর জনকে স্মরণ করিয়ে দিবে, এবং যখন আহবান করা হয় তখন সাক্ষীগণের অস্বীকার না করা উচিত, এবং ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ বিষয়ের নির্দিষ্ট সময় লিখে দিতে তোমরা অবহেলা করনা, এটা আল্লাহর নিকট অতি সঙ্গত এবং সাক্ষ্যের জন্য এটাই দৃঢ়তর ও সন্দেহে পতিত না হওয়ার নিকটতর। কিন্তু যদি তোমরা কারবারে পরস্পর হাতে হাতে আদান প্রদান কর তাহলে তা লিপিবদ্ধ না করলে তোমাদের পক্ষে দোষ নেই, কিন্তু বাণিজ্যিক লেনদেনের জন্য সাক্ষী রেখ, যেন লেখক কিংবা সাক্ষী ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যদি এরূপ কর  তাহলে তা তোমাদের পক্ষে পাপের বিষয়। আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহই তোমাদেরকে শিক্ষা প্রদান করেন এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী। (২:২৮২) আর যদি ঋণ গ্রহণকারী  অসচ্ছল হয়, তাহলে সচ্ছলতা আসা পর্যন্ত তাকে অবকাশ দিবে। আর সদাকা করে দেওয়া তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে। (২:২৮০)

৫২ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ যাহারা মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করবে ! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

তোমাদের মধ্যে অবশ্যই এমন একটা দল থাকা উচিত, যারা মানবজাতিকে সর্বদাই কল্যাণের  পথে আহবান করবে, সৎ কাজের  আদেশ দিবে আর অসৎ কাজের নিষেধ করবে। আর তারাই হলো সফলকাম।  (৩:১০৪)   আর সেই  ব্যক্তির  কথা অপেক্ষা অধিক ভাল  কথা আর কার হতে পারে, যে মানষকে আল্লাহর দিকে ডাকে, সৎকর্ম করে এবং বলে,আমি একজন মুসলিম (আত্মসর্মপণকারী) । (৪১:৩৩) এখন তোমরাই পৃথিবীর  সর্বোত্তম দল, তোমাদের কর্মক্ষেত্রে আনা হয়েছে  মানুষের হেদায়েত ও সংস্কারের জন্য। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দিবে এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবে এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনবে”। (৩:১১০)  ডাকো  তোমার রবের  দিকে হিকমত ও উত্তম উপদেশের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর উত্তম  পন্থায়। (১৬:১২৫) নিশ্চই মানুষ ক্ষতির মধ্যে আছে, তবে তারা নয় যারা ঈমান এনেছে, সৎ কাজ করেছে, একে অপরকে সৎ কাজের তাগিদ দিয়েছে এবং একে অপরকে ধৈর্য ধারণ করার উপদেশ দিয়েছে ।  (১০৩:১-৩) যে ব্যক্তি ভাল কাজের জন্য সুপারিশ করবে, তার জন্য তাতে অংশ আছে এবং যে মন্দ কাজের জন্য সুপারিশ করবে, তার জন্য তাতে অংশ আছে, আল্লাহ সকল বিষয়ে খোঁজ রাখেন। (৪:৪৬)  অতএব যদি তুমি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও,এতে তুমি অপরাধী হবেনা। আর তুমি উপদেশ দিতে থাক, কারণ উপদেশ বিশ্বাসীদের উপকারে আসবে। (৫১:৫৪,৫৫) কাজেই তুমি উপদেশ দাও যদি উপদেশ উপকার দেয়। যে ভয় করে সেই উপদেশ গ্রহণ করবে। আর তা উপেক্ষা করবে যে নিতান্ত হতভাগ্য যে ভয়াবহ আগুনে প্রবেশ করবে। (৮৭:৯-১১) আর তাদের কাজের জবাবদিহির দায়িত্ব,যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের নয়। তবে উপদেশ দেওয়া তাদের কর্তব্য, যাতে তারাও তাকওয়া অবলম্বন করে। (৬:৬৯) নিশ্চয় এটা এক উপদেশ, অতএব যে চায় সে তার রবের দিকে পথ অবলম্বন করুক। (৭৩:১৯) আর স্মরণ কর, যখন তাদের একদল,অপর দলকে বলেছিল, আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দিবেন তোমরা তাদেরকে সদুপদেশ দাও কেন? তারা বলেছিল, তোমাদের রবের কাছে দায়িত্ব মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এ জন্য। তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয় তা যখন তারা বিস্মৃত হয় তখন যারা অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি, আর সীমালংঘণকারীদেরকে তাদের অসৎ কর্মের কারণে কঠোর শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করি। (৭:১৬৪,১৬৫) তুমি কেবল তাদেরকে সতর্ক করতে পার,যারা উপদেশ মেনে চলে এবং না দেখে পরম দয়াময়কে ভয় করে। অতএব তাদেরকে তুমি ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের সুসংবাদ দাও। (৩৬:১১) তুমি তো মৃতকে শুনাইতে পারিবে না,বধিরকেও পারিবে আহবান শুনাইতে, যখন উহারা মুখ ফিরিয়া  চলিয়া যায়। আর  তুমিঅন্ধকেও  পথে আনিতে পারিবে না  উহাদের পথভ্রষ্টতা  হইতে। যারা আমার আয়াতসমূহে বিশ্বাস করে শুধু তাহাদেরকেই  তুমি শুনাইতে পারিবে,কারণ  তাহারাই  মুসলিম বা আতœসমর্পনকারী। (২৭:৮০-৮১) (৩০:৫২-৫৩) (৪৩:৪০)  

ভাল আর মন্দ সমান হইতে পারে না। মন্দকে প্রতিহত  কর  ভাল দ্বারা। ফলে তোমার সঙ্গে যাহার শুত্রুতা আছে ,সে হইয়া যাইবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত। (৪১:৩৪)  তাদেরকে দুইবার পুরস্কৃত করা হইবে যেহেতু তাহারা ধৈর্যশীল এবং তারা মন্দের মুকাবিলা করে ভাল দিয়ে এবং আমি  তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে।(২৮:৫৪)। মন্দের মুকাবিলা করে ভাল দিয়ে। তাহারা যা বলে, সে বিষয়ে আমি অবগত। (২৩:৯৬) এবং যারা তাদের রবের সন্তুষ্টি লাভের জন্য ধৈর্য্য ধারণ করে,সালাত (বিধান) প্রতিষ্ঠিত করে এবং আমি  তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তা  থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে এবং যাহারা ভাল দ্বারা মন্দের মুকাবিলা করে তাহাদের জন্যেই রয়েছে শুভ পরিণাম (১৩:২২) হে নবী আপনি বলুন,ভাল ও মন্দ সমান নয় যদিও মন্দের আধিক্য তোমাদের আকৃষ্ট করে। অতএব হে বুদ্ধিমানগণ, আল্লাহকে ভয় কর-যাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার। (৫:১০০) দৃষ্টিমান ও দৃষ্টিহীন সমান নয়। সমান নয় অন্ধকার ও আলো। সমান নয় ছায়া ও তপ্তরোদ। আরও সমান নয় জীবিত ও মৃত। আল্লাহ শ্রবণ করান যাকে ইচ্ছা। (৩৫:১৯-২২) অন্ধ ও চক্ষুষ্মান সমান নয়। (৪০:৫৮) আপনি বলে দিন,অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? (৬:৫০) যাহারা ঈমান আনে ও  সৎকর্ম করে এবং যাহারা  পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করিয়া বেড়ায়  আমি কি তাহাদেরকে সমান গণ্য করিব? আমি কি মুত্তাকীদেরকে  পাপাচারীদের সমান গণ্য করিব? (৩৮:২৮)  দলদুটির দৃষ্টান্ত  হচ্ছে এমন যে অন্ধ ও বধির এবং যে দেখতে পায় ও শুনতে পায় উভয়ের অবস্থা কি  সমান? তবুও কি তোমরা  উপদেশ গ্রহণ করবে না? (১১:২৪) তারা কি পৃথিবী  ভ্রমণ করে নাই,যাহাতে তারা  জ্ঞান বুদ্ধি সম্পন্ন হৃদয় ও শ্রবণ শক্তি স¤পন্ন কর্ণের অধিকারী হতে পারে? বস্তুত চক্ষু তো অন্ধ নয়, বরং অন্ধ হইতেছে  বক্ষস্থিত হৃদয়। (২২:৪৬) যে ব্যক্তি রাত্রিকালে সিজদাবনত হইয়া  ও দাড়াইয়া অনুগত্য প্রকাশ করে,পরকালকে ভয় করে এবং তাহার রবের অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে ,সে কি তাহার সমান, যে এরূপ করে না, বল, যাহারা জানে এবং যাহারা জানে না, তাহারা কি সমান হতে পারে? শুধুমাত্র বোধশক্তি সম্পন্ন লোকেরাই কেবল উপদেশ গ্রহণ করে। (৩৯:৯)  বল, হে আমার বিশ্বাসী বান্দাগণ! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর। যাহারা এই দুনিয়াতে কল্যাণ কাজ করে, তাদের জন্যে রয়েছে কল্যাণ। আল্লাহর যমীন তো  প্রশস্ত। ধৈর্য্যশীলদেরকে তো  অগণিত পুরস্কার দেওয়া হইবে। (৩৯:১০) হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যা কর না  তাহা কেন অন্যকে করতে বল? তোমরা যাহা কর না, তাহা বলা আল্লাহর কাছে খুবই অসন্তোষজনক। (৬১:২,৩) তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও এবং নিজেদেরকে ভূলে যাও,অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর? তবে কি তোমরা বুঝ না? (২:৪২) হে আমাদের রব! যেসব জিন ও মানুষ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল,তাদেরকে দেখিয়ে দাও, আমরা তাদেরকে পা দিয়ে পদদলিত করব, যাতে তারা যথেষ্ট অপমানিত হয়। (৪১:২৯)

৫৩ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ  জাহান্নামের মধ্যে দলনেতা ও তার অনুসারীদের মধ্যে কথোপকথন !! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

আর সেদিন মেঘমালা দ্বারা আকাশ বিদীর্ণ হবে এবং ফেরেশতাদেরকে দলে দলে অবতরণ করানো হবে। সেদিন প্রকৃত সার্বভৌমত্ব হবে পরম করুণাময়ের। সেদিন প্রকৃত কর্তৃত্ব হবে পরম দয়াময়ের এবং অবিশ্বাসীদের জন্য সেদিন হবে বড় কঠিন। সীমালংঘনকারী সেদিন নিজ হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, ‘হায়! আমি যদি রাসূলের (বার্তাবাহকের ) সাথে সৎপথ অবলম্বন করতাম। হায় দুর্ভোগ আমার! আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। আমাকে অবশ্যই সে বিভ্রান্ত করেছিল আমার নিকট কুরআন পৌঁছনোর পর। আর শয়তান তো মানুষকে বিপদকালে পরিত্যাগই করে। (২৫:২৫-২৯) নিশ্চয় আল্লাহ অবিশ্বাসীদেরকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত রেখেছেন। সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে এবং তারা কোন অভিভাবক পাবে না, কোন সাহায্যকারীও নয়। যেদিন তাদের চেহারাগুলো আগুনে উপুড় করে দেয়া হবে, তারা বলবে, ‘হায়, আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম এবং রাসূলের (বার্তাবাহকের ) আনুগত্য করতাম’! তারা আরো বলবে, হে আমাদের রব! আমরা আমাদের নেতা ও বড়লোকদের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল। হে আমাদের রব! আপনি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদেরকে দিন মহাঅভিসম্পাত। (৩৩:৬৪-৬৮) সবাই আল্লাহর নিকট উপস্থিত হবে। যারা অহংকার করত দুর্বলেরা তাদেরকে বলবে, ‘আমরা তো তোমাদের অনুসারী ছিলাম। এখন তোমরা কি আল্লাহর শাস্তি হতে আমাদেরকে কিছুমাত্র রক্ষা করতে পারবে। তারা বলবে, ‘আল্লাহ আমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করলে আমরাও তোমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করতাম। এখন আমাদের ধৈর্যচ্যুত হওয়া অথবা ধৈর্যশীল হওয়া একই কথা। আমাদের কোন নিষ্কৃতি নেই। (১৪:২১) অবিশ্বাসীরা বলে, ‘আমরা এ কুরআনে কখনও বিশ্বাস করব না, এর পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহেও নয়। আর তুমি যদি দেখতে, যখন সীমালংঘনকারীদেরকে তাদের রবের সম্মুখে দন্ডায়মান করা হবে, তখন ওরা পরস্পরকে দোষারোপ করতে থাকবে। যারা দুর্বল ছিল তারা দাম্ভিকদেরকে বলবে,‘তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই বিশ্বাসী হতাম। যারা দাম্ভিক ছিল, তারা দুর্বলদেরকে বলবে, ‘আমরা কি তোমাদের কাছে সৎপথের উপদেশ আসার পর তা গ্রহণ করতে তোমাদেরকে বাধা দিয়েছিলাম। বরং তোমরাই তো অপরাধী ছিলে।’ আর যারা দুর্বল  ছিল, তারা দাম্ভিকদেরকে বলবে, ‘প্রকৃতপক্ষে তোমরাই তো দিন-রাত আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত ছিলে। আর আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলে যেন আমরা আল্লাহকে অমান্য করি এবং তাঁর অংশীদার স্থাপন করি।’ যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন মনে মনে অনুতপ্ত হবে। আমি অবিশ্বাসীদের গলদেশে বেড়ি পরাব। ওরা যা করত তারই প্রতিফল তাদেরকে দেওয়া হবে। যখনই আমি কোন জনপদে সতর্ককারী প্রেরণ করেছি সেখানকার বিত্তশালী অধিবাসীরা বলেছে, ‘তুমি যা নিয়ে প্রেরিত হয়েছ আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি।’ তারা আরো বলেছে, ‘আমরা ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে অধিক সমৃদ্ধশালী। আর তাই আমাদেরকে কিছুতেই শাস্তি দেওয়া হবেনা। (৩৪:৩১-৩৫) আর যখন তারা জাহান্নামে পরস্পর বিতর্কে লিপ্ত হবে, তখন দুর্বলেরা যারা অহংকার করেছিল তাদেরকে বলবে, আমরা তো তোমাদের অনুসরণ করেছিলাম সুতরাং তোমরা কি আমাদের থেকে জাহান্নামের আগুনের কিছু অংশ গ্রহণ করবে? অহঙ্কারীরা বলবে, আমরা সবাই এতে আছি। নিশ্চয় আল্লাহ বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করে ফেলেছেন। আর যারা আগুনের অধিবাসী হবে তারা জাহান্নমের প্রহরীদেরকে বলবে, তোমাদের রবকে ডাক, তিনি যেন আমাদের থেকে শাস্তি লাঘব করেন এক দিনের জন্য। তারা বলবে, ‘তোমাদের কাছে কি সুস্পষ্ট প্রমাণাদিসহ তোমাদের রাসূলগণ (বার্তাবাহক) আসেনি? জাহান্নামীরা বলবে, ‘হ্যাঁ অবশ্যই’। প্রহরীরা বলবে, ‘তবে তোমরাই দো‘আ কর। আর কাফিরদের দো‘আ কেবল নিষ্ফলই হয়’। (৪০:৪৭-৫০) তার চেয়ে কে অধিক যালিম, যে আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ রটায় কিংবা তাঁর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে। তাদের ভাগ্যে লিখিত অংশ তাদের কাছে পৌঁছবে। অবশেষে যখন আমার ফেরেশতারা তাদের নিকট আসবে তাদের জান কবজ করতে, তখন তারা বলবে, ‘কোথায় তারা, আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে তোমরা ডাকতে’? তারা বলবে, ‘তারা আমাদের থেকে হারিয়ে গিয়েছে’ এবং তারা নিজদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে যে, নিশ্চয় তারা ছিল কাফির। তিনি বলবেন, ‘আগুনে প্রবেশ কর জিন ও মানুষের দলগুলোর সাথে, যারা তোমাদের পূর্বে গত হয়েছে’। যখনই একটি দল প্রবেশ করবে, তখন পূর্বের দলকে তারা লা‘নত করবে। অবশেষে যখন তারা সবাই তাতে একত্রিত হবে তখন তাদের পরবর্তী দলটি পূর্বের দল সম্পর্কে বলবে, হে আমাদের রব, এরা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে। তাই আপনি তাদেরকে আগুনের দ্বিগুণ আযাব দিন’। তিনি বলবেন, সবার জন্য দ্বিগুণ, কিন্তু তোমরা জান না’। আর তাদের পূর্ববর্তী দল পরবর্তী দলকে বলবে, ‘তাহলে আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই। অতএব তোমরা যা অর্জন করেছিলে, তার কারণে তোমরা আযাব আস্বাদন কর’। (৭:৩৭-৩৯) আর কাফিররা বলবে, ‘হে আমাদের রব, জিন ও মানুষের মধ্যে যারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে তাদেরকে আমাদের দেখিয়ে দিন। আমরা তাদের উভয়কে আমাদের পায়ের নীচে রাখব, যাতে তারা নিকৃষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়। (৪১:২৯) (৩৭:১৯-৩৮)

“তাই আল্লাহ যাদের সাথে আমাদেরকে থাকতে বলেছেন ” হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (৯:১১৯) অতএব তোমরা সৎকাজে প্রতিযোগিতা কর। (২:১৪৮)(৫:৪৮) সেদিন বন্ধুরা একে অন্যের শত্রু হবে, মুত্তাকীরা ছাড়া। (৪৩:৬৭) হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা সৎকাজ ও আত্মসংযমে পরস্পর সহযোগিতা কর এবং পাপ ও সীমালংঘনের কাজে একে অন্যের সাহায্য করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে অতি কঠোর। (৫:২) নিশ্চয় তুমি যাকে ভালবাস তাকে তুমি সৎপথে আনতে পারবে না, তবে আল্লাহই যাকে ইচ্ছা সৎপথে আনেন এবং তিনিই ভাল জানেন কারা সৎপথের অনুসারী। (২৮:৫৬) 

তাদেরকে সুপথে আনার দায়িত্ব তোমার নয়, বরং যাকে ইচ্ছা আল্লাহ তাকে সৎ পথে পরিচালিত করেন (২:২৭২) আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা বা সংগ্রাম করে, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথেই আছেন। (২৯:৬৯) এবং তোমরা যা অপছন্দ কর হতে পারে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং যা ভালবাস হতে পারে তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না। (২:২১৬) আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ রেখেছেন। (৪:১৯) আল্লাহ  যাদেরকে ভালবাসেন: নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদেরকে ভালবাসেন । (৩:১৪৬) নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে ভালবাসেন। (৪৯:৯) নিশ্চয় আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালবাসেন । (৫:৪২) নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন। (৩:১৪৮) নিশ্চয় আল্লাহ প্রতিজ্ঞা পূর্নকারীকে  ভালবাসেন। (৩:৭৬) নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালবাসেন ।(৩:৭৬) নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র লোকদেরকে ভালবাসেন (৯:১০৮) নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীকে ভালবাসেন। (২:২২২) আল্লাহর উপর ভরসাকারীদেরকে  আল্লাহ ভালবাসেন। (৩:১৫৯) আল্লাহ  মানুষের প্রতি অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন। (২:১৯৫) আল্লাহর পথে লড়াইকারীদের আল্লাহ ভালবাসেন । (৬১:৪) আল্লাহ  যাদেরকে ভালবাসেন না: নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে ভালবাসেন না। (২:১৯০) নিশ্চয়ই আল্লাহ ফাসাদ  সৃষ্টিকারীকে ভালবাসেন না। (২:২০৫) নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন অবিশ্বাসী পাপীকে ভালবাসেন না। (২:২৭৬)  নিশ্চয়ই আল্লাহ অস্বীকারকারীদেরকে ভালবাসেন না। (৩:৩২) নিশ্চয়ই আল্লাহ যালেমদের ভালবাসেন না। (৩:৫৭)  নিশ্চয়ই আল্লাহ খেয়ানতকারী পাপীকে ভালবাসেন না। (৪:১০৭)  নিশ্চয়ই আল্লাহ চুক্তি ভংগকারীদেরকে ভালবাসেন  না। (৮:৫৮)  নিশ্চয়ই আল্লাহ মন্দ কথা প্রচার করা ভালবাসেন  না।(৪:১৪৮) নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদেরকে ভালবাসেন  না। (৬:১৪১) নিশ্চয়ই আল্লাহ উদ্ধত অহংকারীকে ভালবাসেন  না। (৫৭:২৩) নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাসঘাতক  ও অকৃতজ্ঞকে  ভালবাসেন  না। (২২:৩৮) মৃত্যুর পর মানুষের আক্ষেপ: হায়! আমার ও তোমার মধ্যে যদি পূর্ব ও পশ্চিমের ব্যবধান থাকত! কত নিকৃষ্ট সহচর সে। (৪৩:৩৮) হায় আমার দুর্ভোগ, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। (২৫:২৮) হায়! আমি যদি রাসূলের (বার্তাবাহকের) সাথে সৎপথ অবলম্বন করতাম। (২৫: ২৭) হায়! আমরা যদি আল্লাহকে মানতাম আর রাসূলকে (বার্তাবাহকে) মানতাম। (৩৩:৬৬) হায়! যদি তাদের সাথে থাকতাম তবে আমিও বিরাট সাফল্য লাভ করতাম। (৪ : ৭৩)

৫৪ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ বিচারের দিন প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে,তাই নিজেকে ও আহাল পরিবারকে সতর্ক করতে হবে!

 আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা কর অগ্নি হতে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে নির্মম-হৃদয়, কঠোর-স্বভাব ফিরিশতাগণ, আল্লাহ যা তাদেরকে আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং তারা যা করতে আদিষ্ট হয়, তাই করে। (৬৬:৬) আর তুমি তোমার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দাও। এবং যারা তোমার অনুসরণ করে, সেই সব বিশ্বাসীদের  প্রতি বিনয়ী হও। তারপর যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বল, নিশ্চয় তোমরা যা কর তার জন্য আমি দায়ী নই। তুমি নির্ভর কর পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু আল্লাহর উপর। (২৬:২১৪-২১৭) আর যারা বি শ্বাস করেছে, তারা কিয়ামতের দিন বলবে, নিশ্চয় ক্ষতিগ্রস্ত তারাই যারা নিজেদের ও নিজেদের পরিজনবগের ক্ষতি সাধন করেছে। সাবধান, নিশ্চয় জেনে রেখো, সীমালংঘনকারীরা অবশ্যই স্থায়ী শাস্তি ভোগ করবে। (৪২:৪৫) বল,নিশ্চয় কিয়ামতের দিন তারাই ক্ষতিগ্রস্ত যারা নিজেদের ও নিজেদের পরিবারবর্গের ক্ষতিসাধন করে। জেনে রেখ, এটাই স্পষ্ট ক্ষতি’। (৩৯:১৫)

তারা যা বলে, তা আমি খুব জানি, তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও, সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে, তাকে কুরআনের সাহায্যে উপদেশ দান কর। (৫০:৪৫) (৬:১৯.৫১,৭০,৯২) অতএব তুমি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও, এতে তুমি তিরস্কৃত হবে না। তুমি উপদেশ দিতে থাক, কারণ উপদেশ বিশ্বাসীদের উপকারে আসবে।(৫১:৫৪,৫৫) কাজেই তুমি উপদেশ দাও যদি উপদেশ উপকার দেয়। যে ভয় করে সেই উপদেশ গ্রহণ করবে। আর তা উপেক্ষা করবে যে নিতান্ত হতভাগ্য যে ভয়াবহ আগুনে প্রবেশ করবে। (৮৭:৯-১১) আর তাদের কাজের জবাবদিহির দায়িত্ব তাদের নয়, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে। তবে উপদেশ দেওয়া তাদের কর্তব্য, যাতে তারাও তাকওয়া অবলম্বন করে।(৬:৬৯) আর স্মরণ কর, যখন তাদের একদল বলেছিল, ‘আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দিবেন তোমরা তাদেরকে সদুপদেশ দাও কেন? তারা বলেছিল, তোমাদের রবের কাছে দায়িত্ব মুক্তির জন্য এবং যাতে তারাও সাবধান হয় এজন্য।’(৭:১৬৪) তুমি কেবল তাদেরকে সতর্ক করতে পার,যারা উপদেশ মেনে চলে এবং না দেখে পরম দয়াময়কে ভয় করে। অতএব তাদেরকে তুমি ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের সুসংবাদ দাও।(৩৬:১১) তুমি তো মৃতকে শুনাইতে পারিবে না,বধিরকেও পারিবে আহবান শুনাইতে, যখন উহারা মুখ ফিরিয়া  চলিয়া যায়। আর  তুমিঅন্ধকেও  পথে আনিতে পারিবে না  উহাদের পথভ্রষ্টতা  হইতে। যারা আমার আয়াতসমূহে বিশ্বাস করে শুধু তাহাদেরকেই  তুমি শুনাইতে পারিবে, কারণ  তাহারাই  মুসলিম বা আত্মসমর্পনকারী। (২৭:৮০-৮১) (৩০:৫২-৫৩) (৪৩:৪০)  

হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর এবং সেই দিনকে ভয় কর যেদিন পিতা তার সন্তানের কোন উপকার করতে পারবে না এবং সন্তানও তার পিতার কোন উপকারে আসবে না। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। সুতরাং দুনিয়ার জীবন যেন কিছুতেই তোমাদেরকে ধোকা দিতে না পারে এবং মহাপ্রতারক (শয়তান) যেন তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে ধোকায় ফেলতে না পারে। (৩১:৩৩) তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি এমন কিছু নয় যা তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করে দিবে; তবে যারা বিশ্বাস করে ও সৎ কাজ করে তারাই তাদের কর্মের জন্য পাবে বহুগুণ পুরস্কার। আর তারা প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে। (৩৪:৩৭) হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের কেউ কেউ তোমাদের দুশমন। অতএব তোমরা তাদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। আর তোমরা যদি তাদের প্রতি ক্ষমাসুলভ আচরণ কর, তাদের দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা কর, আর তাদেরকে ক্ষমা কর,  তবে নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।(৬৪:১৪) হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করে। আর যারা এরূপ করে তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। (৬৩:৯) আর তোমরা জেনে রেখ যে, তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি তো পরীক্ষার বস্তু এবং নিশ্চয় আল্লাহর নিকটে রয়েছে মহা পুরস্কার। (৮:২৮) তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো তোমাদের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ। আর আল্লাহরই নিকট রয়েছে মহা পুরস্কার। (৬৪:১৫) তোমাদের অত্মীয়-স্বজন ও সন্তান-সন্ততি কিয়ামাত দিবসে কোন কাজে আসবেনা। আল্লাহ তোমাদের মধ্যে ফাইসালা করে দিবেন। তোমরা যা কর তিনি তা দেখেন। (৬০:৩) আল্লাহর শাস্তির মুকাবিলায় তাদের ধন সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তাদের কোন কাজে আসবেনা, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। (৫৮:১৭) নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করেছে, আল্লাহর নিকটে তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কক্ষনো কোন কাজে আসবে না এবং তারা হচ্ছে অগ্নির অধিবাসী, তারা তাতে চিরকাল থাকবে। (৩:১১৬)

সুতরাং আজ তোমাদের কাছ থেকে কোন মুক্তিপণ গ্রহণ করা হবে না এবং যারা অবিশ্বাস করেছিল তাদের কাছ থেকেও না। জাহান্নামই তোমাদের আবাসস্থল। সেটাই তোমাদের উপযুক্ত স্থান। আর কতই না নিকৃষ্ট সেই গন্তব্যস্থল! (৫৭:১৫) যারা অবিশ্বাস করেছে পৃথিবীতে যা কিছু আছে, যদি তাদের তার সমস্ত থাকে এবং তার সাথে সমপরিমাণ আরো থাকে এবং কিয়ামতের দিন শাস্তি হতে মুক্তির জন্য পণস্বরূপ তা দিতে চায়, তবুও তাদের নিকট হতে তা গৃহীত হবে না এবং তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি। (৫:৩৬) নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করেছে ও অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে তাদের মুক্তির বিনিময়ে যদি পৃথিবীপূর্ণ স্বর্ণ দেয়া হয় তবুও কক্ষনো তা গ্রহণ করা হবেনা। ওদেরই জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে এবং ওদের জন্য কোনই সাহায্যকারী নেই। (৩:৯১) সেদিন এক বন্ধু অপর বন্ধুর কোন কাজে আসবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না। সে ছাড়া, যার প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেন। নিশ্চয় তিনিই মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। (৪৪:৪১,৪২) সেদিন বন্ধুরা একে অন্যের শত্রু হবে, মুত্তাকীরা ছাড়া। হে আমার বান্দাগণ! আজ তোমাদের কোন ভয় নেই এবং দুঃখিতও হবেনা তোমরা –যারা আমার আয়াতে বিশ্বাস করেছিল এবং আত্মসমর্পণ করেছিল। (৪৩:৬৭-৬৯) 

অতঃপর যখন বিকট আওয়াজ আসবে, সেদিন মানুষ পালিয়ে যাবে তার ভাই থেকে, তার মা ও তার বাবা থেকে, তার স্ত্রী ও তার সন্তান-সন্ততি থেকে। সেদিন তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকবে। (৮০:৩৩-৩৭) আর অন্তরঙ্গ বন্ধু অন্তরঙ্গ বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করবে না। তাদেরকে করা হবে একে অপরের দৃষ্টিগোচর। অপরাধী সেদিনের শাস্তির বদলে দিতে চাবে তার সন্তান-সন্ততিকে, আর তার স্ত্রী ও ভাইকে, আর তার জ্ঞাতি-গোষ্ঠীকে, যারা তাকে আশ্রয় দিত। এবং পৃথিবীর সকলকে, যাতে এই মুক্তিপণ তাকে মুক্তি দেয়। কখনো নয়! এটিতো লেলিহান অগ্নিশিখা, যা গাত্র হতে চামড়া খসিয়ে দিবে। জাহান্নাম সেই ব্যক্তিকে ডাকবে, যে সত্যের প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিল ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল আর সম্পদ জমা করেছিল, অতঃপর তা সংরক্ষণ করে রেখেছিল। (৭০:১০-১৮) হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামী কালের জন্যে সে কি প্রেরণ করে, তা চিন্তা  করা। আল্লাহকে ভয় করতে থাক। তোমরা যা কর,আল্লাহ সে সম্পর্কে খবর রাখেন। (৫৯:১৮) যখন আমলনামা  উন্মোচিত হইবে। যখন আকাশের দ্বার অপসারিত হইবে। যখন জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্বলিত করা হবে এবং যখন জান্নাত সন্নিকটবর্তী হবে, তখন প্রত্যেকেই জেনে নিবে সে কি  অগ্রিম প্রেরণ করিয়াছে। (৮১:১২-১৪) আমি তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি  স¤পর্কে সতর্ক করেছিলাম, যেদিন মানুষ প্রত্যেক্ষ করবে যা সে সামনে প্রেরণ করেছে এবং কাফির বলবে, হায়! আফসোস-আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম। (৭৮:৪০) এবং যখন কবরসমূহ উম্মোচিত হবে,তখন প্রত্যেকে জেনে নিবে সে কি অগ্রে প্রেরণ করেছে এবং কি পশ্চাতে ছেড়ে এসেছে। হে মানুষ, কিসে তোমাকে তোমার মহামহিম রবের স¤পর্কে বিভ্রান্ত করল? (৮২:৪-৭) সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোন কিছু গোপন থাকবে না। অতঃপর যার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে, সে বলবে  নাও, তোমরাও আমলনামা পড়ে দেখ। আমি জানতাম যে, আমাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে। অতঃপর সে সুখী   জীবন-যাপন করবে,সুউচ্চ জান্নাতে। তার ফলসমূহ অবনমিত থাকবে। বিগত দিনে তোমরা যা প্রেরণ করেছিলে, তার প্রতিদানে তোমরা খাও এবং পান কর তৃপ্তি সহকারে। (৬৯:১৮-২৪)

৫৫ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল কুরআন অনুসারে মুসল্লীনদের পরিচয় অর্থাৎ মুসল্লীনদের বৈশিষ্ট্য  ! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

তারা বলবে,হে জাহান্নামের অধিবাসীরা, তোমাদের আজ কিসে এ ভয়াবহ আযাবে উপনীত করেছে?

১. তারা বলবে, আমরা মুসল্লীনদের (দায়িত্ব-কর্তব্য পালনকারীদের, রবের বিধান বাস্তবায়নকারীদের) অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না। 

২.অভাবগ্রস্থকে আহার্য দিতাম না।  

৩.অহেতুক কাজে মগ্ন থাকতাম।

৪.কর্মফল দিবস অস্বীকার করতাম।

৫.এমনকি আমাদের নিকট নিশ্চিত বিশ্বাস না আসা পর্যন্ত। (৭৪:৪২-৪৬)

৫৬ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল কুরআন অনুসারে মুসল্লীনদের পরিচয় অর্থাৎ মুসল্লীনদের বৈশিষ্ট্য ! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

তুমি কি দেখেছ তাকে, যে তার দ্বীনকে (জীবন ব্যবস্থাকে) অস্বীকার করে থাকে? 

১.সে তো ঐ ব্যক্তি, যে ইয়াতীমকে (পিতৃহীনকে) রূঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয়।  

২.এবং সে মিসকীনকে (অভাবগ্রস্তকে) খাদ্যদানে উৎসাহ প্রদান করে না।

৩.অতএব দুর্ভোগ সে সব মুসল্লীনদের (দায়িত্ব-কর্তব্য পালনকারীদের, রবের বিধান বাস্তবায়ন কারীদের)। 

৪.যারা নিজেদের সালাতের (দায়িত্ব-কর্তব্য, রবের বিধান বাস্তবায়নের) ব্যাপারে উদাসীন।  

৫.যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে।

৬.এবং গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোটখাট সাহায্য দানে বিরত থাকে। (১০৭:১-৭)

৫৭ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল কুরআন অনুসারে মুসল্লীনদের পরিচয় অর্থাৎ মুসল্লীনদের বৈশিষ্ট্য ! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন, 

জাহান্নাম সেই ব্যক্তিকে ডাকবে, যে সত্যের প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিল ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল ,আর সম্পদ জমা করেছিল, অতঃপর তা সংরক্ষণ করে রেখেছিল। নিশ্চয় মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে অতিশয় অস্থিরচিত্তরূপে। যখন তাকে বিপদ স্পর্শ করে, তখন সে হয় হা হুতাশকারী। আর যখন তাকে কল্যাণ স্পর্শ করে, তখন সে হয় অতি কৃপণ। 

১.তবে মুসল্লীনরা (দায়িত্ব-কর্তব্য পালনকারীরা,রবের বিধান বাস্তবায়নকারীরা) ব্যতীত।  

২.যারা তাদের সালাতে (দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে,রবের বিধান বাস্তবায়নে) সর্বদা দন্ডায়মান থাকে । 

৩.আর যাদের সম্পদে নির্ধারিত হক রয়েছে প্রার্থী এবং বঞ্চিতদের।

৪.আর যারা কর্মফল দিবসকে সত্য বলে জানে।

৫.আর যারা তাদের রবের শাস্তি সম্পর্কে ভীত সন্ত্রস্ত থাকে। 

৬.নিশ্চয়ই তাদের রবের শাস্তি হতে নিঃশঙ্ক থাকা যায়না ।

৭.আর যারা নিজেদের লজ্জাস্থানকে সংযত রাখে। তাদের স্ত্রী অথবা (মা মালাকাত আইমানুহুম)  শপথ বা অঙ্গীকারভুক্তদের ক্ষেত্র ব্যতীত, এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। তবে কেউ এ ছাড়া অন্যকে কামনা করলে, তারা হবে সীমালংঘনকারী।

৮.আর যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। 

৯.আর যারা তাদের সত্য সাক্ষ্য দানে অটল থাকে।

১০.আর যারা নিজদের সালাতে (দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে, রবের বিধান বাস্তবায়নে) যত্নবান। 

তারাই সম্মানিত হবে জান্নাতে।  (৭০:১৭-৩৫)

৫৮ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল কুরআন অনুসারে মুসল্লীনদের পরিচয় অর্থাৎ মুসল্লীনদের বৈশিষ্ট্য

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

”অবশ্যই বিশ্বাসীগণ সফলকাম হয়েছে।”

১.যারা নিজদের সালাতের (দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে, রবের বিধান বাস্তবায়নে) বিনয়ী নম্রতা- ভদ্রতা অবলম্বন করে। 

২.আর যারা অসার ক্রিয়া-কলাপ হতে বিরত থাকে।

৩.আর যারা যাকাত (পরিশুদ্ধতা) অর্জনে সর্বদা সক্রিয় তাকে থাকে । 

৪.আর যারা তাদের নিজদের লজ্জাস্থানকে সংযত রাখে। তাদের স্ত্রী অথবা (মা মালাকাত আইমানুহুম) শপথ বা  অঙ্গীকারভুক্তদের ক্ষেত্র ব্যতীত, এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। তবে কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করলে, তারা হবে সীমালংঘনকারী।

৫.আর যারা তাদের আমানত ও প্রতি শ্রুতি রক্ষা করে। 

৬.আর যারা নিজদের সালাতে (দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে, রবের বিধান বাস্তবায়নে) যত্নবান। 

তারাই হবে অধিকারী। উত্তরাধিকারী হবে ফিরদাউসের, যাতে তারা চিরস্থায়ী হবে। (২৩:১-১১)

৫৯ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল কুরআন অনুসারে রহমানের বান্দার বৈশিষ্ট্য ! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

আর যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমরা রহমানের আদেশ-নির্দেশ এর প্রতি অবনত হও। তখন তারা বলে, রহমান আবার কে? তুমি আমাদেরকে আদেশ করলেই কি আমরা মান্য করব? আর এটা তাদের বিমুখতাই বৃদ্ধি পায়।(২৫:৬০)  আর রাহমান-এর বান্দা তারাই, 

১.যারা যমীনে অত্যন্ত বিনয়ীভাবে চলাফেরা করে এবং যখন জাহেল ব্যক্তিরা তাদেরকে সম্বোধন করে, তখন তারা বলে, সালাম।

২.আর যারা সর্বদা রবের আদেশ নির্দেশ মান্যরত অবস্থায় দন্ডায়মান থাকে এবং তারা বলে, হে আমাদের রব! আপনি আমাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তি হটিয়ে নিন, জাহান্নামের শাস্তি তো নিশ্চিতভাবে ধ্বংসাত্মক। নিশ্চয় সেটা  স্থায়ী ও  অস্থায়ী আবাস হিসেবে খুব নিকৃষ্ট।

৩.এবং যারা ব্যয় করলে অপচয় করে না, কার্পণ্যও করে না,বরং তারা এ দুয়ের মধ্যবর্তী পন্থা অবলম্বন করে।

৪.এবং তারা আল্লাহর সাথে কোন ইলাহকে ডাকে না।

৫.আর আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাডা তাকে হত্যা করে না।

৬.আর তারা ব্যভিচার করে না, যে এগুলো করে, সেই শাস্তি ভোগ করবে।

৭.আর যারা মিথ্যার সাক্ষ্য দেয় না।

৮.এবং অসার কার্যকলাপের সম্মুখীন হলে আপন মর্যাদা রক্ষার্থে তা পরিহার করে চলে।

৯.এবং যারা তাদের রবের  আয়াত (রবের আদেশ-নিষেধ সমূহ)স্মরণ করিয়ে দিলে অন্ধ এবং বধির সদৃশ আচরণ করে না। (২৫:৬৩-৭৩)

৬০ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল্লাহর কিতাব,আল কুরানের কাছে বায়াত বা আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করি! 

আল্লাহ  কোরআনুল কারিমে এ প্রস‌ঙ্গে আল্লাহ ব‌লেন,

”আর যারা তোমার কাছে আনুগত্যের শপথ  করে, তারা শুধু আল্লাহরই কাছে আনুগত্যের শপথ  করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর। অতঃপর যে কেউ ওয়াদা ভঙ্গ করলে, তার ওয়াদা ভঙ্গের পরিণাম বর্তাবে তারই উপর। আর যে আল্লাহকে দেয়া ওয়াদা পূরণ করবে অচিরেই আল্লাহ তাকে মহা পুরস্কার দিবেন।” (৪৮:১০)

হে নবী, বিশ্বাসী নারীরা যখন তোমার নিকট এসে বায়াত বা আনুগত্যের শপথ করে এই মর্মে যে,

১.তারা আল্লাহর সাথে কাউ অংশীদার স্থাপন  করবে না।

২.চুরি করবে না। 

৩.ব্যভিচার করবে না। 

৪.নিজেদের সন্তান-সন্ততিদের হত্যা করবে না।

৫.তারা সজ্ঞানে কোন অপবাদ রচনা করে রটাবে না। 

৬.এবং সৎকার্মে তোমাকে অমান্য করবে না।

তখন তাদের আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করিবে এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিবে। নিশ্চয় আল্লাহ অসীম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৬০:১২)


৬১ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল্লাহ যে সকল কাজসমূহ আমাদের জন্য হারাম বা নিষিদ্ধ করেছেন ! 

 এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, বল-আস তোমাদের রব, তোমাদের উপর যা নিষিদ্ধ করেছেন তোমাদেরকে তা পড়ে শোনাই, তা হচ্ছে-

১.তোমরা তার সাথে কাউ অংশীদার স্থাপন  করবে না। 

২.পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে।  

৩.দারিদ্র্যের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, আমিই তোমাদেরকে ও তাদেরকে রিযক দিয়ে থাকি। 

৪.প্রকাশ্যে হোক কিংবা গোপনে হোক অশ্লীল বা অনৈতিক কাজের ধারে কাছেও যাবে না। 

৫.আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তোমরা তাকে হত্যা করবে না। তিনি তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিলেন  যেন তোমরা অনুধাবন করতে পার।

৬.আর ইয়াতীম বয়সপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত উত্তম ব্যবস্থা ছাড়া তোমরা তার সম্পত্তির ধারে-কাছেও যাবে না 

৭.এবং পরিমাপ ও ওজন ন্যায্যভাবে পুরোপুরি দিবে। আমি কাউকেও তার সাধ্যের চেয়ে বেশী ভার অর্পণ করি না।

৮.আর যখন তোমরা কথা বলবে তখন ন্যায্য বলবে, নিকট আত্মীয় স্বজনের সম্পর্কে হলেও। 

৯.এবং আল্লাহকে দেওয়া অঙ্গীকার পূর্ণ করবে। আল্লাহ্ তোমাদেরকে এভাবে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। নিশ্চয়ই এটি আমার সরল পথ। সুতরাং এরই অনুসরণ কর এবং ভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, করলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন তোমরা সাবধান হও।(৬:১৫১-১৫৩)

১০.বল, নিশ্চয় আমার রব নিষিদ্ধ করেছেন প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা। আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালংঘন এবং কোন কিছুকে আল্লাহর শরীক করা- যার কোন সনদ তিনি নাযিল করেননি। আর আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না।(৭:৩৩)

১১.নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয়-স্বজনকে দানের নির্দেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসৎকার্য ও সীমালংঘন করা হতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর। আর তোমরা যখন পরস্পর অঙ্গীকার কর, তখন আল্লাহর অঙ্গীকার পূরণ করো এবং আল্লাহকে তোমাদের যামিন করে শপথ দৃঢ় করবার পর তোমরা তা ভঙ্গ করো না। তোমরা যা কর, অবশ্যই আল্লাহ তা জানেন।(১৬:৯০,৯১)


৬২ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ আল্লাহ যে সকল কাজসমূহ আমাদের জন্য নিষিদ্ধ করেছেন ! 

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, 

১.তোমরা তাকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না ।

২.এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। তাদের জন্য সদয়ভাবে নম্রতার বাহু প্রসারিত করে দাও আর বল, ‘হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া কর যেমনভাবে তারা আমাকে শৈশবে লালন পালন করেছেন।

৩.আর আত্মীয়কে তার হক দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও। 

৪.আর কোনভাবেই অপব্যয় করো না। নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার রবের প্রতি খুবই অকৃতজ্ঞ। 

৫.আর তুমি যদি তাদেরকে (অভাবী আত্মীয়, মিসকীন ও মুসাফিরদেরকে) পাশ কাটাতে চাও এজন্য যে, তুমি এখনও নিজের জন্য তোমার রবের অনুগ্রহ লাভের সন্ধানে ব্যাপৃত যা তুমি প্রত্যাশা কর, এমতাবস্থায় তাদের সঙ্গে নম্রভাবে কথা বল। 

৬.আর তুমি তোমার হাত তোমার ঘাড়ে আবদ্ধ রেখো না এবং তা পুরোপুরি  প্রসারিত করো না, তাহলে তুমি নিন্দিত ও নিঃস্ব হয়ে বসে পড়বে। নিশ্চয় তোমার রব যাকে ইচ্ছা তার জন্য রিযিক প্রশস্ত করে দেন এবং সীমিত করে দেন। তিনি অবশ্যই তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত, পূর্ণ দ্রষ্টা। 

৭.অভাব-অনটনের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। আমিই তাদেরকে রিযিক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ।

৮.আর তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ। 

৯.আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করনা। কেহ অন্যায়ভাবে নিহত হলে তার উত্তরাধিকারীকে আমি প্রতিশোধ গ্রহণের অধিকার দিয়েছি। কিন্তু হত্যার ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে, সেতো সাহায্য প্রাপ্ত হয়েছেই। 

১০.আর তোমরা ইয়াতীমের সম্পদের কাছে যেয়ো না সুন্দরতম পন্থা ছাড়া, যতক্ষণ না সে বয়সের পূর্ণতায় উপনীত হয়। 

১১.আর অঙ্গীকার পূর্ণ কর, নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। 

১২.আর মাপে পরিপূর্ণ দাও যখন তোমরা পরিমাপ কর এবং সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ওযন কর। এটা কল্যাণকর ও পরিণামে সুন্দরতম। 

১৩.আর যে বিষয় তোমার জানা নাই তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তকরণ- এদের প্রতিটির ব্যাপারে সে জিজ্ঞাসিত হবে। 

১৪.আর যমীনে বড়াই করে চলো না, তুমি তো কখনো যমীনকে ফাটল ধরাতে পারবে না এবং উচ্চতায় কখনো পাহাড় সমান পৌঁছতে পারবে না।     

১৫.এ সবের মধ্যে যেগুলি মন্দ সেগুলি তোমার রবের নিকট ঘৃণ্য। এসব সেই হিকমাতের অন্তর্ভুক্ত যা তোমার রব তোমার প্রতি ওয়াহী করেছেন। আল্লাহর সঙ্গে অপর কোন ইলাহ স্থির করো না, করলে তুমি নিন্দিত ও যাবতীয় কল্যাণ বঞ্চিত হয়ে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।(১৭:২৩-৩৯) 

১৬.আর আমি তো তাদের কাছে একের পর এক বাণী পৌছে দিয়েছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। এর পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম তারা এতে বিশ্বাস করে। যখন তাদের নিকট তা আবৃত্তি করা হয়,তখন তারা বলে, ‘আমরা এতে বিশ্বাস করি, এ আমাদের রব হতে আগত সত্য। অবশ্যই আমরা পূর্ব হতেই আত্মসমর্পণকারী  ছিলাম। আর তাদেরকে দু’বার প্রতিদান দেয়া হবে। এ কারণে যে, তারা ধৈর্যধারণ করে এবং ভাল দ্বারা মন্দকে প্রতিহত করে। আর আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। আর তারা যখন অনর্থক কথাবার্তা শুনে তখন তা থেকে বিমুখ হয় এবং বলে, আমাদের কাজের জন্য আমরা দায়ী এবং তোমাদের কাজের জন্য তোমরা দায়ী, তোমাদের প্রতি সালাম। আমরা অজ্ঞদের সঙ্গ চাই না। (২৮:৫১-৫৫)

১৭.তারা আল্লাহ এবং শেষ দিনে বিশ্বাস করে, সৎকাজের নির্দেশ দেয়, অসৎকাজে নিষেধ করে এবং তারা কল্যাণকর কাজে প্রতিযোগিতা করে। আর তারাই পূণ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত।(৩:১১৪) আর তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের রবের পক্ষ থেকে সেই ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে, যার পরিধি আসমানসমূহ ও যমীনের সমান, যা ধর্মভীরুদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় দান করে,  ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে থাকে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন। আর যারা কোন পাপ কাজ করে ফেললে কিংবা নিজেদের প্রতি যুলম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং বলে আল্লাহ ব্যতীত গুনাহসমূহের ক্ষমাকারী কেই বা আছে এবং তারা জেনে শুনে নিজেদের পাপ কাজের পুনরাবৃত্তি করে না। এরাই তারা যাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের পক্ষ হতে ক্ষমা এবং এমন এক জান্নাত যার নিম্নে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত, তারা তার স্থায়ী অধিবাসী এবং সৎকর্মশীলদের পুরস্কার কতই না উত্তম। (৩:১৩৩-১৩৬)

১৮.দুর্ভোগ প্রত্যেকের যে সামনে ও পেছনে গীবত করে । যে ধন-সম্পদ জমা করে এবং বার বার গণনা করে। সে মনে করে তার সম্পদ তাকে চিরজীবি করবে।  সে মনে করে যে, তার ধন-সম্পদ চিরকাল তাকে অমর করে রাখবে। কখনো নয়, অবশ্যই সে নিক্ষিপ্ত হবে হুতামায়। তুমি কি জান হুতামা কি? তা আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত আগুন। যা হৃদয়কে গ্রাস করবে। নিশ্চয়ই তা তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখবে। দীর্ঘায়িত স্তম্ভসমূহে। (১০৪:১-৮)


৬৩ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছঃ বনী ইসরাইল সম্প্রদায়রা যেসকল অনৈতিক বা পাপে লিপ্ত ছিল ! 

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, আর স্মরণ কর যখন আমি বনী ইসরাইলের অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম যে,

১.তোমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না। 

২.এবং সদাচারণ  করবে পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম ও মিসকীনদের সাথে।

৩.আর মানুষকে উত্তম কথা বলবে। 

৪.সালাত (বিধান সমূহ,দায়িত্ব-কর্তব্যসমূহ বাস্তবায়ন ) কায়েম কর এবং যাকাত (পরিশুদ্ধতা অর্জন) প্রদান কর। অতঃপর তোমাদের মধ্য থেকে স্বল্প সংখ্যক ছাড়া তোমরা সকলে উপেক্ষা করে মুখ ফিরিয়ে নিলে। আবার যখন তোমাদের শপথ  নিয়েছিলাম যে,

৫.তোমরা একে অন্যের রক্তপাত করবে না। 

৬.এবং স্বজনদেরকে স্বদেশ হতে বহিষ্কার করবে না, তারপর তোমরা তা স্বীকার করেছিলে আর এ বিষয়ে তোমরাই সাক্ষী।  

৭.অতঃপর তোমরাই তো তারা, যারা একে অপরকে  অন্যায় ভাবে হত্যা করছো। 

৮.এবং তোমাদের মধ্য থেকে একটি দলকে স্বজনদেরকে স্বদেশ হতে বহিষ্কার করে দিচ্ছে।

৯.পাপ ও সমীলঙ্ঘনের মাধ্যমে একে অপরকে তাদের বিরুদ্ধে সহায়তা করছো। 

১০.আর তারা যদি বন্দী হয়ে তোমাদের নিকট আসে, তোমরা মুক্তিপণ দিয়ে তাদেরকে মুক্ত কর। অথচ তাদেরকে বের করা  তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। 

১১.তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে বিশ্বাস রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কী  প্রতিদান হতে পারে? আর কিয়ামতের দিনে তাদেরকে কঠিনতম আযাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে গাফিল নন। তারাই সেই লোক, যারা আখিরাতের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবন ক্রয় করে নিয়েছে। কাজেই তাদের শাস্তি কিছুমাত্র কমানো হবে না এবং তাদেরকে সাহায্য ও করা হবে না।  (২:৮৩-৮৬)

১২.নিশ্চয় যারা আল্লাহর আয়াতসমূহে অবিশ্বাস করে, অন্যায়ভাবে নবীদের হত্যা করে এবং মানুষের মধ্যে যারা ন্যায়পরায়ণতার নির্দেশ দেয় তাদেরকে হত্যা করে,তুমি তাদেরকে কঠিন শাস্তির সংবাদ দাও। এরাই তারা যাদের সমুদয় আমাল দুনিয়া ও আখেরাতে নিষ্ফল হবে এবং তাদের কোন সাহায্যকারী নেই। (৩:২১,২২) নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করেছে এবং অপরকে আল্লাহর পথ হতে প্রতিরোধ করেছে, অবশ্যই তারা  চরম পথভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে। (৪:১৬৭)

১৩.আর তাদের উপর লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্য আপতিত হলো এবং তারা আল্লাহর ক্রোধের পাত্র হল। এটা এ জন্য যে, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত এবং অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করতো। অবাধ্যতা ও সীমালংঘন করার জন্যই তাদের এ পরিণতি হয়েছিল। (২:৬১)(৩:১১২) (২:৮৭)(৫:৭০)

১৪.সুতরাং ভাল ভাল যা ইয়াহুদীদের জন্য হালাল ছিল আমি তা তাদের জন্য হারাম করেছিলাম তাদের যুলুমের জন্য এবং আল্লাহর পথ থেকে অনেককে বাধা দেওয়ার জন্য এবং তাদের রিবা বা সূদ গ্রহণের জন্য, যদিও তা তাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং অন্যায়ভাবে লোকের ধন-সম্পদ গ্রাস করার জন্য। আর তাদের মধ্যে যারা অবিশ্বাসী তাদের জন্য আমি কঠিন শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। (৪:১৬০,১৬০) (৪:১৫৫-১৫৭) (২:৯১)


৬৪ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ সালামুন আলা শুআইবের সম্প্রদায়রা যেসকল পাপে লিপ্ত ছিল! 

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, তিনি বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায়!তোমরা..

১.আল্লাহর ইবাদত কর, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই।

২.আর মাপে ও ওজনে কম করো না, তোমরা ন্যায় সঙ্গতভাবে মাপো ও ওজন করো,লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তুর কম দিও না এবং তাদের সাথে প্রতারণা করো না। 

৩.এবং যারা মাপে ঘাটতি করে, তোমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।

৪.যমীনে বির্পযয় বা ফাসাদ সৃষ্টি করো না। এবং দুনিয়ার শান্তি স্থাপনের পর বিপর্যয় ঘটাবে না। তোমরা বিশ্বাসী হলে তোমাদের জন্য এটাই কল্যানকর। 

৫.আর আল্লাহর প্রতি যারা বিশ্বাস এনেছে তাদেরকে ভয় প্রদর্শন,আল্লাহর পথে তাহাদেরকে  বাধ প্রদান এবং তাতে বক্রতা অনুসন্ধান করতে তোমরা প্রতিটি পথে ওৎ পেতে বসে থেকো না। (৭:৮৫-৯২) (১১:৮৪-৯৫) (২৬:১৭৬-১৯১) (৪:১৬৭)

৬.সালামুন আলা শুআইবের সম্প্রদায়ের উক্তি। তারা বলল, হে শু'আইব! তোমার সালাত (বিধি-বিধান সমূহ,দায়িত্ব-কর্তব্য সমূহ) কি তোমাকে নির্দেশ দেয় যে,আমাদের পিতৃ-পুরুষেরা যার ইবাদাত করত আমাদেরকে তা বর্জন করতে হবে অথবা আমরা আমাদের ধন-সম্পদ সম্পর্কে যা করি তাও? তুমি তো বেশ সহিষ্ণু ও ভাল মানুষ। (১১:৮৭)


৬৫ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে মুখ ফেরানোতে তোমাদের কোন কল্যাণ নেই ! 

এ  সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, কিন্তু কল্যাণ আছে.. 

১.আল্লাহ, পরকাল, ফিরিশতাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণকে বিশ্বাস করলে।

২.এবং ধন সম্পদ ও অর্থের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও আত্মীয়-স্বজন, এতীম, মিসকিন, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থী (ভিক্ষুক) গণকে এবং দাস মুক্তির জন্য দান করলে।

৩.সালাত (দায়িত্ব কর্তব্য বা বিধিবিধান সমূহ বাস্তবায়ন) প্রতিষ্ঠা করলে ও যাকাত (পরিশুদ্ধতা অর্জন) প্রদান করলে।

৪.প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূর্ণ  করলে।  

৫.এবং অর্থ-সংকটে, দুঃখ-কষ্টে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য্যধারণ করলে। এরাই তারা, যারা সত্যপরায়ণ এবং ধর্মভীরু। (২:১৭৭)

৬.আর তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং তার সাথে  অন্য কাউকে অংশীদার স্থাপন  করো না। এবং পিতা-মাতা,আত্মীয়স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্থ, নিকট প্রতিবেশী, দুর-প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, মুসাফির ও তোমাদের  অধিনস্ত কর্মচারীগণদের সাথে সৎ বা উত্তম ব্যহার করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক, অহংকারীকে। (৪:৩৬)


৬৬ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ বন্ধুর গিরিপথ পাড়ি দেওয়া ! 

 এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি কষ্ট ক্লেশের মধ্যে। সে কি মনে করে যে তার উপর কেউ ক্ষমতাবান নেই? সে বলে যে, আমি প্রচুর ধন-সম্পদ উড়িয়েছি। সে কি মনে করে যে তাকে কেউ দেখেনি? আমি কি তাকে দুটো চোখ দিইনি? আর একটি জিহবা ও দুটি ঠোঁট? আর আমি তাকে (পাপ ও পুণ্যের) দুটো পথ দেখিয়েছি। কিন্তু সে তো বন্ধুর গিরিপথে প্রবেশ করেনি। আর তুমি কি জান,বন্ধুর গিরিপথটি কি? 

১.তা হচ্ছে দাস মুক্তকরণ।  

২.অথবা খাদ্য দান করা দুর্ভিক্ষের দিনে, ইয়াতীম আত্মীয়-স্বজনকে অথবা দারিদ্র-নিষ্পেষিত নিঃস্বকে। অতঃপর সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে।

৩.এবং পরস্পরকে উপদেশ দিয়েছে ধৈর্য ধারণের ও দয়া দাক্ষিণ্যের। তারাই সৌভাগ্যবান।

৪.আর যারা আমার আয়াতসমূহকে (আল্লাহর আদেশ-নির্দেশসমূহকে) অস্বীকার করেছে তারাই দুর্ভাগা। তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে অবরুদ্ধকারী আগুন।  (৯০:৪-২০)


৬৭ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ সাধ্যমত ইয়াতীম,মিসকীন মুসাফির ও আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করতে হবে ! 

 এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

নিশ্চয় তোমার রব সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। আর মানুষ তো এমন যে, যখন তার রব তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর তাকে সম্মান দান করেন এবং অনুগ্রহ প্রদান করেন, তখন সে বলে, আমার রব আমাকে সম্মানিত করেছেন। আর যখন তিনি তাকে পরীক্ষা করেন এবং তার উপর তার রিযিককে সঙ্কুচিত করে দেন, তখন সে বলে, আমার রব আমাকে অপমানিত করেছেন। 

১.কখনো নয়, বরং তোমরা ইয়াতীমদের দয়া-অনুগ্রহ প্রদর্শন কর না।

২.এবং অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না।

৩.আর তোমরা উত্তরাধিকারের সম্পদ সম্পূর্ণরুপে খেয়ে ফেল।

৪.আর তোমরা ধন-সম্পদ খুবই ভালবাস, এটা মোটেই ঠিক নয়, যখন পৃথিবীকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয়া হবে। (৮৯:১৪-২১)

৫.অতএব আত্মীয়-স্বজনকে তাদের হক দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও। এটি উত্তম তাদের জন্য, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চায় এবং তারাই সফলকাম। (৩০:৩৮) (১৭:২৬)


৬৮ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ যাদের ধন সম্পদ কোন কাজে আসবে না ! 

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

”কিন্তু যার আমল নামা তার বাম হাতে দেওয়া হবে, সে বলবে হায়! আমাকে যদি আমার আমলনামা দেয়া না হত।  আর যদি আমি না জানতাম আমার হিসাব! ‘হায়! দুনিয়ার মৃত্যুই যদি আমার শেষ হত! আমার ধন-সম্পদ আমার কোন কাজেই আসল না! আমার ক্ষমতাও আমার থেকে চলে গেল! মালাইকাদেরকে বলা হবে,তাকে ধর। অতঃপর তাকে বেড়ি পরিয়ে দাও। অতঃপর তাকে তোমরা নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। তারপর তাকে বাঁধ এমন এক শিকল দিয়ে যার দৈর্ঘ্য হবে সত্তর হাত।”

 কারণ ......

১.নিশ্চয় সে মহান আল্লাহতে বিশ্বাসী ছিল না। 

২.আর মিসকীনকে(অভাবগ্রস্তকে) খাদ্যদানে উৎসাহিত করত না। (৮৯:১৮) (১০৭:৩) (৭৪:৪৪)

অতএব আজ এখানে তার কোন অন্তরঙ্গ বন্ধু থাকবে না। এবং কোন খাদ্য থাকবে না ক্ষতনিঃসৃত পুঁজ ব্যতীত। যা অপরাধীরা ছাড়া অন্য কেউ খাবেনা। (৬৯:২৫-৩৭)


৬৯ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ যাদের ধন সম্পদ কোন কাজে আসবে !!!!!

 এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

”নিশ্চয় সৎকর্মশীলরা পান করবে এমন পানপাত্র থেকে যার মিশ্রণ হবে কাফূর। এমন এক ঝর্ণা যা থেকে আল্লাহর বান্দাগণ পান করবে, তারা এটিকে যথা ইচ্ছা প্রবাহিত করবে।”

 কারণ.. 

১.তারা দায়িত্ব কর্তব্য পালন করে এবং সেদিনের ভয় করে, যেদিন বিপত্তি হবে ব্যাপক। 

২.তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও ইয়াতীম, মিসকীন ও বন্দীকে খাদ্য দান করে।

৩.তারা বলে, আমরা তো আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদেরকে খাদ্য দান করি। 

৪.আমরা তোমাদের থেকে কোন প্রতিদান চাই না এবং কৃতজ্ঞতাও নয়। 

৫.নিশ্চয় আমরা আমাদের রবের পক্ষ থেকে এক ভয়ংকর ভীতিপ্রদ দিবসের ভয় করি।

৬.পরিণামে আল্লাহ তাদেরকে রক্ষা করবেন সে দিনের অনিষ্ট হতে এবং তাদেরকে প্রদান করবেন হাস্যোজ্জ্বলতা ও উৎফুল্লতা।

৭. আর তারা যে ধৈর্য্যধারণ করেছিল তার পরিণামে তিনি তাদেরকে জান্নাত ও রেশমী বস্ত্রের পুরস্কার প্রদান করবেন। (৭৬:৫-১২)


৭০ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ যেসকল দান কাজে আসবে ! 

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
”অতএব আমি তোমাদের সতর্ক করে দিয়েছি লেলিহান আগুন সম্পর্কে। তাতে নিতান্ত হতভাগা ছাড়া কেউ প্রবেশ করবে না। আর যে অস্বীকার করেছে এবং মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সত্য থেকে। আর তা থেকে দূরে রাখা হবে,”, 

১.পরম মুত্তাকীকে, যে তার সম্পদ দান করে আত্ম-শুদ্ধির উদ্দেশ্যে।

২.এবং তাহার প্রতি কাহারো কোন অনুগ্রহের প্রতিদানে নয়। 

৩.কেবল তার মহান রবের সন্তুষ্টির প্রত্যাশায়। সেতো অচিরেই সন্তোষ লাভ করবে। (৯২:১৪-২১


৭১ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ যে কাজ বর্জন করতে হবে ! 

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় তোমার রব সম্যক অবগত আছেন যে, কে তাঁর পথ হতে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি জানেন তাদেরকে যারা সৎ পথপ্রাপ্ত। অতএব তুমি মিথ্যারোপকারীদের আনুগত্য করো না। তারা চায় যে, তুমি নমনীয় হও। তাহলে তারাও নমনীয় হবে।

১.আর তুমি আনুগত্য করো না তার, যে কথায় কথায় শপথ করে, যে লাঞ্ছিত।

২.পশ্চাতে নিন্দাকারী, যে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে বেড়ায়।

৩.যে কল্যাণকর কাজে বাঁধা দান করে, সে সীমালংঘনকারী, পাপিষ্ঠ।

৪.কঠোর স্বভাব, তার উপরে আবার কুখ্যাত।  এ কারণে যে, সে ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততির অধিকারী।

৫.যখন তার নিকট আমার আয়াত (বিধি-বিধান সমূহ) আবৃত্তি করা হলে সে বলে,এটাতো সেকালের উপকথা মাত্র। (৬৮:৭-১৫)


৭২ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ  প্রত্যেককে সামর্থ অনুযায়ী ধন সম্পদ ব্যয় করতে হবে। 

যমীনে বিচরণকারী সবার জীবিকার দ্বায়িত্ব আল্লাহরই !

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

আর যমীনে বিচরণকারী সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহরই এবং তিনি প্রত্যেকের স্থায়ী ও অস্থায়ী অবস্থানক্ষেত্র সম্বন্ধে জ্ঞান,সবকিছুই সুস্পষ্ট কিতাবে আছে। (১১:৬) এমন অনেক জীব জন্তু আছে যারা নিজেদের খাদ্য মজুদ রাখে না,আল্লাহই তাদের রিযিক দেন আর তোমাদেরকে ও। তিনি সব কিছু দেখেন ও সব কিছু জানেন। (২৯:৬০) নিশ্চয় তোমার রব যার জন্য ইচ্ছে তার রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছে তা সীমিত করেন। নিশ্চয় তিনি তার বান্দাদের সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত, সর্বদ্রষ্টা । (১৭:৩০) (২৯:৬২) বল,আমার রব যার প্রতি ইচ্ছে তার রিযিক বাড়িয়ে দেন অথবা সীমিত করেন কিন্তু অধিকাংশ লোকই এটা জানে না। (৩৪:৩৬) বল, নিশ্চয় আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযিক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর তিনি তার বিনিময় দিবেন এবং তিনিই উত্তম রিযিকদাতা। (৩৪:৩৯) নিশ্চয় তোমার রব সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। আর মানুষ তো এমন যে, যখন তার রব তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর তাকে সম্মান দান করেন এবং অনুগ্রহ প্রদান করেন, তখন সে বলে, আমার রব আমাকে সম্মানিত করেছেন। আর যখন তিনি তাকে পরীক্ষা করেন এবং তার উপর তার রিযিককে সঙ্কুচিত করে দেন, তখন সে বলে, আমার রব আমাকে অপমানিত করেছেন। (৮৯:১৪-১৬)

ধন সম্পদ ব্যয় করার নির্দেশ ! 

 এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

আমার বান্দাদের মধ্যে যারা বিশ্বাসী তাদেরকে বল,তারা যেন  সালাত (দায়িত্ব-কর্তব্য বাস্তবায়ন) প্রতিষ্ঠা  করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, সেদিন আসার পূর্বে যেদিন কোন ক্রয়-বিক্রয় থাকবে না এবং থাকবে না কোন বন্ধুত্ব। (১৪:৩১) অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর, শ্রবণ কর, আনুগত্য কর এবং তোমাদের নিজদের কল্যাণে ব্যয় কর, আর যাদেরকে অন্তরের কার্পণ্য থেকে রক্ষা করা হয়, তারাই মূলত সফলকাম। (৬৪:১৬) তোমরা স্বীয় রবের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে ধাবিত হও, যার প্রসারতা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সদৃশ, ওটা ধর্মভীরুদের জন্য নির্মিত হয়েছে। যারা স্বচ্ছলতা ও অভাবের মধ্যে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানবদেরকে ক্ষমা করে এবং আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন। (৩:১৩৩, ১৩৪) (৮:৩) আর যারা তাদের রবের সন্তুষ্টি লাভের জন্য ধৈর্য ধারণ করে এবং সালাত (দায়িত্ব কর্তব্য বাস্তবায়ন করে) প্রতিষ্ঠা  করে, আর আমি তাদেরকে যে জীবনোপকরণ দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে এবং ভাল কাজের দ্বারা মন্দ কাজকে প্রতিহত করে, তাদের জন্যই রয়েছে আখিরাতের শুভ পরিণাম। (১৩:২২) (৩৫:২৯) (৪২:৩৮) (২২:৩৫) আল্লাহ উপমা দিচ্ছেন অপরের অধিকারভুক্ত এক দাসের যে কোন কিছুর উপর শক্তি রাখে না এবং এমন এক ব্যক্তির যাকে আমি নিজের পক্ষ হতে উত্তম জীবিকা দান করেছি এবং সে তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে,তারা কি একে অপরের সমান? সকল প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য। বরং তাদের অধিকাংশই জানে না। (১৬:৭৫) যারা তাদের সম্পদ ব্যয় করে রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে। অতএব, তাদের জন্যই রয়েছে তাদের রবের নিকট তাদের প্রতিদান। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। (২:২৭৪) তাদেরকে দু’বার প্রতিদান দেয়া হবে। এ কারণে যে, তারা ধৈর্যধারণ করে এবং ভাল দ্বারা মন্দকে প্রতিহত করে। আর আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয়  করে। (২৮:৫৪) (৩২:১৬) তোমরা  আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং আল্লাহ তোমাদেরকে যা কিছুর উত্তরাধিকারী করেছেন তা হতে ব্যয় কর। তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস করে ও ব্যয় করে, তাদের জন্য আছে মহাপুরস্কার। (৫৭:৭) (৯:১২১) তারা কর্তব্য পালন করে এবং সেদিনের ভয় করে, যেদিন বিপত্তি হবে ব্যাপক। তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বে ও মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীকে খাদ্য দান করে। এবং বলে, শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আমরা তোমাদেরকে খাবার দান করি, আমরা তোমাদের কাছ থেকে প্রতিদান চাই না, কৃতজ্ঞতাও নয়। নিশ্চয় আমরা আশংকা করি আমাদের রবের কাছ থেকে এক ভীতিপ্রদ ভয়ংকর দিনের। (৭৬:৭-১০) আর তা থেকে দূরে রাখা হবে পরম মুত্তাকীকে, যে আত্মশুদ্ধির জন্য তার ধন-সম্পদ দান করে। এবং তার প্রতি কারো কোন অনুগ্রহের প্রতিদানে নয়। কেবল তার মহান রবের সন্তুষ্টির প্রত্যাশায়।আর সে অচিরেই সন্তুষ্ট হবে। (৯২:১৭-২১) আর যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ও নিজদেরকে সুদৃঢ় রাখার লক্ষ্যে সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা উঁচু ভূমিতে অবস্থিত বাগানের মত, যাতে পড়েছে প্রবল বৃষ্টি। ফলে তা দ্বিগুণ ফল-ফলাদি উৎপন্ন করেছে। আর যদি তাতে প্রবল বৃষ্টি নাও পড়ে, তবে হালকা বৃষ্টি যথেষ্ট। আর আল্লাহ তোমরা যা আমল কর, সে ব্যাপারে সম্যক দ্রষ্টা। (২:২৬৫)

হে বিশ্বাসীগণ! আমি তোমাদেরকে যে রুযী দান করেছি, তা থেকে তোমরা দান কর, সেই দিন আসার পূর্বে,যেদিন কোন প্রকার ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধুত্ব এবং সুপারিশ থাকবে না। আর অবিশ্বাসীরাই সীমালংঘনকারী। (২:২৫৪) আর আমি তোমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় কর, তোমাদের কারো মৃত্যু আসার পূর্বে। কেননা তখন সে বলবে, হে আমার রব, যদি আপনি আমাকে আরো কিছু কাল পর্যন্ত অবকাশ দিতেন, তাহলে আমি দান বা সদাকা করতাম। আর সৎ লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। আর আল্লাহ কখনো কোন প্রাণকেই অবকাশ দেবেন না, যখন তার নির্ধারিত সময় এসে যাবে। আর তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত। (৬৩:১০,১১) যারা আল্লাহর রাস্তায় তাদের সম্পদ ব্যয় করে, অতঃপর তারা যা ব্যয় করেছে, তার পেছনে খোঁটা দেয় না এবং কোন কষ্টও দেয় না, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট তাদের প্রতিদান রয়েছে এবং তাদের কোন ভয় নেই, আর তারা চিন্তিত হবে না।  যে দানের পর (যাচ্ঞাকারীকে) কষ্ট দেওয়া হয়, তার চেয়ে ভাল কথা বলা এবং ক্ষমা করা উত্তম। আর আল্লাহ অভাবমুক্ত, পরম সহনশীল। হে বিশ্বাসিগণ! দানের কথা প্রচার করে এবং কষ্ট দিয়ে তোমরা তোমাদের দানকে নষ্ট করে দিও না, ঐ লোকের মত যে নিজের ধন লোক দেখানোর জন্য ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে না। তার উপমা একটি শক্ত পাথরের মত, যার উপর কিছু মাটি থাকে। অতঃপর তার উপর প্রবল বৃষ্টিপাত তাকে মসৃণ করে রেখে দেয়। যা তারা উপার্জন করেছে, তার কিছুই তারা তাদের কাজে লাগাতে পারবে না। বস্তত আল্লাহ অবিশ্বাসী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না। (২:২৬২-২৬৪) আর ফসল তোলার দিন সে সবের হক প্রদান করবে। আর অপচয় করবে না, নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না। (৬:১৪১)

হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি জমি হতে তোমাদের জন্য যা উৎপাদন করে থাকি, তা থেকে যা উৎকৃষ্ট, তা দান কর। এমন মন্দ জিনিস দান করার সংকল্প করো না, যা তোমরা মুদিত চক্ষু ব্যতীত গ্রহণ কর না। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত। (২:২৬৭) তোমরা যা ভালবাস তা হতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনই কল্যাণ লাভ করতে পারবে না এবং তোমরা যা কিছুই ব্যয় কর, আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন। (৩:৯২) তোমাদের মধ্যে যারা ধনসম্পদ ও প্রাচুয্যের অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তদেরকে এবং আল্লাহর পথে যারা গৃহত্যাগ করেছে তাদেরকে কিছুই দিবেনা। তারা যেন তাদের দোষ-ক্রটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাওনা যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করেন? এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (২৪:২২)

যারা কৃপণতা করে আর মানুষকে কৃপণতা করার আদেশ দেয়!! 

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

আর যখন তাদেরকে বলা হয়,আল্লাহ তোমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় কর। তখন অবিশ্বাসীরা বিশ্বাসীদেরকে বলে,যাকে আল্লাহ ইচ্ছে করলে খাওয়াতে পারতেন আমরা কি তাকে খাওয়াব? তোমরা তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছ।(৩৬:৪৭) আর আত্মীয়-স্বজনকে তাদের প্রাপ্য অধিকার দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরদেরকেও, আর অপব্যয়ে অপচয় করো না।নিশ্চয় যারা অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই এবং শয়তান তার রবের প্রতি খুবই অকৃতজ্ঞ। আর তুমি তোমার হাত তোমার ঘাড়ে আবদ্ধ রেখো না এবং তা পুরোপুরি প্রসারিত করো না, তাহলে তুমি নিন্দিত ও নিঃস্ব হয়ে বসে পড়বে। (১৭:২৬,২৭,২৯) আর রাহমান-এর বান্দা তারাই, যখন তারা ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না। বরং মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে। (২৫:৬৩,৬৭)  শয়তান তোমাদেরকে দারিদ্র্রতার ভয় দেখায় এবং অশ্লীলতার বা অনৈতিকতার নির্দেশ দেয়। পক্ষান্তরে আল্লাহ তোমাদেরকে তার ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। আল্লাহ বিপুল দাতা,সর্বজ্ঞ। (২:২৬৭) যারা কৃপণতা করে আর মানুষকে কৃপণতা করার আদেশ দেয় এবং যে ব্যক্তি (আল্লাহর পথ হতে) মুখ ফিরিয়ে নেয় (সে জেনে রাখুক) আল্লাহ অভাব মুক্ত, প্রশংসিত। (৫৭:২৪) যারা কৃপণতা করে এবং মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয়, আর গোপন করে তা, যা আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে দান করেছেন। আর আমি প্রস্তুত করে রেখেছি অবিশ্বাসীদের জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তি। (৪:৩৭)

আর যারা মানুষকে দেখাবার জন্য তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও শেষ দিবসে বিশ্বাস করে না। আর শয়তান কারো সঙ্গী হলে সে সঙ্গী কত মন্দ! তারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করলে এবং আল্লাহ তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছেন,তা থেকে ব্যয় করলে, তাদের কি ক্ষতি হত? আর আল্লাহ তাদেরকে ভালোভাবেই জানেন।(৪:৩৮-৩৯) আর আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তাদের জন্য তা মঙ্গল, এমনটি যেন তারা কিছুতেই মনে না করে। বরং তা তাদের জন্য অমঙ্গল। যেটাতে তারা কৃপণতা করবে কেয়ামতের দিন সেটাই তাদের গলায় বেড়ী হবে। আসমান ও যমীনের সত্ত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহরই। তোমরা যা কর আল্লাহ তা বিশেষভাবে অবহিত। (৩:১৮০) তাদের মধ্যে এমন কতিপয় লোক রয়েছে, যারা আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেছিল, আল্লাহ যদি আমাদেরকে নিজ অনুগ্রহ হতে দান করেন, তাহলে অবশ্যই আমরা দান-খয়রাত করব এবং সৎলোকদের অন্তর্ভুক্ত হবো। অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে নিজ অনুগ্রহ হতে দান করলেন, তখন তারা এ বিষয়ে কার্পণ্য করল এবং বিমুখ হয়ে ফিরে গেল। পরিণামে তিনি তাদের অন্তরে মুনাফেকী রেখে দিলেন আল্লাহর সাথে তাদের সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত, তারা আল্লাহর কাছে যে অঙ্গীকার করেছিল তা ভঙ্গ করার কারণে এবং তারা যে মিথ্যা বলেছিল সে কারণে। তারা কি জানে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ তাদের অন্তরের গোপন কথা ও তাদের গোপন পরামর্শ জানেন এবং নিশ্চয় আল্লাহ গায়েব সমূহের ব্যাপারে সম্যক জ্ঞাত? (৯:৭৫-৭৮) নিশ্চয় যারা অবিশ্বাস করে, তাদের ধন-মাল ও সন্তান-সন্তুতি আল্লাহর নিকট কখনো কোন কাজে লাগবে না। তারাই অগ্নিবাসী, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। (৩:১১৬) হে বিশ্বাসীগণ, নিশ্চয় পন্ডিত ও সংসার বিরাগীদের অনেকেই মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে, আর তারা আল্লাহর পথে বাধা দেয় এবং যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর পথে খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেয়া হবে। আর বলা হবে ‘এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর। (৯:৩৪,৩৫) দুর্ভোগ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য, যে সম্পদ জমা করে এবং বার বার গণনা করে। সে মনে করে যে, তার ধন-সম্পদ চিরকাল তার সাথে থাকবে, কখনো নয়, অবশ্যই সে নিক্ষিপ্ত হবে হুতামায়। (১০৪:১-৪) নিশ্চয় তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা   বিভিন্ন প্রকৃতির। সুতরাং যে দান করে ও আল্লাহকে ভয় করে এবং যা উত্তম তা সত্য বলে গ্রহণ করলে, আমি তার জন্য সহজ পথে চলা সুগম করে দিব। আর যে কার্পণ্য  করেছে এবং নিজকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করে, আর উত্তমকে মিথ্যা বলে মনে করলে, আমি তার জন্য সুগম করে দেব কঠোর পথ। যখন সে ধ্বংস হবে,তখন তার ধন সম্পদ তার কোনই কাজে আসবে না। (৯২:৪-১১) কখনো নয়! এটিতো লেলিহান আগুন। যা গাত্র হতে চামড়া খসিয়ে দিবে। জাহান্নাম সেই ব্যক্তিকে ডাকবে যে পেছনে ফিরে গিয়েছিল এবং সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। আর যে সম্পদ পুঞ্জীভূত করেছিল অতঃপর সংরক্ষিত করে রেখেছিল। (৭০:১৫-১৮) কিন্তু যার আমলনামা তার বাম হাতে দেওয়া হবে, সে বলবে, হায়! আমাকে যদি দেওয়া না হত আমার আমলনামা। আর আমার হিসাব কী তা যদি আমি না-ই জানতাম। হায়! আমার মৃত্যুই যদি আমার শেষ হত! আমার ধন-সম্পদ আমার কোন কাজেই আসল না। আমার সব ক্ষমতা আধিপত্য নিঃশেষ হয়ে গেছে। (৬৯:২৫-২৯)

যারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে ! 

 এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

আর যখন তাদেরকে বলা হয়,আল্লাহ তোমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় কর। তখন অবিশ্বাসীরা বিশ্বাসীদেরকে বলে,যাকে আল্লাহ ইচ্ছে করলে খাওয়াতে পারতেন আমরা কি তাকে খাওয়াব? তোমরা তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছ। (৩৬:৪৭) আলিফ লা-ম রা। এগুলি আয়াত মহাগ্রন্থের, সুস্পষ্ট কুরআনের। কোন এক সময় অবিশ্বাসীরা আকাঙ্ক্ষা করবে যে, তারা যদি মুসলিম হত! তাদেরকে ছেড়ে দাও তারা খেতে থাকুক, ভোগ করতে থাকুক এবং আশা তাদেরকে মোহাচ্ছন্ন করে রাখুক, পরিণামে তারা বুঝবে। আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে ভোগ বিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি তার প্রতি তুমি কখনো তোমার চক্ষুদ্বয় প্রসারিত করো না এবং তাদের জন্য তুমি ক্ষোভ করো না। আর বিশ্বাসীদের জন্য তুমি তোমার বাহুকে অবনমিত রাখ। (১৫:১,২,৩,৮৮) আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে পরীক্ষা করার জন্য পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য-স্বরূপ ভোগ-বিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি, তার প্রতি তুমি কখনোও তোমার চক্ষুদ্বয় প্রসারিত করো না। তোমার রবের জীবিকাই উৎকৃষ্টতর ও স্থায়ী।যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার নিম্নদেশে নদীমালা প্রবাহিত। কিন্তু যারা অবিশ্বাস করে, তারা ভোগ-বিলাসে লিপ্ত থাকে এবং জন্তু-জানোয়ারের মত উদর-পূর্তি করে।  আর তাদের নিবাস হল জাহান্নাম। (৪৭:১২) নিশ্চয় কারূন ছিল মূসার সম্প্রদায়ভুক্ত কিন্তু সে তাদের প্রতি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিল। আর আমি তাকে দান করেছিলাম এমন ধনভান্ডার যার চাবিগুলো বহন করা একদল বলবান লোকের পক্ষেও কষ্টসাধ্য ছিল। স্মরণ কর,যখন তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল, অহংকার করো না, নিশ্চয় আল্লাহ অহংকারীদেরকে পছন্দ করেন না। আর আল্লাহ তোমাকে যে ধনসম্পদ দিয়েছেন তা দ্বারা আখিরাতের আবাস অনুসন্ধান কর এবং দুনিয়া থেকে তোমার অংশ ভুলো না। তুমি অনুগ্রহ কর যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং যমীনের বুকে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চেয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদেরকে ভালবাসেন না। সে বলল, এ ধনসম্পদ আমি আমার জ্ঞানবলে পেয়েছি। সে কি জানত না আল্লাহ তার আগে ধ্বংস করেছেন বহু প্রজন্মকে, যারা তার চেয়ে শক্তিতে ছিল প্রবল, জনসংখ্যায় ছিল বেশী? আর অপরাধীদেরকে তাদের অপরাধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না। অত:পর কারূন তার সম্প্রদায়ের সামনে বের হয়েছিল জাকজমকের সাথে। যারা দুনিয়ার জীবন কামনা করত তারা বলল, আহা, কারূনকে যেরূপ দেওয়া হয়েছে আমাদেরকেও যদি সেরূপ দেওয়া হত! প্রকৃতই সে মহাভাগ্যবান। আর যাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হয়েছিল তারা বলল,ধিক তোমাদেরকে! যারা বিশ^াস করে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য আল্লাহর পুরস্কারই শ্রেষ্ঠ এবং ধৈর্যশীল ছাড়া তা কেউ পাবে না। অতঃপর আমি কারূনকে ও তার প্রাসাদকে মাটিতে ধসিয়ে দিলাম। তার স্বপক্ষে এমন কোন দল ছিল না, যে আল্লাহর শাস্তির বিরুদ্ধে তাকে সাহায্য করতে পারত এবং সে নিজেও আত্মরক্ষায় সক্ষম ছিল না। আর আগের দিন যারা তার মত হওয়ার কামনা করেছিল,তারা বলতে লাগল, দেখলে তো, আল্লাহ তার বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছে তার রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছে কমিয়ে দেন। যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি সদয় না হতেন, তবে আমাদেরকেও তিনি ভূগর্ভে প্রোথিত করতেন। দেখলে তো! অকৃতজ্ঞরা সফলকাম হয়না।(২৮:৭৬-৮২) আল্লাহ তার বান্দাদেরকে জীবনোপকরণের প্রাচুর্য দিলে তারা পৃথিবীতে অবশ্যই বিপর্যয় সৃষ্টি করত, কিন্তু তিনি তার ইচ্ছা মত সঠিক পরিমানেই দিয়ে থাকেন। তিনি তাঁর বান্দাদেরকে সম্যক জানেন ও দেখেন। (৪২:২৬,২৭)

প্রত্যেককেই নিজ সামর্থ অনুযায়ী উপার্জিত ধন সম্পদ ব্যয় করতে হবে  ! 

 এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

আর তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তারা কী ব্যয় করবে। বল, যা প্রয়োজনের অতিরিক্ত। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা কর। (২:২১৯) সামর্থ্যবান যেন নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করে আর যার রিযিক সীমিত করা হয়েছে, সে যেন আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তা হতে ব্যয় করে। আল্লাহ কারো ওপর বোঝা চাপাতে চান না, তিনি তাকে যা দিয়েছেন তার চাইতে বেশী। আল্লাহ কঠিন অবস্থার পর সহজতা দান করবেন। (৬৫:৭) আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, আমি কোন ব্যক্তিকে তার সাধ্যের বাইরে দায়িত্ব অর্পণ করি না। তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানে হবে স্থায়ী। (৭:৪২) (২৩:৬২) (২:২৮৬) (৬:১৫২) পার্থিব জীবন তো শুধু খেল-তামাশা মাত্র। যদি তোমরা বিশ্বাস কর ও আল্লাহ-ভীরুতা অবলম্বন কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে পুরস্কার দিবেন। আর তিনি তোমাদের ধন-সম্পদ চান না। তিনি যদি তোমাদের কাছে তা চাইতেন আর সেজন্য চাপ দিতেন তাহলে তোমরা কৃপণতা করতে আর তাতে তিনি তোমাদের বিদ্বেষভাব প্রকাশ করে দিতেন। তোমরাই তো তারা, তোমাদের আহবান করা হচ্ছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করবে। অথচ তোমাদের কেউ কেউ কার্পণ্য করছে। তবে যে কার্পণ্য করছে সে তো নিজের প্রতিই কার্পণ্য করছে। আর আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তিনি তোমাদের ছাড়া অন্য কোন সম্প্রায়কে স্থলাভিষিক্ত করবেন। তারপর তারা তোমাদের অনুরূপ হবে না। (৪৭:৩৬-৩৮)

 যে সকল খাতে উপার্জিত ধন সম্পদ ব্যয় করতে হবে !! 

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে যে,তারা সম্পদ কোথায় ব্যয় করবে?  বল, তোমরা যে সম্পদ ব্যয় করবে, তা পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন, ইয়াতীম, মিসকীন ও মুসাফিরদের জন্য। আর যে কোন ভাল কাজ তোমরা কর, নিশ্চয় সে ব্যাপারে আল্লাহ সুপরিজ্ঞাত। (২:২১৫) আর আল্লাহর ভালবাসায় সম্পদ দান করবে আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম,মিসকীন, পথচারী, সাহার্য্যপ্রার্থী ও দাসমুক্তির জন্য। (২:১৭৭) আর তোমরা জেনে রাখ, তোমরা যে সম্পদ অর্জন করেছ, তার এক-পঞ্চমাংশ আল্লাহ, তাঁর রাসূলের, রাসূলের নিকট আত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন এবং পথচারীদের জন্য,যদি তোমরা আল্লাহতে বিশ্বাসী হও। (৮:৪১) সদকা তো শুধু ফকীর, মিসকীন ও সদাকা আদায়ের কাজে নিযুক্ত কর্মচারীদের জন্য, যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য, দাসমুক্তিতে, ঋণ ভারাক্রান্তদের জন্য, আল্লাহর পথে ও পথচারীদের জন্য। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (৯:৬০) আল্লাহ এই জনপদবাসীদের নিকট হতে তার রাসূলকে যা কিছু দিয়েছেন তা আল্লাহর, তার রাসূলের, রাসূলের স্বজনগণের এবং ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্ত ও পথচারীদের যাতে তোমাদের মধ্যে যারা বিত্তবান শুধু তাদের মধ্যেই ধনসম্পদ আবর্তন না করে। অতএব রাসূল তোমাদেরকে যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা হতে বিরত থাক। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর। (৫৯:৭) (২:১৯৫) (৫১:১৯) (৭০:২৪,২৫) (৬৯:৩৪) (৭৪:৩৪) অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি কষ্ট ক্লেশের মধ্যে। সে কি মনে করে যে তার উপর কেউ ক্ষমতাবান নেই? সে বলে যে, আমি প্রচুর ধন-সম্পদ উড়িয়েছি। সে কি মনে করে যে তাকে কেউ দেখেনি? আমি কি তাকে দুটো চোখ দিইনি? আর একটি জিহবা ও দুটি ঠোঁট? আর আমি তাকে (পাপ ও পুণ্যের) দুটো পথ দেখিয়েছি। কিন্তু সে তো বন্ধুর গিরিপথে প্রবেশ করেনি। আর তুমি কি জান,বন্ধুর গিরিপথটি কি? তা হচ্ছে দাস মুক্তকরণ।  অথবা খাদ্য দান করা দুর্ভিক্ষের দিনে, ইয়াতীম আত্মীয়-স্বজনকে অথবা দারিদ্র-নিষ্পেষিত নিঃস্বকে। অতঃপর সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, যারা বিশ^াস স্থাপন করেছে। এবং পরস্পরকে উপদেশ দিয়েছে ধৈর্য ধারণের ও দয়া দাক্ষিণ্যের। তারাই সৌভাগ্যবান।আর যারা আমার আয়াতসমূহকে(আল্লাহর আদেশ-নির্দেশসমূহকে) অস্বীকার করেছে তারাই দুর্ভাগা। তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে অবরুদ্ধকারী আগুন।  (৯০:৪-২০)


৭৩ নং-মেসেজ বা বার্তা হচ্ছেঃ হালাল হারাম বিষয় সম্পর্কে!

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, 

”অতএব,তোমরা মানুষকে ভয় করো না এবং আমাকে ভয় কর এবং আমার আয়াত সমূহের বিনিময়ে স্বল্পমূল্যে গ্রহণ করো না,আল্লাহ যাহা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী যাহারা বিচার ফয়সালা করে না তারাই, তারাই কাফের।” (৫:৪৪) আল্লাহ যাহা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী যাহারা বিচার ফয়সালা করে না তারাই জালেম। (৫:৪৫) আল্লাহ যাহা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী যাহারা বিচার ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী। (৫:৪৭) তিনিই  অল্লাহ  তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই,দুনিয়া ও আখিরাতে  সমস্ত  প্রশংসা তাঁহারই, বিধান তাঁহারই, তোমরা  তাঁহারই দিকে  প্রত্যাবর্তিত  হবেই। (২৮:৭০) যিনি তোমাদের  জন্য কুরআনকে  করিয়াছেন বিধান। (২৮:৮৫) হে মানবমন্ডলী! পৃথিবীর মধ্যে যা বৈধ ও পবিত্র, তা হতে আহার কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করনা, নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (২:১৬৮) হে বিশ্বাসিগণ! আমি তোমাদেরকে যে রুযী দিয়েছি, তা থেকে পবিত্র বস্তু আহার কর এবং আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর,যদি তোমরা শুধু তারই ইবাদাত কর। (২:১৭২) ‘হে রাসূলগণ, তোমরা পবিত্র ও ভাল বস্তু থেকে খাও এবং সৎকর্ম কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর সে সর্ম্পকে আমি সম্যক জ্ঞাত। (২৩:৫১) আল্লাহ তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তার মধ্যে যা বৈধ ও পবিত্র, তা তোমরা আহার কর এবং তোমরা যদি শুধু আল্লাহরই ইবাদত কর, তবে তাঁর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। (১৬:১১৪) তারা বলল, তোমরা কতক্ষণ অবস্থান করেছ, সে ব্যাপারে তোমাদের রবই অধিক জানেন। তাই তোমরা তোমাদের কাউকে তোমাদের এই এই মুদ্রাগুলো দিয়ে শহরে পাঠাও। অতঃপর সে যেন দেখে শহরের কোন খাবার একেবারে উত্তম বা ভেজালমুক্ত, তখন সে যেন তোমাদের জন্য তা থেকে কিছু খাবার নিয়ে আসে। আর সে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করবে এবং কাউকে যেন তোমাদের ব্যাপারে না জানায়। (১৮:১৯)

আর তোমাদের জিহ্বা মিথ্যা আরোপ করে বলে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা রটনা করার জন্য বলো না, এটা হালাল এবং এটা হারাম। নিশ্চয় যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা রটায়, তারা সফলকাম হবে না। (১৬:১১৬) হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য উৎকৃষ্ট যেসব বস্তু হালাল করেছেন সেগুলোকে তোমরা হারাম করো না, এবং সীমালংঘন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারীকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ তোমাদেরকে যে জীবিকা দান করেছেন তা হতে বৈধ ও উৎকৃষ্ট বস্তু ভক্ষণ কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর প্রতি তোমরা সকলে বিশ্বাসী। (৫:৮৭,৮৮) বল, তোমরা কি ভেবে দেখেছ, আল্লাহ তোমাদের জন্য যে রিযিক অবতীর্ণ করেছেন, পরে তোমরা তার কিছু বানিয়েছ হারাম ও হালাল। বল, আল্লাহ কি তোমাদেরকে অনুমতি দিয়েছেন, নাকি আল্লাহর উপর তোমরা মিথ্যা রটাচ্ছ ? (১০:৫৯) হে নাবী,আল্লাহ তোমার জন্য যা বৈধ করেছেন তুমি তা নিষিদ্ধ করছ কেন? তুমি তোমার স্ত্রীদের সন্তুষ্টি চাচ্ছ? আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৬৬:১) বল, কে হারাম বা নিষিদ্ধ করেছে আল্লাহর সৌন্দর্যোপকরণ, যা তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র রিযিক ? বল, তা দুনিয়ার জীবনে বিশ্বাসীদের জন্য, বিশেষভাবে কিয়ামত দিবসে’। এভাবে আমি আয়াতসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি এমন সম্প্রদায়ের জন্য, যারা জানে। (৭:৩২) লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে তাদের জন্য কী কী হালাল করা হয়েছে। বল, যাবতীয় ভাল ও পবিত্র বস্তু তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। (৫:৪) বল, আমার প্রতি যে ওহী করা হয়েছে যে, লোকে যা খায় তার মধ্যে আমি কিছুই হারাম পাই না, মৃত, বহমান রক্ত ও শুকরের মাংস ছাড়া। কেননা এগুলো অবশ্যই অপবিত্র অথবা যা অবৈধ, আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য উৎসর্গের কারণে। তবে যে কেউ অবাধ্য না হয়ে এবং সীমালংঘন না করে নিরুপায় হয়ে তা গ্রহণে বাধ্য হয়েছে,তবে নিশ্চয় তোামার রব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৬:১৪৫) নিশ্চয় তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশ্ত এবং যে জন্তুর যবেহকালে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নাম নেয়া হয়েছে। সুতরাং যে বাধ্য হবে, অবাধ্য বা সীমালঙ্ঘনকারী না হয়ে, তাহলে তার কোন পাপ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (২:১৭৩) তিনি তো তোমাদের উপর হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশ্ত এবং যে জন্তুর যবেহকালে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নাম নেয়া হয়েছে কিন্তু কেউ অবাধ্য বা সীমালংঘনকারী না হয়ে অনন্যোপয় হলে আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (১৬:১১৫) যার যবেহকালে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়নি, তা তোমরা ভক্ষণ করো না। নিশ্চয় তা গর্হিত। (৬:১২১) আর তোমাদের কি হয়েছে যে, যার যবেহকালে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে, তোমরা তা ভক্ষণ করবে না? অথচ তোমরা নিরুপায় না হলে যা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তা তিনি বিশদভাবেই তোমাদের নিকট বিবৃত করেছেন। (৬:১১৯) হে বিশাসীগণ, তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ণ কর। তোমাদের জন্য চতুস্পদ জন্তু হালাল করা হয়েছে, তোমাদের নিকট যা বর্ণনা করা হচ্ছে তা ছাড়া। তবে ইহরাম অবস্থায় শিকারকে হালাল করবে না। নিশ্চয় আল্লাহ যা ইচ্ছা বিধান দেন। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোস্ত, আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে যবেহ করা পশু, গলা চিপে মারা যাওয়া জন্তু, প্রহারে মারা যাওয়া জন্তু, উপর থেকে পড়ে মারা যাওয়া জন্তু,অন্য প্রাণীর শিং এর আঘাতে মারা যাওয়া জন্তু এবং হিংস্র পশুতে খাওয়া জন্তু, তবে যা তোমরা যবেহ করতে পেরেছ তা ছাড়া, আর যা মূর্তি পূজার বেদীর উপর বলী দেওয়া হয় তা এবং জুয়ার তীর দিয়ে ভাগ্য নির্ণয় করা, এসব পাপ কাজ। আজ অবিশ্বাসীরা তোমাদের দ্বীনের বিরুদ্ধাচরণে হতাশ হয়েছে, কাজেই তাদেরকে ভয় করো না এবং আমাকেই ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামত  সম্পূর্ণ করলাম, আর তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। অতঃপর কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৫:১,৩) তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে চতুষ্পদ জন্তু,এগুলি ব্যতীত যা তোমাদেরকে পাঠ করে শুনানো হয়েছে। (২২:৩০) বল, যাবতীয় ভাল ও পবিত্র বস্তু তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে, আর শিকারী পশু-পক্ষী- যাদেরকে তোমরা শিক্ষা দিয়েছ যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন সুতরাং তারা যা তোমাদের জন্য ধরে রাখে তা তোমরা ভক্ষণ করবে আর তাতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করবে, আর আল্লাহকে ভয় করবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর।  (৫:৪) আজ তোমাদের জন্য বৈধ করা হল সব ভাল বস্তু এবং যাদেরকে কিতাব প্রদান করা হয়েছে, তাদের খাবার তোমাদের জন্য বৈধ এবং তোমাদের খাবার তাদের জন্য বৈধ। (৫:৫)

তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার ও তার খাদ্য ভক্ষণ বৈধ করা হয়েছে, তোমাদের ও মুসাফিরদের ভোগের জন্য। আর তোমরা যতক্ষণ ইহরামে থাকবে, ততক্ষণ স্থলের শিকার তোমাদের জন্য অবৈধ করা হয়েছে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর নিকট তোমাদেরকে একত্র করা হবে। (৫:৯৬) তিনিই সমুদ্রকে কল্যাণে নিয়োজিত রেখেছেন যাতে তোমরা তাত্থেকে তাজা গোশত খেতে পার, আর তাত্থেকে তোমরা রতœরাজি সংগ্রহ করতে পার যা তোমরা অলংকার হিসেবে পরিধান কর। আর নৌযান গুলোকে তোমরা দেখতে পাও ঢেউয়ের বুক চিরে তাতে চলাচল করে, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ তালাশ করতে পার আর শোকর আদায় করতে পার। (১৬:১৪) আর দু’টি সমুদ্র সমান নয়, একটি খুবই সুমিষ্ট ও সুপেয়, আরেকটি অত্যন্ত লবণাক্ত আর প্রত্যেকটি থেকে তোমরা তাজা গোশত খাও এবং আহরণ কর অলঙ্কার যা তোমরা পরিধান কর। আর তুমি তাতে দেখ নৌযান পানি চিরে চলাচল করে। যাতে তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর। (৩৫:১২)

তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, এ দুটোয় রয়েছে বড় পাপ ও মানুষের জন্য উপকার। আর তার পাপ তার উপকারিতার চেয়ে অধিক বড়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা কর। (২:২১৯) হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্যনির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। শয়তান তো চায় যে, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শক্রতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে এবং তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণে ও সালাতে বাধা দিতে। তবে কি তোমরা বিরত হবে না? (৫:৯০,৯১) হে বিশ্বাসিগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের (বিধানসমূহ বা দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ পালনের) নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষন পর্যন্ত না তোমরা যা বলতা বুঝতে পার । (৪:৪৩)

সুতরাং ভাল ভাল যা ইয়াহুদীদের জন্য হালাল ছিল আমি তা তাদের জন্য হারাম করেছিলাম তাদের যুলুমের জন্য এবং আল্লাহর পথ থেকে অনেককে বাধা দেওয়ার জন্য এবং তাদের রিবা বা সুদ গ্রহণের জন্য, যদিও তা তাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং অন্যায়ভাবে লোকের ধন-সম্পদ গ্রাস করার জন্য। আর তাদের মধ্যে যারা অবিশ্বাসী তাদের জন্য আমি মর্মন্তুদ শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। (৪:১৬০,১৬০) আর আমি ইয়াহুদীদের জন্য নখরযুক্ত সমস্ত পশু হারাম করেছিলাম এবং গরু ও ছাগলের চর্বিও তাদের জন্য হারাম করেছিলাম, তবে এগুলোর পিঠের অথবা অন্ত্রের কিংবা অস্থিসংলগ্ন চর্বি ছাড়া, তাদের অবাধ্যতার জন্য তাদেরকে এ প্রতিফল দিয়েছিলাম। আর নিশ্চয় আমি সত্যবাদী। (৬:১৪৬) আর যারা ইয়াহূদী হয়েছিল আমি তাদের প্রতি হারাম করেছিলাম যা আমি তোমার কাছে পূর্বেই উল্লেখ করেছি। আমি তাদের উপর কোন যুলম করিনি, কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলম করত। (১৬:১১৮) সালামুন আলা ঈসার উক্তি: আর আমার সামনে পূর্ববর্তী কিতাব তাওরাতের যা রয়েছে তার সত্যায়নকারীরূপে এবং তোমাদের উপর যা হারাম করা হয়েছিল তার কিছু তোমাদের জন্য হালাল করতে এবং আমি তোমাদের নিকট এসেছি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নিদর্শন নিয়ে। অতএব, তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর’। (৩:৫০)

হে নাবী! আল্লাহ তোমার জন্য যা বৈধ করেছেন তুমি তা নিষিদ্ধ করছ কেন? তুমি তোমার স্ত্রীদের সন্তুষ্টি চাচ্ছ? আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৬৬:১) যাদেরকে কিতাব প্রদান করা হয়েছে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহতে ঈমান আনে না এবং শেষ দিনেও নয়  এবং আল্লাহ ও তার রাসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম গণ্য করে না, আর সত্য দ্বীন অনুসরণ করে না। তাদের সাথে লড়াই কর,যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে নিজ হাতে জিযইয়া দেয়। (৯:২৯) আমি রাসূল এ উদ্দেশেই প্রেরণ করেছি, যেন আল্লাহর নির্দেশে তাঁর আনুগত্য করা হয়। (৪:৬৪) কোন মানুষের জন্য সংগত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হিকমাত ও নবুওয়াত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, ‘তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও। বরং সে বলবে, তোমরা রববানী হও। যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দিতে এবং তা অধ্যয়ন করতে’। (৩:৭৯) পিতা বলল, আমি তোমাদের সাথে তাকে কখনো পাঠাব না, যতক্ষণ না তোমরা আমাকে আল্লাহর নামে অঙ্গীকার প্রদান কর যে, তাকে অবশ্যই আমার কাছে নিয়ে আসবে। তবে তোমরা শত্রু বা বিপদ দ্বারা বেষ্টিত হলে ভিন্ন কথা। অতঃপর যখন তারা তাকে প্রতিশ্রুতি দিল, তখন সে বলল, আমরা যা বলছি সে ব্যাপারে আল্লাহই সাক্ষী। পিতা বলল, হে আমার ছেলেরা, তোমরা এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করো না, বরং ভিন্ন ভিন্ন দরজা দিয়ে প্রবেশ কর এবং আল্লাহর সিদ্ধান্তের বিপরীতে আমি তোমাদের কোন উপকার করতে পারব না। হুকুম একমাত্র আল্লাহরই। আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং যারা নির্ভর করতে চায় তারা  আল্লাহরই উপর নির্ভর করুক। আর যখন তারা প্রবেশ করল, যেভাবে তাদের পিতা তাদেরকে আদেশ করেছিল, তা আল্লাহর হুকুমের বিপরীতে তাদের কোন উপকারে আসেনি, তবে তা ছিল ইয়া‘কূবের মনের একটি ইচ্ছা, যা সে ব্যক্ত করেছিল। আর সে ছিল জ্ঞানী, কারণ আমি তাকে শিখিয়েছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। (১২:৬৬-৬৮)



(চলমান)


Popular posts from this blog

-ঃআল-কুরআনুল করীমঃ-

বিস‌মিল্লা‌হির রহমনুর রহিম -ঃআল-কুরআনুল করীমঃ- ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ বাংলা তরজমা ও সম্পাদনাঃ- শামসুল ‘উলামা বেলায়েত হোসেন  মাওলানা আবদুর রহমান কাশগরী  মুহম্মদ মাহমূদ মুস্তফা শা'বান  শামসুল উলামা মুহম্মদ আমীন 'আব্বাসী  ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্  প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ ডক্টর সিরাজুল হক ডক্টর কাজী দীন মুহম্মদ অধ্যক্ষ এ.এইচ. এম. আবদুল কুদ্দুস  মাওলানা মীর আবদুস সালাম অধ্যাপক শাহেদ আলী মাওলানা ফজলুল করীম  এ.এফ.এম. আবদুল হক ফরিদী  আহমদ হুসাইন  মাওলানা আলাউদ্দীন আল-আজহারী  মাওলানা মুহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ্  হাফেজ মঈনুল ইসলাম আবুল হাশিম -ঃ৩য়সংস্করণের সম্পাদকমণ্ডলীঃ- ডক্টর সিরাজুল হক ডক্টর কাজী দীন মুহম্মদ জনাব আ.ফ.ম. আবদুল হক ফরিদী ডক্টর এ.কে.এম. আইউব আলী  ডক্টর মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান ডক্টর এম. শমশের আলী জনাব দাউদ-উজ-জামান চৌধুরী জনাব আহমদ হুসাইন জনাব মাওলানা আতাউর রহমান খান জনাব মাওলানা ওবায়দুল হক জনাব আ.ত.ম. মুছলেহ্ উদ্দীন জনাব মোহাম্মদ ফেরদাউস খান জনাব মাওলানা রিজাউল করীম ইসলামাবাদী জনাব মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ জনাব এ.এফ...

বিষয় : নোয়াখালীর সুবর্ণচর ট্রাজেডি

নোয়াখালীর সুবর্ণচর ট্রাজেডি   এই সেই ধর্ষক  "ধর্ষকের পরিচয় ধর্ষকই"   ধর্ষকের কোন দল নাই..  সে কারো আত্মীয় নয়  কারো ভাই বা সন্তন নয় তার একটাই পরিচয় ; সে ধর্ষক !! তাই আমি চাই; ধর্ষনকারীর কঠিন  শাস্তি হোক. . আমি সামগ্রিক ভাবে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দুই সন্তানের জননীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ্য ও কঠিন শাস্তি দাবী করছি। অন্যদিকে দুঃখজনক ভাবে এই ঘটনাকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংস্রতায় রুপ প্রদানে ব্যস্ত মাহফুজ আনাম, ডেইলিস্টার, প্রথম আলো, যুগান্তর সহ একটা পক্ষ!গৃহবধূর গণধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা সত্য তবে এটার সাথে আ'লীগের ভোট দেওয়া না দেওয়ার বিষয় জড়িত নয়। গৃহবধূর স্বামী জানান, রোববার দুপুরের দিকে তার স্ত্রী স্থানীয় ভোটকেন্দ্র চর জুবলীর ১৪নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিতে যান। তিনি ভোট দিয়ে ফেরার পথে স্থানীয় রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তি তাকে অনুসরণ করে এবং উত্ত্যক্ত করে। তার স্ত্রী এর প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত বাড়ি ফিরে আসেন। এ অবস্থায় রুহুল আমিন ও তার লোকজন স্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। রোববার গভীর রাতে রুহুল আমিনের নেতৃত্বে ৮-১০ জনের একদল সন্...